নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কাজী সায়েমুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের স্কলারশিপ নিয়ে কিউং হি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড ট্রেড পলিসি বিষয়ে মাস্টার্স। জন্ম ১৯৮১ সালে চট্টগ্রাম শহরের দামপাড়ায়। তার পূর্বপুরুষ ছিলেন দক্ষিণাঞ্চলের বাউফলের ঐতিহ্যবাহী জমিদার কাজী পরিবার। ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখিতে হাতে খড়ি। তবে ১৯৯৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে তিনি সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত হন। তিনি যুগান্তর স্বজন সমাবেশের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম আহবায়ক। ২০০৪ সালে তিনি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে যোগ দেন। পরে ইংরেজী দৈনিক নিউ এজ এ সিনিয়র প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেন। পরবর্তীতে ২৮ তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের একজন সদস্য হিসেবে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সহকারী কমিশনার (ভূমি), সিনিয়র সহকারী কমিশনার, সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রেক্টর (সচিব) এর একান্ত সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনডিপিতে লিয়েনে চাকরি করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রোগ্রামে ন্যাশনাল কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। শিল্প সচিবের একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন৷বর্তমানে সরকারের উপসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাংলা ছাড়াও ইংরেজী, আরবী, উর্দ্দু ও হিন্দী ভাষা জানেন। ছোটবেলা থেকেই কমার্শিয়াল আর্টিস্ট হিসেবে পরিচিত ছিলেন। যেকোনো প্রয়োজনে ইমেইল করতে পারেন। [email protected]
এক
২০২৩ সালের ৯ জুলাই তারিখের ঘটনা। রাশিয়ার ক্রেমলিনের প্রাসাদে এক অভূতপূর্ব ঘটনার অবতারণা হয়। আট বছরের এক কিশোরি ক্রেমলিনে পুতিনের সাথে দেখা করে। ওই রুশ কিশোরির নাম রাসিয়াত আকিপোভা। সে জন্মান্ধ। কিছুদিন আগে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাথে দেখা করার জন্য তার কান্না ভাইরাল হয়। রুশ প্রেসিডেন্ট তাকে ক্রেমলিনে ডেকে পাঠান। মস্কোর ক্রেমলিনের আলিশান প্রাসাদে হাজির হয় আকিপোভা। রুশ প্রেসিডেন্ট তাকে একরাশ ফুল দিয়ে স্বাগত জানান। হাটু গেড়ে বসে কিশোরিকে কোলে তুলে নেন। সবচেয়ে অবাক করার বিষয়টা হলো তাকে নিজের চেয়ারে বসতে দেন। বর্তমান বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাবানের চেয়ারে বসে পড়ে এক অন্ধ কিশোরী।
দুই
এবারের ঘটনা ভারতের। ভারতের বিহার রাজ্যের গেহলৌর গ্রামের দশরথ মাঝি নামের একজনের গল্প বলবো। এর আগেও তাকে নিয়ে লিখেছিলাম। তিনি একজন গরিব শ্রমিক ছিলেন। তার স্ত্রী ফাল্গুনী তার জন্য মাঠে দুপুরের খাবার নিয়ে যাওয়ার সময় গেহলৌর পাহাড় থেকে পিছলে যান ও গুরুতর আহত হন। তাকে হাসপাতালে নেয়ার প্রয়োজন হয়। তবে পাশের হাসপাতালে নিতে হলেও বাড়িরে পাশের পাহাড় ঘুরে আসতেই ৫৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হবে। তারপর ওয়াজিগঞ্জ ব্লকে হাসপাতাল। বিলম্বের কারণে দশরথের স্ত্রীর মৃত্যু হয়।
