মানুষ করি জ্ঞান...

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:২৯

বৃষ্টি স্নাত হয়ে ঈদের নামায থেকে ফিরছিলাম আর মনে মনে খুতবায় শুনা বক্তব্যটি নিয়ে ভাবছিলাম। আমাকে দারুনভাবে নাড়া দিয়েছে খতিবের কথাগুলো। একই বক্তব্য তিন তিনটি পৃথক ভাষায় উপস্থাপন করেন। শুরুতে আরবী তারপর ইংরেজিতে এবং সবশেষে স্থানীয় ভাষায়। আরবী বুঝিনা বলেই ইংলিশ অংশ পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম। আর মনে মনে ভাবলাম ছোটবেলা থেকে স্বদেশে কত খুতবাই তো শুনেছি কিন্তু কি বুঝেছি? অথবা আমার মত অন্য যারা শুনে তারাই বা কি বুঝে! যিনি খুতবায় বক্তব্য দিতেন তিনি কি আদৌ বুঝতেন, কি বলছেন না বলছেন? লিখিত বক্তব্য অনর্গল আবৃতি করেই যেহেতু কর্মসম্পাদন করতেন সেহেতু না বুঝাটাই স্বাভাবিক (সব এক রকম নয় হয়তো)! আর মানুষও না বুঝে তন্ময় হয়ে শুনতো, এর থেকে কিছু শিক্ষাগ্রহনের মানসে নয়, কেবল সাওয়াবের আশায়! লোকজনকে দুষে কি লাভ! তাদের এমনটিই শিখানো হয়েছে।
আজও আমি যখন খুতবা (ইংলিশ ভার্সন) শুনে বেরিয়ে আসছিলাম তখনও অামার কিছু স্বদেশি বন্ধু বসে রইল বাকি অংশ শুনতে। তাদের প্রচুর সাওয়াব প্রয়োজন! খুতবা বুঝতে হবে এমন কোন শর্ত নাই! 'আমীন' বললেই হল...
সানওয়ে পিরামিড সেন্ট্রাল মসজিদের খতিব মহোদয় বক্তব্যের শুরুই করলেন তাঁর দেশের স্বাধীনতা দিবসকে স্বরনের মাধ্যমে। উল্লেখ্য সপ্তাহ দুয়েক আগে তারা তাদের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করেছে। স্বাধীন দেশে সহবস্থানের এই পরিবেশ দেওয়াতে শ্রষ্টার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। তাঁর দেশে ভিন্ন ভিন্ন ধর্ম, জাতী গোষ্টীর লোক থাকার পরও সবাই যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বজায় রাখতে কাজ করছে এজন্য সকল, ধর্ম, জাতি, গোষ্টীকে ধন্যবাদ জানান। মানুষকে ভালোবাসাই যে সবচেয়ে বড় ধর্ম একথাটি বারংবার উচ্চারিত হয় তাঁর বক্তব্যে। এছাড়াও বিশ্বময় মানবতার কল্যান ও শান্তির জন্য তাঁর যুক্তিপূর্ণ মতামত তুলে ধরেন ইসলামের আলোকে। যার কোথাও রক্তপাতের কথা নেই। আছে ক্ষমা ও ত্যাগের কথা। বিশ্বব্যাপী জঙ্গি তৎপরতার সমালোচনা করে এদের অমানুষ দাবি করেন।
খতিবের স্বদেশপ্রেম ও মানবতাবোধ আমাকে মুগ্ধ করে।
মন্ত্রমুগ্ধের মত কথাগুলো শুনছিলাম আর ভাবছিলাম- এরা আর আমাদের দেশের মুল্লা মুন্সিরা কি একই সিলেবাস স্টাডি করে? নিশ্চয়ই না! তাহলে অন্তত আমদের দেশের লোকগুলো নিছক সাওয়াবের আশা না করে কিছু শিখতো!
মানবতার কল্যান ও এর প্রচারই যে প্রকৃত ধর্ম তা অন্তত হৃদয় দিয়ে বুঝতো।
শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। ঈদ মোবারক।

২ টি +০/-০