নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যা মানবতা বিরোধী তাই পরিত্যাজ্য মানবের সাধনা হোক মনুষ্যত্ব লাভ।
স্থান খিদিরপুর গ্রামের পুরানো জঙ্গল ঘেরা পোড়া বাড়ি। ঘন বনজঙ্গল আর প্রচন্ড সাপের উপদ্রব তাই লোকজন খুব একটা এখানে আসে না। তবে আজ নিতান্ত বাধ্য হয়েই এখানে অবস্থান করছে একদল উঠতি বয়সী যুবক । তারা পুলিশ ও বিরোধী পক্ষের তাড়া খেয়ে এখানে অবস্থান নিতে বাধ্য হয়েছে। সন্ধ্যা হতে চারপাশে মশার উপদ্রব শুরু হলো সেই সঙ্গে সাপের ভয় তো আছেই। শীত পড়ে গেছে তাই একটু ভরসা কিন্তু এখানে যে এত মশা কে জানতো ? বাধ্য হয়ে গ্লোব (মশার কয়েল) ধরাতে হয়েছে কিন্তু তাতেও কোন কাজ হচ্ছে না। বন জঙ্গলের মধ্যে কি আর গ্লোবে কাজ হয়?
সবাই কম বেশি উশখুশ করছে, ধৈর্য হারাচ্ছে কেউ কেউ কিন্তু মুখ দিয়ে আওয়াজ করার অনুমতি নেই। চড় চাপড় দিয়ে মশা মারলেও শব্দ হবে। অতএব নিঃশব্দে মশককুল তাদের ভোজন পর্ব সম্পন্ন করছে মহানন্দে। মাঝে মাঝে কেউ কেউ তাদের গামছা দিয়ে উড়ো তাড়া করে নিবৃত করার চেষ্ট করছে তাদের। তবে মশককুল তাতে গুনগুন কলরবে তাদের বিরক্তি প্রকাশ করতে দ্বিধা করছে না।
শুধু একটা সংবাদের অপেক্ষা এখানকার সকলে। ইতিবাচক হলে হয়তো এ যাত্রায় রক্ষা পাওয়া যাবে, নয়তো কাঙ্খিত খবরটি যদি নেতিবাচক হয় তবে এলাকা ছাড়তে হবে এক কাপড়ে অনেকগুলো বছরের জন্য। বিকল্প কোন উপায় নেই। মৃত্যু উপত্যকা এখন
এই অঞ্চল ।
অপেক্ষার প্রহর সবসময়ই দীর্ঘ হয়। খবর নিয়ে জমিরের আসার কথা। জমির খানিকটা বোকা আবার গোয়ার ধরনের মানুষ। এ ধরনের মানুষ সাধারণত সাহসী হয় ।সে দায়িত্ব নিয়েছে খবর পৌঁছে দেওয়ার। কিন্তু এশার আযান পড়ে গেছে তবু তার কোন খোঁজ নেই ।
রইস জামালের কাছে এসে ফিসফিস করে জানতে চায়,
-ওস্তাদ ফোন কি চালু করবো? কল দিয়ে দেখতেন কি খবরাখবর?
