![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার নাম রুবেল। পাঁচ ফুট দুই ইঞ্চির খুব সাধারণ একজন মানুষ। স্বল্পভাষী, মিশুক, আর পরস্বার্থে কাজ করতে ভাল লাগে। চশমা ব্যবহার করি। বিশ্বাস প্রবণ আবেগী একটা মানুষ। বাবা তারা মিয়া, মা মারা গেছে অনেক আগে। বাড়ি টাংগাইল। মাস্টার্স করেছি ইংরেজীতে , তবু বাংলা আমার শিকড়। ভূলিনা।
সৌমিক ভাবে। আমাদের দেশটা তো স্বাধীন! বহিঃশত্রুর আনাগোনা নেই। সবাই সব কিছু নিজের মতো করে করতে পারে বলতে পারে। দুই দুইটা গোল্ডেন এ প্লাস পাওয়া ছাত্র সে। বাবা-মা'র আশা সৌমিক ডাক্তার হবে। সারাদিন পড়ালেখা ছাড়া আর কোন কিছু যেন তার জগতে নেই। সু্প্তি নামের একটি মেয়ে ওকে লাভ লেটার দিয়েছিল। সৌমিক তা তার মায়ের হাতে দিয়ে দিয়েছিল না পড়েই। পাশের ফ্লাটেই সুপ্তিরা থাকে। একটু বেশি চালাক। কাক চালাক বললে ভূল হবেনা। অতি বোকা হবার কারনে সৌমিককে শুধু তার মা বলেছিল।
--তুই কি এটা পড়েছিস।
-- না মা! পাগল ছাগল একটা মেয়ে সব সময় আমার গাঁ ঘেষার চেষ্টা করে।
--মেয়েটাতো ভালই।
-- মা! আজাইরা কথা বলবা না। পড়ালেখা ছাড়া আমার কিছু ভাল লাগেনা। ওকে ডেকে বলে দিও আমার সাথে যেন এইসব আজাইরা কর্মকান্ড না করে।
--তুই বলিস! আমি পারবোনা।
--হু! তোমার ছেলে পড়ালেখা করে ভাল কিছু করবে, এটা তো তুমি চাওনা।
এই হচ্ছে আমাদের গল্পের মুল চরিত্র সৌমিক।
"ক্যাম্পাসে সুপ্তির সাথে দেখা"
সুপ্তি সৌমিকের পথ আগলে দাঁড়ায়। চোখ দুটি রাগি রাগি করে।
-- এই তুই আমার চিঠি পড়িস নাই। না পড়লি সমস্যা নাই। আন্টির হাতে চিঠি দিছিস ক্যান। ঢং করিস। ভাব নেস। ভাব একবারে ছুটাইয়া দিব। চেচিয়ে উঠে সুপ্তি।
-- ধ-ধ-মক দিয়ে কথা বললে কথা শুনবো না বলে দিলাম।
-- তোর মতো বোকা, ভ্যাবলের সাথে কথা! সম্ভব না।
-- ও-ও-ওকে।
-- সাইন্টিস্ট হবা! কচু হবা তুমি।
সৌমিক যেতে উদ্যাত হবে। সুপ্তি রাস্তা আগলে দাঁড়াবে।
ঐ আমার কথা শেষ হয় নাই।
-- আল্লাহ! এ কেমন ছেলে মেয়েরে বাবা। গুন্ডা, মাস্তান ফেইল।
-- ঐ তোর সাহস তো কম না। তুই আমারে গুন্ডা, মাস্তান কস।তোর নাক টাইনা ছিড়া ফালামু হালার পো।
সুুুুপ্তির চিৎকার চেঁচামেছি দেখে রাস্তা থেকে এক লোক গিয়ে জিঙ্গেস করে।
-আপু কোন সমস্যা! এই মিয়া কি কও। মাইয়া মানুষের সাথে ঝামেলা কর।
সুপ্তি লোকটাকে ধমক দিয়ে বলে।
-- ঐ মিয়া যান এখান থিকা। খাইয়া দাইয়া কাজ কাম নাই। নাক ঢুকিয়া দিতাছেন। যান এখান থিকা। সৌমিক ভয় পেয়ে যায়।
-- দেখো তুমি মাথা ঠান্ডা কর। আমার ভুল হইয়া গেছে। আমারে মাফ কইরা দেও। রাস্তায় চেঁচামেছি করলে লোকজন কি ভাববো।
-- ভাবুক! তাতে তোমার কি? এমন একটা ফালতু লোকরে পছন্দ করছি। যার কোন আক্কেল, বুদ্ধি নাই। সর।
সুপ্তি সাই সাই করে হাটা দেওয়া শুরু করে।
সৌমিক, হাফ ছেড়ে বাঁচে যেন।
-- আল্লাহ বাঁচলাম।
(দার্শনিক চিন্তায় সৌমিক)
