নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হতাশাগ্রস্ত মানুষের কদর্যতাই একমাত্র অস্ত্র।

ইসিয়াক

যা মানবতা বিরোধী তাই পরিত্যাজ্য মানবের সাধনা হোক মনুষ্যত্ব লাভ।

ইসিয়াক › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ সততাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা

১৪ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৩:৪৪


ভূদেব বাবু চেয়েছিলেন আজ বাড়ি থেকে সকাল সকাল বের হবেন।কিন্তু মানুষের সব চাওয়া সব সময় পূরণ হয় না, অদৃশ্য কারো ইশারায় চলে এই পৃথিবী।তিনিই ভালো জানেন কিসে ভালো কিসে মন্দ।সেই তার ইশারায় হয়তো সকাল থেকে অঝোর ধারায় বৃষ্টি হচ্ছে।
হচ্ছে তো হচ্ছেই। থামছে না কিছুতেই। এদিকে টিউশনিতে দেরি হয়ে যাচ্ছে। বিকেলের টিউশনিগুলো এখন তিনি সকালেই সেরে নেন।

সব শিক্ষকরাই অবশ্য তাই করছেন। সকাল সকাল স্কুলে যাওয়া নিয়ে ব্যস্ততা নেই,অফিস খোলে ১০টার পরে।তারপর শুরু হয় স্কুলের যাবতীয় দাপ্তরিক কার্যক্রম। তার আগে অনায়াসে দুটো টিউশনি সেরে নেওয়া যায়।

এই মুহুর্তে সরকারী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত স্কুলে ছাত্র ছাত্রী আসা সম্পূর্ণরূপে নিষেধ।বাবা মা অথবা অন্য অভিভাবকগণ হোম ওয়ার্কের খাতা সপ্তাহান্তে এসে বিনিময় করে নিয়ে যান।সাথে কিছু প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা ও শীট দিয়ে দেওয়া হয়। ছাত্র ছাত্রীদের পড়া বুঝিয়ে দেওয়া হয় ফেসবুকের গ্রুপের মাধ্যমে। এতে সবাই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ না করাতে নতুন করে জুম নিয়ে ভাবা হচ্ছে।
তাতে আরো বেশি ছাত্র /ছাত্রী সংযুক্ত হতে পারবে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা সহ।

ভূদেব বাবুর বরাবরই প্রযুক্তি ভীতি আছে। আগে স্কুলে পাঠদানে তিনি ভীষণ রকম সাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন। কিন্তু করোনার পরে স্কুলের প্রতি,শিক্ষা জগতের প্রতি তার প্রচন্ড ঘৃণা ধরে গেছে।নতুন নানা নিয়মকানুনের সাথে তাল মেলাতে তিনি বেশ হিমসীম খাচ্ছেন বলা যায়।

বিশেষ করে তিনি অনলাইনে ক্লাসে নিতে গিয়ে বেশ অস্বস্তিতে পড়েন।প্রথমত ছাত্র/ছাত্রী বাদে আরো অনেকে তাকে লক্ষ করছে এটা তাকে মানসিকভাবে পীড়া দেয়।সবসময় মনে হয় এই বুঝি কি না কি ভূল হয়ে গেলো। মানুষের বাড়তি কথা শুনতে তার এখন আর ভালো লাগেনা।নিজের পোষাক নিয়েও সচেতন থাকতে হয়। তার তো মাত্র দু’সেট পোষাক।
আরো অনেক দুঃখ কষ্ট অভিমান ঘিরে আসে ইদানিং।

সবচেয়ে দুঃখ লাগে বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের কথা এদেশের কেউ তেমন একটা ভাবে না।অথচ এই দুঃস্থ লোকগুলো নাকি মানুষ গড়ার কারিগর।মানুষ গড়ার কারিগর শুনলে তার এখন হাসি পায়।বাঙালির শুধু গালভরা বুলি।এদেশের বেশির ভাগ মানুষ মনে করে শিক্ষকমাত্র দুঃখ দুর্দশায় জীবন অতিবাহিত করবে।তাদের কোন চাহিদা থাকতে নেই। তাদের যে সংসার আছে পরিবার পরিজন আছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন পাগলাঘোড়ার সাথে লড়াই করে টিকে থাকতে হয় সামান্য বেতনে।সে কথা সবাই ইচ্চাকৃতভাবে এড়িয়ে যায়।

