নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রিফাত রিদম

রিফাত রিদম › বিস্তারিত পোস্টঃ

এম এন লারমার হত্যাকারী কে?

১২ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:০৯



কায়সার আহমেদঃ

সম্প্রীতি কলামে যে অসম্প্রীতিমূলক বিষয়াদি স্থান পায় তা ভোরের কাগজ পত্রিকায় (১০ এপ্রিল ২০০৫ তারিখের সংখ্যায়) প্রকাশিত নিবন্ধ (এম এন লারমার পরিবার কেমন আছে শিরোনামে) পাঠ করে জানলাম। বর্ণিত কলামে লেখক জনাব সালাম আজাদ ত্রিপুরা সরকারের আয়োজনে আগরতলার বইমেলায় গিয়ে তার অর্জিত অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন। সেখানে তিনি পার্বত্যাঞ্চলের প্রয়াত নেতা এম এন লারমার পরিবারের সাথে সাক্ষাত করেছেন, যা তিনি সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি বলে আখ্যা দিয়েছেন।

তিনি তার লেখায় জানিয়েছেন, এম এন লারমার স্ত্রী (পঙ্কজীনী লারমা) নাকি তার স্বামীর কথিত হত্যাকারী প্রীতি কুমার চাকমাকে প্রশ্ন করেছিলেন। উত্তরে প্রীতি কুমার চাকমা তা অস্বীকার করে এমন কারো নাম বলেছেন যা লেখক উল্লেখ করেননি। উল্লেখ না করার কারণ তার লেখায় ফুটে উঠেছে যখন তিনি আশংকা প্রকাশ করে এসব অপ্রীতিকর বিষয়াদি ‘পার্বত্যাঞ্চলের জুম্ম জনগোষ্ঠীর স্বার্থেই’ বলা থেকে বিরত থেকেছেন। এটি তার হৃদয়ের কোমলতার পরিচায়ক। কিন্তু জাতির বৃহত্তর স্বার্থে অনেক অপ্রিয় সত্য জনসম্মুখে উপস্থাপন করতে হয়। এম এন লারমা ছিলেন এ অঞ্চলের একমাত্র অবিসংবাদিত নেতা। পুরো পার্বত্যবাসীর নিকট তিনি ছিলেন মূর্তিমান প্রভু, যিনি সরকারের সাথে এ অঞ্চলের বিষয়াদি নিয়ে দর কষাকষি শুরু করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলনের সূচনা করে গা ঢাকা দেন এবং তার মৃত্যু অব্দি সশস্ত্র আন্দোলনে জড়িত ছিলেন। অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে তিনি নিহত হলে দলের নেতৃত্ব চলে আসে তার অনুজ সন্তু লারমার হাতে। এখন দাবি হলো, যে মানুষটি পার্বত্যবাসীর নেতৃত্বে ছিলেন তিনি কি করে, কার হাতে নিহত হলেন তা জানার অধিকার তার পরিবারসহ সমগ্র পার্বত্যবাসীর রয়েছে। তাই পার্বত্য এবং দেশবাসীর পক্ষ থেকে লেখকের নিকট অনুরোধ তিনি যেন হত্যাকারীর পরিচয় জনগণের নিকট প্রকাশ করেন। এতে সত্যিকারের অপরাধী চিহ্নিত হওয়ার পাশাপাশি বিদেহী আত্নার শান্তি হবে।

জনশ্রুতি রয়েছে যে, পঙ্কজীনী লারমার সাথে সন্তু লারমার প্রাক-বিবাহ পর্যায়ে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এতে পঙ্কজীনী গর্ভধারণ করলে সন্তু লারমা তাকে বিবাহ করতে অস্বীকৃতি জানায়। ব্যাপারটি পারিবারিকভাবে সমাধা করার লক্ষ্যে সন্তু লারমার পিতা চিত্ত কিশোর চাকমা (যিনি প্রাথমিক জীবনে একজন শিক্ষক ও পরবর্তীতে ভান্তে ছিলেন) এম এন লারমার সাথে পঙ্কজীনীর বিয়ে দিয়ে দেন। এটি সন্তু ও এম এন লারমার মধ্যকার সম্পর্কের অবনতি ঘটায়। এর সাথে এম এন লারমার হত্যাকান্ডের কোন সংযোগ আছে কিনা তাও সকলকে ভেবে দেখতে হবে। ধারণা করা হয়, এম এন লারমার পুত্র জয়েস লারমা সন্তু লারমারই ঔরসজাত। তিনি (জয়েস লারমা) ভারতের আগরতলায় আলাদা ফ্ল্যাটে থাকেন বলে লেখক জানিয়েছেন, মায়ের সাথে তার বোঝাপড়ার সমস্যার কারণেই সম্ভবত এই ব্যবস্থা। মায়ের প্রতি অভিমান, অনুযোগের ফল হিসাবে বোধকরি ভিনদেশে অসহায় পরিবেশেও তার এই আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত। পাঠকদের স্মরণের সুবিধার জন্য, সন্তু এবং জয়েস লারমার মধ্যকার সম্পর্ক নিবিড় নয়, যা জয়েস লারমার ফেব্রুয়ারী ২০০৫ মাসে রাঙামাটিতে এক গোপন সফরকালে পরিলক্ষিত হয়। এসময়ে জয়েস লারমা তার ফুফুর বাসায় অবস্থান করেন এবং সন্তু লারমার সাথে তার কদাচিৎ সাক্ষাত হয়। ৬ কেজি স্বর্ণের কিংবদন্তীও সবার জানা, এর এক তিলও সন্তু লারমা পঙ্কজীনী দেবীকে দেননি। পুরোটাই তিনি একা গ্রাস করেছেন। পঙ্কজীনী দেবী কি শুধুই মুখ বুজে নীরবে ঝরে যাবেন না এক অতিলোভী লম্পট গেরিলা নেতার মুখোশ উন্মোচন করবেন?

পরিশেষে লেখককে পুনরায় অনুরোধ করছি, সেই সাথে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এম এন লারমার হত্যাকারীকে চিহ্নিত ও শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করুন। তা পার্বত্যবাসীদের অনেক দিনের দাবি পূরণ করবে।

সূত্রঃ ষড়যন্ত্রের বেষ্টনীতে পার্বত্য জনপদ (পৃষ্ঠা নং ৬০-৬১), সংকলকঃ সৈয়দ ইবনে রহমত, বলাকা প্রকাশনী, ২০০৭।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.