এই ঘটনায় মাঝি ওই রাতে গেহলৌর পাহাড়ের মধ্য দিয়ে পথ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন, যাতে তার গ্রামের অন্যদের সহজেই চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিতে পারেন। যেই ভাবা সেই কাজ। একটি লোহার ছেনি ও একটি হাতুড়ি নিয়ে নেমে পড়েন দশরথ মাঝি। এলাকার লোকজন তাকে নিয়ে উপহাস করতে শুরু করেন। বলতে থাকেন স্ত্রী হারিয়ে তিনি পাগল হয়ে গেছেন। এতেও দমে যাননি মাঝি। একটানা ২২ বছর কাজ করে তিনি গেহলৌর পাথুরে পাহাড়ের মধ্য দিয়ে ১১০ মিটার লম্বা, ৭.৭ মিটার গভীর এবং ৯.১ মিটার প্রশস্ত পথ তৈরি করেন। মাঝির বানানো সড়কের ফলে আতরি ও ওয়াজিগঞ্জ ব্লকের (আমাদের দেশের উপজেলা) দূরত্ব ৫৫ কিমি থেকে কমে মাত্র ১৫ কিলোমিটারে পরিণত হয়।
এ ঘটনা যখন সবার গোচরে আসে, ভারতে তাকে নিয়ে হুরস্থুল শুরু হয়। তিনি 'মাউন্টেন ম্যান' নামে পরিচিতি পান। সরকার তাকে এক খন্ড জমি উপহার দেয়। তিনি ওই জমি হাসপাতাল নির্মাণের জন্য দান করেন। ২০০৭ সালের আগস্টে মারা যান দশরথ মাঝি। এর আগে জুলাই মাসে তিনি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের সাথে দেখা করতে জনতা দরবারে যান। নীতিশ কুমার তাকে দেখে দাড়িয়ে যান। এগিয়ে এসে তাকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসান।
তিন
মাঝে মাঝেই সংবাদে দেখা যায়, এক দিনের জন্য অথবা এক ঘন্টার জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান হলেন একজন স্কুল ছাত্রী। কয়েকটা উদাহরণ দেই। ২০২০ সালে ২৭ অক্টোবর পঞ্চগর উপজেলা পরিষদে ১ ঘন্টার জন্য প্রতীকী উপজেলা চেয়ারম্যান হয় হাসনে হেনা মন নামের এক স্কুল ছাত্রী। ১২ অক্টোবর ২০২২ তারিখে জামালপুর সদর উপজেলায় সৃষ্টি রানী দে নামের এক স্কুল শিক্ষার্থী এক ঘন্টার জন্য প্রতীকী উপজেলা চেয়ারম্যান হয়। একই দিন শ্যামনগরে এক ঘন্টার জন্য মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসে দশন শ্রেণীর ছাত্রী হিরা। এভাবে অসংখ্য উদাহরণ দেয়া যায়। আমার কাছে এ কাজগুলো প্রশংসনীয়। আমার কাছে এর চেয়ে বড় সৌন্দর্য আর নেই। তবে প্রশ্ন উঠেবে এই যে নির্বাচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিরা তাদের চেয়ার ছেড়ে আরেকজনকে বসতে দিচ্ছেন এটা কোন দৃষ্টিতে প্রশংসনীয়! কেন, সেটা বলছি।
অন্যদিকে এক ঘন্টার জন্য ইউএনও হলেন অমুক শিক্ষার্থী- এধরণের সংবাদও দেখা যায়। দায়িত্ব হস্তান্তরও করা হয়ে থাকে৷ আবার অনেক সরকারি কর্মকর্তা নিজের দাপ্তরিক চেয়ারে বাবা, মা বা স্বজনদের বসিয়ে ফেসবুকে ছবি দেন-এটাও দেখা যায়। আমি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এটুআইর ন্যাশনাল কনসালটেন্ট থাকাকালীন সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিতাম। এর মধ্যে একটি বিষয় অফিসার সুলভ সামাজিক মাধ্যমের ব্যবহার। আমি ক্লাসে কর্মকর্তাদের দেখানোর জন্য এসব ছবি সংগ্রহ করেছিলাম। আমার কাছে প্রচুর ছবি রয়েছে। ছবির বিষয়ে আর কী বলবো- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অফিসারেরা বেডরুমের ছবি দিতেও কার্পণ্যবোধ করেন নি। রাস্তা থেকে একজনকে তুলে এনে নিজের চেয়ারে বসিয়ে ছবি তুলে ফেসবুকে দেয়ার ছবিও রয়েছে। এই সরকারি কর্মকর্তারা সবাই জনতুষ্টিবাদে আক্রান্ত। এসব ছবিতে হাজার হাজার লাইক বা কমেন্টের বন্যা বয়ে যায়। লোকজনের বাহাবা পাওয়া যায়৷ এতে আরেকজন কর্মকর্তাও উৎসাহিত হন। আর আমার কাছে একজন সরকারি কর্মচারির এ ধরণের আচরণ বালখিল্য ছাড়া কিছুই নয়। কেন সেটাও বলছি!