করোনার বন্ধের আড়াই মাস পরে স্কুল খোলা হলো নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে। বেশ খানিকটা চুরি চুরি করে, বাধ্য হয়ে। বিশেষ করে আড়াই মাস ধরে শিক্ষকবৃন্দের বেতন বন্ধ। কমবেশি সবাই ধারদেনা করে ফেলেছেন।স্কুলের আনুষঙ্গিক খরচ চলেই যাচ্ছে নিয়মিত। স্কুল কতৃপক্ষ বিকল্পভাবনা ভাবতে চাইছেন।তখন সত্যি সত্যি ভূদেববাবুর ঘুম হারাম হয়ে ওঠার দশা হয়েছিলো। স্কুল না থাকলে তো তার অস্তিত্বই থাকবে না। টিউশনি জোগাড় করা কষ্ট হয়ে যাবে।

যা হোক লকডাউন শেষে স্কুল খোলার পর শুরু হলো ক্লাস নেয়ার জটিলতা,নতুন নিয়মের সাথে অনেক অভিভাবক দ্বি-মত পোষণ করতে লাগলেন। আস্থাহীনতায় ভুগতে লাগলেন। কেউ কেউ তার ফেসবুক বা স্যোশাল মিডিয়ার আই ডি শেয়ার করতে দ্বিধাগ্রস্থ।বাচ্চাদের পড়া চালিয়ে যেতেও ইচ্ছুক নন কোন এক অজানা কারণে অনেকে।তারপর এক এক করে বাচ্চারা পড়া নিয়ে পড়া শুরু করতে লাগলো তখন ভীষণ রকম মোবাইল গেম টিভি আসক্ত বাচ্চাদের পড়ালেখায় ফেরাতে ধীরে ধীরে স্কুল মূখী হতে লাগলো অনেকেই।তারপরেও কোন কোন অভিভাবকদের চরম অসহযোগীতা ও কটু বাক্যবাণ তো আছেই।

সত্যি বলতে কি ছাত্র ছাত্রীদের নির্দিষ্ট সময়ে সবাইকে একসাথে পাওয়া যায় না বেশির ভাগ সময়ে ।কারো বাবা থাকে অফিসে,কারো আবার মা থাকে বাইরে তো তাদের সাথে যোগাযোগ করতে করতে রাত দশটাও বেজে যায় কোন কোন দিন।
কারো ফোন থাকে বিজি। আবার কারো স্কুলের দেওয়া সময় ম্যাচিং এ সমস্যা।বলা যায় সমস্যা একটা না হাজারটা।আবার কেউ নির্দিষ্ট সময় নেটে ব্যস্ত থাকেন বিভিন্ন কাজে।

অভিভাবকদের এমনিতেই তোয়াজ করে চলতে হয় প্রাইভেট স্কুল বলে।এখনতো আরো বেশি তোয়াজ করা লাগে।।যেন শিক্ষকবৃন্দ দায়বদ্ধ, এপ্রিল মে দুই মাসের বেতন মওকুফ করা হলো স্কুল থেকে। সেই সাথে শিক্ষকবৃন্দও সেই দুই মাস বেতন পেলেন না।কেউ একটু খোঁজ নেবার প্রয়োজনও বোধ করলো না যে সম্মানিত শিক্ষকদের এই দুই মাস কিভাবে চললো।বরং বেশির ভাগ অভিভাবক পান থেকে চুন খসলে নানা অকথা কুকথা শোনাতে দ্বিধা করলো না যথারীতি।সোজাসুজি বলে বসে স্কুলে পড়ানো তো না,টাকা আদায়ের ফন্দি।

