নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Ranaism's Blog

Ask Me.....(www.facebook.com/ranadebnath92)

রানাইজম

স্রোতের বিপরীতে একজন । গান শুনতে, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে রাত করে বাসায় ফিরতে, মায়ের বকা খেতে, সারাদিন মোবাইল, ট্যাবলেট আর পিসি নিয়ে পড়ে থাকতে ভালবাসি ।

রানাইজম › বিস্তারিত পোস্টঃ

যাহা বলিব সত্য বলিব

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৪

আমার জীবনের কিছু অপ্রিয় সত্য আজি প্রকাশ করিবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিলাম।

১. ক্লাস টু। পরপর ১ম ও ২য় সাময়িক পরীক্ষায় ১ম স্থান অধিকার করিবার পর একরকম ধারণায় হইয়া গেল যে ওই ১ম স্থানখানা আমার রেজিস্ট্রিকৃত হইয়া গেছে যাহার দরুন যখনই বার্ষিক পরীক্ষায় সিংহাসনচূত হইলাম তাহা আমার নিকট অতিশয় অনভিপ্রেত বলিয়া বিবেচিত হইল। আর এদিকে দিবারাত্রি আম্মিজান আর আব্বাজানের “অন্ন অপচয় করিতেছ”- টাইপের ঠেসগুঁতা খাইতে খাইতে মাথায় রক্ত চড়িতেছিল। আমার যত রোশ গিয়া পড়িল ১ম স্থান অধিকারকারী নিরীহ বালক জনাব পিয়াসের উপরে। মনে মনে ঠিক করিলাম আমাকে সিংহাসনচূত করার প্রতিশোধ লইব। বলাই বাহুল্য, আমার এই রুগ্ন তনু লইয়া তাহার হস্তিসদৃশ আকৃতির সহিত কিছুতেই পারিয়া উঠিব না। অতপরঃ তাহার সহিত সম্মুখ যুদ্ধে লিপ্ত হইবার চিন্তা ত্যাগ করিলাম। মাথা খাটাইলাম। তাহার কানের পিছনে ঘাড়ে একখানা মস্ত আকৃতির আঁচিল ছিল। আমি আমার অন্য এক সহপাঠীকে অতিশয় গোপনে সেটি দেখাইয়া বলিলাম যে যদি ওই আঁচিলখানা বেচারা জনাব পিয়াসকে বড়ই বেদনা দিতেছে। জনাব পিয়াস নিজে ভয়ে সেটি গালিতে পারিতেছে না। সে যদি তাহাকে সাহায্য করে তবে জনাব পিয়াসের বড়ই উপকার হয়।

সে আর দেরি করিলনা। পাছে ফার্স্টবয় মন জয়ের সুযোগ অন্য কেউ লইয়া ফেলে-এই ভাবিয়া সে তখনই গিয়া জনাব পিয়াসের মাথার পিছনে শার্টের কলারের উপর হইতে উঁকি দেয়া কালো আঁচিলখানা সর্বশক্তি দিয়া দুই হস্তে টিপিয়া গালিয়া দিল। জনাব পিয়াসের তখন প্রান যায় যায়। সাদা শার্টখানা তখনই রক্তে ভিজিয়া গেল। আর আমি মুখ টিপিয়া হাসিতেছি। ওই দিন আমার বন্ধুপ্রতীম ওই সহপাটির পিঠে শিক্ষক মহোদয়গণ আদর করিয়া দিয়াছিলেন। বেচারা ফার্স্টবয় এর মন জয় করার জন্য এ কাজটি করিয়াছে-এই কথাখানা লজ্জায় বলিতে পারিল না। সাপও মরিল, লাঠিও ভাঙ্গিল না ।

হে,বন্ধুবর পিয়াস এবং সহপাঠী (নামখানা আমার মনে নাই) - যদি আমার এই লেখাখানা পড়িয়া থাক তবে এই অধমকে ক্ষমা করিয়া দিয়ো ।

