নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন সচেতন মুসলিম, খুব সাধারণ জীবনযাপন পছন্দ করি।প্রবাসের হাজারো ব্যস্ততার মাঝেও দেশের ও দেশের মানুষের খবরা-খবর জানতে পছন্দ করি, তাদের সাথে মিশে যেতে চাই..... আমার সোনার বাংলা, আমি তোমার অনেক অনেক ভালোবাসি।

দিল মোহাম্মদ মামুন

আমি একজন সচেতন মুসলিম, খুব সাধারণ জীবনযাপন পছন্দ করি। আল্লাহর সন্তুষ্টিই আমার জীবনের উদ্দেশ্য।

দিল মোহাম্মদ মামুন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ওয়াহাবীদের কেন অপছন্দ করবেন, তাদের মতবাদ কি?

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৮


ওয়াহাবী অনুসারী বলে যারা একে অপরকে তিরষ্কার করেন তাদের কে এই মহান ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ বিন ওয়াহহাব (র) সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য একটু সময় নিয়ে এই লিখাটা পড়তে অনুরোধ করবো।

আঠারো শতকের গোড়ার দিকে আরবে যে একজন শ্রেষ্ঠ ধর্ম সংস্কারক বা মুজাহিদ জন্মগ্রহণ করেন তাঁর নাম ছিল মুহাম্মদ। পিতার নাম আবদুল ওয়াহহাব। আরবের প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী নামের সাথে পিতার নাম সংযুক্ত করা হয় বলে তাঁর পুরা নাম ছিল মুহাম্মদ বিন আবদুল ওয়াহহাব। ওয়াহহাব আল্লাহর একটি গুণবাচক নাম যার অর্থ পরম দাতা। মুহাম্মদ বিন আবদুল ওয়াহহাব চেয়েছিলেন ইসলামে সবরকম পৌত্তলিক অনুপ্রবেশের মূলোৎপাটন করে খাঁটি তওহীদ বাণীর মহিমা সুপ্রতিষ্ঠিত করতে এবং আরবের সবরকম রাষ্ট্রনৈতিক গোলযোগের অবসান ঘটিয়ে শুধু ইসলামী সাম্য ও মৈত্রীনীতির সূত্রে সমস্ত আরবভূমিকে একরাষ্ট্রে বেঁধে দিতে।

তিনি প্রথমজীবনে হজ্ব করতে গিয়ে মক্কা ও মদিনায় মুসলমানদের অনৈসলামিক আচার অনুষ্ঠান দেখে অত্যন্ত মর্মাহত হন। আরবের তখন এক বৃহৎ অংশ তুরস্ক সুলতানদের শাসনাধীন ছিল। ইউরোপীয় সভ্যতার সংস্পর্শে এসে তুর্কীরা বিশেষ করে তুর্কী শাসক শ্রেণী বহু ইউরোপীয় আচার-অনুষ্ঠান গ্রহণ করেছিল। সেসব আরব দেশে এমনকি মক্কা-মদিনায় ছড়িয়ে পড়েছিল। কবরকে কেন্দ্র করে বিরাট বিরাট সৌধ নির্মিত হয়েছিল এবং মুসলমানরা কবরের পার্শ্বে দাঁড়িয়ে ইহলৌকিক উন্নতি ও পরলৌকিক মংগল কামনা করতো। কবরে বাতি দেয়া, ফুলের মালার শোভিত করা, নজর-নেয়াজ পেশ করা, মানৎ করা –প্রভৃতি ক্রিয়াকলাপ চালাতো। এগুলি ছিল পৌত্তলিকতারই অনুকরণ। মওলানা মাসউদ আলম নদভী –তাঁর মুহাম্মদ বিন আবদুল ওয়াহহাব নদভী নামক জীবনী গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, তৎকালে আরব দেশে এমন কিছু বৃক্ষ ছিল যেখানে মুসলমানরা পৌত্তলিকেদের অনুকরণে একপ্রকার পূজা পার্বণ করতো। এমনকি হিন্দুদের শিবলিংগ পূজা অপেক্ষাও গর্হিত কাজ করতো। মোটকথা ইসলামের এক অতি বিকৃতরূপ দেখে মুহাম্মদ বিন আবুদল ওয়াহহাব এ সবের বিরুদ্ধে জোরদার আওয়াজ তোলেন। তিনি প্রথম তাঁর এ সংস্কার আন্দোলন শুরু করেন দামেস্ক শহর থেকে। তুর্কী শাসকশ্রেণীর ইসলাম বিরোধী আচার অনুষ্ঠানের বিরুদ্ধেও তিনি ছিলেন সোচ্চার। ফলে শাসকশ্রেণীর কোপানলে পড়তে হয় তাঁকে এবং তিনি দামেস্ক থেকে বিতাড়িত হন। অবশেষে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ফিরে আপন জন্মভূমি নজদ প্রদেশের দারিয়াহ বা দেরাইয়াহ নামক স্থানে আসেন। (দারিয়াহর সর্দার বা অধিপাতি তাঁর সংস্কার আন্দোলন সমর্থন করেন এবং তাঁর কন্যাকে বিয়ে করেন। অতঃপর দারিয়াহ অধিপতি মুহাম্মদ বিন সউদের সহায়তায় একাধারে ইসলামী সংস্কার আন্দোলন এবং আরব লীগ গঠনের মাধ্যমে রাজনৈতিক আন্দোলন চলতে থাকে।