একটু ভাবেনা বেসরকারি স্কুলের মাসিক রানিং খরচ কত।বাসা ভাড়া, কারেন্ট বিল,স্টাফ খরচ। নেট খরচ।জেনারেটর খরচ।পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা খরচ…….।
হায়রে দেশের মানুষ। হায়রে দেশের সরকার।
ভূদেব বাবু বিষণ্ণ মনে বৃষ্টি দেখছেন।আর নানাকথা ভাবছেন।শিক্ষকতা পেশা নেওয়াটাই ছিলো চরম ভুল।বিশেষ করে বেসরকারি স্কুলের। কত টাকাই বা বেতন দেয়। প্রধান শিক্ষক পান চার হাজার পাঁচশো।অন্যান্য সহকারীরা দুই হাজার আড়াই হাজার।

বেসরকারী স্কুলের শিক্ষকদের জন্য কোন পরিকল্পনা নেই। তারা মনে হয় অচ্ছুৎ শ্রেণির। তাদের ভাবনা কেউ ভাবে না।
অথচ তারা নিঃস্বার্থভাবে স্কুল টিকিয়ে রাখার স্বার্থে হোক বা নিজের চাকরি বাঁচাতে হোক। নিরলস ভাবে পাঠ দান অব্যাহত রেখেছেন। বিন্দুমাত্র ফাঁকি তারা পারত পক্ষে দেন না।

আশেপাশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রেজাল্টের চেয়ে তাদের স্কুলের রেজাল্ট কত ভালো। অথচ সেভাবে তাদের মূল্যায়ন কই?
বিভিন্ন প্রপোগন্ডা মোকাবেলা করে স্টুডেন্ট জোগাড় করতে গিয়ে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয় তাদের। সরকারও সবসময় বিমাতা সূলভ আচরণ করে।এই যেমন গত দুতিনবছর ধরে নতুন নিয়ম চালু করলেন ডিসি সাহেব যে কিন্ডারগার্টেনের পড়ুয়া ছাত্র /ছাত্রীদের সরকারি স্কুলে নেওয়া হবে না।একটা স্বাধীন দেশে একোন জংলী নিয়ম?
কিন্ডারগার্টেন যদি ক্ষতিকর হয় তো পুরোপুরি বন্ধ করে দিক।
তাদের এলাকার মোমিননগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তো হাসতে হাসতে বলেন আরে, আমরা অত খাটনি করে পড়ানোর মধ্যে নেই।
স্কুলে পড়া হলো কি না হলো তাতে তেমন কিছু যায় আসে না। বাচ্চারা কোন রকমে পাস করলেই হলো।
তবে বৃত্তি গুলো আপনার নিয়ে গেলে উপরে তো কিছু কথা শুনতে হয়।

দ্রুত মাথা ঝাড়া দিয়ে ভূদেববাবু নতুন ভাবনায় মন দিলেন। সব তো হলো এখন বৃষ্টিতে কী করে বাইরে যাবেন।বাইরে বলতে টিউশনিতে যাবেন।

আরো কিছুটা সময় অপেক্ষা করে ভূদেব বাবু একটা ছাতা নিয়ে বের হয়ে পড়লেন।যদিও ছাতাটা ভাঙা। ভাঙা ছাতা নিয়ে কোথাও যেতে বেশ বিব্রত লাগে। কিন্তু এখন এছাড়া উপায়ও নেই।
রোকনের মায়ের কথাবার্তা ভালো না।পাঁচ দশ মিনিট কোন কারণে দেরি হলে ঝমাঝম দুচার কথা শুনিয়ে দিতে দ্বিধা করবে না।রোকন খুব ভালো ছাত্র। অল্পতেই যে কোন পাঠ খুব সহজে বুঝে ফেলে।এবকম ছাত্র পড়িয়ে আরাম আছে তাই তিনি নানা কথা হজম করেও টিউশনিটা ধরে রেখেছেন।