২. ৭ম শ্রেণী। টিফিন ছুটি ৬০ মিনিটের হইলেও ১০ মিনিটে নাস্তা খাইয়া বাকি ৫০ মিনিট লাফালাফি-দৌড়াদৌড়ি করিয়া পুরা স্কুলমাঠ মাথায় তুলিয়া লইতাম। যেদিনের ঘটনা বলিতেছি সেদিন বৃষ্টি পড়িতেছিল বলিয়া ক্লাসরুমেই আমরা পনের-বিশেক বালক খেলা করিতেছিলাম। দেয়ালে চক দিয়া স্ট্যাম্প আঁকিয়া বেঞ্চের ভাংগা কাষ্ঠকে ব্যাট বানাইয়া ক্রিকেট খেলিতেছিলাম। টিফিন আওয়ার শেষ হওয়ার পথে। খেলাও শেষ হওয়ার পথে। আমার দল জিতিবার দ্বারপ্রান্তে। হঠাৎ খেয়াল করিলাম আমার বিপরীত দলের কাপ্তান অহেতুক সময়ক্ষেপন করিতেছে। তাহার শয়তানি বুদ্ধি ধরিতে আমার বিলম্ব হইল না। টিফিন আওয়ার শেষ হইলেই খেলা ড্র। মাথা গরম হইতে লাগিল। তখন আমার দলের একজন ব্যাটসম্যান বল ব্যাটে লাগাইতে ব্যর্থ হইলো। স্পষ্ট দেখিলাম বল স্ট্যাম্পের বাইরে দেওয়ালে আঘাত করিল। কিন্তু সেই কাপ্তান এইটাকে আউট বলিয়া একখানা বিশাল ক্যাচাল লাগাইয়া দিল আর আউট না দিলে খেলিবেনা বলিয়া হুমকি দিল । আর সহ্য করিতে পারিলাম না। মাথায় রক্ত চড়িয়া গেল । দৌড়ে গিয়া তাহার অন্ডকোশ বরাবর কষিয়া একখানা লাথি মারিলাম। সে একহাত দিয়া নাক চাপিয়া ধরিয়া এবং অন্যহাত দিয়া দুই উরুর মাঝখানে চাপিয়া ধরিয়া মাটিতে পড়িয়া গেল এবং পড়িয়াই রহিল-আর উঠিল না । এরইমধ্যে ঘন্টা বাজিল। যেকোন সময় স্যার আসিয়া পড়িতে পারে। এদিকে আমার অবস্থা বর্ননাতীত। যেকোন সময় প্যান্ট ভিজাইয়া দিতে পারি। কয়েকজন চেষ্টা করিতেছে পানি দিয়া ওর হুঁশ ফিরাইতে আর কয়েকজন আমার কর্ণে বিষ ঢালিতেছে। কেউ বলিতেছে এইটা নির্ঘাত মার্ডার কেস-পালাই যা । শালারা যেন আমি প্যান্ট ভিজাচ্ছিনা দেখে ভিজানোর ব্যবস্থা করিতেছিল। বার বার দরজায় উঁকিদিয়া দেখিতেছি স্যার আছিতেছে কিনা-এই সময় তাহার জ্ঞান ফিরিল। আমি বলিলাম,“শালা, আরেকটু হইলেই তো নির্ঘাত হার্টএটাক করিতাম।” পরবর্তীতে কিছু ভালমন্দ গিলানোর শর্তে স্যারকে না জানানোর জন্য উহাকে রাজী করিলাম। উহার কিছু ভগ্নিপতিও জুটিয়াছিল সেই ফ্রি ট্রিট-এ।

আমার এই বন্ধুটির নাম সৌরভ। তার কাছেও আমি ক্ষমা প্রার্থী। কিন্তু দুঃখের বিষয় উপরোক্ত দুইজনের মধ্যে একজনের সহিতও আমার যোগাযোগ নাই।

৩. দশম শ্রেনী- নারীসংক্রান্ত ।

নাহ-আর লিখিতে ইচ্ছা করিতেছে না। দশম শ্রেনীর সেই মেয়েটির কথা মনে পড়িতেছে। লেখাখানাও দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হইতেছে । আজ এইখানেই থাক । আপনারা বলিলে পরে কোন একসময় লিখিব।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫৪

শাহরিয়ার খান রোজেন বলেছেন: সত্য বলার জন্য ধন্যবাদ।

২| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:১১

রানাইজম বলেছেন: আপনাকে স্বাগতম । @ খাঁন রোজেন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.