নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগিং জগতে প্রথম ঢুকলাম...

জীবনের পথে চলা নবীন এক পথিক...

রাফীদ চৌধুরী

জীবনকে সাজাতে চাই সুন্দর বাগিচায়... তাই করি যা মনে চায়... live it love it ENJOY it!!

রাফীদ চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

কসমিক সিম্ফোনি... (সায়েন্স-ফিকশান) পর্ব ১২-১৩

২৭ শে জুন, ২০১৬ রাত ১১:৩৩



কিরু২ এর অনড় দেহের সামনে ঝুকলো জেনা। এখনো গোল গর্তটার চারপাশে লাল গলিত মেটাল দেখা যাচ্ছে।

কিভাবে কি হলো? বুঝে উঠতে পারল না লিও। তুমি কিভাবে কিরুকে থামালে…?

আমি দশম প্রজাতির রোবটের গোপন সংখ্যা জানি। জানি কোন নির্দিষ্ট তরঙ্গে কিউ বিট প্রবেশ করলে সাময়িকভাবে তারা অকেজো হয়ে পরে। স্বাভাবিকভাবে তারা সাথে সাথে রিবুট করতো, কিন্তু ট্রিনিটিকে কন্ট্রোল করছিলো বলে কিরু২ এর প্রসেস করার ক্ষমতা কমে যায়…

দু’হাতে মুখ চাপা দিয়ে আছে ইরা। কিন্তু তুমি কিভাবে জানলে…

তুমি তো নিজেই শুনলে… আমি বিজ্ঞান একাডেমির সার্ভারে এসব খুজে পেয়েছি।

হঠাৎ দপ করে লাইটগুলো জ্বলে উঠল কন্ট্রোল ইউনিটে, ট্রিনিটির গলা শোনা গেল কমম লিঙ্কে। মহামান্য লিও, আপনারা ঠিক আছেন?
ট্রিনিটি! তুমি ফিরে এসেছো! হাপ ছেড়ে বাচল লিও। জিম… জলদি জিমকে খুজে বের করো…

দুঃখিত মহামান্য, জিমকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। আশেপাশের কোথাও তাকে ট্রেস করা যাচ্ছে না।

প্রচন্ড বেদনাবোধে আক্রান্ত হলো লিও। জিম তার ফার্স্ট মেটই ছিল না বরং বন্ধুর মতো ছিল। তার নিঃসংগ জীবনে বন্ধুর সংখ্যা খুব বেশি ছিল না। জিম ছিল তাদের এক জন।

ট্রিনিটি, নরম্যান্ডিতে নাকি এন্টিম্যাটার ওয়ারহেড রাখা আছে, কাজের কথায় চলে আসল জেনা। যতসম্ভব তাড়াতাড়ি ডি-এক্টিভেট করে দাও!

দুঃখিত মহামান্য জেনা, ট্রিনিটি একই কণ্ঠে জবাব দিল। ওয়ারহেডটিকে কোনভাবে এক্সেস করা যাচ্ছে না। তারা শক্তিশালি কিলিং প্রোগ্রাম করে রেখেছে আমার জন্যে। প্রতি মুহুর্তে আমার ৪০ কোয়ার্টজ মেমোরি দখল করে নিচ্ছে… কয়েক মিনিটের মাঝে প্রোগ্রামটি আমাকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করে নিবে।

ট্রিনিটি, বিজ্ঞান একাডেমি পর্যন্ত আমাদের বিরুদ্ধে আজ। কিরু২ এর মতো মানুষের সমান মর্যাদা সম্পন্ন রোবটকেও তারা প্রোগ্রাম করেছে আমাদের মারার জন্যে। নরম্যান্ডির মাঝে শক্তিশালি বিষ্ফোরক রেখেছে আমাদের ধ্বংস করার জন্যে… তুমি কেন আমাদের পক্ষে আছো এখনো?

