নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবনকে সাজাতে চাই সুন্দর বাগিচায়... তাই করি যা মনে চায়... live it love it ENJOY it!!
কিছুদিন পর মনে হল ঢাকায় থাকা আর সম্ভব হবে না! পাবনাই হতে পারে একমাত্র ঠিকানা! কুইজ
অ্যাসাইমেন্টের ভিড়ে আমি প্রায় শেষের পথে! তার উপর অফিসের চাপ! বাবা আছেন বলে কেউ কিছু
বলতে সাহস পায় না। না থাকলে, যে তালগোল পাকাচ্ছি আমি! বলার বাইরে।
অফিসে বসে আছি। নতুন একটা প্রোজেক্ট এসেছে। এনালাইসিস টিমের কাছে কি রিপোর্ট দিব তা ঠিক করছি। এক ট্যাবে গুগল আরেক ট্যাবে ফেসবুক ওপেন করা… আয়েশ করে কফি খাচ্ছি তখন শোভন ফোন দিল!
কই রে তুই!
কই আবার অফিসে! আমার প্রক্সি দিসিস?
প্রক্সি তো দিয়েই যাচ্ছি! কিন্তু কিছু আর পাইলাম কই! ওপাশ থেকে তিক্ত কন্ঠ ঝড়ে পরল।
মানে?
মানে খাওয়াবি কবে? হুম! আজকে আমরা সবাই ফ্রী আছি! আজকে তোর পার্টি দিতেই হবে!
আজকে! আকাশ থেকে পড়লাম!
হু! তোমার জন্য সারপ্রাইজ! বনানি চলে আয় এখুনি! তোর নামে আমরা একটা চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ভাড়া করে নিয়েছি! হাহাহা! যেন দিক বিজয় করে ফেলেছে, এমন ভাবে হাসতে থাকল শোভন!
কি করেছিস?! মাথা ঘুরালো আমার!
হাহা ঠিকই শুনেছো বাছা! এখন লক্ষি ছেলের মত চলে আসো! দেখো কি সারপ্রাইজ ওয়েট করছে!
ফোন কেটে গেল।
এতো রীতিমত ব্ল্যাকমেইল! গোটা কয়েক গালি দিয়ে উঠে দাড়ালাম! আজ কাজ করা শিকোয় গেছে!
রাসেল ভাইয়ের কাছে গেলাম। খুলে বলতেই প্রান খুলে হাসতে থাকল। বাহ! ভালো তো! নাইস! কতদিন পার্টিতে যাই না! এক কাজ করি, আমাদের কলিগদেরও বলে দেই কি বলো! স্যারের ছেলের পার্টি হচ্ছে তারা যাবে না! তোমার ফ্রেন্ডদের সাথেও দেখা হবে। ইভেন তোমার স্পেশাল ওয়ানের সাথেও! চোখ টিপল।
অনেক দিন পর আজ বুঝতে পারলাম। দুনিয়াটা বড্ড নিষ্ঠুর!
কিন্তু রাসেল ভাইয়ের কথাটা মনে ধরল! স্পেশাল ওয়ান? তানিয়াকে আনার প্ল্যানটা মাথায় ছিল না বাট থ্যাংস টু হিম!
ঠিক আছে! দু হাত মাথার উপর তুললাম। সব ঘানি আমার কাধের উপরেই পরবে মানলাম! কিন্তু আমাকে একটা জিনিস ম্যানেজ করে দিতে হবে!
কি?
একটা গাড়ি!
কী???
আসার পথে আব্বুর রুমে ঢু মারলাম।
আব্বু একটা কাজ করে দিতে পারবে?
কি কাজ? এক গাদা কাগজের মাঝ দিয়ে তাকালেন তিনি।
তোমার কাছে কিছু টাকা হবে?
দেখতে দেখতে আব্বুর চোখের ভুরু তিন হাত উপরে উঠে গেল!
কী???
এক ঘন্টা পর। ২০১২ মডেলের টয়োটা এক্সিয়ো হাকিয়ে ঢাকা শহর মাতিয়ে বেড়াচ্ছি আমি! হ্যা মানছি খুব একটা গাড়ি চালাই না এবং বাসে করেই ভার্সিটি যেতে হয়, কিন্তু আমার ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে! রিয়ারভিউ মিররে তাকিয়ে চুলগুলো ঠিক করে নিলাম! সানগ্লাসটা ঠিকঠাক মত আছে কিনা চেক করে আবার গ্যাস পেডল চেপে ধরলাম। নতুন গাড়ি বিনা প্রতিবাদে ছুটে চলল রাস্তা ধরে। রাস্তা ফাকাই বলা যায়। কিছুক্ষণের মাঝেই পৌছে গেলাম ভার্সিটির কাছের বাস স্ট্যান্ডে!
কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর তার দেখা মিলল। দূর থেকে তাকে দেখেই মনটা কেমন জানি খুশিতে ভরে উঠল। প্রতিবার তাকে দেখলেই মনটা কেমন যেন করে উঠে। হৃদপিন্ডের স্বাভাবিকের তুলনায় একটু বেশি গতিতে ছুটোছুটি শুরু করে দেয়।
সামনে দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। কাউকে খুজছে বোধহয়।
মনে হয় আমাকে খুজছে, এই দিনে তানিয়া আর আমার ক্লাশ এক সাথেই শেষ হয়! মুচকি হাসলাম, তারপর হর্ণ চেপে ধরলাম!
হঠাৎ শব্দে ভয় পেয়ে পিছিয়ে গেল সে! ভয়ার্ত চোখে আমার দিকে তাকালো। আমি হেসে ফেললাম।
বেশি ভয় পেয়েছো? সরিইইই!
তুমি! গ্লাসে আলতো করে কিল বসালো। মেরেই ফেলেছিলে প্রায়! এত ভয় দেখাও কেন তুমি! হালকা অভিমান ঝরল তার গলায়।
কি করব বল! তোমাকে যে কি কিউট দেখায় তখন!
চোখ বড় বড় হয়ে গেল তার। সামলে নিয়ে বলল, কি ব্যাপার আজ হঠাৎ গাড়িতে?
উঠে বসো, সব বলছি।
উঠবো? অনিশ্চয়তা দেখা গেল তার মাঝে।
হ্যা ওঠো! দড়জা খুলে দিলাম। আটোসাটো হয়ে বসে থাকল তানিয়া। তাকাচ্ছে না কোন দিকে। সহানুভূতির হাসি দিয়ে সিট বেল্ট আটকে দিলাম তার। গাড়ি উলটো দিকে ঘুরালাম।
কোথায় যাচ্ছি আমরা? বাসা তো ওই দিকে!
হ্যা কিন্তু আমরা তো বাসায় যাচ্ছি না!
বাসায় যাচ্ছি না? তোতলাতে থাকল সে। তাহলে কো…কোথায়?
সময় হলেই দেখতে পাবে। শয়তানি হাসি দিলাম!
সাগর! সত্যিই ভয় পেয়ে গেল মেয়েটা!
আরে বোকা এত ভয় পাও কেন? আমি তো আছি, ভয় কিসের হু? রিল্যাক্স হয়ে বসে থাকো লক্ষী মেয়ের মতো। সিডি প্লেয়ারে হালকা টোনের গান ছাড়লাম।
আড়চোখে দেখলাম তানিয়াকে, দু গালে হাত দিয়ে আদুরে ভঙ্গিতে বসে আছে। দু চোখে রাজ্যের দুঃচিন্তা! তার গালগুলো টিপতে ভীষণ ইচ্ছে করল আমার!
আগের পর্ব
©somewhere in net ltd.