নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সময়ের দর্পণ

সোহাগ তানভীর সাকিব

বাস্তবতাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানোর ক্ষুদ্র প্রয়াস।

সোহাগ তানভীর সাকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাশরাফির রাজনীতি প্রসঙ্গে

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৬


ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিবিদ হওয়ার বহু নজির আমাদের উপমহাদেশের ক্রিকেটারদের আছে। বিশ্বক্রিকেট কাঁপানো বিশ্বের বাঘা বাঘা ক্রিকেটারও এক সময় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। ১৯৮৪ সালে ক্রিকেটে অভিষেক হওয়ার পর ১৯ বছর ক্রিকেট ক্যারিয়ার অতিবাহিত করে ভারতীয় ক্রিকেটার এবং টিভি ব্যক্তিত্ব নভোজাত সিং সিধু ২০০৪ সালে রাজনৈতিক দল "ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজিপিতে যোগ দেন। ২০১৭ সালের কংগ্রেস নির্বাচনে জয়লাভ করেন। নভোজাত সিং সিধুর মত যে কয়েকজন ভারতীয় তারকা ক্রিকেটার ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণ করে রাজনীতির খাতায় নাম লিপিবদ্ধ করেন তাদের ভেতর ভিনোদ কাম্বলী,মনসুর আলী খান, মোহাম্মদ আজহার উদ্দিন অন্যতম।
সাবেক শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার ও বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক যার অধিনায়কত্বের কারণে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দল অনেক বদলে গিয়েছিল। যার ফলে ১৯৯৬ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়লাভ করে। বলছি শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তী ক্রিকেটার অর্জুনা রানাতুঙ্গার কথা। যিনি ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর পর ২০০১ সাল থেকে রাজনীতিতে সক্রিয় হন। তারপর শ্রীলঙ্কার জাতীয় নির্বাচনে সেদেশের রাজনৈতিক দল "পিএ" হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সাংসদ নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে অর্জুনা রানাতুঙ্গা শ্রীলঙ্কার পরিকল্পনামন্ত্রী পর্যন্ত হন। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের অপর কিংবদন্তী ব্যাটম্যান সনাৎ জয়সুরিয়াও এখন সেদেশে রাজনীতিতে সক্রিয়।
১৯৯২ সালে পাকিস্তান ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়লাভ করার পর অধিনায়ক ইমরান খানকে অনেক লোভনীয় প্রস্তাবসহ রাজনীতে যোগদান করার আহবান জানান তৎকালিন পাক প্রধানমন্ত্রী নেওয়াজ শরিফ। সেই ইমরান খান রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন ঠিকই কিন্তু সেটা ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর পর। ১৯৯২ সালে ইমরান খান ক্রিকেটকে বিদায় জানান। ১৯৯৬ সালে নিজেই গঠন করেন "পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ" নামের রাজনৈতিক দল। তারপর অনেক বন্ধুর পথ অতিক্রম করে সম্প্রতি হয়ে যাওয়া পাকিস্তান জাতীয় নির্বাচনে সেই নেওয়াজ শরিফকে ব্যাপক ভোট ব্যবধানে পারিজত করে এখন তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।
বিশ্বক্রিয়া ব্যক্তিত্বের ভেতর রাজনৈতিকভাবে সবচেয়ে সফল ইমরান খান। তিনি কোন রাজনৈতিক মতাদর্শের গোলামী বা চাটুকারিতা করে নেতা বা নির্বাচিত হন নি। নিজেই রাজনৈতিক মতাদর্শ তৈরি করেছেন। তৃণমূল থেকে রাজনীতি করে উঠে এসেছেন সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত। ইমরান খান চেয়েছিলেন রাজনৈতিক ভাবে অস্থির আর অশান্ত পাকিস্তানকে শান্ত করতে। চেয়েছিলেন পরিবর্তন। তিনি যা চেয়ে ছিলেন তা করতে পেরেছেন। ক্রিকেটার হিসেবে তিনি যেমন সফল এবং জনপ্রিয় ছিলেন রাজনৈতিক নেতা হিসেবেও তিনি তার চেয়ে কোন অংশে কম জনপ্রিয় নন।
রাজনীতিতে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশের ক্রিকেটারেরাও। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রথম টেষ্ট অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয় রাজনীতি সক্রিয়। আওয়ামিলীগ মনোনিত প্রার্থী হয়ে মানিকগঞ্জ থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি।