সৌমিকের ভাবনায় মেয়ে মানুষের মতো বালাই পৃথিবীতে আর একটিই নাই। রবীন্দ্রনাথ ফটিক সম্পর্কে বাক্যটি ব্যবহার না করে। মেয়েদের সম্পর্কে ব্যবহার করলেই ভালো হতো। মেয়ে মানুষ যখন যে সংসাররে থাকে বা যায় অথবা জন্ম নেয়। সে সংসারে কোন না কোন দিক দিয়ে নাড়া চারা লাগবেই। নাড়া চারা দেয়া ছাড়া তার পেটের ভাত/ফাস্টফুড/বেড টি যেন হজমই হতে চায়না। এরা যা দেয়, তার থেকে বেশি দেয় নাড়ানী চারানী। বর্তমানে সমান অধিকারের নামে যা দিচ্ছে বা নিচ্ছে যে কোন পুরুষ মানুষের হাগা মুতা বন্ধ হবার উপক্রম। আমরা প্রায়ই দেখি, ঢাকা শহরের সর্ববিদ্যাপিঠ ঢাকা ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে বখে যাওয়া মেয়েদের সিগারেট ফুকা দেখলেই মনে হয়, আমরা ইংল্যান্ড অথবা ইউরোপের কোন রাস্তায় ঘুরছি। বাংলাদেশের সংস্কৃতি যেন আজকাল মেয়েদের জিনসের পেন্টের সাথে একাকার হয়ে মিশে গেছে।
মোট কথা দেশ এগিয়ে গেলেও সৌমিকরা বেকডেটেট হওয়ার সুবাদে এগুতে পারেনী। তারপরও, সৌমিক মেয়েদের সম্মান করে। কারন, সে জানে তার মা'ও একজন মেয়ে ছিল। মেয়েরা মায়ের জাত। সৌমিক জানে, মায়ের জাতই যখন; থাকো না মা জাত হয়ে, পুরুষের পোষাক পড়লেই কি তুমি পুরুষ হয়ে যাবে! আত্ব-সম্মান তো সবারই আছে।
গাড়ীর সিটটা ছেড়ে দিয়ে তো তোমাদের সম্মান দিয়ে বসতে দেই বলে ভেবে নিওনা করুনা করছি। ওটা করুনা নয়। ওটা আমার মা, বোনের প্রাপ্য সম্মান, অধিকারকে প্রতিষ্টা করতেই তো ওটা করি! তারপরও অধিকার অধিকার করে নিজের সম্মানটাই নারী আজ ধরে রাখতে পারছেনা। বেকায়দায় পড়ে যাচ্ছে। যার জল জ্যান্ত প্রমান বাংলাদেশের টিভি টকশো গুলো। আমরা নবীন মানুুষ, মুখ ফসকে সামান্য কিছু বললেই ------আমাদের সব গেল।
এই সব আচরণের জন্যই সুপ্তির সাথে তার তাল মেলেনা। সুপ্তি ফাস্ট আর সৌমিক স্লো। ভালবাসলেই কি তাকে ভালবাসা বলে!
ভালবাসা মানে কারো জন্য ভাল কিছু চিন্তা করা। ভালবাসা মানে নিজের ক্ষতি মেনে নিয়ে প্রীয় মানুষের ক্ষতি করার চিন্তা বাদ দিয়ে সে যেন সুখে থাকে তার চিন্তা করা। ভালবাসা মানে প্রিয় মানুষকে কারো কাছে ছোট না করা। ভালবাসা মানে প্রিয় মানুষকে কুরবানি করে বাবা-মা'র মুখে হাসী ফোটানোর ভাবনায় সময় পার করা।
সৌমিক যখন এসব ভাবনা ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছে বুঝতে পারেনী। সন্ধ্যা পার হয়ে রাতের গহবরে হারিয়ে গেছে আলোস্নাত দিন। অবসন্ন শরীর একটু স্বস্তীর নিঃশ্বাস নিতে ব্যস্ত। ঘুম সাহেব সৌমিকের চোখে লেগে গেছে প্রায়। সৌমিকের মা তাকে ডাকলো।
-- সৌমিক! এই সৌমিক খেতে আয়।
সৌমিক তখন ঘুমিয়ে পড়েছে। না, ছেলেটাকে নিয়ে আর পারিনা। সব কিছুতে এত বোকা হলে চলে! দিন পাল্টাচ্ছে। নিজেকে কই একটু বদলাবে। তার কোন নাম গন্ধ নেই। তবু ও ভাল। ছেলে আমার বখে যায়নি। সৌমিকের মা কড়া নাড়ে।
বাবা, উঠ। না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়লি যে।
--ও, মা! ডাকছিলে।
--খাবিনা!
