নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শুধু একদিন ভালোবাসা, মৃত্যু যে তারপর... যদি তা-ও পাই, আমি তা-ই চাই, চাই না বাঁচতে আমি প্রেমহীন হাজার বছর।
বাংলা সাহিত্যের অবশ্যপাঠ্য কিছু বই (তৃতীয় পর্ব) বইয়ের নাম : ‘অন্তর্লীনা'
লেখক : নারায়ণ সান্যাল
আধুনিক লেখকদের মধ্যে নারায়ণ সান্যাল এক গোষ্ঠীর পাঠকের কাছে বিপুলভাবে জনপ্রিয়। জনপ্রিয়তার কারণ তাঁর অনবদ্য লেখার টান, বিষয়ের বৈচিত্র্য এবং সময়বিশেষে নিখুঁতভাবে পাঠকের আবেগকে ছুঁতে পারার ক্ষমতা। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি পাঠকেরা প্রথম নারায়ণ সান্যালের ভক্ত হয়ে পড়েন ‘বিশ্বাসঘাতক’ বা ‘প্রবঞ্চক’ পড়ে। বই দুটি ভালো লাগার মতো সত্যি, কিন্তু তার রচিত ‘হে হংসবলাকা’ আর ‘অন্তর্লীনা’ না পড়ে কেউ তার ভক্ত হলে তাকে আমরা অন্ধভক্তই বলবো।
গল্পের নায়ক কৃশানু মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে। বুদ্ধিদীপ্ত। কিন্তু সাধারণের দৃষ্টিতে স্মার্ট নয়, কারণ সে লাজুক, ইন্ট্রোভার্ট। নিজের মধ্যে নিজেকে গুটিয়ে রাখতে ভালোবাসে। এছাড়া তার মধ্যে আছে এক শিল্পীমন, সে সাহিত্যের ছাত্র, ছবিও আঁকে। অথচ তার স্কেচবুকে নেই কোনও নারীর ছবি। তার বয়সী এক যুবক শিল্পীর কাছে একটু অস্বাভাবিক ঘটনা, সন্দেহ নেই। শুধু স্কেচবুক বলে তো নয়, সে ট্রামে উঠে চেষ্টা করে লেডিজ সীট থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকতে, তার সহপাঠী মেয়েদের মুখের দিকে সে কখনও তাকায় না পর্যন্ত। এ হেন নারীভীতির কারণ কি শুধুই লজ্জা? ধীরে ধীরে পাঠকরা জানতে পারেন যে কেবল লাজুক স্বভাবের জন্য নয়, এই আচরণের পিছনে আছে তার এক অদ্ভুত মানসিক সমস্যা। সেই সমস্যা সম্পর্কে সে যথেষ্টই সচেতন, কেবল জানে না কিভাবে বেরিয়ে আসবে সেই সমস্যা থেকে, কিভাবে স্বাভাবিক আর পাঁচটা ছেলের মত হতে পারবে। এ হেন কৃশানুর জীবনে হঠাৎই একসাথে তিনজন নারীর আবির্ভাব হয়। তারপরই ঘুরে দাঁড়ায় গল্পের মোড়। তারপর এসবের টানাপোড়েনে প্রেম ভালোবাসা আবেগের জগতে ঘুরপাক খেতে থাকে কৃশানু। কিন্তু বুঝতে পারে না নিয়তি তাকে নিয়ে যাবে কোনদিকে। শেষপর্যন্ত কি হয়, কৃশানু তার সমস্যার সমাধান করতে পারে কিনা, সেসব জানতে গেলে পড়তে হবে মূল উপন্যাসটি।
কৃশানুকে ঘিরে তিনজন নারীর এই আবর্তনকে তাঁর কলমের জাদুতে খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন লেখক নারায়ণ স্যানাল। কৃশানুর জীবনের প্রথম প্রেম সার্থক হোক না হোক, রোম্যান্টিক উপন্যাস হিসেবে অন্তর্লীনার সার্থকতা নিয়ে সন্দেহ নেই। অন্তর্লীনা শুধু রোম্যান্টিক উপন্যাস নয়, মনন-আশ্রয়ী উপন্যাসও বটে। নায়ক কৃশানুর মনের ভেতর যে আনন্দ, দুঃখ, সংশয় ভিড় করে আসে তার বর্ণনা দেওয়ার ব্যাপারে লেখকের মুন্সিয়ানা লক্ষণীয়। এই ধরনের মানসিক সমস্যা নিয়ে লেখা উপন্যাস বাংলা সাহিত্যে খুব বেশি নেই। সেদিক থেকেও এই বইটি স্বতন্ত্র। একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো বইটি ১৯৬০ এর দশকে লেখা। এখনকার লেখকেরা যতটা সহজে যৌন সমস্যার বর্ণনা দিতে পারেন সে সময় সেটা অসম্ভব না হলেও অনেক লেখকই সেটা এড়িয়ে যেতেন সমাজের একদল পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারানোর ভয়ে। অন্তর্লীনায় কিন্তু লেখক রাখঢাক করেননি, যৌন বিবরণ সরাসরি না এলেও এ গল্পের মূলভিত্তি ওই যৌন সমস্যা।
সবশেষে গল্পের পরিণতি প্রসঙ্গে বলি, সারা উপন্যাসের তুলনায় শেষটা একটু যেন তাড়াহুড়ো করে করা, একটু বেশি মেলোড্রামাটিক। হয়ত এটাকে লেখকের একটা দুর্বলতা বলা যেতে পারে। তবু একটা কথা কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না, যতই মেলোড্রামাটিক হোক, যতই আবেগের বাড়াবাড়ি থাক, উপন্যাসটা পড়তে শুরু করলে ছাড়তে ইচ্ছে করবে না, এক নিঃশ্বাসে শেষ করে ফেলতে চাইবেন। লেখকের অদ্ভুত সাবলীল লেখনীর গুণে তৃপ্তিটা পাবেন পুরোমাত্রায়ই। উপন্যাসটা পড়তে শুরু করলে, ভালো লাগতে শুরু করবে।
পিডিএফ লিংক পাওয়া যায়নি।
০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৫
রিদওয়ান হাসান বলেছেন: ইচ্ছা পূরণ হোক
২| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৪৬
তাজেরুল ইসলাম স্বাধীন বলেছেন: পড়া হয়নি, পিডিএফ লিঙ্ক জানা থাকলে দিন তো, পয়সা ছাড়াই সুবিধে করতে পারব।
০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৩
রিদওয়ান হাসান বলেছেন: পিডিএফটি খুঁজেছি। পাওয়া যায়নি। এক্সপার্টরা হয়ত এর খোঁজ দিতে পারবেন।
৩| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৪৮
তাজেরুল ইসলাম স্বাধীন বলেছেন: আমার বই অ্যাপে যুক্ত করা উচিত ছিল।
০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৪
রিদওয়ান হাসান বলেছেন: ‘আমার বই’ কি কোনো অ্যাপের নাম? নাকি আপনার তৈরি করা কোনো অ্যাপ?
৪| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: খুব ভালো একটি বই। আমি পড়েছি।
আমি ১০০ টি বইয়ের তালিকা করেছিলাম। সেখানে এই বইটি রেখেছি।
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৫
রিদওয়ান হাসান বলেছেন: হুম। দেখেছি। পেছনের সবগুলো মন্তব্যের প্রত্যুত্তর করেছি। দেখে নেয়ার অনুরোধ রইল। ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:০১
শামচুল হক বলেছেন: বইটি পড়ার ইচ্ছা আছে।