নিচে নেমে তিনি হাঁটা শুরু করলেন।
বৃষ্টি ঝরছে তো ঝরছে অঝর ধারায়। না বের হওয়াই ভালো ছিলো। চামেলি আসবার সময় বাজারের প্যাকেট ধরিয়ে দিয়েছে।
চামেলির সব সময় জেদ।বললেন যে ছাত্র পড়াতে যাচ্ছেন। তা হবে না।ব্যাগ তাকে নিতেই হলো।মাসের শেষ টাকা পয়সা নেই হাতে।
তার যে আয় ইনকাম সীমিত। সেটা সে কিছুতেই বুঝতে চায় না।

আনমনেই পথ চলছিলেন ভূদেব বাবু। রাস্তায় গাড়ি তেমন একটা নেই বললেই চলে। হঠাৎ একটা দ্রুত বেগে মটর সাইকেল তাকে প্রায় ধাক্কা মেরে চলে গেল।তিনি ছিটকে পড়ে গেলেন।

ঝুপ করে একটা শব্দ হলো।ভূদেব বাবুর অবশ্য তেমন একটা লাগেনি। তবে পুরো কাপড়চোপড় নোংরা জলে মাখামাখি।তিনি উঠে দাড়িয়ে দেখলেন।সামনে একটা প্যাকেট পড়ে আছে।

এই বৃষ্টিতে কে একজন দৌড়ে এসে তাকে তুলল।পড়ে থাকা ব্যাগটি হাতে তুলে দিয়ে বলল।দেখে শুনে পথ চলুন কাকু। এখনি তো বিপদ বাধাচ্ছিলেন।

ভূদেব বাবু কি যেন বলতে গেলেন।তার আগেই লোকটি যেমন ঝড়ের গতিতে এসেছিল তেমনি ঝড়ের গতিতে চলে গেল।
প্যাকেটটি বেশ ভারি মনে হলো। অনিচ্ছা স্বত্বেও তিনি প্যাকেটটি তার হাতের প্যাকেটে মধ্যে ঢুকিয়ে নিলেন।সারাজীবন সৎ ভূদেব বাবুর মনের মধ্যে বেশ খানিক লোভ কাজ করলো।

অনেক সমস্যার সমাধান হয়তো এই প্যাকেটে আছে।সমস্ত শরীর ভিজে এক শেষ। তিনি ঠিক করলেন তিনি আজ আর টিউশনিতে যাবেন না।
তিনি ধীরে ধীরে বাড়ির পথ ধরলেন।…..

চামেলী দরজা খুলেই ঝাঁঝিয়ে উঠলো,
-ফিরে এলে যে বড়?একি সারা শরীর দেখি নোংরা জলে মাখামাখি।কোথায় আবার হোঁচট খেয়ে পড়লে।তুমি না বড্ড যন্ত্রণা করো।
বয়স বাড়ার আগেই বুড়ো হয়ে যাচ্ছো।মহা যন্ত্রনা তোমাকে নিয়ে।

ভূদেব বাবু কিছুু বললেন না,তার মাথার ভিতরটা ফাঁকা ফাঁকা, তিনি একটা ঘোরের মধ্যে আছেন।তিনি ঘোলাটে চোখে একবার চামেলীর দিকে তাকালেন।পাশের ঘরে ছেলে মেয়েরা কি নিয়ে যেন হৈ চৈ বাঁধিয়েছে।অন্য সময় হলে তিনি একটু বকে উঠতেন এখন খেয়াল করলেন না।শরীরের বাম পাশটা বেশ ব্যাথা করছে।

চামেলীর তীক্ষ্ণ চোখ প্যাকেটের দিকে চলে গেলো।
-প্যাকেটে কি?বাজারে গিয়েছিলে নাকি? এতো তাড়াতাড়ি? কই দেখি?

