![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আসুন সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলি
অনিকেত চাকরীটা পেয়েছিল
....... শাহজাহান পারভেজ রনি
বিশ্বাস করুন অনিকেত বাঁচতে চেয়েছিল।
ক'দিন আগে মল্লিকার সাথে ব্রেকআপ হয়েছিল
বেঁধে দেয়া একটা বছর ফুরিয়ে গেলে
মল্লিকা গুডবাই জানিয়ে বেছে নিয়েছিল
বাবার পছন্দসই প্রশাসন ক্যাডারের বর।
শেষ ক'টা দিন অনিকেত বেশ একা হয়ে গিয়েছিল
বিশ্বাস করুন অনিকেত আরো ক'টা দিন সময় চেয়েছিল
বিশ্বাস করুন অনিকেত বাঁচতে চেয়েছিল।
বাবাটা সরকারী অফিসের ছা'পোষা কর্মচারী
অনিকেত বাবার কষ্টটা বুঝতো আর বুঝতো বলেই
এক জামা-প্যান্টেই তার অনেকদিন কেটে যেত;
হাত খরচের পয়সা জোগাতে দু'তিনটে টিউশনি চালিয়েছে
টিউশনির পয়সায় প্রতিবন্ধী বোনের চকোলেট,
মায়ের শাড়ী, বাবার চার পকেটের ফতুয়া
নিজের বই সবটা দিয়ে সে চেষ্টা করতো ।
মাসের শেষদিকে চাপা স্বভাবের বাবার হাতে
দু'একশ টাকা ধরিয়ে বলতো-
বাবা এটা রাখো পথ চলতে লাগবে, এসময় এটা লাগে।
বিশ্বাস করুন অনিকেত বাঁচতে চেয়েছিল,
আর তাই সার্টিফিকেট পাজা করে
শেষ কটা দিন সে বিরামহীন দৌড়েছিল
চাকরীর বাজারে এ দরজায় ও দরজায়;
খুঁটির জোর না থাকা অনিকেত তবু স্বপ্ন দেখেছিল
বেঁচে-বর্তে থাকার, বাবার দির্ঘশ্বাস ঘোঁচাবার
মা'কে ভাল ডাক্তার দেখাবার
প্রতিবন্ধি বোনটার মুখে আর একটু হাসি ফোটাবার
টিন সরিয়ে বাড়িটায় একটা ছাদ বসাবার।
মল্লিকার সামনে দাঁড়িয়ে,
সময় জয়ী অনিকেত প্রবল চিৎকারে বলতে চেয়েছিল
দ্যাখো মল্লিকা দ্যাখো অনিকেত অকর্মন্য নয়!
অনিকেত স্বপ্ন দেখতে ভালবাসতো
তাই আকাশটাও তার ভীষন পছন্দের ছিল
সময় পেলেই সে নদীর কাছে যেত
কল্পনার হিজিবিজিতে আঁকতো একান্নবর্তী কিছু সুখ
একটা চকচকে মলাটের ভালবাসা
আর একটা সুপ্রশস্ত উঠোনের;
উঠোনের কোনে একটা ডালিম গাছের
ভীষন শখ ছিল অনিকেতের
আর শখ ছিলো ডালিমের ডালে
হলুদ একটা টুনটুনির।
আজ তিরিশে শ্রাবন
সাত দিন আগে ঠিক এমনই এক দিনে
যন্ত্রদানব পিষে দিয়েছিল আমাদের অনুর সংগ্রামী দেহটা
বড়রাস্তায় লেগে থাকা ছোপ ছোপ রক্তের দাগগুলো
দু'দিনের টানা বর্ষায় ধুঁয়ে গেছে
টিনশেড এর বাড়ীটা তবুও অনুর অপেক্ষায়
বড় রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকে
কখন আসে কখন আসে
আমাদের অনু আর আসেনা
বিশ্বাস করুন অনু ফিরতে চেয়েছিল
অনু সবার কাছে আর ক'টা দিন সময় চেয়েছিল।
আজ তিরিশে শ্রাবন
স্বর্গীয় অনিকেত পাল এর
আজই নতুন কর্মস্থলে যোগদানের কথা ।
©somewhere in net ltd.