তাঁর রাজনৈতিক আন্দোলনে বিস্তারিত আলোচনার অবকাশ এখানে নেই। তবে একথা সত্য যে, রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যতীত ইসলামের পূর্ণ বাস্তবায়নও সম্ভব নয় কিছুতেই। মুহাম্মদ বিন সউদের সাহায্য সহযোগিতায় যে প্রচন্ড রাজনৈতিক আন্দোলন শুরু হয়েছিল তাতে যোগদান করেছিল লক্ষ লক্ষ বেদুইন। তাঁর ফলশ্রুতিস্বরূপ বার বার বিপর্যয়ের ভেতর দিয়েও অবশেষে গোটা আরব দেশ তাদের করতলগত হয়। সউদ বংশের রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হ’য়েছিল সমগ্র আরবভূমিতে এবং তার জন্যেই এ দেশটির পরিচয় হিসাবে বলা হ’য়ে থাকে সউদী আরব। মুহাম্মদ বিন আবদুল ওয়াহহাবের ইসলামী সংস্কার আন্দোলনের সার্থকতাই এই রাজনৈতিক ক্ষমতা লাভের প্রত্যক্ষ ফল।

উপরে উক্ত হ’য়েছে দারিয়াহর অধিপতি মুহাম্মদ বিন সউদ মুহাম্মদ বিন আবদুল ওয়াহহাবের কন্যাকে বিবাহ করেন। অল্পদিনের মধ্যে মরু অঞ্চলে বিশেষ করে নজদে মুহাম্মদ বিন আবদুল ওয়াহহাবের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি তাঁর জামাতা মুহাম্মদ বিন সউদের হাতে সমস্ত শাসনক্ষমতা অর্পণ করে শুধু ধর্মীয় ব্যপারে অর্থাৎ ইসলামী সংস্কার আন্দোলনের সর্বময় কর্তা রয়ে যান। তারপর তুর্কী শাসকদের সাথে বার বার সংঘর্ষ হ’য়েছে। জয়-পরাজয় উভয়ের ভাগ্যেই ঘটেছে। সমগ্র নজদে তাঁদের শাসন ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর অনেকের মতে, চতুর্থ খলীফার আমলের পর এই সর্বপ্রথম কোরআনকে ভিত্তি করে একটি দেশে ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চলে। অনেকের মতে, যেমন মসউদ-আলম নদভী–মুহাম্মদ বিন আবদুল ওয়াহহাব ছিলেন একজন সার্থক মুজাদ্দিদ যিনি তাঁর মুজাদ্দিদিয়াতের বা সংস্কার কাজের পরিপূর্ণ সাফল্য জীবদ্দশায় দেখে গেছেন।