টান দিতেই ভূদেব বাবু প্যাকেটটা আলগোছে ছেড়ে দিলেন।তারপর ঢুকলেন বাথরুমে।
আগে বুঝতে পারেননি বাথরুমে কাপড় বদলাতে গিয়ে বুঝতে পারলেন তার বাম কাঁধে প্রচন্ড ব্যাথা ।এর জের ধরে পুরো বাম পাশটা ব্যাথায় টনটন করছে।

অনেকটা সময় তিনি বাথরুমে কাটালেও আজ চামেলীর কোন হাঁক ডাক নেই।কি নিয়ে ব্যস্ত কে জানে? কল ছেড়ে কলের নিচে মাথা পেতে রইলেন।
বেশ অনেকটা সময় পরে ভূদেব বাবু বাইরে বের হয়ে দেখেন। সারা বাড়িময় যেন পূজোর আনন্দ।
চামেলীর গদগদ হয়ে দৌড়ে এসে বলল,
-রিয়ার বাবা এতো গুলো টাকা তুমি কোথায় পেলে? কে দিলো বলতো?
-টাকা?
-হ্যাঁ টাকাইতো আমার কাছে কেন লুকাচ্ছো?-এই তো! তুমিই তো প্যাকেটটা হাতে করে নিয়ে এলে।

ভূদেব বাবুর এতোক্ষণে ঘোর কাটলো মনে হয়। তিনি হঠাৎ মাতা নাড়িয়ে উঠলেন তার সন্দেহ তাহলে ঠিক কিন্তু তিনি একি করতে যাচ্ছিলেন।
তিনি কিছুক্ষণ কি যেন ভাবলেন। তারপর বেশ কড়া গলায় বললেন,
-এ টাকা আমাদেন না।
-তাহলে কাদের?
-জানিনা।
– জানিনা মানে কি।
-জানিনা মানে জানিনা।তারপর তিনি সমস্ত ঘটনাটা খুলে বললেন।
সব শুনে চামেলী বলল,
-তাহলে তো টাকাটা আমাদেরই।
-ভূদেববাবু মুখ শক্ত করে বললেন,
-আমি টাকাটা ফিরিয়ে দেবো।
-কাকে ফিরাবে?টাকার মালিককে তো তুমি চেনো?
-আমি খুঁজে বের করবো।
-তোমার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে? তোমার কি মনে হচ্ছেনা ভগবান এ টাকা নিজে আমাদের হাতে পৌছে দিয়েছেন।
-আমার মোটেও তা মনে হচ্ছেনা।তুমি জেনে রেখো সততা সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা।
-তোমার ওই সব বইয়ের ভাষা একদম আওড়াবে না। রিয়ার বাবা তুমি একটু ভেবে দেখো।এই টাকাটা আমাদের সংসারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনবে।
এমন সচ্ছলতা আমার চাই না।
চামেলীর মুখ ভার হয়ে গেলো। এই গোয়ার গোবিন্দ লোকটি স্ব-ইচ্ছায় হাতে লক্ষী কে পায়ে ঠেলে দিতে চাইছেন।
চামেলী তবু শেষ চেষ্টা করলো।
– তুমি একটু বুঝতে চেষ্টা করো।
ভূদেববাবু মুখ শক্ত করে বলল,
-যার সম্পদ তার কাছে ফেরত যাবে।এর বেশি আমি কিছু বুঝতে চাইনা।
ভূদেববাবু আবার বেরিয়ে পড়লেন।বৃষ্টিটা আরো বেড়েছে।তার হাঁটতে খুব কষ্ট হচ্ছে। তবুও তিনি হেঁটে চলেছেন এক বুক অভিমান নিয়ে।ভগবান তার পরীক্ষা নিচ্ছেন তিনি এই পরীক্ষায় কিছুতেই ফেল করবেন না। কিছুতেই না……

মন্তব্য ৩৬ টি রেটিং +১৩/-০

মন্তব্য (৩৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৪:৫৭

ভুয়া মফিজ বলেছেন: গল্পে শিক্ষকদের দূর্দশার বর্ণনার আধিক্য অনেকটা ''বেসরকারী শিক্ষকদের দূর্গতি'' জাতীয় লেখার ফ্লেভার দিলেও গল্প ভালো লাগলো। বিশেষ করে, শেষের দিকের ঘটনা, আর শিক্ষকের উপলব্ধি।
অবশ্য আমি হইলে আগে গুইনা দেখতাম, কতো ট্যাকা......তারপরে সিদ্ধান্ত লইতাম। :P

বানানের ব্যাপারে যত্নবান হওয়া গেয়ানীর লক্ষণ!!!!