-- মন টা ভালনা মা! তুমি যে মেয়েটাকে সাপোর্ট কর। সে মেয়েটা মা মানুষনা। আস্ত একটা গুন্ডা মেয়ে। আর তুমি তো জানো মা। আমি এই দেশটাকে ভালবাসি। আমি ভাল কিছু করতে চাই। প্রেম টেম আমাকে দিয়ে হবেনা মা। আমি যাকে বিয়ে করবো, তাকে বাঙ্গালী মেয়ে হতে হবে। রাজ পথে বিড়ি টানা মেয়ে দিয়ে আমার জীবন নয়, আমার অনাগত ভবিষ্যৎ কি আমি নষ্ট করবো বলো মা। সুপ্তিকে আমার ভালো লাগেনা মা। আগে ওকে ভাল, নরম স্বভাবের মেয়ে হতে বলো।
-- আজ বুঝলাম বাবা। তু্ই বোকা না। অনেক জ্ঞানী একটি ছেলে আমি জন্ম দিয়েছি।
-- মা, এর থেকে বড় কিছু তোমার আর কি আছে মা।
-- তোর বাবা মারা যাওয়ার পর তোর বাবার ছোট ব্যবসাটা কিছু গুনি, সৎ মানুষের জন্য আজ একটা অবস্থায় এসেছে। সুুপ্তির মা নেই বলেই ওকেও আমি আলাদা করে দেখিনাই বলেই আমি ভেবেছিলাম........।
-- চল মা! ভেবে দেখা যাবে। আগে ইংরেজ কুত্তার ভূত তাড়াও। দেখা যাবে।
খাবার টেবিলের দিকে মা, ছেলে এক সাথে যেতে থাকে। সৌমিক বলে বসে
--কেউ বোঝেনা মা, আমি যাহা চাই বলিতে.......
-- সবাই কি সব কিছু বুঝে রে বাবা।
--সবাই বোঝে মা! বুঝেও না বোঝার ভান আমাদের বেশি।
(সুপ্তির/সৌমিকের রাজনীতি)
সেদিনরে ঘটনায় সুপ্তির মন ভাল নেই। আজ কাল খবরের কাগজ দেখলেই মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। মনে হয় খবরের কাগজটা টান দিয়ে ছিড়ে ফেলে সুপ্তি। সকাল বেলায় পত্রিকাওয়ালা রুটিন করে পত্রিকা দিয়ে যাবে। আর সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পত্রিকায় যেদিন প্রথম সুপ্তি প্রথম চোখ বুলাবে সেদিনই খারাপ খবর ছাড়া ভাল কোন খবর মনে হয় পাওয়া যায়না। দিনটাও কুফা যাবে বলে মনে করে সুপ্তি। সৌমিককে যেদিন চিঠি টি দিয়েছিল সেদিন বারটাও ছিল শনিবার আর পত্রিকাও ধরেছিল সুপ্তি সেদিন। পত্রিকার প্রথম পাতায় খবর ও ছিল সেদিন কোটা আন্দোলনের নেত্রী সুপ্তি গ্রেফতার। কোন একটা লাইনেও লেখা ছিল। পত্রিকাওয়ালাকে বলা আছে, প্রথম আলো ছাড়া অন্য কোন পত্রিকা যেন না দেয়। সেদিন প্রথম আলো পত্রিকা বাদ দিয়ে অন্য একটা পত্রিকা দরজার নিচ দিয়ে যায় পত্রিকাওয়ালা দিয়ে্ যায়। কি সে পত্রিকা মনে নেই। লোকটা মাঝে মাঝে এই অনিয়মটা করে যায়। অথচ মাস শেষে ঠিকই পই পই করে প্রথম আলোর দাম ধরে বিল নিয়ে যায়।
দেশটার অবস্থা এত খারাপ যে, একদম আগা গোঁড়া কোথাও ঠিক নেই। সব জায়গায় দূর্নিতি। সুপ্তি যা বলার সব সাফ বলতে পছন্দ করে। পোশাক আশাকে বাঙ্গালীপনা না থাকলেও মনে প্রাণে সে বাঙ্গালী। তার প্রমাণ সুপ্তি ভারতীয় সিরিয়াল দেখেনা। ভারতীয় সৈন্যরা যখন ফেলানীকে মেরেছিল তখন অনেক ছোট ছিল সে। সুপ্তির মা তখন বেঁচে ছিল। ওর বাবা তখন বলেছিল।