কারণ মহামান্য লিও, আমি তৈরি হয়েছি শুধুমাত্র আমার দলপতিকে রক্ষা করার জন্যে, তার মিশন সম্পন্ন করার জন্যে সব রকম সাহায্য করার জন্যে, কোন ব্যক্তির স্বার্থ রক্ষা করার জন্যে নয়। আমাকে এমনভাবে প্রোগ্রাম করা হয়েছে যেন নিজ বুদ্ধিতে আমি কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারি, তাই তারা আপনাকে ধ্বংস করতে চাইলেও আমি সবসময় আপনাদের রক্ষা করে যাবো।

ধন্যবাদ ট্রিনিটি। ধরা গলায় বলল লিও। কিন্তু তুমি বুঝতে পারছো তুমি বেচে থাকলে কি ঘটবে?

বুঝতে পারছি মহামান্য।

তাহলে তুমি জানো তোমার সামনে কি পথ খোলা আছে?

কিছুক্ষণ জবাব দিল না ট্রিনিটি। এর পরে তার গলা অনেক বিষন্য শোনালো। আমি ওমেগা মডেলের এক কম্পিউটার, নিজেই রীকিভ ভাষায় প্রোগ্রামিং করে উন্নত প্রানীদের মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারি… আমি বুঝতে পারি তুমি কি চাইছো।

আমি দুঃখিত ট্রিনিটি। হালকা গলায় বলল লিও। আমি জানি আমি একটা উন্নত মস্তিষ্কের বিংকে মরতে বলছি। কিন্তু আমি নিরুপায়… তারা তোমাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে বিজ্ঞান একাডেমির স্বার্থ পুরোপুরি হাসিল হবে, আশা করি তুমি ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছ...

না! অস্ফট শব্দ করল ইরা… আরেকজন না…

আরেকটা কাজ আমরা করতে পারি। এগিয়ে এলো জেনা। ট্রিনিটি তোমাকে আমি নিজের কাছে রাখতে চাই, হাতের বেল্ট দিয়ে আটকানো ছোট ডিসপ্লেটা দেখালো জেনা। আমি জানি তোমার দায়িত্ব স্পেস এক্সপ্লোরেশন মিশনে সহায়তা করা, নরম্যান্ডির কেন্দ্রীয় কম্পিউটার হিসেবে দায়িত্ব পালন করা। আমি জানি আমি কি চাচ্ছি তোমার কাছে। একটু থামলো সে। কিন্তু তুমি ওমেগা প্রযুক্তির একটি কম্পিউটার, তুমি নিজের প্রোগ্রাম নিজে পরিবর্তন করতে পারো, আমি চাই তুমি আমাদের সাথে আসো… নরম্যান্ডিতে বিষ্ফোরিত হয়ে মরো না।

লিও আর ইরার চোখাচোখি হয়ে গেল। তারা বুঝতে পারছে না।

মনে আছে তোমার এটার কথা? জেনা তার হাত গুটিয়ে উজ্জ্বল ডায়ালবক্সযুক্ত বেল্টটা দেখালো। তার কব্জিতে সবুজ আভা তৈরি করছে যন্ত্রটা। আমি বলেছিলাম অবসরে শখের কাজ করি এটাতে আমি? এটা একটা ৬ষ্ঠ গ্রেডের কোয়ান্টাম কম্পিউটার। আমার বানানো। শুধুমাত্র এখনো কিত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন কোন সিস্টেম এর মাঝে যুক্ত করি নি। ট্রিনিটি চাইলে সে এখানে যুক্ত হতে পারে।

কিছুক্ষণ পরে ট্রিনিটির গলা শোনা গেল। আমি আসছি…

তুমি এখানে নিজেকে আপ্লোড করে দাও, আর নরম্যান্ডির সেন্ট্রাল মেমোরির সব ফাইল ধ্বংস করে দাও।

সাথে সাথে জেনার ডায়ালটাতে লাল সবুজ আভা দেখা গেল… কিছুক্ষণ মিটমিট করতে থাকলো সোলারেক্সের কন্ট্রোল ইউনিটের লাইটগুলো। ট্রিনিটির ডাউনলোড শেষে আবার লাইটগুলো জ্বলতে থাকল ঠিকভাবে।

