নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন একটা অদৃশ্য শিরোনাম । যার বিস্তারিতই দেখে শুধু মানুষ, মূল শিরোনাম দেখেনা কেউ । কেউ কেউ আবার বিস্তারিত সংবাদের মাঝেই হার মেনে যায়...

নির্বাক কাকতাড়ুয়া

নদীতে ভেসে চলা ভাসমান কচুরিপানাগুলোর মতই আমার জীবন...

নির্বাক কাকতাড়ুয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

নারীদের কি স্বপ্ন দেখা মানা!

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১:৪২

সমাজের আর্থ সামাজিক পেক্ষাপটে বেশীরভাগ ভিক্টিম কিন্তু নারীরাই...
কোনো মেয়ে আপনার প্রেমের প্রস্তাবে রাজি হলোনা সেক্ষেত্রে আপনি তার চৌদ্দ জেনারেশন তুলে গালি দিবেন । পথে,ঘাটে ধরে তার সাথে অসভ্যতামি,নোংরামি করবেন, ওড়না ধরে টান দিবেন তার শরীরের সাথে শরীর লাগানোর পায়তারা করবেন এবং মেয়ে একটু আপনাকে পাশ কাটিয়ে চললেই একদম চোখ মুখে হাইড্রোক্লোরিক এসিড মেরে দিবেন ।
তাতে করে কি হবে?
মেয়ের লেখাপড়া,স্বপ্ন,বিয়ে সব আশা আঁধারে ডুবে যাবে । মেয়েটা আস্তে আস্তে অন্ধকারে বসবাস করার অভ্যাস গড়ে তুলবে । মেয়েটা আর কখনোই এ সমাজে মুখ দেখাতে পারবেনা । কারণ সমাজ সুন্দর মানুষদের দেখতে চায়, অসুন্দরদেরকে নয় । সমাজ এই ভিক্টিমকে দেখে ভয় পাবে, ছোট ছোট বাচ্চারা মেয়েটার চেহারা দেখা মাত্রই হাউমাউ করে কান্না শুরু করে দিবে ।
কোনো মেয়ে যদি আপনার প্রস্তাবে রাজি না হয় তাহলে তাকে ধানক্ষেত, পাটক্ষেতে নিয়ে গিয়ে আকাশের তারা গোনাবেন । তারপর তার পরণের ওড়না নিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে মেরে দিবেন একদম । অতঃপর কোনো তিনমাথা অথবা চারমাথার মোড়ে মেয়েটার লাশ খুব সুন্দরভাবে টাঙ্গিয়ে দিবেন । যেন সবাই ভাবতে পারে মেয়েটা খারাপ ছিল । রাতে বিরাতে কার সাথে কি না করে নিজেই আত্নহত্যা করেছে । সমাজ ঐ মেয়ের মুখে তখন থু থু ছিঁটাবে । অতঃপর লাশটাকে দাফনে অস্বীকৃতি জানাবে । মেয়েটার বাবা মা'কে গ্রাম ছাড়া করবে । অতঃপর মেয়েটার জন্মদাতা বাবা মা'ও বলবে কি মেয়ে জন্ম দিলাম আল্লাহ্‌, এরকম মেয়ে জন্ম দেওয়ার আগে আমাদের মরন হলোনা কেনো! কেনো! কেনো!
ভিক্টিমগুলো সাধারণত গরীব,মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়েগুলোই হয় । ধনী ঘরের মেয়েদের অবাধ সেক্সুয়াল লাইফকে সমাজ আধুনিকতা হিসেবে মেনে নেয় । ধনী ঘরের মেয়েগুলো খুবই এনার্জিপ্রবণ হয় যার প্রভাবে আট-দশ অথবা বিশটা রিলেশনশীপে জড়ালেও তেমন কোনো সমস্যা হয়না । তাদের বিয়ে দিয়েও বাবা মায়ের একবিন্দু টেনশন করতে হয়না ।
