![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নদীতে ভেসে চলা ভাসমান কচুরিপানাগুলোর মতই আমার জীবন...
সেজুঁতি, মনে আছে তোমার সেই বিষণ্ণ দিনগুলোর কথা যেখানে তুমি এক আকাশ অভিমান নিয়ে শান বাঁধানো পুকুরের সিঁড়িতে বসে ছিলে । বাধা-বিপত্তিকে দূরে ঠেলে যখন তোমার হৃদয়ের তোলপাড় হওয়া ঢেউগুলো উত্তাল হচ্ছিল । আস্তে আস্তে রাতের আকাশে নক্ষত্ররাজিরা মিটমিট করে আলো দিচ্ছিলো । সেই দিগন্তজোড়া মাঠের কথা মনে কি তোমার, যেখানে তুমি দৌঁড়াতে পালাতে চাচ্ছিলে । মাথার উপরের বিশাল আকাশটার কথা মনে আছে কি তোমার যেখানে খোলা প্রান্তরে দাঁড়িয়ে ছিলে তুমি; আর শুনশান বাতাসে তোমার ঘনকালো কেশগুলো তোমার মুখে আঁছড়ে পড়ছিল ।
সত্য ভালোবাসাগুলো যখন স্বপ্ন ভেবেছিলে । নিরানন্দ জীবন কাটাতে শুরু করলে । বলেছিলে শ্রাবণ তুমি কি আমার জন্য অনেকগুলো বেলী ফুল নিয়ে আসবে, আমি সেগুলোকে একটা বক্সের ভিতর রাখবো । সেখান থেকে সুবাসিত হবে আমাদের পুরো ঘরটা । মনে আছে, বলেছিলে 'আচ্ছা আমরা যদি আজ ইচ্ছে করেই লোডশেডিংয়ের ব্যবস্থা করি আর কয়েকটা মোমবাতির আলো জ্বালিয়ে রাখি । যেখানে রাতটাকে আরও সুন্দর থেকে সুন্দরতম লাগবে ।'
নীল শাড়ির সাথে যেদিন লাল টিপ পড়েছিলে সেদিন বলেছিলাম, "লাল টিপে তোমাকে বেশী সুন্দর দেখায়না, একটা ছোট্ট কালো টিপ পড়ে এসো । আজ সারাদিন তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকবো ।"
যেদিন আমার কাঁধে তোমার ঘনঘন নিঃশ্বাস পড়ছিলো । তোমার চেহারাকে ভয়ার্ত মনে হচ্ছিলো, অজানা কোন এক ভয় তোমাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছিল । আর তুমি...তুমি শুধু বলছিলে আমাকে ছেড়ে বোধহয় বহুদূর পালাতে চাচ্ছো । অথচ সেদিন তোমার হাতটি খুব শক্ত করে ধরেছিলাম । তোমার হাতটা এমনিতেই ঘেমে যাচ্ছিলো, আর তোমার ভেজা হাতে আমার হাতটা ভিজে যাচ্ছিলো ।
অনেক দূরের সেই রেলস্টেশনে একসাথে রেলপথ ধরে একসাথে খালি পায়ে হাঁটার কথাগুলো । তুমি ক্ষণে ক্ষণে পড়ে যাচ্ছিলে স্লিপার থেকে । বলেছিলে, "শ্রাবণ আমি আর হাঁটতে পারছিনা চলো ফিরে যাই । আর একটুপর গোধুলি নামবে চলো সেটা মুগ্ধ হয়ে দেখি ।" আমি তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলেছিলাম, "কাজল দাওনি কেনো আজ । আজ তোমাকে দুধহীন চায়ের মত দেখতে লাগছে ।" দুধ চা ছাড়া আমার আবার রং চা পছন্দ হচ্ছিলোনা । দুধ চা খাওয়াতে আলাদা একটা মজা আছে, আছে খানিকটা রহস্য । আমি বারেবারে রহস্যগুলোকে ভেদ করার আপ্রাণ চেষ্টা করছিলাম ।
বৃষ্টির পরের মাটির গন্ধ নেয়ার কথা মনে আছে কি? চারদিকে কত রঙ-বেরঙের ব্যাঙগুলো ছোটাছুটি করছিল আর তুমি...আর তুমি তো বাচ্চা মেয়ের মত ব্যাঙগুলো ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছিলে । আর আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তোমার বৃথা চেষ্টাগুলো মন্ত্রমুগ্ধের মত লক্ষ্য করছিলাম । তখন তুমি বলেছিলে, 'আসো একসাথে ব্যাঙ ধরি । ব্যাঙের ঠ্যাংগুলো বিদেশে রপ্তানি করে আমরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করি । হাহাহা!"
(নোট : সেজুঁতি আর শ্রাবণ আমার তৈরি করা গল্পের চরিত্র । কল্পনাপ্রসূতভাবে লিখেছি । গল্পটির সাথে বাস্তবের কোনো মিল নেই, পাঠক মিল খুঁজতে গেলে হোঁচট খাবেন।)
—সাব্বির আহমেদ(আলোহীন ল্যাম্পপোস্ট)
১৪ ই জুন | বৃহস্পতিবার | বিকাল ৫ টা ২০ মিনিট!
©somewhere in net ltd.