নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চেতনায় মুক্তিযোদ্ধা

সায়েমুজজ্জামান

কাজী সায়েমুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের স্কলারশিপ নিয়ে কিউং হি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড ট্রেড পলিসি বিষয়ে মাস্টার্স। জন্ম ১৯৮১ সালে চট্টগ্রাম শহরের দামপাড়ায়। তার পূর্বপুরুষ ছিলেন দক্ষিণাঞ্চলের বাউফলের ঐতিহ্যবাহী জমিদার কাজী পরিবার। ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখিতে হাতে খড়ি। তবে ১৯৯৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে তিনি সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত হন। তিনি যুগান্তর স্বজন সমাবেশের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম আহবায়ক। ২০০৪ সালে তিনি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে যোগ দেন। পরে ইংরেজী দৈনিক নিউ এজ এ সিনিয়র প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেন। পরবর্তীতে ২৮ তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের একজন সদস্য হিসেবে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সহকারী কমিশনার (ভূমি), সিনিয়র সহকারী কমিশনার, সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রেক্টর (সচিব) এর একান্ত সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনডিপিতে লিয়েনে চাকরি করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রোগ্রামে ন্যাশনাল কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। শিল্প সচিবের একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন৷বর্তমানে সরকারের উপসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাংলা ছাড়াও ইংরেজী, আরবী, উর্দ্দু ও হিন্দী ভাষা জানেন। ছোটবেলা থেকেই কমার্শিয়াল আর্টিস্ট হিসেবে পরিচিত ছিলেন। যেকোনো প্রয়োজনে ইমেইল করতে পারেন। [email protected]

সায়েমুজজ্জামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ওহাবী-সালাফি-মওদুদীবাদ থেকে বাঁচতে আরেকজন নিজাম উদ্দীন আউলিয়া দরকার

১৬ ই জুন, ২০২৪ দুপুর ২:৩৩

১.০
ঐতিহাসিক জিয়া উদ্দীন বারানী তার তারিখ-ই-ফিরোজশাহী বইতে শায়েখ নিজাম উদ্দীনের প্রভাবে এই উপমহাদেশে জনজীবনে যে পরিবর্তন এসেছিল তা বর্ণনা করেছেন। তার আকর্ষণে মানুষ দলে দলে পাপ থেকে পূণ্যের পথে যোগ দিয়েছিলো। ঘুষ দুর্নীতি চুরি ডাকাতি বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। পূণ্যবানদের চেহারার আলোর ঝলকানিতে দূর হয়েছিল সকল অন্ধকার।

জিয়া উদ্দীন বারানী লিখেছেন, সুলতান-উল-মাশায়েখ, মেহবুব-এ-ইলাহি, শেখ খাজা সৈয়দ মুহাম্মদ নিজামুদ্দিন আউলিয়ার দরবার ছিল সবার জন্য উন্মুক্ত। রাজ্যের চারদিক হতে লোকজন তাঁর দরবারে এসে মুরিদ হতেন ও খিরকা লাভ করতেন। সেখানে ধনী-গরীব,সম্মানি-অসম্মানী, বাদশাহ -ফকির, পণ্ডিত-মূর্খ, বাজারী-অবাজারী, শহরবাসী-গ্রামবাসী, গাজী-জাহিদ, প্রভু ও দাসের মধ্যে কোন পার্থক্য ছিল না। সবাই তাঁর কাছে তওবা করে পূণ্যজীবন লাভ করতেন। এসব লোকের অধিকাংশই যেহেতু নিজেদেরকে শায়খের মুরিদ ভেবে গৌরববোধ করতেন, সেজন্য বহু অপকাজ হতে তারা স্বেচ্ছায় দূরে থাকতেন। যদি কারও শায়খের দরবারে আসার পর কোন পদস্খলন ঘটত, তবে তিনি পুনরায় এসে নতুনভাবে তওবা করতেন। বস্তুতঃ শায়খের মুরিদ হওয়ার ফলে লজ্জাবণত অধিকাংশ লোক প্রকাশ্যে ও গোপনে কুকাজ হতে বিরত থাকতে চেষ্টা করতেন। এর ফলে সাধারণ লোকেরাও ধর্মের প্রতি আগ্রহ প্রকা‍শ করেছিলেন।

স্ত্রী-পুরুষ, যুবক-বৃদ্ধ, মূর্খ-বাজারী, গোলাম-চাকর ও বালক-যুবার মধ্যে নামাজের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যায়। এদের বেশিরভাগই 'এশরাক' ও 'চাশতের নামাজেরও ভক্ত হয়ে পড়েন। সমান্ত ও দয়াশীল লোকজন শহর হতে গিয়াসপুর পর্যন্ত পথের পাশে স্থানে স্থানে চত্বর তৈরি করে তার উপর চাল দিয়া নামাজের জায়গা করে দিয়েছিলেন। এগুলির পাশে পানিভর্তি মটকা, লোটা ও চাটাইর ব্যবস্থা করেছিলেন। প্রতিটি চত্তরে একজন করে খেদমতগার থাকতেন ; যাতে শায়খের দরবারে আসার পথে লোকজন নামাজ পড়ার সময় অজুর পানি পেতে পারেন। সম্ভবতঃ এসব চত্বরে অনেক মুসল্লীর ভীড় হতো।