নিম্ন শ্রেনীর পরিবারের মেয়েগুলোর বিয়ে নিয়ে পরিবার খুবই উদ্বিগ্ন থাকে কারণ এই সমাজে কখন কার ভাগ্যে কি জোটে তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারেনা । সকালে ক্লাসের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হলেও বিকালে ফিরতে ফিরতে না জানি পেপারওয়ালা সাংবাদিকরা খবর সংগ্রহ করার জন্য লাফালাফি শুরু করে দেয় । উমুক গ্রামের তমুকের মেয়ে পাটক্ষেতে ধর্ষণ বিস্তারিত পড়ুন ছয় নাম্বার পৃষ্টার তিন নং কলামে ।
সমাজের মাথা কিন্তু চরচর করে বেড়েই চলেছে তার সাথে শুরু হয়েছে মুখবইয়ে নতুন নতুন সব পদ্ধতি । গোপনে মেয়ের কোনো গোসলের ভিডিও ধারনা করে একদম ভাইরাল করে দিলেন আর আমাদের ক্ষুধার্ত সমাজ সেই ভিডিও দেখতেই হা-হুতাশ করে বেড়াবে । ভাই লিংক দেন, লিংক দেন । অথবা মেয়ের ছবি সংগ্রহ করে তা ফটোশপে করে নগ্ন কোনো ছবি বানিয়ে একদম পুরো ফ্যামিলি মেম্বার্স এবং বন্ধু বান্ধবদের ইনবক্স করে পাঠিয়ে দিবে । তাতে করে মেয়েটার ফাঁস লাগিয়ে মরা ছাড়া অন্য কোনোই উপায় নাই ।
বিচার চাইতে যাবেন? কার কাছে? "জাস্টিস ফর উইমেন" দের কাছে? যারা বিচারের নামে মানুষের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় তাদের থেকে । বিচারের জন্য কোনো উকিলের কাছে যাবেন? তখন আপনাকে গোপন কক্ষে নিয়ে গিয়ে বলবে দেখি দেখি কোথায় কেমন করে কি করেছে তারা? কারণ উপযুক্ত প্রমান ছাড়া তো আর তোমার কেসটা হাতে নিতে পারিনা আমি । ডাক্তারের কাছে যাবেন মেডিকেল রিপোর্টের জন্য? ব্যাস! সেখানেও আগে বস্ত্র খুলে দিন ।
আর বিচারের নামে দফায় দফায় টাকা নিচ্ছেই আপনার থেকে বিভিন্ন চক্র ।
এতে করে কি হলো? আপনার এলাকায় জানাজানি হয়ে গেলো আপনার সাথে এমনটা ঘটেছে । বিয়ের স্বপ্ন দেখতেছেন? সুন্দর একটি ঘর বাঁধবেন, ঘরে ফুটফুটে সন্তান আসবে আপনার কোল জুড়ে? তাহলে ধারনাটা বদলে ফেলুন । কারণ ধর্ষিতাদের বিয়ে হয়না । কারণ আপনি স্বঘোষিত ধর্ষিতা, যদি প্রেমিকের সাথে সম্পর্কে করে রাত কাটাতেন তাহলেও কিন্তু সমাজের কাছে আপনি পিওর ভার্জিন ।
নারীবাদীদের কাছে যাবেন? তারা আপনাকে ব্রেন ওয়াশ করিয়ে রাস্তায় বিকিনি পরিধান করে হাঁটাবে ওরা । তসলিমা নাসরিনদের মত প্রত্যেক রাতে আলাদা আলাদা পুরুষ চাইবে, বিয়ে জিনিসটাকে তুচ্ছ ঘোষনা করবে ।
দিন যত যাচ্ছে ততই অসভ্য হয়ে যাচ্ছি আমরা । আচ্ছা আমরা সেই ভাদ্রমাসী কুকুরদের মত হয়ে যাচ্ছিনাতো, হাজার মানুষের সামনে প্রাইভেট জিনিসকেও পাবলিক করে ফেলছি । মানবিকতা,নৈতিকতাবোধ একদম হারিয়ে ফেলছি আমরা ।
আর ধর্ষকদেরও কখনও অনুশোচনা হয়না । না কখনোইনা । কারণ তাদের ভাগ্যে বউ জোটেই তারা সমাজে সুন্দরভাবে বেঁচে থাকেই । ছেলে কর্মঠ হইলেই সব দোষ সমাজের কাছে মাফ এটাই ট্রেডিশন । তাছাড়া নতুন নতুন ট্রেডিশনতো বেড়ে চলছেই...
এ দায়ভারটা কে নিবে? আমি আপনি নাকি সমাজ? প্রতিদিন ই তো রাত পেরিয়ে ভোর হচ্ছে কিন্তু সত্যিই কি মানুষের চাওয়া পাওয়ার সেই কাঙ্খিত ভোরটি দেখতে পাচ্ছে কেউ... প্রশ্নটা রয়েই গেলো...

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.