নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হতাশাগ্রস্ত মানুষের কদর্যতাই একমাত্র অস্ত্র।

ইসিয়াক

যা মানবতা বিরোধী তাই পরিত্যাজ্য মানবের সাধনা হোক মনুষ্যত্ব লাভ।

ইসিয়াক › বিস্তারিত পোস্টঃ

যাপিত জীবন -১

২২ শে মার্চ, ২০২২ রাত ১১:২৫


চিরকাল বই পত্রিকা কেনা আমার নেশা কিন্তু এখন কথা হলো আমার আয় আবার তত বেশি না যাতে বই পত্র পত্রিকা নিয়মিত কেনা চলে।
গত দুবছর আমার মায়ের রেখে যাওয়া জমানো টাকায় হাত পড়েছে করোনার দূর্যোগের কারণে।টিউশনি পৌঁছেছিল প্রায় শূন্যের কোটায়।
যে স্কুল আমি চাকরি করি তাও প্রায় বন্ধ হয়ে যাবার জোগাড় হয়েছিল কয়েকবার তবু আমরা কয়েকজন শিক্ষক মিলে প্রায় বিনা বেতনে স্কুলটাকে চালিয়ে নিয়ে গেছি করোনার মধ্যেও।এখনও তা মোটামুটি চলছে বলা যায় ভালো ই চলছে যদিও বেতন বাড়েনি বা আগের বেতনও ফিরে আসে নি এখন। যাহোক ধান ভানতে গিয়ে শিবের গীত গেয়ে লাভ নেই।

মাসের প্রথম তার উপর বইমেলা চলছে কিছু বই কিনতে ই হবে। টিউশনির টাকা পেয়ে অর্ডার দিয়ে দিলাম কিছু বইয়ের ।
কয়েক দিনের মধ্যে টিউশনির সব টাকা কালেকশন শেষে সংসার খরচের টাকা আলাদা রেখে বাটা শোরুমে উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম কারণ পায়ের চটি জোড়া সত্যি আর পরবার মত নেই। ডান পায়েরটা প্রায় ফেটে দুভাগ হবার জোগাড়। হাটবার সময় পা টেনে টেনে হাঁটতে হয়।অনেকে ভাবে আমার পায়ে বুঝি ব্যথা। এটা সেটা জিজ্ঞেস করে আমি মুচকি হেসে এড়িয়ে যাই।

যাহোক আমি হাঁটছি নানা রকম ভাবনা ভাবতে ভাবতে হঠাৎ দেখি বাটার শো রুম ছাড়িয়ে পুরানো বইয়ের দোকানের দিকে চলে এসেছি।ফিরবো এমন সময় সামনে কিছু বইয়ের দিকে চোখ আটকে গেল।
আহ! কতদিন ধরে তো আমি এই বইগুলোই খুঁজছি। কি আশ্চর্য।
এ যে মেঘ না চাইতেই জল!
আজকাল মনের মত বই পাওয়া যায় না সহজে। এক হিসাবে বলা চলে বই পড়ার পাঠ প্রায় উঠে ই গেছে তাই বইয়ের দোকানও সব একে একে গুটিয়ে গেছে। কে আর সেধে সেধে দিনের পর দিন লস করবে?
এই বইগুলো বেশ দূর্লভ। নাহ হাতছাড়া করা ঠিক হবে না।মনে মনে ভাবলাম। চটি পরে কেনা যাবে।
ঝটপট বইগুলো উলটে পালটে দেখলাম। দরদাম করে কিনেও নিলাম অল্প সময়ের ব্যবধানে।
কিন্তু চটির কি হবে? হাতে তো এখন একশ টাকা মোটে। আর পায়ের চটিও হঠাৎ দুখণ্ড হয়ে গেল এ সময়। মর জ্বালা!
অগত্যা খালি পায়ে হেঁটে হেঁটে ফুটপাতে কমদামি জুতোর দোকান দেখে দামদর করতে থাকি। জানি একশ টাকায় কোন চটি হয় না।
হঠাৎ একখানা রিজেক্ট চামড়ার চটি পেয়ে গেলাম সৌভাগ্যক্রমে। নিয়ে নিলাম একশ টাকায় যদিও দুইশত টাকা চেয়েছিল। আমার সাজপোশাক দেখে মনে হয় দোকানির দয়া হলো। আমি করুন চোখে চাহনি দিয়ে বললাম
- ভাই এছাড়া আমার কাছে আর টাকা নাই।
যাহোক দোকানির দাম চুকিয়ে চটি জোড়া পায়ে দিয়ে দেখি বেশ আরাম দায়ক।তবে একটু সমস্যা হল ভিতরে দিকে বেশ কিছু হাবিজাবি দাগ আছে। অবশ্য পায়ে থাকলে কেউ বুঝতে ই পারবে না যে আমার পায়ে রিজেক্ট জুতা।
ইয়াহু কি মজা!
আমার পছন্দের বইও কেনা হলো আবার চটির সমস্যাও মিটলো।
দখিনা বাতাস ছেড়েছে। আবহাওয়াও ফুরফুরে। গান গাইতে ইচ্ছে করছে....
"আহা আজি এ বসন্তে কত ফুল ফোঁটে কত পাখি গায়।".....
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে মার্চ, ২০২২ রাত ১১:৫৪