এখন তাঁর সংস্কার আন্দোলনের মূলনীতি সম্পর্কে কিছু আলোচনা করা যাক। আগেই বলা হ’য়েছে যে, তিনি ইসলামের বিপরীত কোন নতুন মতবাদ প্রচার করেননি, যার জন্য তাঁর মতবাদকে ওয়াহহাবী মতবাদরূপে আখ্যায়িত করা যায়। আরব দেশে ওয়াহহাবী নামাংকিত কোন মযহাব বা তরীকার অস্তিত্ব নেই। এ সংজ্ঞাটির প্রচলন আরব দেশের বাইরে এবং এই মতানুসারীদের বিদেশী দুশমন, বিশেষ করে তুর্কী ও ইউরোপীয়ানদের দ্বারা ওয়াহহাবী কথাটির সৃষ্টি এবং তাদের মধ্যেই প্রচলিত। কোন কোন ইউরোপীয় লেখক, যেমন নীবর (Neibuhr) মুহাম্মদ বিন আবদুল ওয়াহহাবকে পয়গম্বর বলেছেন। এসব উদ্ভট চিন্তারও কোন যুক্তি নেই। প্রকৃত পক্ষে মুহাম্মদ বিন আবদুল ওয়াহহাব কোন মযহাবও সৃষ্টি করেননি। চার ইমামের অন্যতম ইমাম আহমদ বিন হাম্বলের মতানুসারী ছিলেন তিনি এবং তাঁর ইচ্ছা ছিল বিশ্বনবীর ও খুলাফায়ে রাশেদীনের আমলে ইসলামের যে রূপ ছিল, সেই আদিম সহজ সরল ইসলামে প্রত্যাবর্তন করা। তাঁর আরও শিক্ষা ছিল, ধর্ম কোন শ্রেণী বিশেষের একাধিকার নয়। কোরআন ও হাদীসের ব্যাখ্যা দেয়াও কোন ব্যক্তি বিশেষ বা শ্রেণী বিশেষের নয়, কোন যুগ বিশেষের মধ্যেই সীমিত নয়, প্রত্যেক আলেম ব্যক্তির অধিকার আছে কোরআন ও হাদীসের ব্যাখ্যা দেয়ার। তাঁর শিক্ষা ও মতবাদ প্রধানতঃ ইবনে তাইমিয়া ও তাঁর শিষ্যদের পুঁথিতে বিধৃত মতবাদের দ্বারা প্রভাবিত। যদিও তিনি অনেক বিষয়ে তাদের সংগে একমত নন। -(ওহাবী আন্দোলন, আবদুল মওদূদ, পৃঃ ১১৬)।

মুহাম্মদ বিন আবদুল ওয়াহহাবের সংস্কার আন্দোলনের মূলনীতি সমূহ, যা তিনি তাঁর ‘কিতাবুত্তাওহীদে’ সন্নিবেশিত করেছেন, মোটামোটি নিম্নরূপঃ-

১। আল্লাহ ছাড়া এমন আর কোন সত্তা বা শক্তি নেই যার এবাদত বন্দেগী দাসত্ব আনুগত্য, হুকুম শাসন পালন করা যেতে পারে।

২। অধিকাংশ মানুষই তাওহীদপন্থী নয়। তারা অলী দরবেশ প্রভৃতির নিকটে গিয়ে তাদের আশীষ প্রার্থনা করে। তাদের এসব আচার অনুষ্ঠান কোরআনে বর্ণিত মক্কার মুশরিকদের অনুরূপ।

৩। এবাদতকালে নবী, অলী, ফেরেশতাদের নাম নিয়ে প্রার্থনা করা শির্ক বা বহু দেবতার পূজা অর্চনার মতোই নিন্দনীয়।

৪। আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো মধ্যবর্তিতার আশ্রয় গ্রহণ করা শির্ক মাত্র।

৫। আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নামে মানৎ করাও শির্ক।

৬। কেরআন হাদীস এবং যুক্তির সহজ ও অবশ্যম্ভাবী নির্দেশ ব্যতীত অন্য জ্ঞানের আশ্রয় গ্রহণ কুফর।