চার
আমি লোক প্রশাসনের শিক্ষার্থী। ম্যাক্স ওয়েবার লিডারশিপ বা নেতৃত্বের ধারণায় কর্তৃত্ব বা অথরিটি বলে একটি বিষয়ের অবতারণা করেছেন। এই কর্তৃত্ব তিন প্রকারের। প্রথমটি ট্রাডিশনাল অথরিটি। রাজার পুত্র রাজা হবেন। তিনি উত্তারাধিকার সূত্রে যে কর্তৃত্ব লাভ করেন সেটাই ট্রাডিশনাল অথরিটি। সেই অথরিটি বলে তিনি রাজ্য পরিচালনা বা ক্ষমতার প্রয়োগ করেন। এরা যা খুশী করেন৷ তাদের ইচ্ছাটাই আইন৷
দ্বিতীয় প্রকারের অথরিটি হলো- ক্যারিশমাটিক অথরিটি। এটা উত্তারাধিকার সূত্রে নয়। নিজের নেতৃত্বগুণে এই কর্তৃত্ব অর্জন করতে হয়। যেমন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বা আমেরিকার আব্রাহাম লিঙ্কন এ ধরণের কর্তৃত্বের অধিকারী। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এ ধরণের কর্তৃত্ব অর্জন করে থাকেন। এ ধরণের কর্তৃত্ব অর্জনের মূল ভিত্তি হলো জনগণ। জনসন্তুষ্টি আসল বিষয়। জনগণ যাতে সন্তুষ্ট থাকেন সেই কাজ করা দরকার। এ কারণে একজন জনপ্রতিনিধি সরকারি গাড়িতে ড্রাইভারের পাশের সীটে বসতে পারেন।জনগণকে নিজের চেয়ারে বসাতে পারেন৷ এত জনগণের ক্ষমতায়ন হয়৷
তৃতীয় ধরণের কর্তৃত্ব হলো- লিগ্যাল রেশনাল অথরিটি বা আইনগত যৌক্তিক কর্তৃত্ব। সরকারি কর্মচারিরা এই কর্তৃত্ব পেয়ে থাকেন। ম্যাক্স ওয়েবার বলেছেন, ''যৌক্তিক আইনী কর্তৃত্ব হলো-আইনত প্রতিষ্ঠিত নৈর্ব্যক্তিক আদেশের প্রতি আনুগত্য ও দায়বদ্ধতা।'' এই কর্তৃত্ব ফরমাল বা আনুষ্ঠানিক। তার পদ পদবীর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ যৌক্তিক আচরণ। এটি আবেগ বর্জিত। এখানে আবেগ দিয়ে কর্তৃত্ব নয়, বরং সরকারি লিখিত বিধি বিধান দিয়ে আচরণ সীমাবদ্ধ।
আমি প্রশিক্ষণে বলতাম, ইউএনওর চেয়ারে তার ঊর্ধ্বতনরা বসতে পারেন। এর বাইরে অন্য কাউকে চেয়ার ছেড়ে দেয়ার কোন সুযোগ নেই। এছাড়া সম্মানিত ব্যক্তিদের বসার জন্য প্রয়োজনে ইউএনওর চেয়ে বড় একটি চেয়ারের ব্যবস্থা রাখার পরামর্শ দিতাম। তাকে সেই চেয়ার দিলে তিনি সম্মানিত বোধ করবেন নিশ্চয়ই। একজন সরকারি কর্মকর্তার অন্য কোন কারণ না থাকলে ড্রাইভারের পাশের সিটে বসার কোন সুযোগ নেই। এক ঘন্টা এক দিনের জন্য কাউকে প্রতীকী দায়িত্ব হস্তান্তরও যৌক্তিক আচরণ নয়৷ যেসব এনজিও জনতুষ্টিবাদের আঙ্গিকে এ ধরণের ধারণার ভিত্তিতে প্রকল্প নিয়ে মাঠে নেমেছেন- তারাও বিষয়টি ভেবে দেখবেন৷ তারা জেনে না জেনে জনপ্রশাসনের ক্ষতি করছেন।
সবশেষ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগে আমাদের একজন প্রফেসর ছিলেন৷ অধ্যাপক লুৎফুল হক চৌধুরী স্যার৷ তিনি দশটা বাক্য বললে পাঁচবার রেশনাল শব্দটা বলতেন৷ তিনি লেকচার দিলে আমরা খাতা কলম নিয়ে বসে যেতাম৷ কতবার রেশনাল শব্দটা বলেছেন সেটা ক্লাস শেষে হিসাব মিলাতাম৷ একারণে পেছনে তাকে রেশনাল স্যার ডাকতাম৷ স্যার নিজেও শিক্ষার্থীদের দেয়া নামটা জানতেন৷ তারপরেও রেশনাল শব্দটা গুরুত্ব সহকারে বলতেন৷ তখন এই শব্দটির মাহাত্ম্য বুঝিনি৷ এখন কর্মজীবনে টের পাচ্ছি৷ কেন রেশনাল হওয়া দরকার৷
লেখাটা বড় করতে চাইনা। এ বিষয়ে আরো একদিন লিখবো৷ আবারও বলছি, লিগ্যাল রেশনাল অথরিটির ভিত্তিতে একজন সরকারি কর্মচারি আচরণ নির্ধারিত হয়৷ নিজের চেয়ার ছেড়ে দিয়ে জনতুষ্টিবাদের মহামারিতে আক্রান্ত হওয়ার কোন সুযোগ নেই৷
২| ০২ রা জুন, ২০২৪ সকাল ১১:২৫
সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: আপনার লেখার মোরাল অব দ্যা স্টোরি কি ? আপনি কি জনগনের তুষ্টির জন্য কাজ করাকে নিরুৎসাহিত করছেন ?