- না আরেকটু দেখি। তুই চুপ করে থাক।শব্দ করিস না। পাঠানের লোকজন টের পেলে খবর আছে।
আজ ভোটের দিন ছিল। ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন নিয়ে বেশ কদিন ধরে এলাকায় টান টান উত্তেজনা। হুমকি ধামকি, গায়ে হাত তোলা, শ্লীলতাহানি সবকিছু সীমা অতিক্রম করেছে ইতিমধ্যে । ভোটের কেন্দ্রের কাছাকাছি বেশ এক প্রস্হ মারামারি হয়েছে দুপুরের আগে আগে ভোট কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার করা নিয়ে।সেই গন্ডগোলে তিনজন এখন হাসপাতালের বেডে। তার মধ্যে একজনের অবস্থা না- কি আশংকাজনক।কোন পক্ষের লোক হাসপাতালে তা অবশ্য জানা যায় নি । যদিও সরকারী ভাস্যমতে এসব হচ্ছে সাধারণ ঝগড়াঝাটি,এসব আমলে নেওয়ার মত তেমন কিছু না। আর পুলিশ প্রশাসন তাদের কথা পুরাই বাদ।
পুলিশের লোকজন এখন সরাসরি সরকারি নমিনেশন প্রাপ্ত কুখ্যাত মাদক সম্রাট নান্টু পাঠানের তাবেদারী করছে।তার জেরে নান্টু পাঠানের পোষাা পুলিশবাহিনীর দৌড়ানি খেয়ে এলাকা ছাড়া হয়েছে আজহার মোল্লার লোকজন দুপুরের পর পর।তারা এখন খিদিরপুর গ্রামের পুরানো জঙ্গল ঘেরা পোড়া বাড়িতে আর অন্যদিকে ঝামেলা মুক্ত হয়ে দৌদন্ড প্রতাপে এলাকায় রাজত্ব করছে নান্টু পাঠানের লোকজন।যেন তারা এখনই বিপুল ভোটে জয় পেয়ে গেছে।
যেদিন থেকে শোনা গিয়েছিল ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন পেতে চলেছে এলাকার কুখ্যাত মাদক সম্রাট নান্টু পাঠান।চিন্তার রেখা সেদিন থেকে দেখা দিয়েছিল শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন এলাকার মানুষগুলোর মধ্যে।
তারা বিকল্প হিসাবে নির্বিরোধী ভালো মানুষ আজহার মোল্লাকে অনেক কষ্টে বুঝিয়ে ভোটে দাঁড় করিয়েছিলেন।কিন্তু শেষ রক্ষা কি হবে?
কে জিতবে এই লড়াইয়ে ?
ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন প্রাপ্ত মাদক সম্রাট নান্টু পাঠান, না-কি ভালো মানুষ আজহার মোল্লা?
সুদিন কি ফিরবে? নাকি আরও অতল তলে তলিয়ে যাবে সবাই...
একটা ঘোষনার অপেক্ষায় সবাই।
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক
১৭ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৫৫
ইসিয়াক বলেছেন: চাইলেই নিরপেক্ষ থাকা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে। পরিস্থিতি জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠছে।
কি হবে তা ভবিষ্যৎ ই জানে।
তবে ভালো কিছু হোক। মানুষ একটু স্বস্তি পাক এই কামনাই করি।
২| ১৭ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৯:৩৮
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: গল্প সুন্দর হয়ছে।
সুদিন আর ফেরে না
১৭ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১১:০০
ইসিয়াক বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার।
মন্তব্যে ভালো লাগা জানবেন।
শুভ রাত্রি।
৩| ১৭ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৫৫
রাজীব নুর বলেছেন: খিদিরপুর বাংলাদেশে আছে? না কলকাতায়?
যাই হোক, বাংলাদেশে নির্বাচন মানেই টাকার খেলা। এবং অলিখিতভাবে কয়েকজন মারা যাবে। অনেকে আহত হবে। জ্বালাও পোড়াও হবে।
১৭ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১১:০৪
ইসিয়াক বলেছেন: এই নামটা মনে এলো তাই লিখলাম। বাংলাদেশে এই নামে ইউনিয়ন পরিষদ আছে
৪| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:৩২
এস সুলতানা বলেছেন: সুন্দর হয়ছে। পাঠে অনেক ভালো লাগলো। শুভ কামনা সতত।
১৮ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:৩৯
ইসিয়াক বলেছেন:
অনেক অনেক ধন্যবাদ । ভালো থাকুন সবসময়।
শুভ সকাল
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৮:৪৫
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: নির্বাচন নিয়ে এমন তামাশা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকাই মঙ্গলজনক।