নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেই রকম পৃথিবীর স্বপ্ন দেখি যেখানে সবাইকে সমান দৃষ্টিতে দেখা হবে। যেখানে থাকবে না কোন পাপ পঙ্কিলতা।

ইসিয়াক

সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপর নাই।

ইসিয়াক › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ মুখান্নাস

০২ রা জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:২৩

গল্পঃ মুখান্নাস ১ম পর্ব
গল্পঃ মুখান্নাস ২য় পর্ব







(৩)
তীব্র গ্লানিতে পর্যুদস্ত আমার মন । বারবার কেবলই মনে হতে লাগলো এমন কেন আমার জীবনটা? কি কারণে আমার সাথে সবাই এমন নোংরা আচরণ করে? এখানে কি আমার কোন ভুল আছে? যতদুর জানি আমার তো কোন দোষ নেই। ছোটবেলা থেকেই আমি কোন অন্যায় করতে শিখি নি,তেমন কোন পাপ কাজে জড়াই নি তবে কেন সবাই আমার সাথে এমন করে? এত নোংরা কেন মানুষগুলো?আচ্ছা এই পৃথিবীতে বেশিভাগ মানুষের মাথায় কি সবসময় নোংরা ভাবনা চিন্তা ঘোরাফেরা করে? আমার এসব একদমই ভালো লাগে না। একদম না। এর থেকে মুক্তি পাবার কি কোন উপায় নেই ? কাউকে কষ্ট দিয়ে নিজে আনন্দ পাওয়া এটা কি অন্যায় নয়? নোংরামি নয়?
আচ্ছা গতরাতের ঘটনার পরে কি আমার মরে যাওয়া উচিত? রাগে দুঃখে লজ্জায় আমার গা ঘিনঘিন করছে সেই থেকে। নিজের অসহায়ত্বের কারণে মরে যাবার ইচ্ছেটা ফিরে আসছে বারবার। আমি কি করে মুখ দেখাবো ? ওরা নিশ্চয়ই আবার হাসি ঠাট্টা শুরু করবে তারপর সুযোগ পেলে আবারও ওরা আমাকে! ছিঃ!!
না, না আমি কেন মরবো? আমি মরবো না। ওরা মরুক ওই কুকুরগুলো মরুক,দুর হোক, দুর হোক। যারা অসভ্য নোংরা মানসিকভাবে অসুস্থ তারা নরকে যাক। নিজেকে স্বান্তনা দিলাম আমি।
কিন্তু পরক্ষণেই নিজের শরীরের দিকে তাকিয়ে আবার আমার ঘৃণা হতে লাগলো। সারা শরীর হিংস্র হায়েনার থাবায় ক্ষত বিক্ষত। আচড় আর কামড়ের দাগ যা থেকে শিরশির যন্ত্রণার অনুভূতি হচ্ছে। আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে । সম্পূর্ণ শরীরজুড়ে সীমাহীন ব্যথা। গতকাল রাতের কথা মনে হতেই গা ঘিনঘিন ভাবটা ফিরে আসছে ।সেই সাথে শরীরের নিচের দিকে প্রচন্ড ব্যথার চাপ।হঠাৎ সহনশীল অবস্থা থেকে যন্ত্রণাটা তীব্রভাবে ফিরে আসতেই আর সহ্য করতে না পেরে
উফ! মাগো বলে একটা চিৎকার দিলাম ।আসলে আমি শারিরীক ও মানসিক ভাবেও প্রচন্ডভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। আমাকে এখান থেকে চলে যেতে হবে,পালাতে হবে কিন্তু কিভাবে এই নরকপুরি থেকে বের হবো জানি না।ওরা যে ভিডিও করেছে! করুক!
যা হয় হবে আমাকে এখান থেকে পালাতে হবে। এই কুৎসিত মানুষগুলো থেকে আমাকে অনেক দুরে চলে যেতে হবে।আমাকে এরা হয়তো সহজে ছাড়বে না এরা আমাকে মেরে ফেলতেও পারে । এই পশুগুলোকে কোন বিশ্বাস নেই।
আমি ঠিক করলাম আমি চুপ করে থাকবো না মালিককে জানাবো। এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করবো। দেখি তারপর কি হয়, মনের মধ্যে জিদ চেপে গেল।
কিছুটা বাদে ভোরের আযান দিতেই গোসলখানার দরজা ধরে উঠতে গেলাম আমি কিন্তু হঠাৎ আমার মাথা ঘুরে উঠলো। মনে হচ্ছে আমি অতলে তলিয়ে যাবো।এমন লাগছে কেন আমার? কেউ কি এসে আমার হাতটা একটু ধরবে? যন্ত্রণায় মনে হচ্ছে আমি জ্ঞান হারাবো.....
সম্ভবত অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলাম। কতক্ষণ অজ্ঞান হয়ে ছিলাম বলতে পারবো না। চোখে মুখে পানির ঝাপটা পড়তে আমি চোখ মেলে তাকালাম।