আধুনিক গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থায় দেশের জনগণের জন্য সরকার ও তার কর্মচারী । জনগণকে তাই বলা হয়ে থাকে প্রজাতন্ত্রের মালিক । সরকার ও তার কর্মচারীরা হলো জনগণের সেবক । আপনি যে কটি ঘটনার উল্লেখ করেছেন তার সবকটিতে উঠে এসেছে সে কথা ।
প্রজাতন্ত্রের কর্মবিভাগ সৃজন ও পুনর্গঠন, একীকরণ, সংযুক্তকরণ এবং প্রজাতন্ত্রের কর্মে কর্মচারীগণের নিয়োগ ও তাহাদের কর্মের শর্তাবলি নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ এবং এতৎসংক্রান্ত বিদ্যমান বিধানাবলি সংহতকরণকল্পে প্রণীত আইন অনুযায়ী । যেহেতু সংবিধানের ১৩৬ অনুচ্ছেদে আইনের দ্বারা প্রজাতন্ত্রের কর্মবিভাগ সৃজন, সংযুক্তকরণ ও একীকরণসহ পুনর্গঠন এবং প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত কোনো ব্যক্তির কর্মের শর্তাবলির তারতম্য করিবার ও উহা রদ করিবার বিধান রহিয়াছে; এবং
যেহেতু সংবিধানের ১৩৩ অনুচ্ছেদে প্রজাতন্ত্রের কর্মে কর্মচারীগণের নিয়োগ ও তাহাদের কর্মের শর্তাবলি আইন দ্বারা নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ করিবার বিধান রহিয়াছে; এবং যেহেতু প্রজাতন্ত্রের কর্মে কর্মচারীগণের নিয়োগ ও কর্মের শর্তাবলি সম্পর্কিত বিদ্যমান বিধানসমূহ সংহতকরণের মাধ্যমে আইন প্রণয়ন করিবার প্রয়োজনীয়তা রহিয়াছে; এবং যেহেতু সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদে সকল সময়ে জনগণের সেবা করিবার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির কর্তব্য হইবে বলিয়া ঘোষণা করা হইয়াছে ।
সংবিধানের ধারায় কোথাও কি বলা আছে , সরকারী চেয়ারে দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তির ইচ্ছায় অন্য কেউ বসতে পারবে না ? আমার আপত্তি আপনার শেষ বক্তব্যটি নিয়ে , জনগনের চেয়ার জনগনের জন্য ক্ষনিকের তরে ছেড়ে দিয়ে চেয়ার বা ওই দ্বায়িত্ববান ব্যক্তির ইজ্জত কমে যায় না বরং বেড়ে যায় । তাই্ রাস্ট্রিয় সকল কর্মচারীদের জনতুষ্টির প্রয়োজন রয়েছে । এই মহামারীদের ভুগলেই দুনীতিবাজ হারামখোরের রাস্ট্রের টাকা,জনগনের টাকায় কানাডা কিংবা সিঙ্গাপুর দুবাইয়ে বাড়ি বানাতে পারবে না ।
৩| ০২ রা জুন, ২০২৪ সকাল ১১:৩৬
আহলান বলেছেন: চেয়রই মূখ্য- ব্যাক্তি গৌন। মানুষ চেয়রটাকেই সম্মান করে। মানুষকে না ... তাই কুরসী খুবই দামী জিনিষ। সেখানে কাওকে বসতে দেয়া উচিৎ নয়। পুতিন ব্লা ব্লা যা করেছেন তা বিবেক নয়, আবেগ !!
