নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিন্দুর মাঝে সিন্ধু দর্শনের আশায় পথ চলি...

রিদওয়ান হাসান

শুধু একদিন ভালোবাসা, মৃত্যু যে তারপর... যদি তা-ও পাই, আমি তা-ই চাই, চাই না বাঁচতে আমি প্রেমহীন হাজার বছর।

রিদওয়ান হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্ষণের পরও একজন নারীরে যতবার ধর্ষণ হতে হয়

০৯ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:২৩

একজন নারী যখন একবার ধর্ষণ হয় তখন থিকা তার ওপর ধর্ষণের সব শ্যেনদৃষ্টি খুইলা যায়, সেইটা আপনেরা ভাইবাও কুল পাইবেন না। ধর্ষিত নারীর জীবনে তখন ধর্ষণের বর্ষণ শুরু হয়া যায়৷ নানা প্রক্রিয়ায় সেই নারী একের পর এক ধর্ষণের শিকার হতেই থাকে। মামলা, তদন্ত, সাক্ষ্যগ্রহণ, বিচার- প্রত্যিটা পর্যায়ে তাকে পরোক্ষ ধর্ষণের শিকার হতে হয়৷

ভিকারুননিসা স্কুলের ছাত্রী ধর্ষণের কথা কি মনে আছে, মনে পড়ে পরিমল জয়ধরের কথা? এই ধর্ষণ মামলার বিচারের সময় অভিযুক্ত শিক্ষক পরিমলের পক্ষেও কিন্তু পাঁচ ছয়জন অ্যাডভোকেট ছিল৷ তারা আদালতে মেয়েটার শারীরিক গঠন নিয়া আলাপ তোলে। তারিখের পর তারিখ ভিকটিমের শরীরের বর্ণনা নিয়া চলে রমরমা ব্যঙ্গরস৷ তারা মেয়েটার শারীরিক গঠন দেখায়া এইটা প্রমাণের চেষ্টা করতেছিল যে, পরিমলের যা শরীরের যেই অবস্থা, তাতে ওই মেয়ের সম্মতি ছাড়া তাদের মাঝে যৌনতা হওয়া সম্ভব না। এইটারে কি ধর্ষণ কইবেন না?

আরেকটা ঘটনা দেখেন, টাঙ্গাইলের এক নারী তার দেবরের হাতে ধর্ষণ হইছে৷ ভিকটিমের স্বামী দেশের বাইরে থাকে৷ ধর্ষণের সময়ও সে প্রবাসে ছিল। ধর্ষণের পর ওই নারীকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়৷ পরে এই ধর্ষণ মামলা আদালতে ওঠার পর স্বামী নারীরে তালাক দেয়৷ আর নিজের ভাইরে বাঁচাইতে গিয়া আদালতরে কয়, তার স্ত্রী ছিল দুশ্চরিত্রা৷ স্বামী হয়ত রবীন্দ্রনাথের শাস্তি গল্পটা সিরিয়াসলি নিছিল যে, বউ গেলে বউ পাওয়া যাইব, ভাই গেলে ভাই কোথায় পাওয়া যাইব? এইটা কি ধর্ষণ না?

এইটা তো ধর্ষিত নারীর বিচার পর্যায়ের কথা। এর আগেও ভিকটিমকে অসংখ্যবার ধর্ষণ হতে হয়। ধর্ষিত নারীর অভিযোগ প্রমাণ করতে প্রথমে তাকে ধর্ষণ হতে হয় ল্যাবে। ভিকটিমের শারীরিক আলামত সংগ্রহের নামে যেই ডাক্তারি পরীক্ষা নেয়া হয়, সেইটা ধর্ষণের চেয়ে কম না৷ ওয়ার্ড বয়দের দিয়া এই পরীক্ষার সময় ভিকটিমরা মারাত্মক লাঞ্ছনার শিকার হয়, ফলে ভিকটিম অসুস্থ হয়া যায়। তার ওপর রিপোর্টে শরীরের স্পর্শকাতর অঙ্গের মাপ উল্লেখ করা হয়, যা অনেক সময় ধর্ষকের পক্ষে যায়৷ যেমন, স্তনের আকার বড় হলে উল্টা নারীরেই হ্যাবিচুয়েটেড প্রমাণের চেষ্টা চলে৷ এইটা তো ধর্ষণের চেয়ে বড় ধর্ষণ!

আবার ধরেন, একজন নারী যদি বৃহস্পতিবার রাতে থানায় রিপোর্ট করে, তাইলে তার পরীক্ষা হয় রবিবারে৷ এত সময় কাইটা যাওয়ার পর আলামতের বাকি থাকে কি? ধর্ষণের পর এটাও একটা ধর্ষণ!

পরিসংখ্যানে তথ্য আছে, বাংলাদেশে ধর্ষণের মামলায় শেষ পর্যন্ত শতকরা তিনভাগ ঘটনায় অপরাধী শাস্তি পায় আর ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় শাস্তি পায় মাত্র শূন্য দশমিক তিনভাগ অপরাধী। বাকি আসামীরা ধর্ষিত নারীর সামনে দিয়াই ঘুইরা বেড়ায়! এইটা ধর্ষণ নয় তো কি?