এভাবে একদিকে যেমন মুসল্লীদের মধ্যে নফল নামাজের প্রতি আকর্ষণ দেখা যায়, তেমনই বাজে কথা বলার অভ্যাসও তাদের মধ্যে লোপ পায়। বেশিরভাগ লোকের মধ্যে যে প্রকার কথাবার্তা হতো, তা বস্তুতঃ এশরাক, চাশত, আওয়াবীন, তাহাজ্জুদ প্রভৃতি নফল নামাজের রাকাত ও ওয়াক্ত নিয়েই হতো। এসব নামাজের কোনটি কোন নামাজের পরে কয় রাকাত পড়তে হয়, প্রতিটি রাকাতে কোরানের কোন কোন সুরা পড়া ভালো, নামাজ আদায়ের পর কিরূপ দোয়া করা উচিত ইত্যাদি বিষয়ে তারা একে অন্যের সাহায্য গ্রহণ করতেন। শায়খের দরবারে এসে নতুন আগন্তকরা পুরাতন মুরিদদের কাছে দরবারে রাতে কয় রাকাত নামাজ পড়তে হয়, প্রতি রাকাতে কি সুরা পড়তে হয় এবং হজরত মোস্তফা (দঃ) এর ওপর কয়বার দরুদ পাঠ করতে হয়, তা জেনে নিতে চেষ্টা করতেন। তাদের জিজ্ঞাসার বিষয় ছিল, শায়খ ফরিদ ও শায়খ বখতিয়ার করবার দরুদ পড়তেন এবং কয়বার পুরা অজিফা পাঠ করতেন। তারা নামাজ রোজা, নফল এবাদত ও নিয়ে আগ্রহ দেখাতেন। কম করে খাবার খাওয়ার নিয়ম-কানুন সম্পর্কে উৎসুক্য প্রকাশ করতেন। ওই সময়ে বেশিরভাগ লোকের মধ্যে কোরান শরীফ হেফজ করিবার আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। নতুন মুরিদরা সবসময়ই জ্ঞানলাভে সচেষ্ট ছিলেন। নতুন মুরিদরা সবসময় পুরাতন মুবিদদের সাহচর্যে থাকতে চেষ্টা করতেন। পুরাতনরাও নানারকম এবাদত, নির্জনে বসা, মারেফতের কিতাব পাঠ, পীর পয়গম্বরদের নীতিকাহিনী আলোচনা করতেন। এগুলো ছাড়া তাঁদের অন্যকোনো কাজ ছিল না। দুনিয়াদারীর কোন কথা ও দুনিয়াপারের কোন বার্তা তাঁরা মুখে নিতেন না। দুনিয়ার প্রতি তাকিয়ে দেখা, এ বিষয়ে আলোচনা করা এবং দুনিয়াদারদের সাথে মেলামেশা করাকে তাঁরা সব ধরনের পাপ কর্মের অন্তর্গত বলে মনে করতেন ।

এসব মুরিদানের কল্যাণে নফল ধর্ম কর্মেও এমন নিষ্ঠা দেখা গিয়েছিল যে, স্বয়ং সুলতানের সভাসদদের মধ্য হতে বহু আমীর, সেলাহদার, সেলাহদার নবীশ, লশকরি, চাকর-নফর যারা শায়েখের মুরিদ হয়েছিলেন, তারাও চাশত ও এশরাকের নফল নামাজ পড়তেন এবং 'আইয়ানবিন' ও আগুরার রোজা রাখতেন। যখনই সুযোগ হতো বিশ দিন একমাস পরে পুণ্যাত্মাদের মজলিস হতো ও সুফি সাধকদের জিকিরের মহফিল অনুষ্ঠিত হতো এবং এসব মহফিলে কান্নাকাটি ও জজবার এক নতুন জগৎ দেখা দিতো। শায়েখের মুরিদদের অনেকেই মসজিদে উপস্থিত হয়ে ও নিজ ঘরে বসে তরাহবির নামাজে কোরান খতম করতেন। তাদের মধ্যে যাদের সামর্থ ছিল, তারা রমজান মাস, জুমা ও অন্য উপলক্ষের রাতগুলো জেগে কাটাতেন এবং ভোর পর্যন্ত তাদের চোখের পাতা এক হতো না। এমন অনেক বুজর্গ ছিলেন, যারা সারা বছর রাতের দুই-তৃতীয়াংশ তিন-চতুর্থাংশ জেগে এবাদত করতেন এবং অনেক সাধক শ্রেণীর লোক শয়নকালীন অজু দিয়ে ফজরের নামাজ আদায় করতেন। আমি এমন অনেককে জানি, যারা শায়েখের স্নেহদৃষ্টির ফলে দিব্যদৃষ্টি ও অলৌকিক শক্তির অধিকারী হয়েছিলেন। শায়েখের পূণ্য অস্তিত্ব, তাঁর পূণ্য প্রভাব ও তাঁর নেক দোয়ার বরকতে এই এলাকার অধিকাংশ মুসলমান এবাদতে মারেফতে, নির্জন বাসে, ধর্ম-কর্মে অভ্যস্থ হয়ে উঠেছিলেন এবং তাঁর পূণ্য ইচ্ছাপূরণে একান্ত অনুরাগী হয়ে পড়েছিলেন। সুলতান আলাউদ্দিন নিজেও সপরিবারে শায়খ নিজামের অনুগত হয়ে গেছিলেন।