-দেশ স্বাধীন করতে এতই যখন দরদ দেখিয়েছিলি, ফেলানীদের প্রতি এত নির্দয় কেন হলি দাদা। তার চেয়ে বরং পুরো বাংলাদেশটাই নিজের অঙ্গরাজ্য করে নিলেইতো পারিস।
তখন সুপ্তি সবে ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী। আর সৌমিক ৬ষ্ঠ। সুপ্তি জানতে চেয়েছিল।
- বাবা, ও বাবা স্বাধীন কি!
- মারে, স্বাধীন হচ্ছে তোকে যখন খুশি তখন আইসক্রিম কিনে দেয়া।
- বাবা, ও বাবা ফেলানী কি!
এই প্রশ্নের জবাব তখন সুপ্তির বাবা দিতে পারেনী। বলতে পারেনী, ফেলানী একটা স্বাধীন দেশের গ্রাম্য একটি মেয়ে। যার স্বপ্ন ভারত বাংলাদেশের কাটাঁতারে মারা পড়েছিল হায়েনা বিএসএফ- এর গুলিতে। পাকিস্থান আমাদের একবারে মারতে চেয়েছিল যেখানে ভারত আমাদের তিলে তিলে মারতে চাইছে।
সুপ্তির এখন আর আগের মতো দেশ নিয়ে ভাবার সময় নে্ই। সৌমিককে জয় করাই তার এখন একমাত্র লক্ষ্য।
ভাবছে এ মাসে পত্রিকাওয়ালার টাকা টা একটু ঘুড়িয়ে ফিরিয়ে দেবে। সুপ্তির বাবা আগে লিগ সাপোর্ট করতো। সৌমিকের পরিবার পারিবারিক ভাবে করে দল। কিন্তু,নীতি ভ্রষ্ট কিছুতেই তাদের ছাড় নেই। উচিৎ আর হক কথা বলাই তাদের স্বভাব। ২০১৮ সাল টা বাংলাদেশের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জিং সময়। যেখানে রাষ্ট্রিয় দায়িত্বে থাকা বড় বড় রাঘব বোয়ালরাও টেলিভিশন টকশো থেকে শুরু করে সব জায়গায় হিসেব কষে কষে মন্তব্য দিচ্ছে। ভয় পাছে পুলিশ না গ্রেফতার করে নিয়ে লাল দালানে পুড়ে রাখে। এডভোকেট মুইনুল হক কি এক মাসুদা ভাট্টি না কি নাম যেন মহিলা কে টিভির টোকশোতে চরিত্রহীন না কি যেন বলায় বেচারা এখন লাল দালানে। অপমান অপদস্ত হয়ে বসে আছে।
সুপ্তি ভাবে ছাগলটাকে যদি জেল খাটাইতে পারতাম। তাহলে শালার গাধামোটা হয়তো চলে যেত। শালায় না লিগ না দল। ও একটা ছাগল।
কারন, ছাগলদের কোন না আছে লিগ আর না আছে দল। না আছে লিগা লিগি আর না আছে দলাদলি। এরা এও না অও না। কামের ও না আকামের ও না। না আগাছা, না পরগাছা। সৌমিকের মায়ের খুব ইচ্ছা সুপ্তিকেই ছেলের বউ বানাবে। কিন্তু, বাইরে বাঙ্গালীপনা না থাকায় সুপ্তিকে সৌমের পছন্দ না। সুপ্তির বাবা আর সৌমিকের মায়ের সাথে ওদের বিয়ের ব্যাপারে কথা বার্তা হয়ে আছে। পড়ালেখা শেষ হলেই এদেরকে আটকিয়ে দিতে পারে।
বর্তমানে ১১ তম জাতীয় নির্বাচনে দেশে গরম বাতাস বইছে। আমাদের মত সাধারণ আম জনতার জানার বাইরে যে দেশে কি হবে না হবে। টিভি খুললেই কাদের সাহেবের স্লো মোশনের কথা বলা দেখি শুনি, যু্ক্তফ্রন্টের কামাল সাহেবের আগুনে বক্তিতা, নইলে মির্জা ফখরুল সাহেবের তত্তাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে নিয়ে বক্তব্য। আর তাছাড়া ঘুম, খুন, হারানো বিজ্ঞপ্তি, ধর্ষন, বন্ধুকযুদ্ধ, আহত, নিহত ছাড়া এই দেশটায় যেন ভাল কোন খবরই নেই।