পোষ্ট পছন্দ হইছে......তাই লাইক দিলাম। ব্লগে এই কালচারটা প্রতিষ্ঠা করনটা জরুরী। অনেকেই দেহি, পছন্দ হইছে কয়া লাইক দেয় না। আচ্ছা, লাইক বাটনটা তুইলা দিলে কেমন হয়? আপনের মতামত কি এমুন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে? =p~

১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০১

ইসিয়াক বলেছেন: পরের ট্যাকা গুইন্যা কাম নাই :(
আমি কিন্তু আপনার প্রথম মন্তব্য আশা করেছিলা্ম। কেন করেছিলাম জানি না তরে গল্প ভালো হলো কি খারাপ হলো সহজে মতামত পেয়ে যাই্ আপনার সমালোচনা/আলোচনা থেকে।
৥কোন কাজে অজুহাত দেওয়া ঠিক না তবে তাড়াহুড়োতে বানান কিছু ভুল হয়েছে ।এজন্য দুঃখিত।
৥ লাইক বাটন থাকুক অনেকে নতুন ব্লগে লেখে লাইক পেলে তারা উৎসাহ পায়।
ভালো থাকুন।

২| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:১৩

জুন বলেছেন: ভুদেব বাবুর গল্প মন ছুয়ে গেল। মনে হলো আমার চলে যাওয়া আব্বার কথা লিখেছেন । শিক্ষিত স্মার্ট একজন সৎ পুলিশ অফিসার লক্ষ লক্ষ টাকার হাতছানি ঘৃনায় ফিরিয়ে দিয়ে খুব সাধারণ জীবন যাপন করে গেছেন। তবুও অন্যায় অসত্যর কাছে মাথা নোয়ান নি কোনদিন। এর জন্য উপরওয়ালারা বহুবার পানিশমেন্ট ট্রান্সফার করেছে । আমার আব্বার জন্য আমার অনেক গর্ব হয় ইসিয়াক।
গল্পে দ্বিতীয় ভালোলাগা রইলো।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৪

ইসিয়াক বলেছেন: জুন আপু আপনার আব্বার জন্য দোয়া রইলো। আল্লাহ উনার বেহেস্ত নসীব করুণ।
আপনার আব্বার জন্য আমারো অনেক গর্ব হচ্ছে। তিনি দেশের সূর্য সন্তান।
ভালো থাকুন আপু। শুভকামনা।

৩| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:২৫

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: যেভাবে ভুদেব বাবু লোভ সংবরণ করলেন তা প্রশংসনীয়। মানুষের জীবন আটকে থাকে না। এই টাকা ছাড়াও তার সংসার কোনও না কোনোভাবে চলেই যাবে।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৭

ইসিয়াক বলেছেন: ঠিক বলেছেন ভাইয়া। অল্প আয় হোক, কষ্ট হয় হয়তো তবুও দিন চলে যায়। লোভ বরং বিপদ ডেকে আনে। আজ অথবা কাল।

৪| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:২৮

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: ভাল লাগল।
তবে উপদেশ মূলক গল্প ছোট হলেই ভাল।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৯

ইসিয়াক বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ প্রিয় লেখক।
আসলে বর্তমান সমস্যাকে তুলে ধরতে চেয়েছি গল্পের মাধ্যমে। গল্পটি আরো বড় ছিলো কিছুটা বাদ দিয়েছি।

৫| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৫

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এমন সততার গল্প মাঝে মাঝে সংবাদ হয়। পাঠে ভালই লাগে।
কিন্তু যে যুদ্ধে তারা জয়ী হয় তা অনুভব করতে পারে ক'জনে!