দেখলাম কয়েকটি অচেনা উদ্বিগ্ন মুখ আমার পানে ব্যকুল হয়ে চেয়ে আছে। বিষ্ময়ে আমি চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে তাদের দেখতে লাগলাম। নাহ এদের তো আমি কোনদিনও দেখিনি।এদের তো আমি চিনিও না। এরা কারা? বদমাশগুলোকে তো দেখছি না,ওরা কোথায়?
আর আমিও বা এখানে এলাম কেমন করে? এটা কোন জায়গা? হাজারটা প্রশ্ন জাগলো আমার মনে। আমি বিছানা থেকে উঠতে চেষ্টা করলাম। কেউ একজন জিজ্ঞাসা করল,
-এখন কি একটু ভালো লাগছে?
আমার কথা বলতে একটুও ইচ্ছে করছিল না।আমি মুখে কিছু না বলে মাথা নাড়লাম শুধু।
- কিছু খাবে?
- পানি।
কে একজন আমার জন্য এক গ্লাস দুধ নিয়ে এলো।
বলল,
- এটা খেয়ে নাও। এটা খেয়ে নিতে বলেছে।ভালো লাগবে।
আমি মাথা নাড়লাম। বোঝালাম খাবো না। অচেনা মানুষটি বলল
- এটা না খেলে পানি খেতে দেবো না। সোজা একবারে খেয়ে নাও। ভালো লাগবে।
বিরক্ত হলেও চুমুক দিয়ে কিছুটা খেলাম।
একটু ধাতস্থ হয়ে বললাম,
- আমি কোথায়?
- কোথায় মানে?
- এটা কাদের বাসা?
একটা হাসির রোল উঠলো সাথে হাততালি। এদের আচরণগুলো অদ্ভুত।
কে একজন বলল,
- এটা তোমার নিজের বাসা গো নিজের বাসা। আমরা সবাই তোমার....... আবার হাসির কলরব উঠলো।
কথা ও হাসি আমার কাছে হেঁয়ালি মনে হলেও এদের আন্তরিকতা আমার হৃদয় স্পর্শ করলো।কিছুক্ষনের মধ্যে গলায় স্টেথোস্কোপ ঝুলিয়ে একজন ডাক্তার এলো। স্টেথোস্কোপ না থাকলে লোকটিকে ডাক্তার বলা যেতো কি- না সন্দেহ। তার পোষাক বেশ মলিন। মাথার চুলগুলো অগোছালো, আয়া লম্বা লম্বা।
ডাক্তারের পেছন পেছন জমকালো সাজে এক অদ্ভুত দর্শন রমনী প্রবেশ করলো ঘরে। তাকে দেখে ঘরের সবাই হাসি ঠাট্টা গল্প থামিয়ে দিল। সবাই একপাশে সরে দাড়ালো।
মহিলাটি উচ্চ কন্ঠ বলল,
- কি রসিয়া নাগর দুধ টুকু খেয়েছো তো।
আমার কেন জানি মনে হচ্ছে আমি কি স্বপ্ন দেখছি। নিজেকে শরীরে নিজে চিমটি কাটলাম।
দুঃখিত এই গল্পটি এখানেই স্থগিত করলাম। আপাতত আর নতুন পর্ব পোস্ট দিবো না কিছু ব্যক্তিগত ব্যস্ততার জন্য ।
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:১৭

শেরজা তপন বলেছেন: ভালই এগুচ্ছে।

প্রথম পর্ব এখনো পড়া হয়নি :(

২| ০২ রা জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:১৪

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
এই পর্বটা দ্রুতই শেষ হয়ে গেলো।

৩| ০২ রা জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:১৯

জুল ভার্ন বলেছেন: তৃতীয় পর্বও আগের দুই পর্বের মতো সাবলীল গতিতে এগুচ্ছে....... শুভ কামনা।

৪| ০২ রা জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:১৪

কাছের-মানুষ বলেছেন: চলতে থাকুক গল্প সাবলীলভাবে। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

৫| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:৩৮

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: নাহা! খুশি হতে পারলাম না। বেশি কিছু বলবো না।

৬| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:১২

অপু তানভীর বলেছেন: হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গেল কেন ! গল্প চলছিলো চমৎকার । তবে আশা করি যে সমস্যা কাটিয়ে উঠলে আবার পরের পর্ব আসবে !

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:১৭

ইসিয়াক বলেছেন: প্রিয় ব্লগার গল্পটা আমি শেষ করবো অবশ্যই। গল্পটার জন্য কিছু তথ্য সংগ্রহ করছি।
শুভ কামনা রইলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.