৪| ০২ রা জুন, ২০২৪ সকাল ১১:৫২
নতুন বলেছেন: আমি প্রশিক্ষণে বলতাম, ইউএনওর চেয়ারে তার ঊর্ধ্বতনরা বসতে পারেন। এর বাইরে অন্য কাউকে চেয়ার ছেড়ে দেয়ার কোন সুযোগ নেই। এছাড়া সম্মানিত ব্যক্তিদের বসার জন্য প্রয়োজনে ইউএনওর চেয়ে বড় একটি চেয়ারের ব্যবস্থা রাখার পরামর্শ দিতাম। তাকে সেই চেয়ার দিলে তিনি সম্মানিত বোধ করবেন নিশ্চয়ই। একজন সরকারি কর্মকর্তার অন্য কোন কারণ না থাকলে ড্রাইভারের পাশের সিটে বসার কোন সুযোগ নেই। এক ঘন্টা এক দিনের জন্য কাউকে প্রতীকী দায়িত্ব হস্তান্তরও যৌক্তিক আচরণ নয়৷ যেসব এনজিও জনতুষ্টিবাদের আঙ্গিকে এ ধরণের ধারণার ভিত্তিতে প্রকল্প নিয়ে মাঠে নেমেছেন- তারাও বিষয়টি ভেবে দেখবেন৷ তারা জেনে না জেনে জনপ্রশাসনের ক্ষতি করছেন।
ক্ষমতা সম্ভবত চেয়ারে থাকেনা। আর সরকারী অফিসারের চেয়ারে অন্য কাউকে বসালে কোন আইন ভঙ্গ হয় না। এমন কোন আইন যদি থাকে যে কর্মকর্তা বেতিত অন্য কেউ চেয়ারে বসিতে পারিবেনা, বসিলে ১০০০ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ মাসের জেলের বিধান আছে।
আগেকার দিনের অফিসার বা ম্যানেজ্যারের ধারনার দিন শেষ। এটা পুরানো হয়ে গেছে।
এখন বিশ্বের বড় বড় অরগানাইজেসন গুলি তাদের ম্যানেজারদের লিডার হতে উদ্ভুদ্য করে।
একজন পুতিন তার চেয়ারে এক তরুনীকে বসতে দিয়েছে বিনয়ের কারনে। তার ভেতরে যদি শুধুই অহংকার থাকে তবে সেটা করতো না।
তেমনি একজন ম্যাজিস্ট্রেট তার চেয়ারে প্রতৃকী ভাবে একজন ভালো ছাত্র, ভালো মানুষকে বসতে দিয়ে তাদের সন্মান বা অনুপ্রেরোনা দেয়ার চেস্টা করাও ভুল কিছু না।
আর একজন পুলিশ অফিসার, ম্যাজিস্ট্রেট বা সচিব সবারই মনে রাখা উচিত তারা জনগনের সেবক। তারা একটা চেয়ারে বসেছে বলে জনগনের বস না? জনগনকে তাদের স্যার বলতে হবে এমনটা ভাবা ঠিক না। বরং তাদের কাছে সেবা নিতে আসা জনগনকেই তাদের সন্মান দেখানোর আইন আছে।
৫| ০২ রা জুন, ২০২৪ দুপুর ২:২৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: পুতিন ও নীতিশ কুমারের মাহাত্ম্যে সত্যিই মুগ্ধ ও আপ্লুত হয়েছি।
সুকুমার রায়ের পাগলা দাশু নামক এক ছোটোগল্পের বই আছে। কলেজ জীবনে পড়া। ডিসি বা ইন্সপেক্টর লেভেলের একজন একদিন স্কুলে এলেন। তার আগমন উপলক্ষে এক ছাত্র তাকে নিয়ে কবিতা লিখে ফেলে। এতে ডিসি সাহেব মুগ্ধ হয়ে তাকে বাহবা জানান ও পুরস্কৃত করেন। ডিসি আরেক দিন আরেক স্কুলে গেলে দেখা যায়, সবাই তাকে নিয়ে কবিতা লিখেছে। সেই কবিতার অত্যাচারে তিনি অতীষ্ঠ ও ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে পড়েন।
কোনো কিছুরই বাড়াবাড়ি ভালো না। নিজের চেয়ারে কাউকে বসিয়ে সম্মানিত করলে নিজের মাহাত্ম্য কমে না, আরো বাড়ে। কিন্তু এটা জেনে সবাই যদি যাকে-তাকে ধরে এনে বসিয়ে দেন, তখন সেই মাহাত্ম্য আর থাকে না। এখানে লোক-দেখানো টেন্ডেন্সিটা প্রকাশ পেয়ে যায়।
