নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সময়ের দর্পণ

সোহাগ তানভীর সাকিব

বাস্তবতাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানোর ক্ষুদ্র প্রয়াস।

সোহাগ তানভীর সাকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিমতলী থেকে চকবাজার

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:০১

মহান একুশে ফেব্রুয়ারি বা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে সারাদেশের মানুষ যখন ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত ঠিক তখন-ই রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকার চুড়িহট্টায় "ওয়াহেদ ম্যানশন" নামক পাঁচতলা এক ভবন থেকে আগুন ছড়িয়ে পরলে ঘটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড।

মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পরে আশপাশের ভবনগুলোতে। আর অপরদিকে পত্রপত্রিকা, টিভি আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পরে চারিদিক। অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহতা সারাদেশের মানুষকে পীড়া দেয়।

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জানা যায়, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণেই আগুনের সূত্রপাত।
মুহূর্তেই আগুনের লেলিহান শিখা আশপাশের ভবনে ছড়িয়ে পরে। ফায়ার সার্ভিসের তৎপরতায় এক সময় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে ঠিকই কিন্তু ৬৭ টি প্রাণ পুড়ে অঙ্গার হওয়ার পর।

রাজধানীর পুরান ঢাকা এলাকা ঘনবসতি পূর্ণ। ভবনগুলিও খুবই সন্নিবেশিত। রাস্তা সরু। এমন ব্যবস্থাপনায় মানুষের বসবাস এমনিতেই ঝুঁকিপূর্ণ। এর মাঝেই রয়েছে রাসায়নিক দাহ্য পদার্থের গুদাম বা কারখানা। আগুনের সুত্রপাতের ব্যাপারে ভিন্ন মত থাকলেও আগুন ছড়িয়ে পরার ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিস কিংবা প্রত্যাক্ষদর্শিদের দ্বিমত পাওয়া যায় নি। আবাসিক ভবনে রাসায়নিক দাহ্য পদার্থের একাধিক গুদাম।

নিমতলী ট্যাজেডির কথা হয়তো অনেকের-ই মনে আছে। ২০১০ সালের ৩ জুন চকবাজার থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরে পুরান ঢাকার নবাব কাটরার নিমতলী নামক মহল্লায় অগ্নিকান্ডে প্রাণ হারায় ১১৯ জন। হৃদয়বিদারক এই ঘটনায় সারাদেশের মানুষ শোকে বিহ্বল হয়ে পড়ে। ৫ জুন ২০১০ ঘোষণা করা হয় রাষ্ট্রীয় শোক।

আলোচিত নিমতলী ট্যাজেডির ঘটনায় গঠিত সরকারি তদন্ত কমিটি ১৭ টি সুপারিশ জানিয়ে প্রতিবেদন দিয়েছিলেন। পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক কারখানা বা গুদাম অপসারণের কথা বলা হয়। তখন সরকারি কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক গুদাম সরিয়ে নেওয়ার একটি প্রকল্প নিয়েছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়। গত আট বছরেরও সেই প্রকল্প বাস্তবায়িত হয় নি। চকবাজারের ঘটনায় আবার ১২ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ওই মন্ত্রণালয়।
তদন্ত কমিটির সুপারিশ যদি বাস্তবায়ন না করা হয় তাহলে এসব তদন্ত কমিটি গঠন করে লাভ কি? চকবাজারের গঠনার দায় কার? ৬৭ জনের প্রাণনাশের দায় ভার কে নিবে?

আমাদের মাননীয় শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ বলেছেন, "কেমিক্যালের সঙ্গে এই ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই। এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে অগ্নিকান্ড ঘটেছে।" আর মাননীয় যোগাযোগ মন্ত্রী ওয়াবদুল কাদের বলেছেন, "চকবাজারের ঘটনা থেকে আমরা আবারও শিক্ষা পেলাম। ভবিষ্যতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব, মনোযোগী হব, মনোনিবেশ করব।"

আর কত শিক্ষা দরকার আপনাদের? মনোযোগী-ই বা হবেন কবে?
অসচেতনতা, অসাবধানতা আর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করার কারণে আগুনে পুড়ে, ভবন ধসে, সড়ক দূর্ঘটনায় প্রতিনিয়ত মানুষ মারা যাচ্ছে।

যেমন চাপা পড়ে আছে, নিমতলী ট্যাজেডি, তাজরীন ফ্যাশান ট্যাজেডি, মিরপুরের বস্তিতে অগ্নিকান্ড। একটা ঘটনা চাপা পরে যাচ্ছে আরেকটি নতুন ঘটনা ঘটার সাথে সাথে। নতুন ঘটনার কারণে সবাই বেমালুম ভুলে যাচ্ছে পুরাতন ঘটনা। স্থবির হচ্ছে যাচ্ছে পুরাতন ঘটনার প্রশাসনিক কার্যক্রম। কর্তৃপক্ষ যথা সময়ে গ্রহণ করছে না কার্যকরি পদক্ষেপ।

চকবাজারের ক্ষেত্রেও হয়তো তাই হবে। সবাই এক সময় ভুলে যাবে। ভুলে যাবে ৬৭ জনের পরিবারও। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া যে শিক্ষার্থী অগ্নি দাহে নিশ্চিহ্নিত। যার মা ছেলের মৃত্যু দেহ না পেয়ে, "একটু মাংসের দলা হলেও চলবে।" বলে আর্তনাদ করেছে সেই মা কি কোনদিন ভুলতে পারবে? পারবে না।



-সোহাগ তানভীর সাকিব
তেজগাঁও, ঢাকা।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:৫৬

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: বিচ্ছেদের যন্ত্রনা খুবই দুর্বিষহ।

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১০:১৬

সোহাগ তানভীর সাকিব বলেছেন:
হুম, খুব বেদনাদায়ক।

২| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:১০

রাজীব নুর বলেছেন:

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১০:১৭

সোহাগ তানভীর সাকিব বলেছেন:
অনেক সুন্দর মন্তব্য করার জন্য প্রিয় রাজীব নূর ভাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.