এত সময় যেসব ক্রিকেটারদের রাজনীতি নিয়ে সামান্য আলোকপাত করলাম, তাদের ভেতর সনাৎ জয়সুরিয়া বাদে বাকী সব ক্রিকেটার ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর রাজনৈতিক অঙ্গণে প্রবেশ করেন। রাজনীতি যোগ দিয়ে রাজনৈতিক কার্যক্রম আর পেশাদার ক্রিকেট একসাথে চালান নি।
যাই হোক, এবার আসি আসল কথায়। বাংলাদেশ ক্রিকেটের এখন পর্যন্ত সফল অধিনায়ক এবং সফল ক্রিকেটার ওয়াডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি মাশরাফি বিন মুর্তজা। ক্রিকেটাঙ্গনে দেশপ্রেম আর অপরিসীম মনোবল মাশরাফিকে নিয়ে গিয়েছে অনন্য উচ্চতায়। দেশের ক্রিকেটপ্রেমি প্রতি মানুষ হৃদয়ের গভীরে স্থান দিয়েছে ম্যাশকে। ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শুরু থেকে নানা চড়াই-উৎরাই অতিক্রম করে অধিনায়কের দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়। বাংলাদেশ ক্রিকেট মাশরাফিকে চিরদিন মহানায়ক হিসেবে মনে রাখবে।
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মাশরাফির নির্বাচন করার গুণজন শোনা যায়, গত ১৯ মে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে । গুণজনের শুরু থেকেই ক্রিটেকপ্রেমি বা মাশরাফি ভক্তদের মাঝে নানা আলোচনা-সমালোচনার সূত্রপাত ঘটে। গত ১১ নভেম্বর-১৮ আওয়ামিলীগের দলীয় কার্যালয় থেকে নড়াইল-২ (লোহাগড়া-নড়াইল সদরের একাংশ) আসনের জন্য মনোনয়নপত্র কেনার মাধ্যমে মাশরাফির সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টা পরিস্কার হয়ে যায়।
"মাশরাফি রাজনীতি সক্রিয় হবেন বা নির্বাচন করবেন" পত্রপত্রিকার অনলাইন সংস্করনে এমন সংবাদে তাঁর ভক্ত-সমর্থকদের নেতিবাচক মন্তব্যই দেখা যায় বেশি। অনেক সমর্থক আবেগে আপ্লুত হয়ে গালমন্দ করেছেন। এসব নেতিবাচক মন্তব্য অবশ্যই একটু হলেও মাশরাফির ইমেজ নষ্ট করেছে। মাশরাফির জনপ্রিয়তা সর্বজনীন থেকে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলে চলে গেল। বর্তমান প্রতিহিংসার রাজনীতিতে মাশরাফির রাজনৈতিক মাঠে আগমন সত্যি হতাশা জনক। তিনি বর্তমান রাজনৈতিক পট পরিবর্তন করে সুস্থ গণতান্ত্রিক ধারা এবং সম্প্রীতির রাজনীতি ফিরিয়ে আনতে পারবেন? নাকি তিনিও প্রতিহিংসার রাজনৈতিক চর্চা করবেন?
এটা বলছি না যে, মাশরাফির এখন রাজনীতি আসা উচিত হয়নি বা ম্যাশ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে কাজটি ঠিক করছেন না। হ্যাঁ, মাশরাফি নির্বাচিত হলে হয়তো নড়াইল-২ আসনের উন্নতি হবে, প্রসাশন দুর্নীতি মুক্ত হবে। কিন্তু মাশরাফি তো এখন শুধু নড়াইলের সন্তান নয়, সারা বাংলাদেশের সন্তান। সারা বাংলার মানুষ মাশরাফির কাছে অনেক কিছু আশা করে।
মাশরাফি জনপ্রিয়তার দিক এমন একটা স্থান দখল করেন যে, সে নিজে আলাদা একটা রাজনৈতিক দল গঠন করলেও জনসমর্থনের অভাব হতো না। হ্যামিলিনের বাঁশিওয়ালার বাঁশির সুরে শত শত তরুণ-তরুণী যেমন রাস্তায় নেমে এসেছিল ঠিক তেমনিভাবে মাশরাফির ডাকেও দেশের হাজার হাজার তরুণ রাস্তায় নেমে আসতো যদি যে পরিবর্তনের আহ্বান করতেন। ক্রিকেটের মত বাংলাদেশে চলমান প্রতিহিংসার রাজনীতিও হয়তো তখন তিনি পরিবর্তন করতে সক্ষম হতেন।

-সোহাগ তানভীর সাকিব
নভেম্বর-২০১৮
তেঁজগাও, ঢাকা-১২১৫

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৯

সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন: সহমত!

২| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৩

হাবিব বলেছেন: একদম মনের কথা বলেছেন.................

৩| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৭

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
অনেক দিন পর আপনাকে দেখলাম।

অনেকের ভালবাসা হারাবে।

৪| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৯

সোহাগ তানভীর সাকিব বলেছেন: আসলে ভাই, আমার পিসিটা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল তাই এতোদিন আসতে পারি নি।

৫| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: আমি মাশরাফিকে নিয়ে আশাবাদী।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.