নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নতুন কিছু ভাবতে পছন্দ করি। নিজকে আরো জানতে চাই। শিখতে চাই মানুষের মন।

রাসেল রুশো

রাসেল রুশো › বিস্তারিত পোস্টঃ

পোস্ট্ মাস্টার প্রসঙ্গ: রবীন্দ্র গল্পের শিল্পরূপ

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:০৫

বাংলা ছোটগল্পের পথিকৃৎ ও শ্রেষ্ঠ শিল্পী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর(১৮৬১-১৯৪১)। আপাততুচ্ছ জীবনের ভেতরে আনন্দ-বেদনার যে গোপনপ্রবাহ তাকে অসামান্য অন্তর্দৃষ্টি ও কাব্য সৌন্দর্যে ফুটিয়ে তুলেছেন রবীন্দ্রনাথ তাঁর গল্পগুলোতে।
পোস্ট্ মাস্টার গল্পটি রবীন্দ্রনাথের একটি বিখ্যাত গল্প। রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়ির একতলাতে যখন পোস্টঅফিস ছিল এবং তিনি প্রতিদিন দেখতেন পোস্টমাস্টারকে। সেই সময়ে একদিন দুপুরে তিনত লিখেছিলেন পোস্টমাস্টার গল্পটি।
কলকাতা থেকে অজপাড়া গাঁয়ের পোস্টঅফিসে কাজ করতে আসা পোস্টমাস্টারবাবুর প্রতি এক অসহায় অনাথ গ্রাম্য-বালিকার সহজ সরল অথচ গভীর প্রাণের টান এবং পোস্টমাস্টারের কাজ ছেড়ে চলে যাবার সময় বালিকার মনের অব্যক্ত আর্তি রবীন্দ্রনাথের এ গল্পকে এক মর্মস্পর্শী ও সকরুণ কাব্যধর্মীতায় মণ্ডিত করেছে।এখানে চরিত্র বলতে দুটি - পোস্টমাস্টার আর রতন। খানিকটা বর্ণনা ও খানিকটা কথোপকথনের রীতিতে গল্পটি নির্মিত। গণ্ডগ্রামে শহুরে পোস্টমাস্টারবাবুর একাকিত্ব দূর করেছে রতন:তাকে সঙ্গ দিয়ে, পরিচর্যা দিয়ে,গ্রাম্য-বালিকার স্বাভাবিক সারল্যে তাকে বড়ো আপন করে নিয়েছে যেন রতন।পোস্টমাস্টার রতনকে তার বাড়ির কথা,নিকটজনের কথা শুনিয়েছে, লেখাপড়া শিখিয়েছে তাকে।অতঃপর পোস্টমাস্টারবাবু অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দিনরাত সেবা-শুশ্রুষা করে ভালো করে তুলেছে রতন।এই পর্যন্ত দুই বিপ্রতীপ পুরুষ ও নারীর এক আন্তরিক সম্পর্কের গল্প।কিন্তু তারপরই অকস্মাৎ যেন তার ছিঁড়ে যায়,বেসুরো হয়ে যায় সবকিছু।পোস্টমাস্টার পাড়াগাঁ ছেড়ে শহরে ফিরতে উদ্গ্রীব, বদলির দরখাস্ত পাঠান,দরখাস্ত নাকচ হলে চাকরি ছেড় ফিরে যাবার উদ্যোগ নেন নিজেই।রতনকে একথা জানালে সে হতবাক হয়ে যায়।পোস্টমাস্টারকে সে বলে তাকে সঙ্গে নিয়ে যেতে।'সে কি করে হবে' -পোস্টমাস্টারবাবুর এই সকৌতুক উত্তর রতনের স্বপ্নে ও জাগরণে ঘুরপাক খেতে থাকে।যাবার সময় পোস্টমাস্টার রতনকে আশ্বস্ত করেন যে- নতুন পোস্টমাস্টারকে তিনি রতনের ব্যাপারে বলে যাবেন।নিজের পথখরচ বাদে বেতনের সব টাকাটা তিনি রতনকে দিতে চান।রতন পোস্টমাস্টারের পায়ে ধরে মনের যন্ত্রণাকে ঢাকতেচায়-'দাদাবাবু, তোমার দুটি পায়ে পড়ি, তোমার দুটি পায়ে পড়ি,আমাকে কিছু দিতে হবেনা,তোমার দুটি পায়ে পড়ি, আমার জন্য কাউকে ভাবতে হবে না'।নৌকায় উঠে রতনের কথা ভেবে তার করুণ মুখচ্ছবি মনে করে পোস্টমাস্টার বিচলিত হলেও ততক্ষণে নৌকা ঢের এগিয়েছে।রতন কিন্তু পোস্টঅফিসের আশেপাশে তখনো ঘুরেফিরে বেড়াচ্ছিল যদি দাদাবাবু ফিরে আসে।
স্বল্প পরিসরে দুটি নর-নারীর নিভৃত মনের সংযোগ ও ঘটনাচক্রে তার করুণ পরিসমাপ্তি অতি সহজ ও সাবলীল ভঙ্গিতে তুলে ধরেছেন রবীন্দ্রনাথ এ গল্পে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:১০

কাজী নায়ীম বলেছেন: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট গল্পগুলো অসাধারন। উনবিংশ শতাব্দির প্রথম দিকে এ অঞ্চলের সমাজ ব্যবস্থা ও সাধারন মানুষের চাওয়া পাওয়া কেমন ছিল তার একটা ধারনা পাওয়া যায় এসব ছোট গল্পে।

২| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:১৬

শাহাদাত হোসেন বলেছেন: ছোট প্রাণ ছোট ব্যথা
ছোট ছোট দুঃখ কথা -সত্যি অসাদারণ ছিলেন তিনি ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.