ছেলে মেয়েদের স্কুল, কলেজ , বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়ে বাবা-মাদের চিন্তার নতুন উইং যু্ক্ত হয়েছে। কিছুদিন আগে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট-্এর কয়েকজন ছাত্র ছাত্রী সড়ক দূর্ঘটনায় বাচ্চারা আমাদের যা শিখিয়ে গেল তা আর ধরে রাখলাম কই! সময়ের পান্তা ভাত দিয়ে তা গিলে খেয়ে হজম করে ফেলেছি। পুলিশ কোন চ্যাটের বাল স্লোগানটা যারা দিয়েছিল আজ তারাই ওভার ব্রিজ ব্যবহার না করে চলন্ত গাড়ীর সামনা দিয়ে দৌড়ে রাস্তা পার হচ্ছি। আমরা আসলে কোন কিছু ধরে রাখতে পারছিনা। না স্বাধীনতা, না আইন, না অনুশাসন, না নীতি, না সততা কোনটাই না। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর শিল্পি হায়দার সাহেব স্বাধীনতা খুঁজে না পেয়ে আক্ষেপ নিয়ে লেখেন গান। "৩০ বছর পরেও আমি স্বাধীনতাটাকে খুঁজছি।" সৌমিকের ভয়টা আজও কাজ করে ঠিক তখন থেকেই যখন তার বাবাকে গুম করে ফেলা হয়। সৌমিকের মা আর তার সন্তান আজো জানতে পারেনী কি ছিল তার কারন। সেকি আজো বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে। আজ সৌমিকের ২৬ শেষ। পুলিশের কাছে আজো সে মামলা ঝুলে আছে। মাঝে মাঝে পুলিশ ডেকে পাঠালে সৌমিকের মা থানায় যান। সিনেমাটিক সংলাপটি আজো তাকে শুনে ছল ছল চোখে বাসায় ফিরতে হয়।
--ভাবি আপনি কোন চিন্তা করবেন না। আমরা তার খোঁজ পেলে আপনাকে জানাবো।
আজ প্রায় ১৫ বছর হয়ে গেছে ফারুক সাহেব নিখোঁজ। জহির রায়হানের পথকে অনুসরণ করেছেন। ফারুক সাহেব যদি জানতেন যে তিনি গুম হয়ে সবার অজান্তে ঘুমাবেন তাহলে হয়াতো ভুল করেও এই সোনার বাংলায় তিনি জন্ম নিতেন না। সৃষ্টাকে উপঢৌকন দিয়ে জন্ম নিতেন ইউরোপ অথবা আমেরকিার কোন ধনি রাষ্ট্রে। যেখানে গুনিদের কদর করা হয়। এই দেশের গুন্ডা মাস্তানদের দ্বারা গুম/খুন হতে হয়না।
সৌমিক বেশ কিছুদিন তার বাবার ছবির দিকে তাকিয়ে থাকেন। বাবাকে নিয়ে তার মধুর সৃতি গুলি রোমন্থন করেন। মাঝে মাঝে নিরব কান্নায় কাঁদেন কাউকে বুঝতে না দিয়ে।
সৌমিক আজ প্রায় ১৫ বৎসর ধরে বাবার অভাব অনুভব করছে। যার বাবা/মা নেই সেই বুঝতে পারে সে অভাব টা কত বড় মাপের অভাব। টাকা পয়সার মাপজোকে সে অভাব পূরণ হয়না। যখন থেকে সে বুঝতে শিখেছে যে তার বাবাকে গুম করা হয়েছে। তখন থেকেই সে চুপচাপ স্বভাবী হয়ে গেছে। এদেশের প্রতি তার যেমন ভালবাসা সুপ্ত অবস্থায় আছে। ঠিক তেমনি এদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ ও মানষের প্রতি অতটা টান তার নেই। শুধু মাত্র ছিন্নমুল শিশুদের প্রতি তার একটু টান রয়েছে। সময় পেলে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে শিশুদের সাথে সময় কাটায়। এতিমখানায় গিয়ে গিয়ে শিশুদের একবেলার আহারের ব্যবস্থা করে। এমনকি সে নিজেও তাদের সাথ বসে খায়। এই বিষয়টি কেউ জাননা। এমনকি সৌমিকের মা'ও না।