৩য় লাইক :)

+++

১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১১

ইসিয়াক বলেছেন: প্রিয় ব্লগার জন্মদিনের শুভেচ্ছা রইলো।
ভালো থাকুন সবসময়।

৬| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি কি লক্ষ্য করেছেন? আমি খেয়াল করেছি- আপনার পদ্যের চেয়ে গদ্য ভালো হয়।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৭

ইসিয়াক বলেছেন: আমার মনে হয় আমার লেখাতে এখনো অনেক সমস্যা আছে ।আমি চেষ্টায় আছি যাতে আরো ভালো লেখা আপনাদের সামনে উপস্থাপন করতে পারি।শুভ সন্ধ্যা

৭| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৮:৪৭

করুণাধারা বলেছেন: এই নষ্ট সমাজে সততা অবলম্বন করাকে বোকামি বলে ভাবা হয়।

গল্পটা বাস্তব জীবনের ছবি। ভালো হয়েছে।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২০

ইসিয়াক বলেছেন: গল্প ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। অনুপ্রাণিত হলাম। শুভকামনা।

৮| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৮:৫৩

নেওয়াজ আলি বলেছেন: সমাজের চলমান বাস্তবতা এইটি

১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২১

ইসিয়াক বলেছেন: ধন্যবাদ মহী । শুভকামনা রইলো।

৯| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:০৭

মনিরা সুলতানা বলেছেন: শিক্ষক রা ই সমাজের বিবেক বলে গণ্য হয়। এমন সব কঠিন বাস্তবতা নিয়েই তাদের চলতে হয়।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৩

ইসিয়াক বলেছেন: সহমত আপু। শুভকামনা রইলো।

১০| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১১:৫০

ঢুকিচেপা বলেছেন: ইসিয়াক ভাই গল্পটা ভালো হয়েছে, সময়োপযোগী।
শিক্ষক শ্রেণী বরাবরই অবহেলিত।
ভুদেব বাবুরা কখনই যথাযথ মূল্যায়ন পান না।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৩৪

ইসিয়াক বলেছেন: গল্প ভালো লেগেছে জেনে অনুপ্রাণিত হলাম। বে-সরকারী শিক্ষক শ্রেনি সত্যি অনেক বেশি অবহেলিত। তাদের দেখার কেউ নেই। অথচ তারা নিরবে নিভৃতে তাদের শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন নিরলসভাবে।
শুভকামনা রইলো।

১১| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ ভোর ৫:৩৫

সোহানী বলেছেন: দেশের হাজার সমস্যার মাঝে বেসরকারী এ শিক্ষকদের সমস্যা খুব পীড়া দেয় আমাকে। একবার তাদের আন্দোলনে পিপার স্প্রে করে পুলিশ। খুব মন খারাপ করে তখন লিখেছিলাম।

বাস্তবতার গল্পে ভালোলাগা।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৪৭

ইসিয়াক বলেছেন: মন্তব্যে ভালো লাগা জানবেন আপু।
ভালো থাকুন সবসময়।

১২| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৮:৪৫

সন্ধ্যা প্রদীপ বলেছেন: গল্প নয় বাস্তবতা!!

১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৪৯

ইসিয়াক বলেছেন: সন্ধ্যা প্রদীপ আপনাকে আমার ব্লগে স্বাগতম।
ভালো থাকুন। শুভকামনা।

১৩| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:২৯

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
যারা সৎ তাদের কষ্ট থাকে। কিন্তু সততা ধরে রাখে। এটাই তাদের অমূল্য সম্পদ।+++

১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:১৮

ইসিয়াক বলেছেন: ঠিক বলেছেন মাইদুল ভাই।
ভালো থাকুন।

১৪| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১:৩৬

রাজীব নুর বলেছেন: বন্ধু আপনি কোথায়? মন্তব্যের উত্তর দিবেন না?

