নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাকে যাচাই করার পূর্বে নিজেকে যাচাই করুন ।
আমাদের পরবর্তী প্রজন্মটা আমাদের চাইতেও বেশী হতাশায় ভুগবে এটি নিঃসন্দেহে বলা যায় । অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশে বন নেই, পাহাড় নেই, পশুপাখি নেই, ঘাস নেই, নদীমাতৃক দেশ বইপত্রে লেখা থাকলেও নদী নেই বলাই বাহুল্য ।
নদীগুলো ধীরে ধীরে খাল বা ডোবায় পরিণত হচ্ছে । নরম দূর্বাঘাসের জমিগুলোতে গড়ে ওঠে শিল্পকারখানা । পার্বত্য অঞ্চলে যেসব পাহাড় রয়েছে সেগুলোকে কেটেও তৈরি হচ্ছে পুঁজিবাদীদের ব্যবসায়িক কেন্দ্র । খরা, দূষণ, কীটনাশকের ফলে পাখিদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে । অতিরিক্ত সার ব্যবহারে মাটির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে । মাটিতে আর সোঁদা ঘ্রাণ পাওয়া যায়না!
যখন আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের খুব খারাপ লাগবে, কষ্ট পাবে, বেদনায় মলিন হবে, শোকে কাতর হবে তখন ওঁরা সেটাকে আপন করতে পারবেনা । নিজেকে সময় দেবার মতো স্পেস খুঁজে পাবেনা । পাখির কিচিরমিচির শব্দ শুনতে পাবেনা, নদীতে গোসল দিতে পারবেনা । ধানের জমিতে পিচ বানিয়ে খেলতে দেখা যাবেনা । কাঁঠালপাতা দিয়ে টাকা বাজার করতে দেখা যাবেনা । নদীতে ডিঙি নৌকা নিয়ে ঘুরতে দেখা যাবেনা ।
একটা সময় ছিল যখন দুঃখ পেলে ঘাসের উপর শুয়ে শুয়ে নক্ষত্র দেখতাম । ফোন থেকে, ইন্টারনেট থেকে দূরে থাকতাম । কিন্তু শিল্প বিকাশের দরুণে শুয়ে থাকার মতো আর ঘাস খুঁজে পাইনা ।
প্রাণোচ্ছল করতোয়ায় গোসল করতাম, নদীর তীরে বসে প্রিয় কোনো সুর শুনতাম । অথচ কত তাড়াতাড়ি করতোয়া নদী মরে গেলো । নদীর কাছে গেলে বুকের ভেতরটা হু হু করে ওঠে ।
প্রযুক্তি ও শিল্পের অগ্রযাত্রায় হয়তোবা আমাদর পরবর্তী প্রজন্ম চব্বিশ ঘণ্টা নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাবে, গ্যাস পাবে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র পাবে, ভালো মানের ক্যামেরাওয়ালা ফোন পাবে কিন্তু প্রাকৃতিক বাতাসের সুঘ্রাণ পাবেনা । ফসলভরা মাঠ দেখে ওঁদের চোখ বিস্ময়ে আনন্দে উদ্বেল হবেনা । পাখির গান শুনে মন ভালো করার উপায় থাকবেনা ।
কিরকম সুচারুভাবে সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে । সবকিছু এত জলদি বদলে যাচ্ছে যে ভাবতেই গা শিউরে ওঠে ।
আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম কোথায় শান্তি খুঁজে পাবে সেটা প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের কথা ভাবলেই উত্তরটা সহজেই বের করা যায় ঠিকই কিন্তু তাঁদের মননশীলতার বিকাশের জন্য এটি কতটা সহায়ক ভূমিকা রাখবার ক্ষমতা রাখে!
এতটা বিদ্যুতের আমাদের দরকার বোধহয় না হলেই ভালো হতো, চারিদিকে এত শিল্পকারখানা চালু না হলেই ভালো হতো । আশেপাশে এত এত বাড়িঘর তৈরি না হলে ভালো হতো ।
চারপাশের এসকল যান্ত্রিকতা আর পুঁজিবাদী আগ্রাসন আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে কোনোভাবেই ভালো থাকতে দেবেনা, দিতে পারেনা ।
মানসিকভাবে বিকলাঙ্গ করে দেবার যে রীতিকে ফলো করে আমরা এসব গড়ে তুলছি তাঁর খেসারত পরবর্তী প্রজন্মের উপরেই বর্তাবে, আলবাত বর্তাবে...
সাব্বির আহমেদ সাকিল
০৮ বৈশাখ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | শুক্রবার | ২১ এপ্রিল ২০২৩ ইং | আপন নীড়, বগুড়া
২| ২১ শে এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ৮:১৪
আহমেদ জী এস বলেছেন: সাব্বির আহমেদ সাকিল,
সভ্যতা এগিয়ে যাচ্ছে, পিছিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতি। প্রকৃতির সব কিছুই হারিয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।
পরবর্তী প্রজন্ম চার দেয়াল আর কংক্রিটের গাঁথুনি ছাড়া প্রকৃতির কোন ছায়া দেখবেনা। আমরা শুধু এ নিয়ে হা-হুতাশই করতে পারবো, প্রকৃতিকে আর ফিরিয়ে আনতে পারবোনা।
ঈদ শুভেচ্ছা।
৩| ২১ শে এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৯
রাজীব নুর বলেছেন: কিচ্ছু হবে না। যেভাবে যাচ্ছে দিন কাল সময় এভাবেই যাবে।
তবে বর্তমান প্রজন্ম বেয়াদপ। নির্লজ্জ।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ৮:০৯
কামাল১৮ বলেছেন: শিল্প এবং প্রকৃতি দুটিকে সমন্নয় করে চলতে হবে।প্রয়োজন থেকে শিল্পের উন্নতি করতেই হবে।সাথে সাথে পরিবেশের দিকেও নজর রাখতে হবে।পরিবেশ বিপর্যয়ের কারনে যদি আমরা বাঁচতেই না পারি তবে উন্নতি দিয়ে কি হবে।
নদিগুলে বাঁচানোর জন্য একটা মহাপরিকল্পনা করে এগুতে হবে।মানুষকেও সচেতন হতে হবে পরিবেশ রক্ষায়।