৭। কদর বা তাকদীরে বিশ্বাসের প্রতি সন্দেহ পোষণ নাস্তিকতা।

উপরন্তু যেসব বিদআৎ (দ্বীন ইসলামে এমন সব নতুনত্ব যা কোরআন হাদীস সম্মত নয়< অথবা স্বয়ং নবী কর্তৃক প্রবর্তিত নয়), শির্ক ও কুফরের প্রশ্রয় দেয় তিনি সেসবের মূলোচ্ছেদকরণে বিশেষ জোর দেন। তাঁর মৌল শিক্ষাই ছিল লা-শরীক আল্লাহর প্রতি একান্ত ও অকুন্ঠ নির্ভরশীলতা এবং স্রষ্টা ও মানুষের মধ্যে যাবতীয় মধ্যস্থতার অস্তিত্ব বা চিন্তার বিলোপ সাধন। যে মধ্যস্থতার নাম করে পীরবাদ বা মুসলমানী ব্রাহ্মণ্যবাদ কায়েম করে মুসলমানদেরকে প্রকৃত ইসলামের শিক্ষা থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হ’য়েছিল। পীর ও অলীদের প্রতি ও তাদের কবরে মুসলমানের পূজা, এমনকি হযরত মুহাম্মদের (সা) আধাঐশ্বরিক রূপকল্পনার বিলোপ সাধন তিনি করতে চেয়েছিলেন। এ মতবাদের অনুসরণও মুসলমানদের মধ্যে দেখা যায়। যেমন, আহমদের ঐ মিমের পর্দা রেখেছে তোমায় আড়াল করে। কবরে সৌধ নির্মাণ পৌত্তলিকতারই শেষ চিহ্ন মাত্র যে সম্পর্কে আল্লাহর নবী কঠোর ভাষায় সতর্কবাণী করে গেছেন। সেজন্যে সেসব ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়া হ’য়েছিল যাতে করে মুসলমানরা সেগুলিকে ভক্তিশ্রদ্ধা দেখাতে অথবা সেখানে গিয়ে নিজের মংগল কামনা করতে না পারে।

তাঁর এ আন্দোলনের স্বাভাবিক ফল এই ছিল যে, দুইশ্রেণীর মুসলমান অত্যন্ত খড়াগহস্ত হ’য়ে পড়ে। এক–কবরের পার্শ্বে দাঁড়িয়ে যারা ইহলৌকিক উন্নতি ও পারলৌকিক মংগল কামনা করতো এবং কবরের হেফাজত তথা খেদমতের নামে দর্শনপ্রার্থীদের নিকট থেকে টাকা পয়সা আদায় করে জীবিকা অর্জন করতো। দুই–তুর্কী শাসকগণ। কারণ মক্কা ও মদীনার উপর থেকে তাদের কর্তৃত্ব বিলুপ্ত হ’য়েছিল। তুর্কীর সুলতান ছিলেন তখন মুসলিম বিশ্বের স্বমনোনীত খলীফা। ইসলামের সর্বশ্রেষ্ঠ, বলতে গেলে দুটি মাত্র তীর্থস্থান মক্কা ও মদীনা তাদের হস্তচ্যুত হ’য়ে পড়ায় খেলাফতের দাবী অর্থহীন হ’য়ে পড়ে। বাহু বলে মক্কা মদীনা পুনরুদ্ধার করা সহজ ছিলনা বলে মুহাম্মদ বিন আবদুল ওয়াহহাব ও তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে নানাপ্রকারের অমূলক ও মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করে বিশ্বের মুসলমানদেরকে ক্ষিপ্ত করে তোলা হলো। তুর্কী শাসকদের চরিত্র যতই ইসলাম বিরুদ্ধ হোক না কেন, মুসলমানদের খলীফার পক্ষ থেকে যখন মুহাম্মদ বিন আবদুল ওয়াহহাবের বিরুদ্ধে ফতোয়া জারী হলো তখন মুসলমানরা তাই অকপটে বিশ্বাস করলো। এ অপপ্রচারের ফলে ১৮০৩ থেকে ১৮০৬ সাল পর্যন্ত বাইরের দেশগুলি থেকে মক্কায় হাজীদের সংখ্যা ছিল অতি নগণ্য।

মুহাম্মদ বিন আবুদল ওয়াহহাবের মতো মুসলমাদের নানাবিধ কুসংস্কারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলেন বাংলা ভারতে সাইয়েদ আহমদ শহীদ, হাজী শরীয়তুল্লাহ, তিতুমীর প্রভৃতি মনীষীগণ। ব্রিটিশ সরকার এবার তাঁদের স্বার্থে এসব মনীষীকে ওয়াহহাবী বলে আখ্যায়িত করে তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে মাতলেন। এর চেয়ে সত্যের অপলাপ ও নির্মম পরিহাস আর কি হতে পারে?