বাংলাদেশের আইন কঠোর থাকলেও সাক্ষ্য আইনে আছে নানাবিধ জটিলতা আর ফাঁকফোকর। এই কারণে ১৮০ দিনে বিচার শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ফাঁকফোকর বন্ধ করতে করতে বছরের পর বছর কাইটা যায়৷ এই দীর্ঘ সময় ধর্ষিত নারী বিচার চাইতে গিয়া পদে পদে ধর্ষিত হইতে থাকে৷ ভিকটিম যখন প্রথম থানায় অভিযোগ করে তখন থিকাই তাকে সন্দেহের চোখে দেখা হয়৷ মামলা নেয়ার আগেই নানা প্রশ্নে তারে বিপর্যস্ত করা হয়৷ তার ওপর মিডিয়ার প্রশ্নবানে জর্জরিত নারী খুল্লমখুল্লা ধর্ষিত হতে থাকে ক্ষণে ক্ষণে। খাওয়ারও সময় দেয় না, হঠাৎ প্রশ্ন আসে, কিভাবে ঘটনা ঘটেছে, একটু খুলে বলুন। তাইলে এইটা কি ধর্ষণ না?

সবশেষে বিচার না পাওয়ায় নারীর যা হয়, সেইটা বাংলাদেশের সামাজিক অবক্ষয় ছাড়া আর কি? অপরাধী ধর্ষণের শিকার নারীর সামনেই দিয়াই ঘুইরা বেড়ায়৷ এটা শুধু তার জীবনরে দুর্বিষহ করে না, তার পরিবারের সদস্যদেরও বিপর্যস্ত করে৷ সে গৃহবন্দি হয়া পড়ে অথবা এলাকা ছাইড়া চইলা যাইতে হয়৷ তারপর ওই নারীকে মিথ্যা ধর্ষণের কলঙ্ক বইয়া বেড়াইতে হয়৷ তার কোমল চরিত্রফুলে অসৎ চরিত্রের তকমা লাগিয়ে মুখ লুকায়া বাকিটা জীবন কাটায়া দিতে হয় কোনো ঘুপচি গলিতে।

এই তো আমাদের ধর্ষিত নারী এবং ধর্ষক সমাজের কলঙ্কিত অধ্যায়

তথ্যসূত্র : ডয়চে ভেলে

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৩৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


লোহার তারের আন্ডারোয়ার বানাতে হবে বাংগালী মেয়েদের জন্য

০৪ ঠা মে, ২০২০ রাত ১২:৩১

রিদওয়ান হাসান বলেছেন: তবুও যদি পায় নিস্তার...

২| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৫১

নূর আলম হিরণ বলেছেন: ধর্ষণ মহামারী আকার ধারণ করেছে।

০৪ ঠা মে, ২০২০ রাত ১২:৩১

রিদওয়ান হাসান বলেছেন: ধর্ষণ ধর্ষিতদের মারছে, ধর্ষকরা ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাই এটা একপাক্ষিক মারী, মহামারী নয়...

৩| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৪২

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: দীর্ঘশ্বাস ছাড়া কিছু বলার নেই

০৪ ঠা মে, ২০২০ রাত ১২:৩২

রিদওয়ান হাসান বলেছেন: দীর্ঘশ্বাসে দগ্ধ কলিজা... আর সহ্য হয় না

৪| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৪৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: । শক্ত বিচার এবং প্রতিরোধ দরকার ।

০৪ ঠা মে, ২০২০ রাত ১২:৩৩

রিদওয়ান হাসান বলেছেন: সবাইকে একজোট হয়ে প্রতিরোধ করতে হবে... প্রয়োজনে প্রকাশ্যে শাস্তির আয়োজনও করা যায়।

৫| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:০৪

একাল-সেকাল বলেছেন:
কিছু কিছু নারী আবার নিজের অজান্তেই ধর্ষিতা হতে চায়।
টিএসসিতে নেচে-গেয়ে ধর্ষকের প্রতি ধিক্কার
নেচে গেয়ে ধর্ষক কে আমন্ত্রনের মাধ্যমে ধিক্কার জানানো হচ্ছে নিজেদেরকে বাজারে তোলার সামিল। এরা নিজেরাই হয়ত জানেনা ওরা কি করছে।
"এদের জ্ঞান দাও প্রভু, এদের ক্ষমা করো"- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

৬| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:০৬

একাল-সেকাল বলেছেন: টিএসসিতে নেচে-গেয়ে ধর্ষকের প্রতি ধিক্কার

৭| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:১০

একাল-সেকাল বলেছেন: [link|https://youtu.be/q6F1Gc8q498|টিএসসিতে নেচে-গেয়ে ধর্ষকের প্রতি ধিক্কার
সুত্রঃ বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২০ || চেনেল আই অনলাইন

৮| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্ট এবং সবার মন্তব্য পড়লাম।

০৪ ঠা মে, ২০২০ রাত ১২:৩৩

রিদওয়ান হাসান বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.