ধন্যবাদ ট্রিনিটি, ফিসফিস করে ডায়ালবক্সটার সাথে কথা বলল জেনা। তোমাকে আমি ভালো যত্ন নিব, দেখে নিও।

সবার দিকে ফিরলো সে। আর বেশি সময় নেই! দশ মিনিটের মাঝে বিষ্ফোরিত হবে নরম্যান্ডি, তার সাথে আশেপাশের সব কিছুই। আমাদের পালাতে হবে…

কোথায়! চোখ বড় বড় করে তাকালো ইরা। আশেপাশের একহাজার মাইলের মাঝের সব কিছু গুড়িয়ে যাবে…

সব কিছু না! তাকে বাধা দিল লিও! আয়নিক নিউক্লিয়ার কোরটা বাদে! চেচিয়ে উঠলো সে। পুরো স্পেসস্টেশনটার থ্রাস্টার হিসেবে ব্যবহৃত হয় এই কোরটা, একশো বছর নিউক্লিয়ার রিয়েকটরের পার্টিকেলের ধাক্কা সামলায় আয়নিক কোর! ওটা বিষ্ফোরনের ধাক্কা ঠিকই সামলাতে পারবে।

কিন্তু লিও ওটা তো আড়াই কিলোমিটার দূরে! তাকে মনে করিয়ে দিল ইরা। সোলারেক্সের একেবারে পেছনে, থ্রাস্টারতো স্পেসস্টেশনের শেষে থাকে, অত দূর এত কম সময়ে কিভাবে যাবো?

এতক্ষণ জেনা উপরের দিকে তাকিয়েছিল, এবার তাদের দিকে তাকালো। কোন সমস্যা নেই। মুচকি হাসল সে। হাতটা সামনের দিকে বারিয়ে ধরলো, ডায়ালবক্সটা থেকে হালকা সবুজ আভা ঘুরতে থাকলো তার কব্জির চারপাশে। কয়েক মুহুর্ত পরে দেখা গেল দুটো ওয়াইশীপ এসে দাড়িয়েছে তাদের সামনে।

ট্রিনিটির কাজ, মৃদু হাসল জেনা। এখন আমি আশেপাশের যেকোন কিছুকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি ট্রিনিটির সাহায্যে। নিজের হাতটা উলটে পালটে দেখল সে। আলতো করে হেটে একটা ওয়াইশীপের হ্যাচ খুলে ভেতরে ঢুকে পরলো। আমাকে ফলো করো!

লিও আর ইরা দুজন পেছনের ওয়াইশীপে উঠে বসলো। ওয়াইশীপগুলো সোলারেক্সের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ট্রান্সপোর্টের জন্যে ব্যবহার করা হতো এক সময়ে। দুজন মানুষ কোনরকমে একটা ওয়াইশীপে উঠতে পারে।

মেঝের হালকা উপরে ভাসতে থাকল ওয়াইশীপদুটো, জেনার নির্দেশে চলতে শুরু করলো নিউক্লিয়ার কোরের দিকে।

তেরোঃ

একে বেকে স্পেসস্টেশনটার ভেতর দিয়ে একবারে শেষ প্রান্তে চলে এলো ওয়াইশীপগুলো। জেনা তখনো সামনে থেকে তাদের গাইড করছে। বড় একটা মেটাল প্লেটের দরজা খুলে যেতে তারা আয়নিক কোরে প্রবেশ করলো।

আর চারমিনিট! লিওর পেছন থেকে ইরা চিৎকার করল।

আয়নিক কোরটা পুরো স্পেসস্টেশনটার থ্রাস্ট তৈরি করে এগিয়ে নিয়ে যায়। তাই এটির মাঝে আর্টিফিশিয়াল গ্রাভেটি কিংবা বাতাসের স্তরেরও কোন ব্যবস্থাও নেই। ওয়াইশীপগুলো শূন্যে ভাসতে থাকলো।