মোহাম্মদ ওয়ালিউল্লাহ বলেনঃ-

একবার যদি মুসলমান জনসাধারণের মধ্যে বিধর্মী বিদ্বেষ জাগরিত হয় তাহা হইলে এশিয়া ও আফ্রিকায় তাহাদের সাম্রাজ্য তাসের ঘরের ন্যায় ভাঙিয়া পড়িবে আশংকা করিয়া সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ ইসলামের জন্য মায়াকান্না শুরু করিয়া দেন। তাই দেখা যায়, উনবিংশ শতাব্দীতে ভারতবর্ষে যখনই কোন মুসলমান দেশপ্রেমিক পরাধীনতার বিরুদ্ধে দাঁড়াইবার চেষ্টা করিয়াছেন তখনই ইংরেজরা তাহাকে ‘ওহাবী’ আখ্যা দিয়া অজ্ঞ জনসাধারণকে তাঁহার বিরুদ্ধে লেলাইয়া দিয়াছেন, লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ প্রদান ও বিকল্পে নির্যাতনের ভয় প্রদর্শন করিয়া তাহাদের বংশবদ আলেমদের নিকট হইতে তাঁহার বিরুদ্ধে ফতোয়া সংগ্রহ করিয়া লইয়াছেন, তুর্কীদের বেতনভুক্ত শেরিফের আজ্ঞাবহ কর্মচারীর নিকট হইতে নিজেদের জন্য সার্টিফিকেট আনাইয়াছেন। এমনকি, খাস আরব দেশ হইতেও প্রচারক আনিয়া তাঁহার বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য নিজেদের রচিত অলীক কাহিনী তাহার মুখে প্রচার করিয়াছেন। ইহা ছাড়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও উচ্চপদস্থ কর্মচারীগণকে দিয়া তাহারা প্রতিক্রিয়াশীল মুসলমাদের সাহায্যে প্রতি জেলায় ‘আনজুমনে ইসলামিয়া’, ‘হেজবুল্লাহ সমিতি’ ও ‘আনজুমনে এশায়াতে ইসলাম’ প্রভৃতি কায়েম করাইয়া দেশপ্রেমিক মুসলমানদের বিরুদ্ধে উহাকে ব্যবহার করাইয়াছেন। ইহার বিনিময়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে উহাকে ব্যবহার করাইয়াছেন। ইহার বিনিময়ে আল্লাহতায়ালা তাহাদিগকে জান্নাত ফেরদৌস বখশিশ করেন কিনা বলা যায় না। তবে এ কথা সত্য যে, এই ইসলাম রক্ষা অভিযানে তাহারা শত শত মুসলমানকে ফাঁসিয়ে কাষ্ঠে ঝুলাইয়া সুদূর আন্দামান নির্বাসনে পাঠাইয়া অন্ততঃপক্ষে তাহাদের পারলৌকিক মুক্তির পথ প্রশস্ত করিয়া দিতে পারিয়াছে।
(আমাদের মুক্তি সংগ্রাম, মোহাম্মদ ওয়ালিউল্লাহ, পৃঃ ৬০-৬১)।

লিখাটি বাংলার মুসলমানদের ইতিহাস নামক বই থেকে গৃহীত

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৫

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: অনেক কিছু জানা হল।

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৪

দিল মোহাম্মদ মামুন বলেছেন: প্রিয় ভাই আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম, কষ্ট করে লিখাটা পড়ার ও সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

২| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২২

মুসাফির নামা বলেছেন: ওহাবী মতবাদ বলতে কিছুই নেই। তিনিতো শুধু একজন প্রকৃত সংস্কারক ছিলেন।

