নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যা মানবতা বিরোধী তাই পরিত্যাজ্য মানবের সাধনা হোক মনুষ্যত্ব লাভ।
-তোমার গায়ে কি এখনও জ্বর আছে?
মিলির সাথে আমার একদম কথা বলতে ইচ্ছা করছে না।তবুও অনিচ্ছা সত্ত্বেও বললাম
- না মনে হয়,জ্বর নেই। তুমি যেখানে যাচ্ছো যাও। আমার কথা ভাবতে হবে না।
- না মনে হয় মানে কি?
- জানি না।
- নিজের শরীর খারাপ আর নিজেই জানো।এসব কি হচ্ছে অপূর্ব? ছেলেমানুষী করছো কেন?
মিলি আমার কপালে হাত রাখলো। আমি মাথা টেনে নিতে মিলি অপ্রস্তুত হয়ে হাত গুটিয়ে নিলো।
- আমার প্রতি এত ঘৃণা তোমার ?
- মিথ্যা মায়ায় জড়িয়ে কি লাভ?
- আচ্ছা তাহলে উঠি,আমায় যেতে হবে বহুদুর।
-যাও ,যাও । যাবার আগে দয়া করে দরজা টেনে দিয়ে যেও।
মিলি সশব্দে প্রস্থান করলো।
হঠাৎ আমার মন কেমন জানি করছে। কেমন যেন অস্থির অস্থির লাগছে।এরকম হচ্ছে কেন বুঝতে পারছি না।
এরকম তো হবার কথা নয়।যে আমাকে ভালোবাসে না তার জন্য এমন অস্থির হওয়া ঠিক না। খুব দ্রুত শরীর কাঁপিয়ে আবার জ্বরটা ফিরে এলো। আমি শীতে কাঁপছি।
কতক্ষণ হবে জানি না,আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঘুম ভেঙে ই অনুভব করলাম ভীষণ ক্ষুধা পেয়েছে,তবে এখন জ্বর একটু কম।শরীর দূর্বল লাগছে।কিন্তু ক্ষুধার কারনে বাধ্য হয়ে কিচেনে গেলাম।মিলির কথা বারবার মনে আসছে।কেন মনে আসছে জানি না।ওর রান্নার হাত খুব ভালো ছিল। ওর কথা মনে আসা ঠিক না। এতক্ষণে হয়তো ও কানাডা ফেরত এক্স বয়ফেন্ডের হাত ধরে বসে আছে । না মিলির চিন্তা মাথা থেকে তাড়াতে হবে। মাকে কি দিয়ে কি বোঝাবো ভেবে বের হবে। মা ও কি মিলির চলে যাওয়াতে কষ্ট পাবে? পাবে হয়তো।
হাজার হোক তাঁরই পছন্দ করা মেয়ে! শ্রাবনীর সাথে বিয়ে হলে অন্তত ও নিশ্চয় আমায় ছেড়ে ড্যাং ড্যাং নিজের প্রেমিকের কাছে চলে যেত না। মা যে কেন শ্রাবনীকে এত অপছন্দ করতো কে জানে?
আচ্ছা শ্রাবণীকে ডাকলে কি ও আবার আসবে আমার জীবনে?
ফোন বাজছে? কে ফোন দিল আবার? আননোন নাম্বার। ফোন ধরতে ইচ্ছে করছে না। কেটে দিলাম।আবার বাজছে। কি মুশকিল ..ধরলাম।
- হ্যালো কে,কাকে চাই?
- এরকম সম্ভাষণে কেউ ফোন রিসিভ করে?
মিষ্টি একটা কন্ঠ। মিলি!