সৌমিক একটি ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে গবেষনা করছে। আর তা হলো বাংলাদেশে কেন সব কিছুতে অসামসঞ্জ্যতা! কেন রাজনৈতিক দলাদলি! সংঘাত! হানাহানি! মারামারি! খুন! টেন্ডারবাজি!স্বার্থের সংঘাত! বেঈমানী! শত্রুতা!ভেদাভেদ!ক্ষমতার লোভ! ক্ষমতার অপব্যবহার! ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ!ছিনতাই! লুটতরাজ! পরনিন্দা! ধর্ষণ! অন্যর জানমালের ক্ষতি! মাদকের ব্যবসায় সয়লাভ করে ফেলা! কিন্ত, কেন? তার মুল কারণ খুজে বের করা এবং তার আশু সমস্যার সমাধান করার ফর্মূলা আবিস্কার করে মানুষের মাঝে তা প্রচার করাই সৌমিকের মুল পরিকল্পনা। আর তাই সৌমিক সবার অলক্ষ্য কাজ করে যাচ্ছে।
ভাবতে অবাক লাগে উন্নত বিশ্বে কারাগার গুলো বন্ধ হয়ে যায়। আর আমাদের দেশে নতুন কারাগার উদ্ভোধন করা হয়।। এই দেশে কারাগার বানানোর জন্য নতুন নতুন বহুতল ভবন বানানো হয়! ভারতীয় উপমহাদেশ এতটা দূষিত হতে পারে, একজন আরেকজনের উপর কতটা ক্ষিপ্র গতিতে থুথু নিক্ষেপ করতে পারে তার প্রতিযোগীতা ক্ষোদ বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবশে অবলোকন না করলে বোঝা যেতনা।
(পত্রিকা- বাংলাদেশ প্রতিদিন)
আজ ১লা ডিসেম্বর ২০১৮ইং। আর মাত্র ১৫ দিন বাকি তারপরেই দেশ যেন স্বাধীন হবে। বঙ্গ বন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দরাজ কন্ঠে ভাষন বাজানো হবে। সামনে নির্বাচন। পত্রিকা খুললেই নির্বাচনী খবর। সৌমিক পত্রিকাটি হাতে নেয়। খুব আশা করে তার বাবার নামে কেউ কিছু লিখবে। না, কেউ লিখবে না।
আজকের পত্রিকায় লেখা হয়েছে- টর্চ লাইট মেরেও জামায়াতে মুক্তিযোদ্ধা মিলবেনা-অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত (বাংলাদেশ প্রতিদিন)। আচ্ছা, এই লোকটি কি মুক্তিযোদ্ধা ছিল? সৌমিক জানেনা। ওনি তো রাবিশ, অল আর বোগাস মুদ্রাদোষে দূষিত একজন ভদ্রলোক।
বড় করে হেড লাইন হয়েছে " ধানের শীষ তুমি কার" পুলিশের নজরদারিতে থাকবে পুলিশ,
০৫ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৪৬
রুবে৭১ বলেছেন: রাজীব নুর ভাই, আবার পড়লে প্রমীজ করলাম, লেখাটা চলতে থাকবে।
২| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:০৬
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: গুড,চালিয়ে যান।
০৫ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৪৭
রুবে৭১ বলেছেন: মাহমুদুর রহমান ভাই, যদি পড়েন বা কাউকে পড়তে উৎসাহিত করেন। কিবোর্ড চলবে ইনশাআল্লাহ্।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:২৭
রাজীব নুর বলেছেন: লেখাটা ভালো হবে।
চলুক---