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২৭

দিল মোহাম্মদ মামুন বলেছেন: প্রিয়ভাই মসাফির নামা, আপনি ঠিক বলেছেন, ছুন্নী - ওহাবী এগুলো উপমহাদেশের কিছু সারথবাদী মুনাফিক মুসলিমের তৈরি। বেশির ভাগ মুসলিম আসল সত্য না জেনেই ঐ সমস্ত মাজার পুজারী ভন্ডদের কথা মেনে চলতেছে।
ধন্যবাদ আপনাকে

৩| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২৯

মুসাফির নামা বলেছেন: সত্যের পক্ষে লিখে যান।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:১২

দিল মোহাম্মদ মামুন বলেছেন: ধন্যবাদ প্রি্য ভাই মুসাফির নামা, আপনার উৎসাহ মুলক সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

৪| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৪৫

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: আল্লাহ ই ইসলামকে রক্ষা করবেন । আর অালেমরা মা্ত্র ধারক। যারা প্রচারক তাদেরকে আল্লাহ উত্তম যাযা দান করুন আর শক্তি ও সাহস দান করুন সত্য আর হক্ যেন প্রচার করে যেতে পারে।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৭

দিল মোহাম্মদ মামুন বলেছেন: আসসালামু আলাইকুম প্রিয় ভাই মাহমুদুর রহমান সুজন , আপনাকে ধন্যবাদ আপনার উৎসাহ মুলক সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

৫| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:২৩

বিজন রয় বলেছেন: কোন কিছু ভাল হলে তা অপছন্দ করার কোন কারন নেই।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৯

দিল মোহাম্মদ মামুন বলেছেন: ধন্যবাদ প্রি্য ভাই বিজন র‌য়, আপনার যুক্তিসন্মত সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

৬| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৫০

বাংলার জামিনদার বলেছেন: রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যতীত ইসলামের পূর্ণ বাস্তবায়নও সম্ভব নয় কিছুতেই। তাইলে আর কি জামাতের হাতে বাংলাদেশের ক্ষমতা তুলে দিতে হবে এই তো???? ক্লিয়ার কন। শরম পান ক্যান????

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৫২

দিল মোহাম্মদ মামুন বলেছেন: বলেছেন: প্রিয় ভাই বাংলার জামিনদার, আমিতো বলিনি জামাতের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে হবে! ইসলামী দলের তো অভাব নেই, আপনি যেকোন একটা বেচে নিন, জামাত ইসলাম করতেই হবে এই রকম কোন কথা নাই। আপনি যে কোন ইসলামি দলে যোগ দিন, যদি প্রচলিত ইসলামি দল গুলো আপনার ভাল না লাগে তাহলে আপনি নিজেই কোরান-হাদিসের আলোকে একটা ইসলামী দল গঠন করুন। পবিত্র কোরানে আল্লাহ আপনাকে সংঘ বদ্ধ থাকার জন্য বলেছেন, একজন মুসলিম হিসেবে আপনি দলবদ্ধ হয়ে থাকা উচিত।
জামাত ইসলাম ক্ষমতায় আসবে, নাকি তারা বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত হবে তার সিদ্দান্ত বাংলার জনগন নিবে।
মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ

৭| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৫৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


সুন্নী, শিয়া, কুর্দীদের যুদ্ধে আরব শেষ হয়ে আসছে; এবার ওয়াহবীও তাতে যোগ দিয়েছে, ভালো যুদ্ধ চলুক; আরবেরা ইুরোপে গিয়ে ভিক্ষা করছে, আপনি আরবে চাকুরী করছেন, ভালো।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:২১

দিল মোহাম্মদ মামুন বলেছেন: ভাই আরবেরা ইউরোপে গিয়ে ভিক্ষা করছে না, বরং ইউরোপীরা আরবে এসে ভিক্ষা করছে। আর মুসলিমদের রিলেশন আরবের সাথে। একজন মুসলিম হিসেবে আমি আমেরিকা ইউরোপের তুলনায় আরবকে হাজারগুন বেশি ভালবাসি। মুসলিমেরা এত দিন অনৈক্যছিল বলে অমুসলিমেরা জুলুক করার সুযোগ পেয়েছিল, ইনশাআল্লাহ সামনের দিনগুলো মুসলিমদের হবে।
ধন্যবাদ আপনাকে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.