নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সৌরভ দাস

সৌরভ দাস ১৯৯৫

চলুন, সবাই কথা বলি

সৌরভ দাস ১৯৯৫ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধিক্কার জানাই জাফর স্যারের এই লেজুরবৃত্তি

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:০১

ছাত্রলীগের ক্যাডাররা যখন শিক্ষকদের পেটানো শুরু করে তার পরবর্তী জাফর ইকবাল স্যারের মিডিয়ায় সাক্ষাৎকার পুরো দেশ জুড়ে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে। স্যার বললেন- এরকম ছাত্র বানিয়েছেন দেখে উনার নাকি গলায় দড়ি দিতে ইচ্ছে করছে। তাছাড়া যে জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিলো সেই জয় বাংলা শ্লোগানের এত বড় অপমান উনি উনার জীবনে দেখেন নি।
জাফর ইকবাল স্যারের এই বোমা ফাটানো স্টেটমেন্টে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যেও সমালোচনার বন্যা বয়ে যায়।
আমিও ভেবেছিলাম, এবার বোধ হয় জাফর ইকবাল স্যার এরকম নোংরামির বিরুদ্ধে দৃষ্টান্ত মূলক কিছু একটা করবেন। তার কপালে আওয়ামী লীগার নামক যে তিলক আঁটা ছিলো তা একেবারে মুছে যাবে এবার। কিন্তু জাফর ইকবাল স্যার হতাশ করলেন। খুব বেশি হতাশ করলেন। ঘটনার পরদিন মুন্নি সাহা যখন প্রশ্ন করলো, শিবিরের ছেলেদের উদ্দেশ্য করে জাফর স্যার “তোমরা যারা শিবির করো” নামে যে কলাম লিখেছিলেন তারই পরিপ্রেক্ষিতে এখন “তোমরা যারা ছাত্রলীগ করো” এরকম কিছু লিখবেন কি না। জাফর ইকবাল স্যার তখন অনেকটা প্রত্যক্ষভাবেই জানিয়ে দিলেন তিনি এরকম কিছু লিখবেন না। লিখলে পুরো সংগঠনকে এরকম অ্যাটাক (!) করে কিছু লিখবেন না। কিন্তু কেনো? এই এক দিনে এমন কি হলো যার জন্য ছাত্রলীগের প্রতি স্যারের এত মমতা জন্মলো? স্যারের উদ্দেশ্যে বলতে ইচ্ছে হচ্ছে, শিবির স্বাধীনতা বিরোধী, ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে, আমি ব্যক্তিগতভাবেও শিবিরকে ঘৃণা করি, সে হিসেবে শিবির যদি দুইটা থু থু র যোগ্য হয় তবে বর্তমানে ছাত্র লীগ সেই স্বাধীনতার নাম ভাঙিয়ে যা করছে তার জন্য ছাত্রলীগ কমপক্ষে দশটা থু থু র উপযুক্ত।
আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকা হাতে নিয়ে যখন আপনার আরেকটি স্টেটমেন্ট দেখলাম নিজের চোখকে আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। একজন আওয়ামী লীগের নেতা ছাত্রলীগের হাতে মার খাওয়ার পরেও এরকম এত দ্রুত ছাত্রলীগপ্রেমী হয়ে উঠবেন কিনা সে ব্যাপারে সন্দেহ থেকে যায়। কিন্তু জাফর ইকবাল স্যার এই নোংরা কাজটি করেছেন বেশ ভালো ভাবেই। তিনি বলেছেন, “শিক্ষকদের উপর কে হামলা করেছে? ছাত্রলীগের ছেলেরা? না। এরা তো ছাত্র। আমাদের ছাত্র। এত কম বয়েসী ছেলে, এরা কী বোঝে? ওদের আপনি যাই বুঝাবেন তাই বুঝবে। কাজেই আমি যখন দেখলাম তিনজন আর চারজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে, এখন আমার লিটারালি ওদের জন্য মায়া লাগছে।”
জাফর ইকবাল স্যারের উদ্দেশ্যে বলছি, বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স কমপ্লিট করা কিংবা মাস্টার্স পড়ুয়া ছাত্রদের যদি কম বয়েসী কিংবা অবুঝ বলে আপনি অভিহিত করেন তখন আসলে আমাদের কিছু বলার থাকে না। মনে হয় বাংলাদেশের সংবিধানে বয়স সংক্রান্ত খানিকটা পরিবর্তন নিয়ে আসা প্রয়োজন।
ওরা যখন এতই অবুঝ তখন বিশ্ববিদ্যালযে কোনো নিয়োগ আসলেই ওদের চোখ টাটিয়ে ওঠে কেনো? ওরা যখন এতোই অবুঝ তখন হলে হলে এতো কৌশলে সিট বাণিজ্য করে কেনো? ওরা যখন এতই অবুঝ তখন প্রতি বছর অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া ছাত্রদের উপর এত হিংস্রভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে কেনো? কেনো তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় রাজনীতির নামে খুন ধর্ষণ অপহরণের চর্চা করে? আপনি কি জবাব দিতে পারবেন? নাকি অবুঝ শিশুর পাগলামি বলে এগুলোও এড়িয়ে যাবেন?
আমি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালযে পড়াশুনা করি। বাংলাদেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালযের মতো এখানেও শিক্ষক নিয়োগ চলে নানান তেলেসমাতি। বিগত শিক্ষক নিয়োগে একটা অবুঝ বালক (জাফর ইকবাল স্যারের ভাষ্য মতে) একজন শিক্ষক নিয়োগ প্রার্থীর কাছ থেকে প্রায় ১২ লক্ষ টাকার মতো আদায় করে। তারপর তাকে শিক্ষক বানাতে গিয়ে দেখা গেলো নানান বিপত্তি। কোনো টিচারই তাকে নিতে চাচ্ছে না। কোনো উপায় না দেখে এই বাচ্চা ছেলেটিই এক স্যারের রুমে ঢুকে স্যারকে অস্ত্রের মুখে ফেলে স্যারের সাইন নিয়ে ঐ প্রার্থীকে টিচার বানিয়ে দেয়। ঐ টিচারটি পরে এরকম অন্যায় কাছ করেছেন সেটা উপলব্ধি করতে পেরে নিজের চেম্বারে বসে নীরবে অশ্রু বিসর্জন করেছেন। কোনো মিডিয়ায় এই নিউজ আসেনি। অথচ এই ঘটনায় অপরাধের মাত্রা শাবিপ্রবির তুলনায় কোনো অংশেই কম নয়, বরং বেশিই ধরা যায়।
এরকম অসংখ্য ঘটনা দেশে প্রতিনিয়ত ঘটছে। ছাত্রলীগ ছাত্রলীগকে পেটাচ্ছে, শিক্ষক পেটাচ্ছে, খুন করছে, ধর্ষণ করছে, ৫ জানুয়ারির মতো কলঙ্কিত ইলেকশন হচ্ছে, জাফর ইকবাল স্যার টু শব্দও উচ্চারণ করেনি। আজ নিজের গায়ে হাত পড়ায় জাফর স্যার টু শব্দ করেও কোনো এক অদৃশ্য চাপের কাছে নতি স্বীকার করে গেলেন নিজ উদ্যেগে। এ কোন প্রহসন স্যার! আপনি নিজেই স্বপ্ন দেখিয়ে কেনো আবার সেটাকে দুঃস্বপ্নে পরিণত করেন। আমরা ছাত্র সমাজ আপনার কাছ থেকে এটা প্রত্যাশা করিনি। আপনার প্রতি আমার এত দিনের শ্রদ্ধা ভালোবাসা সবকিছুকে অস্বীকার করতে ইচ্ছে করছে খুব।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১:০৭