লিও কোরের দেয়ালে ধাতব আংটা দেখতে পেল, এটা দিয়ে তেজস্ক্রিয় পদার্থগুলো থ্রাস্টারে আনা হতো। তার মাথায় হঠাৎ একটা বুদ্ধি খেলে গেল।

জেনা! আমাকে ফলো করো। কমম লিঙ্কে বলল সে। এন্টিম্যাটার ওয়ারহেড বিষ্ফোরণের সময় এরকম শূন্যে থাকলে ছিটকে ওয়াইশীপগুলো কোরের দেয়ালে আছড়ে পরবে। আংটাগুলো দেখালো সে।

দুটি আংটার পাশাপাশি দুটো ওয়াইশীপ হালকাভাবে ভেসে রইলো। লিও হেড-মাস্কটা লাগিয়ে ওয়াইশীপ থেকে বের হয়ে দুটো আংটার সাথে ওয়াইশীপগুলো আটকে দিল।

আর এক মিনিট বাকি আছে! তাড়াতাড়ি করো! চিৎকার দিল ইরা।

তাড়াহুড়োর মাঝে হাত থেকে এসেমব্লিং গিয়ারটা ছুটে গেল লিওর। তার হাতের নাগালের বাইরে ভাসতে ভাসতে চলে গেল সেটা!

লিও আর ত্রিশ সেকেন্ড! জেনা হাহাকার করে উঠল! চলে আসো লিও!

বা হাতে আইভোরি ব্লাস্টারটা বের করলো লিও। খুব শান্ত করে নিল মনকে সে। সতর্কতার সাথে ব্লাস্টারের বীমের পাওয়ারটা ডায়াল ঘুরিয়ে ঠিক করে নিল, এরপর সেটা মেটালিক ফয়েলের উপর চেপে ধরে ট্রিগার টিপে ধরলো।

উজ্জ্বল লাল শিখা বের হয়ে এলো আইভোরি থেকে। নির্দিষ্ট পরিমান তাপের ফলে মেটালিক ফয়েলটা গলে গিয়ে আটকে গেল ওয়াইশীপটার সাথে। উল্টোদিকে ফিরে সময়মত ওয়াইশীপটার ভেতরে প্রবেশ করলো লিও।

আর দশ সেকেন্ড! জেনার গলা ভেসে এলো অপর ওয়াইশীপ থেকে। আশা করি আমাদের এর পরে আবার দেখা হবে।

আশা করি… বিড়বিড় করলো লিও। আয়নিক কোরটার পেছনের ফাকা অংশ দিয়ে উন্মুক্ত স্পেস দেখা যাচ্ছে, অসংখ্য স্টারসিস্টেম সেখান দিয়ে মিটিমিটি জ্বলছে… সেদিকে তাকিয়ে থাকলো লিও। মহাকাশ, বিস্ময়কর মহাকাশ…

আর পাচ সেকেন্ড! চিৎকার দিল জেনা। চার...তিন...দুই...এক…

বিষ্ফোরণের ধাক্কায় ওয়াইশীপের ডেসবোর্ডে আছড়ে পড়ল লিও। সিটবেল্টটা তার বুকের উপর শক্তভাবে আটকে রইল। চারদিকে ধাতব পাতগুলো ঝরে পরছে। একটা মোটা পাইপ অল্পের জন্যে ওয়াইশীপের সামনে দিয়ে খোলা স্পেসে হারিয়ে গেল।

উজ্জ্বল একটা শকওয়েভ দেখতে পেলো তারা ভয়েড স্পেসের দিকে আগাচ্ছে, হলুদ আভাতে চোখের সামনে থেকে ঢেকে যাচ্ছে মহাশূন্যটা। আয়নিক কোরের থ্রাস্টারের উল্টোপাশের ফাকা মহাশূন্যটা পুরোপুরি ঢেকে গেল হলুদ শকওয়েভে।