- ও তুমি ? আবার কি চাই? মুক্তি চেয়েছিলে মুক্তি দিয়েছি। তবে আবার বিরক্ত করা কেন? নিশ্চয় তুমি আমার সাখে তোমার পুরানো প্রেমিকের পরিচয় করিয়ে দিতে ফোন দাও নি? আর এটা কার নাম্বার? তুমি জানো না আমি আননোন নাম্বারের ফোন রিসিভ করি না।
- তুমি এরকম বিহেভ করছো কেন? যাক গে যা বলছিলাম। মিটসেফে খাবার রাখা আছে , খেয়ে নাও। ওষুধ সাইড টেবিলে।
আমি কোন কথা না বলে ফোনটা রেখে দিলাম।মনে মনে একটু স্বস্তি পেলাম যাক এখন আবার খাবার বানাতে হবে না। অবশ্য অনলাইলে অর্ডার করে দিলেও ঝামেলা চুকে যেত। তবে এর মধ্যে কথা আছে বাইরের খাবার আমার খুব একটা সহ্য হয় না। অবশ্য মিলির এই আদিখ্যেতায় আমার গা জ্বলতে লাগলো। বিড়বিড় করে বললাম,
- আবার আসছে দরদ দেখাতে।অত খোঁজের দরকার কি তোর? যা না যা দুরে গিয়া মর!
এদিকে খিদেয় পেট চোঁ চোঁ করছে।এক্ষুনি কিছু না খেলে নয়।
মন না চাইলেও পেটের টানে মিটসেফ খুললাম। ওয়াও! আমার পছন্দের নাস্তা সাজানো রয়েছে সেখানে। তাড়াতাড়ি ডাইনিং এ এসে নাস্তা খেলাম। টাটকা গরম নাস্তা।তবে মুখের অরুচির কারণে বেশি একটা খেতে পারলাম না। মিলি মেয়েটা খারাপ ছিল না। বেশ কেয়ারিং ছিল। তবে নাস্তাটা একটু বেশি গরম নয় কি? মিলি তো অনেকক্ষণ গেছে!
ইশশ! শ্রাবনীটাও যদি এমন হতো।নাহ, এখনই একবার বাইরে বের হতে হবে। শ্রাবণীদের বাসায় যাবো।শ্রাবনীকে জোর করে ধরে আনবো ওর বাসা থেকে।কারও কোন কথাই শুনবো না। মিলিকে ও দেখিয়ে দেবো। আমার জন্য কেউ অপেক্ষা করে থাকে।আমার জন্য কারও মন খারাপ হয়।
কিন্তুু সেই মুহুর্তে মনে পড়ে গেল শ্রাবনী তো এ পৃখিবী ছেড়ে চলে গেছে। তাহলে উপায় ?
আমার জ্বরটা আবার ফিরে আসছে। নাহ! এই শালার জ্বর ভোগাবে মনে হচ্ছে। এক প্রকার বাধ্য হয়ে আমি বিছানায় শুয়ে পড়লাম। সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে কাঁপুনি দিয়ে আবার জ্বর এলো। কতক্ষণ জানি না
এক সময় কার যেন হাতের স্পর্শে চোখ মেললাম।
একি! মিলি!! না-কি ভুল দেখছি।
- ঘুমাও।
কিছুক্ষণ তাকিয়ে শিওর হলাম । হ্যাঁ মিলি, তারপর বললাম
- তোমার বর কই? তাকেও এনেছো না-কি?
-ঘুমাতে বলছি ঘুমাও। ওসব বর টরের চিন্তা বাদ দাও। আমি তোমার সাথে থাকছি।
- থাকছি মানে?
- আমরা আবার একসাথে থাকছি। আগের মত তবে নীরস নয়।এবার একেবারে সরস।যাকে বলে জমিয়ে ক্ষীর হয়ে থাকছি।
- সত্যি!
-হু
-তুমি তাহলে যাও নি?
- তবে শর্ত একটাই।
- কি?
- শ্রাবনীর কথা আর ভাবা যাবে না।যে গেছে সে গেছে।
- আর তুমিও আসিফের কথা....