ই হক মুরাদ বলেছেন: দেয়ালে বল ছুড়লে তা নিজের দিকে ফিরে আসে। এই ছাত্রলীগ দিয়ে পাবনার ডিসি, জাহাংগীর নগর এর শিক্ষকেদর, রংপুর এর শিক্ষক দের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষক দের মার দেযা হয়েছিল, তখন এই স্যার কোন প্রতিবাদ করেন নি। এখন ত নিজের দিকে আসবেই। নিজের ছেলেকে আরেকজনকে শায়েষ্তা করার জন্য বেয়াদব বানালে আপনার সাথেই বেয়াদবী করবে।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৫৯

সৌরভ দাস ১৯৯৫ বলেছেন: জাফর ইকবালের এই ভূমিকা দেশের শিক্ষক সমাজের একটা বিশাল অংশের মেরুদণ্ডহীনতাই প্রমাণ করে।

২| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৪৩

চাঁনপুইরা বলেছেন: 'নামে আপনি যাই হউন না কেন , আপনি এই মুহূর্ত থেকে শিবির বা রাজাকার তাতে কোন সন্দেহ নাই ' - হেহ হেহ হেহ ।

৩| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ২:০০

সৌরভ দাস ১৯৯৫ বলেছেন: ঠিকই বলেছেন ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.