১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:২০

ইসিয়াক বলেছেন: এই তো আমি। আপনি কই?

১৫| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:০৬

কবিতা পড়ার প্রহর বলেছেন: ভূদেব বাবুর জয় হোক।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:২১

ইসিয়াক বলেছেন: ভালো থাকুন। শুভকামনা।

১৬| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৮:৪৯

মা.হাসান বলেছেন: সরকার আশি হাজার কোটি টাকা করোনাকালে সহায়তা দিলো। কে পাইলো কিছুই বুঝলাম না। দেশের পাঁচ হাজারের উপরে কিন্ডারগার্টেন টাইপের স্কুল। ফেব্রুয়ারির বেতন কেউ পেয়েছেন, কেউ কেউ পান নি। এর পর থেকে বেতন বন্ধ। যখন বেতন পেতেন তখনও যে খুব ভালো পাইতেন এমন না। ঢাকায় এরকম স্কুলে আট-দশ হাজার টাকা বেতন। গ্রামে আমার আপন চাচাতো ভাই পান আড়াই হাজার টাকা। ফেব্রুয়ারি থেকে বন্ধ। মাঝে দুই ঈদ গেছে। পত্রিকায় এসেছিলো- ঢাকায় কিছু শিক্ষক আমের মউসুমে আম বিক্রি করে সংসার চালিয়েছিলেন। এখন কি ভাবে চলছে কে জানে। এই পেশায় আসা একটা অপরাধ। একটা চাকু নিয়ে রাস্তায় দাড়ায়ে ছিনতাই করেন, লোকে অনেক বেশি সম্মান দিবে।

২২ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১:০৫

ইসিয়াক বলেছেন: চমৎকার বাস্তবচিত্র তুলে ধরার জন্য অশেষ ভালো লাগা জানবেন প্রিয় ব্লগার।
শুভকামনা রইলো।

১৭| ১৮ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:২৫

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: সেদিনই পড়েছিলাম। গল্পটা আমার অসুস্থ শরীরের বিষণ্ণতাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল। ঠিক করেছিলাম মনের অস্থিরতা কেটে গেলে মন্তব্য করবো। আমাদের তিন জেনারেশন এমনি মাস্টার মহাশয়।
সব জেনেও বলছি, ভালো থাকবেন ইসিয়াক ভাই।

২২ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১:০৯

ইসিয়াক বলেছেন: অসুস্থ শরীরে আমার পোস্ট পড়েছেন। এতো ভালোবাসা আমি রাখবো কোথায় বলুন তো প্রিয় দাদা?
আপনারা তিন জেনারেশন মাস্টার মহাশয় জেনে আপ্লুত হলাম। শ্রদ্ধা রইলো আপনার বাবা ও ঠাকুর’দার জন্য।
শুভকামনা।

# দেরিতে প্রতি মন্তব্যের জন্য দুঃখিত। আসলে কদিন খুব অস্থিরতা যাচ্ছে।

১৮| ২২ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১:২৮

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: মাস্টার মহাশয় পরিবার হওয়াতে আমাদের জীবনটা ছিল অভাব নামক খাদের এক্কেবারে কিনারায়। লোকের হা হুতাশ ছিল আমাদের জন্য বরাদ্দ। অবর্ণনীয় দুর্দশাই ছিল শিক্ষক নামক পেশায় যুক্ত আমাদের পিতৃপুরুষের ঐতিহ্য।রাজ্যে বামফ্রন্ট আসার পর অবশ্য মাস্টার মশাইরা মানুষের স্বীকৃতি পায়।

২৩ শে অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৩

ইসিয়াক বলেছেন: তবু সব সমস্যার সমাধান কি হয়েছে? হয়নি?শুধু স্বীকৃতি দিয়ে জীবন চলে না, সেটা আমার থেকে আপনি ভালো জানেন। আগে তো যা হোক সম্মান পাওয়া যেতো এখন তে সেটুকুও যেতে বসেছে। শুভকামনা প্রিয় দাদা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.