জটিল ভাই বলেছেন:
চটি বই =p~ কেনার কাহীণি যতোটা বিমোহিত করেছে, আপনার অবস্থা জেনে তারচেয়ে বেশি আহত হয়েছি :(

২৫ শে মার্চ, ২০২২ রাত ৯:২৪

ইসিয়াক বলেছেন: হা হা হা..... আমি তো এমনই। আমার মত। আমি আসলে বাচ্চাদের পড়াতে তাদের সাথে সময় কাটাতে ভীষণ ভালোবাসি। তাই এই পেশাতে রয়ে গেছি। আর আমার চাহিদা বরাবরই কম তাই মানিয়ে নিতে সমস্যা হয় না। নিশ্চিত জীবন। ভাবনা নেই। বিন্দাস আছি।

ধন্যবাদ প্রিয় ভাই।

২| ২৩ শে মার্চ, ২০২২ রাত ৩:৪১

কালো যাদুকর বলেছেন: আপনার জীবন যাপনে কষ্ট পেলাম ৷ আশা করছি দ্রুত একটা ভাল অবস্থানে আসবেন ৷ বাংলাদেশে আমার পরিচিত অনেকে এমন দুভোগ করছে। যদিও করোনার আগে তাঁরা ভালই ছিলেন।

২৫ শে মার্চ, ২০২২ রাত ৯:২৫

ইসিয়াক বলেছেন: মন্তব্যে ভালো লাগা জানবেন প্রিয় ভাই।
শুভকামনা সতত।

৩| ২৩ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ৯:৩৫

আহমেদ জী এস বলেছেন: ইসিয়াক,



জনারণ্যে জনে জনের কাহিনী। জীবনটা অমনই! এর পরেও বেঁচে থাকতে জানলে, সুখ আছে। প্রার্থনা, সে সুখ যেন আপনার অনায়াস হয়। দিনভর যেন গাইতে পারেন -- আহা আজি এ বসন্তে............

জটিল ভাই সুন্দর মন্তব্য করেছেন। তা কি বই কিনলেন ?

২৭ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ১২:২০

ইসিয়াক বলেছেন: এরপরেও বেঁচে থাকতে জানলে, সুখ আছে ---- এটাই আসল কথা। আর আমি এভাবেই থাকতে চাই প্রিয় ব্লগার।
মন্তব্যে ভালো লাগা জানবেন। শুভকামনা রইলো।

# বইয়ের নাম বিদ্যাসাগর রচনাবলী (অখণ্ড)

৪| ২৩ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ৯:৫৫

জুল ভার্ন বলেছেন: মনোবেদনার কাব্য![/sbা-ইসিয়াক, আপনার জন্য শুভ কামনা।

আমার প্রিয় লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী বলেছিলেন- "বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয়না"- এই কথা আমার বেলায় প্রযোজ্য নয়। আমি বই কিনে দেউলিয়া নয়া হলেও বই রাখার যায়গা সংকুলান করতে পারছিনা!

২৭ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ১২:২১

ইসিয়াক বলেছেন: আপনার জন্যও শুভকামনা রইলো প্রিয় ব্লগার।
ভালো থাকুন সবসময়।

৫| ২৩ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ১১:২৬

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
সুসময় আসবে এই আশায় জীবনের অনেকটা পথ পাড়ি দেই আমরা।
যাক আপনার বই ও জুতো দুটির চাহিদা মিটেছে জেনে ভাললাগলো।

সুখ ও স্বচ্ছলতা আসুক এই কামনা।

২৭ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ১২:২২

ইসিয়াক বলেছেন: ভালো থাকবেন প্রিয় মাইদুল ভাই।

শুভকামনা সবসময়।

৬| ২৩ শে মার্চ, ২০২২ বিকাল ৫:২৪

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: সময়ের সাথে সাথে সবকিছু কঠিন হয়ে যাচ্ছে