হঠাৎ কিছু বোঝার আগেই এক গাদা ধাতব পাত জেনার ওয়াইশীপটার উপর পরল। চোখের পলকে সেটা আংটা থেকে ভেঙ্গে আলাদা হয়ে গেল। চোখের সামনে দেখতে পেল লিও জেনার ওয়াইশীপটা পাক খাচ্ছে নিজের চারপাশে, ধাতব পাতগুলো এখনো সেটার উপর পরছে, ককপিটের গ্লাসউইন্ডোটা ঝাঝরা হয়ে গেছে সেটার।

জেনা! আর্তচিৎকার বের হয়ে এল লিওর! আতঙ্কের সাথে দেখল তার ওয়াইশীপটা পাক খেতে খেতে ফাকা জায়গাটা দিয়ে মহাশূন্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে!

আমার গ্লাসওইন্ডো ভেঙ্গে গেছে! কমম লিঙ্কে শোনা গেল জেনার গলা। সাথে সাথে আমার স্যুটের অক্সিজেন ট্যাংকটাও একপাশে চিরে গেছে। ক্লান্ত শোনালো তাকে। মহাশূন্যে সব অক্সিজেন বের হয়ে যাচ্ছে… বিদায় বন্ধুরা, মলিন হয়ে গেল তার কণ্ঠস্বর, তোমাদের অনেক মিস করবো আমি…

কি যেন হয়ে গেল লিওর নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলো না। নিজের ওয়াইশীপের হ্যাচটা খুলে মুহুর্তের মাঝে বাইরে বের হয়ে আসলো। ইরার তীক্ষ্ণ চিৎকার শোনার আগেই বের হয়ে এলো সে ওপেন স্পেস এ। ওজনশূন্য পরিবেশে একগাদা স্পেসস্টেশনের জঞ্জাল পাশ কাটিয়ে পৌছে গেল সে জেনার শীপের পাশে। ওয়াইশীপের উপর নিজের ভর দিয়ে সেটার পাক খাওয়ার সাথে নিজের ঘূর্নন গতি মিলিয়ে নিল সে। এরপর ব্লাস্টার দিয়ে ককপিটের হ্যাচটা উড়িয়ে দিল সে। দেখতে পেল জেনার আতঙ্কিত মুখটা। তার স্যুটের পেছন দিয়ে ধোয়ার ন্যায় লিকুইড অক্সিজেন বের হয়ে যাচ্ছে মহাশূন্যে।

তার সিটের বেল্ট খুলে আলগা করে তাকে কাধে নিল লিও। যত জোরে পারে একটা শ্বাস নিয়ে নিজের হেড-মাস্কটা খুলে জেনার মুখে পরিয়ে দিল... দেখতে পেল হালকাভাবে জেনার বুক-পিঠ উঠানামা করছে, এরপর তাকে কাধে নিয়ে শূন্যে ভেসে ফিরে এলো নিজেদের ওয়াইশীপের দিকে। কিভাবে এলো এতো সব স্পেস জঞ্জালের মাঝে দিয়ে এক নিঃশ্বাসের মধ্যে সে বলতে পারবে না। বলতে পারবে না কোনটার পর কোন কাজটা করবে তার প্ল্যান আদৌ কখনো সে করেছিলো কিনা। কিন্তু কোন প্রকারের বিপদ ছাড়াই সে পৌছে গেল ওয়াইশীপটার পাশে।

জেনাকে হ্যাচ খুলে ওয়াইশীপটার ককপিটে বসিয়ে দিল সে, তার মুখ থেকে হেড-মাস্কটা খুলে নিজের মুখে লাগিয়ে নিল। এরপর হ্যাচটা বন্ধ করে বের হয়ে এল মহাশূন্যে।

লিও! কমম লিঙ্কে শুনতে পেল ইরার গলা! তুমি কি করবে? ভেঙ্গে এলো তার কণ্ঠ। ওয়াইশীপে দুজনের বেশি কাউকে নেওয়া যায় না, তোমাকে ফেলে আমরা কোথাও যাচ্ছি না…