আমার জানামতে (যা আপনার পোস্ট পড়েও মনে হলো), কোনো সরকারি অফিসারের অফিসে সিনিয়র অফিসার ভিজিটে এলে উক্ত সিনিয়র অফিসারকে ভিজিটে আসা অফিসারের চেয়ারে বসতে দেয়া হয়। আমার কাছে এটাকে দৃষ্টিকটু বা অশোভন মনে হয়। অন্যান্য দেশেও এমনটা করা হয় কিনা আপনিই ভালো বলতে পারবেন। এ ট্রেন্ডটা চেঞ্জ করা উচিত। ভিজিটে এলে বা ক্যাজুয়াল কোনো কাজে এলে তাকে অফিসের এক পাশে বসার সুব্যবস্থা করে সেখানে বসানো উচিত। তার জন্য ব্রিফিঙের ব্যবস্থা করা হলে বসার অ্যারেঞ্জমেন্ট সেভাবেই করা উচিত। আপনাদের কোড অব কন্ডাক্ট বা সার্ভিস এটিকেটসে এরকম কিছু থেকে থাকলে তা রিভিউ করা উচিত। আমার জানায় ভুল থেকে থাকলে অবশ্য আর কিছুই করতে হবে না
আপনার কন্টেন্টগুলো ভালো, যৌক্তিক বিশ্লেষণ থাকে।
শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।
৬| ০২ রা জুন, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৮
মেঠোপথ২৩ বলেছেন: আমাদের দেশে আসলে সরকারী চাকুরিতে কোন নিয়ম কানুনের বালাই নাই। যার যেভাবে ইচ্ছে সেভাবে চলে। অনেক অফিসে গিয়ে দেখেছি সেই অফিসের পিয়নের প্রভাব প্রতিপত্তি অফিসারের চাইতেও বেশি।
৭| ০২ রা জুন, ২০২৪ রাত ৯:২৩
সোহানী বলেছেন: ভালো একটি বিষয়। তবে আগে যা হতো তাতে ভান ছিল না। আর এখন হলো লাইক কমেন্ট ভাইরালের যুগ। এসব কিছু করে নিজেকে কিছু একটা প্রমান করার চেস্টা।
৮| ০২ রা জুন, ২০২৪ রাত ৯:৪৩
ঢাকার লোক বলেছেন: আপনি লিখেছেন, একজন সরকারি কর্মকর্তা তার ড্রাইভারের পাশে বসতে পারেন না, আপনি লক্ষ্য করেছেন কিনা জানিনা গাড়ীটা যখন জিপ জাতীয় হয় তখন কর্মকর্তা সামনে ড্রাইভারের পাশেই বসেন এবং সাধারণ গাড়ি (সেডান) হলে পিছনের সিটে বসেন ! এটি একটি অলিখিত নিয়ম, আমাদের দেশেই আছে! পশ্চিমা দেশে খুব কম সরকারি কর্মকর্তার ড্রাইভার থাকে, তাই এ ধরণের সমস্যাও নাই।
৯| ০২ রা জুন, ২০২৪ রাত ৯:৫৮
ঢাবিয়ান বলেছেন: চেয়ার ছেড়ে দেয়ার মাঝে আপনি কি মহাত্ম খুজে পেলেন বোধগম্য হয়নি। '' ১ ঘণ্টার উপজেলা চেয়ারম্যান দশম শ্রেণির সৃষ্টি '' একটা স্টান্টবাজি ছাড়া আর কিছু না। ভাইরাল হবার জন্যই এটা করা হয়েছে। চেয়ার না ছেড়ে যে যার চেয়ারের দ্বায়িত্ব পালন ও চেয়ারের মর্যাদা রক্ষা করলেই দেশের সত্যি্কারের উপকার হবে।
১০| ০৩ রা জুন, ২০২৪ ভোর ৪:১৬
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: সংযম ও ভদ্রতা সবার মধ্যে থাকেনা ।
.................................................................
দেখা গেছে যে আমলা শ্রেণীর মাঝে অহংকার ও
দাম্ভিকতা বেশী থাকে ।
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা জুন, ২০২৪ সকাল ১০:২৭
রবিন.হুড বলেছেন: তথ্যবহুল সুন্দর লেখা।