২৭ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ১২:২৩

ইসিয়াক বলেছেন: আর এভাবেই চলতে হবে। চলুক... ভালো থাকাটাই বড় কথা।

৭| ২৩ শে মার্চ, ২০২২ রাত ৯:১৩

গেঁয়ো ভূত বলেছেন: আপনার জন্য ভালোবাসা ও শুভকামনা, কোনো সমস্যাই স্থায়ী নয়, দিনের পর রাত, রাত এর পর দিন এটা প্রকৃতিরই নিয়ম, আমাদের প্রায় সবাইকেই জীবনে কোনো না কোনো সময় অনেক জটিল সময় নিশ্চয় পার করতে হয়েছে, তবে এই নশ্বর পৃথিবীতে কোনো কিছুই স্থায়ী না, যেমন স্থায়ীনা আমাদের সুখ-দুঃখ-কষ্টগুলো,
আবারও শুভকামনা,
ভালো থাকবেন ।

২৭ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ১২:৩৩

ইসিয়াক বলেছেন: এমনিতেই আমি অনেক ভালো আছি প্রিয় ব্লগার।

নিজের যা আছে তাতেই সন্তুষ্ট। চলছে এভাবে। ভালো বেশ ভালো। মনে শান্তি আছে এতেই আমি সুখী।
আপনার জন্য ও শুভকামনা রইলো।
ভালো থাকুন সবসময়।

৮| ২৮ শে মার্চ, ২০২২ বিকাল ৪:১২

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আল্লাহ সহায় হোন। শুভকামনা সব সময়। আল্লাহ ভরসা

২৮ শে মার্চ, ২০২২ রাত ১১:৪৬

ইসিয়াক বলেছেন: অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা রইলো আপু।
শুভকামনা সতত।

৯| ২৭ শে মে, ২০২২ সকাল ১১:৫০

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: কয়েকদিন আগে আমি একটা ছেড়া স্যান্ডেল পড়ে মার্কেটে গিয়েছিলাম। রাস্তার মধ্যেই মাঝখান থেকে দুই টুকরা হয়ে গিয়েছিলো। তাড়াতাড়ি কোন রকমে কাছের বাটার দোকানে ঢুকে এক জোড়া স্যান্ডেল কিনতে বাধ্য হলাম। আশেপাশের মানুষ মনে হয় আমার এই দৃশ্য দেখে হেসেছে।

ক্লাস নাইনে যখন পড়ি তখন যশোরের কোর্ট বিল্ডিং এর কাছ থেকে বই ভাড়া করে বাসায় নিয়ে আসতাম। বইগুলির বেশীরভাগই ছিল প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য।

২৭ শে মে, ২০২২ বিকাল ৩:২৩

ইসিয়াক বলেছেন: মানুষের জীবন তো এমনই ভালো মন্দ মিশিয়ে , লোকে কি বলল সে সব নিয়ে আমি কখনও চিন্তিত হই না যদি না কোন অন্যায় থাকে তাতে। আমি সব সময় আমার জীবন আমার অবস্থান নিয়ে দারুণ সুখী। আসলে আমি এমন জীবন ই চেয়েছি, আমি স্বেচ্ছায় রাজকীয় জীবন ছেড়েছি আমার ভালো লাগাকে প্রাধান্য দেবো বলে। পড়া এবং লেখা আমার কাছে নেশার মত। ব্যক্তিগত জীবনে আমার চাহিদা অনেক কম। একটাই তো জীবন নিজের মত করেই কাটাতে চাই।
# চুড়ামণকাঠি থেকে কোর্টের সামনে বই নিতে আসতেন! বেশ লম্বা পথ। আপনি পড়ুয়া সেটা বোঝাই যাচ্ছে। দোকানটা এখনও আছে তবে এখন আর বই ভাড়া দেয় না।ঢাকা থেকে যশোরে এলে আমি সেবার নতুন বইয়ের খোঁজ এখান থেকে নিতে আসতাম,সংগ্রহও করতাম। এরা আনন্দবাজার পত্রিকার সব পত্রিকা তখনও বেচতো এখনও বেঁচে। বয়স্ক লোকটিকে আর দেখি না সম্ভবত মারা গেছে। সময়ে কত কিছু বদলে যায়।
শুভকামনা রইল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.