মিলি মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বলল
ভাবতে পারবো না। ওকে । তবে অন্য কিছু তো করতে পারবো তবে সেটা তোমাকে নিয়ে,বুঝেছো !
মিলি এরপর যা করলো তা সে কোনদিন করে না। সে আমাকে এটে কষে জড়িয়ে ধরলো তারপর.......
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক
২০ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৩৫
ইসিয়াক বলেছেন:
'তবে অন্য কিছু তো করতে' পারবো কথাটা দিয়ে কি বোঝাতে চেয়েছে মিলি?
লাইনটার আরেকটু ব্যাখ্যা যুক্ত করে দিয়েছি। আসলে অনু গল্প তো কিছু কিছু নিজের ভাবনা জুড়ে নিন প্রিয় ব্লগার। আর মিলি তো বাসা থেকে যায় নি .. অপূর্বর নাস্তা করার অংশটি লাইনটা আবার পড়ুন প্লিজ। মনেহয় বিষয়টা ক্লিয়ার হয়ে যাবে।
মন্তব্যে ভালো লাগা জানবেন। শুভকামনা রইলো।
২| ২০ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:২৩
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: গল্প যখন জীবনের আকুলতা তুলে ধরে। ভাবনা এবং কাহিনী বিনির্মাণে লেখকের মুন্সিয়ানা টের পেলাম। চমৎকার।
পোস্টে লাইক।
নিরন্তর শুভেচ্ছা প্রিয় ইসিয়াক ভাইকে।
২৩ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:১৯
ইসিয়াক বলেছেন:
এই মন্তব্যের প্রতি মন্তব্য কি হবে? ভাবছি.. …...
তার আগে শুভেচ্ছা সহ শুভকামনা রইল প্রিয় দাদা।
ভাবছি
৩| ২০ শে নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:৩৫
রাজীব নুর বলেছেন: আপনার গল্প জীবনঘেষা। ভালোলাগে আমার।
২৩ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:১৭
ইসিয়াক বলেছেন: ধন্যবাদ
৪| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪২
প্রত্যাবর্তন@ বলেছেন: জীবন ঘনিষ্ঠ গল্প ভালো লাগ্লো।
২৩ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:১৯
ইসিয়াক বলেছেন: কৃতজ্ঞতা রইলো।
ভালো থাকুন।
৫| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫৫
নাহল তরকারি বলেছেন: ভাই, বিয়া না করলেই ভালো। সন্দেহ করে মাথা কে হ্যাং কম করা যায়।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫৯
ইসিয়াক বলেছেন: হা হা হা ভাই দিল্লিকা লাড্ডু খাইলেও পস্তাতে হবে না খাইলেও পস্তাতে হবে কি আর করা। খেয়ে পস্তানো ভালো।
ভাই, ভাবিরে আমার সালাম দিয়েন। সুখী হোক আপনাদের নতুন জীবন।
শুভ কামনা সব সময়।
৬| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৫
নাহল তরকারি বলেছেন: ভাই, ভাবী ছেড়ে দিয়ে আবার ব্যাচেলার লাইফ enjoy করতে মনে চায়।
১১ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১১
ইসিয়াক বলেছেন:
প্রিয় ইমরোজ ভাই,
বিয়ে যখন করেছেন একটু মানিয়ে চলুন। সামনে ইনশাআল্লাহ ভালো কিছু হবে।
শুভ কামনা রইলো।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:২৮
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: 'তবে অন্য কিছু তো করতে' পারবো কথাটা দিয়ে কি বোঝাতে চেয়েছে মিলি?
মিলি ঈর্ষা পরায়ন। মৃত বান্ধবীর কথা নায়কের মনে এলে মিলির এত আপত্তি করা ঠিক না। এত সহজে এক্স বয় ফ্রেন্ডকে সে কেন ছেড়ে দিল সেটা পরিষ্কার না। পরবর্তীতে সে আবারও ঐ মুখি হবে না এটা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।