নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশ পাকিস্তানের বিপক্ষে জেতার রাতে ঘুমাতে গেছি প্রায় শেষ রাতে।
ব্যাপারটা এরকম না যে খুব আনন্দ-উচ্ছ্বাস করেছি। আসলে ঘুম আসছিলোনা। দল জেতার পর ধুম করে একটা স্ট্যাটাস লিখে ফেলেছিলাম, ’একটা জয়ে সোজা ফাইনাল/ নাচছে ষোলকোটি/ ও দাদাগো দা, কাল কী অফিস ছুটি?’ ভাবলাম স্ট্যটাসটা ‘দাদা’র চোখে পড়বে আর টেক্সটস পাঠাবেন, ‘এনজয়’! ঘটনা ওরকম হয়নাই।
ফেসবুকে ঘাপটি মেরে বসে ছিলাম। কিছুক্ষণ পরপর অামার মোবাইলের স্ক্রিণে বাতি জ্বলে, আর সঙ্গে সঙ্গে বউয়ের ঝাড়ি খাই ‘তুমি কী লাইটা অফ করবা?’ কিন্তু আমার কী দোষ? ঘুম যে আসছিল না? উত্তেজনাটা চূড়ান্ত লেভেলে উঠে গেছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অসংখ্য মানুষের উচ্ছ্বাসভরা পোস্ট! ‘আরেকটু হলে আমার দম বন্ধ হয়ে যেত।’ একজন লিখেছেন, ‘কী ব্যাপার চোখে পানি আসে ক্যান?’ তার চোখে পানি আসার খবরে আমারো চোখ ভরে আসছিলো কেবল। গোটা ফেসবুকজুড়ে দেশের জন্য একরাশ ভালবাসা!
১৭ তম ওভারে এক ভদ্রলোক নাকি গ্যালারির উপরের মাথায় উঠে সিগারেটটায় একটামাত্র টান দিয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে আরেকজন এসে হাজির। ‘ভাই একটা টান দিতে দেন। আপনার পায়ে পড়ি। নাইলে দম বন্ধ হয়ে মারা যাবো।’
সঙ্গে মনে পড়ছিল গর্জে ওঠা, উচ্ছ্বাসে, চিৎকারে, সমর্থনে গোটা গ্যালারি ভরা মানুষ! স্ট্যাম্পের উপর দিয়ে চলে যাওয়া যে বলটায় মুশফিককে আউট দিয়ে দিলো, সঙ্গে সঙ্গে গ্যালারিতে একজনের প্রতিক্রিয়া, ‘কী আউট দিয়া দিছে?’ মুখভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছিল এক্ষণি পারলে আম্পায়ারকে মেরে দিয়ে আসে..
ভিক্টোরিয়া কলেজে ইন্টারমেডিয়েটে পড়ি। টিচার ক্লাসে জিজ্ঞেস করছেন কে কোন দল সাপোর্ট করে। প্রায় সবাই ইন্ডিয়া, না হলে পাকিস্তান। দুই দশকেরও কম সময়ে একটা খেলা আমাদেরকে গর্বিত করার উপলক্ষ্য দাঁড় করিয়ে দিলো। আমরা সমর্থন করার দল পেয়ে গেছি। আমরা চোখ বন্ধ করে প্রিয় দেশকে সমর্থন করে হাড়ি-পাতিল-কলসি নিয়ে খেলা দেখতে বসি। গলা ফাটাই। পরের দিন সারা দেশের সর্বত্র সব কথা শুধু ক্রিকেট নিয়ে হয়। কে ভেবেছিল?
ফেসবুকে নতুন একটা স্টাটাস দেখলাম। সবাই দিচ্ছে। ‘বাংলাদেশ এশিয়া কাপ জিতলে...’ একজন লিখেছে আমি আরো একটা প্রেম করুম। আরেকজনের স্ট্যাটাস দেখলাম, যারে ক্র্যাশ খাইছি, তারে বইলা ফেলমু, ওর আঙুল ধরে গোটা শহরে হাঁটতে চাই, ইত্যাদি ইত্যাদি!