আমাকে ফেলে কোথাও যেতে হবে না। জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে লিও। একহাতে ওয়াইশীপের একটা ডানা ধরে রেখেছে সে। সামনের দিকে তাকালো, বিষ্ফোরণের হলুদাভ আভা মিলিয়ে গেছে মহাশূন্য থেকে।

আমি ধরে আছি ওয়াইশীপটা, আয়নিক কোরটা থেকে বের হতে হবে এখনই! আশেপাশে থেকে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি একটার উপর আরেকটা আছড়ে পড়ছে, যে কোন সময় এই ওয়াইশীপটাও ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।

কেন… বিড়বিড় করল জেনা, কেন বাচালে আমাকে… কেন আমার জন্যে এত বড় একটা ঝুকি নিলে… আমি… আমি সারাজীবনের জন্যে তোমার কাছে ঋণী হয়ে থাকলাম লিও… আমি ভাবতে পারিনা কেউ আমার জন্যে… এভাবে মরবার ঝুকি নেবে…

এখনো আমরা বেচে গেছি সেটা বলা যাবে না। জেনাকে বাধা দিল লিও। এত প্রশংসা শুনে কান গরম হয়ে যাচ্ছিল তার। ওয়াইশীপটাকে মহাকাশে বের করে নিয়ে আসো।

ধীরে ধীরে সোলারেক্সের থ্রাস্টারটার পেছন দিয়ে উন্মুক্ত স্পেসে বের হয়ে আসলো তারা। লিও ওয়াইশীপের একটা ডানা এখনো ধরে রেখেছে। বাইরে আসার পর দেখতে পেলো এন্টিম্যাটার ওয়ারহেডে বিধ্বংসী ক্ষমতা! পুরো সোলারেক্সকে টুকরো টুকরো করে ফেলেছে মারনাস্ত্রটা। জঞ্জালগুলো এদিক ওদিকে ভাসছে উন্মুক্ত মহাকাশের মাঝে। শুধু এখনো আয়নিক কোরের অংশটা ঠিকভাবে রয়ে গেছে পেছনে…

ট্রিনিটি একটা মহাকাশযানকে বিপদসংকেত পাঠাতে পেরেছে! ক্লান্ত গলায় বলল জেনা। মহাকাশযানটা এদিকে চলে আসছে দুইঘন্টার মাঝেই। মলিন হাসলো সে, বোধহয় বেচে গেলাম এই যাত্রা!

মলিন হাসি ফুটলো ইরা আর লিওর মুখেও। হয়তো বা বেচে থাকাটাই হবে প্রতিশোধ নেবার নতুন গল্পের শুরু! দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করলো লিও, বিজ্ঞান একাডেমিকে এর মাশুল দিতে হবে।

আগের পর্ব

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জুন, ২০১৬ রাত ১১:৪৪

শান্তির দেবদূত বলেছেন: ভাল লেগেছে। চালিয়ে জান। আর কয়টি পর্ব আছে ?
শুভকামনা রইল ।

২৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:১৮

রাফীদ চৌধুরী বলেছেন: আরো দশটার মতো। এতদিন ছিল তারা কিভাবে সারভাইভ করেছে সামনে থাকবে কারা তাদের বিরুদ্ধে মিশনটা সৃষ্টি করেছে, মোটিভ কি তাদের এসব :)

শুভকামনা আপনার জন্যেও রইল।

২| ২৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৭:১৭

কালনী নদী বলেছেন: পর্বটি ভালো লেগেছে।

২৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:১৯

রাফীদ চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে ভালো লেগেছে বলে :)

৩| ২৯ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১:৫২

শান্তির দেবদূত বলেছেন: অনেকদিন হয়ে গেল, নতুন পর্ব দিচ্ছে না। অপেক্ষায় আছি।

২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:০৬

রাফীদ চৌধুরী বলেছেন: অপেক্ষা করানোর জন্যে অনেক দুঃখিত! আসলে হঠাৎ ব্যস্ততার জন্যে সময় বেড় করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। নতুন পর্বগুলো নিয়ে আবারো হাজির হবো সামন। আপনার জন্যে শুভকামনা রইল! :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.