অামরা কী আনন্দবাজারকে দেয়া মাশরাফির সাক্ষাৎকারটা পড়েছি? ক্যাপ্টেন কিন্তু আমাদেরকে অনেক কিছু করার মন্ত্র দিয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, দেশটাকে ভালবাসতে। মুক্তিযোদ্ধারাই আমাদের সত্যিকারের হিরো। অন্য খেলার খেলোয়াড়রাও যাতে পিছিয়ে না থাকে...মাশরাফি ছেলেটার দম আছে।
আমার কাছে মনে হয়, এটা একটা দারূণ সুযোগ প্রতিজ্ঞা করার। নিজের কাছে। বাংলাদেশ এশিয়া কাপ জিতলে, আমি এই দেশটাকে আরো বেশি ভালবাসবো। দালাল-হত্যকারি-শিশু নির্যানতনকারীদের রুখে দাঁড়াবো। আমার পরিবারের কেউ শিশুদের উপর নির্যাতন করবেনা। অামি নিজে কখনো ঘুষ খাবোনা, কাউকে ঘুষ দিবোনা। রাস্তায় ময়লা ছুঁড়ে ফেলবেনা। প্রতি মাসে একটা করে বই পড়বো...আরো কত কী!
কী খুব সিরিয়াস হয়ে গেল ব্যাপারটা?
বাংলাদেশ এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলছে, ১১ টা ছেলে জানপ্রাণ দিয়ে লড়ছে, আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাচ্ছি - এসব কী খুব সিরিয়াস ঘটনা নয়?
এখন শুধু অপেক্ষা জেতার আর প্রতিজ্ঞা পূরণের!
০৫ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:৪৮
রাজু নূরুল বলেছেন: ইয়েস! জয় ছাড়া আর কোন ভাবনা নেই!
২| ০৫ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:৫২
পুলহ বলেছেন: "...আমার কাছে মনে হয়, এটা একটা দারূণ সুযোগ প্রতিজ্ঞা করার। নিজের কাছে। বাংলাদেশ এশিয়া কাপ জিতলে, আমি এই দেশটাকে আরো বেশি ভালবাসবো। দালাল-হত্যকারি-শিশু নির্যানতনকারীদের রুখে দাঁড়াবো। আমার পরিবারের কেউ শিশুদের উপর নির্যাতন করবেনা। অামি নিজে কখনো ঘুষ খাবোনা, কাউকে ঘুষ দিবোনা। রাস্তায় ময়লা ছুঁড়ে ফেলবেনা। প্রতি মাসে একটা করে বই পড়বো...আরো কত কী!
কী খুব সিরিয়াস হয়ে গেল ব্যাপারটা?
বাংলাদেশ এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলছে, ১১ টা ছেলে জানপ্রাণ দিয়ে লড়ছে, আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাচ্ছি - এসব কী খুব সিরিয়াস ঘটনা নয়?
এখন শুধু অপেক্ষা জেতার আর প্রতিজ্ঞা পূরণের!"-- শ্রদ্ধা করার মত আপনার চিন্তাধারা! আমার আন্তরিক শুভকামনা জানবেন
০৫ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:৫৬
রাজু নূরুল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। অনুপ্রাণিত!
৩| ০৫ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:২১
অগ্নি কল্লোল বলেছেন: জয় আমাদের হবেই।।
৪| ০৫ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:২৬
কুয়াশা অথবা আমি বলেছেন: খুব দারুন আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবো আমরা এই ম্যাচ জিতে গেলে।
০৫ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৮:২৭
রাজু নূরুল বলেছেন: আসলেই! এটা আমাদের জন্য অন্যরকম একটা ব্যাপার হবে। নি:সন্দেহে
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:৪০
বিজন রয় বলেছেন: এই জয়টি চাই।
আমি অন্য কিছু ভাবছি না।