এর ফলে বিশেষ ও সাধারণ সব শ্রেণীর লোকের মনে পূণ্য কাজ করার ইচ্ছা জাগ্রত।হয়। আলাই শাসনের শেষ কয়েক বছরে মানুষ দুর্নীতি, দুষ্কর্ম, সমকামিতা, ব্যাভিচার ইত্যাদির নাম মুখেও আনে নি। অধিকাংশ লোকের কাছে এই প্রকার গর্হিত পাপের সবই কুফুরির সমান বলে গণ্য হতো। মুসলমানরা লজ্জায় সুদ ও মজুতদারীর কথা মুখেও আনতে পারতেন না৷ বাজারীরাও ভয়ে ও লজ্জায় সব ধরনের প্রতারণা, ওজনে কম দেওয়া, ভেজাল করা, জাল করা, অজ্ঞদের আস্কারা দেওয়ার ব্যাপার হতে বিরত ছিল। শাযেখের দরবারের সাথে যুক্ত অধিকাংশ আলেম, শরীফ ও বুজুর্গ মারেফতের বই পড়া ও এর বিভিন্ন বিভিন্ন তরিকা সম্পর্কে জ্ঞানলাভে ব্যস্ত ছিলেন।

'কুয়তুল কুলুব' 'এহিয়াউল উলুম', এহিয়াউল উলুমের অনুবাদ, ‘আওয়ারেফ', 'কাশফুল মাহজুব', 'শরহে তাআররুফ', 'রেসালা কুশাইরী', 'মেরসাদুল এবাদ', 'মাকতুবাতে আইন কুজাত কাজী হামিদ উদ্দীন নাগুরীর লাওয়ায়েহ ও 'লাওয়ামেহ', আমীর হাসানের 'ফাওয়ায়েদুল ফুয়াদ'সহ বিভিন্ন বই শায়েখের নির্দেশে সবাই কিনতের। বই বিক্রেতাদের কাছে মানুষ মারেফতের বই সম্পর্কে নানাভাবে প্রশ্ন করতেন। পাগড়ীর সাথে দাঁতন ও চিরুনী না থাকলে তা কেউ গ্রহণ করতেন না। সুফী সাধকদের ব্যবহৃত লোটা ও চামড়ার চিলুচীর চাহিদা বেশি হওয়ায় সেগুলোর দাম বেড়ে যায়।

মোটামুটিভাবে একথা বলা যায় যে, আল্লাহতায়ালা এই আখেরী জামানায় শায়েখ নিজামকে শায়েখ জুনায়েদ ও শায়েখ বায়েজীদের মতো মর্যাদা দিয়ে সৃষ্টি করেছিলেন। তাঁর মধ্যে খোদায়ী এশকের জজবা যে পরিমাণে দিয়েছিলেন, তা সাধারণ মানুষের ধারণায় আসা সম্ভব নয় । মনে হয়, তাঁর মধ্যেই সৎপীরের গুণাবলী ও হেদায়াতের সব প্রয়োজনীয় বিষয় প্রকাশ করে যেন মোহর মেরে তিয়েছেন। কৰি বলেছেন,
"এই মহান উদ্দোশ্য পূর্ণ বিষয়ের সমূদয় কিছু
নিজাম উদ্দিনের মধ্যে এসে শেষ হয়ে গেছে।"
মোহাররম মাসের পাঁচ তারিখে, যে দিন শায়খুল ইসলাম শেখ ফরিদ উদ্দিন রহঃ এর ওরস অনুষ্ঠিত হতো, সে দিন শায়েখের দরবারে শহর ও হিন্দুস্তানের বিভিন্ন দিক হতে এত বেশি পরিমাণ লোকের সমাগম হতো এবং জিকিরের মহফিল বসতো যে, এর পরে কেউ আর এর মতো অন্য কিছু স্মরণ করিতে পারেনা। বস্তুতঃ শায়খ নিজাম উদ্দিনের কালটি ছিল এক অদ্ভুত ও আশ্চর্য সময়।

আলাই শাসন আমলে অযোধ্যায় শেখ ফরিদ উদ্দিনের পৌত্র শায়খ আলাউদ্দিন তাঁর সাজ্জাদানশীন হিসাবে স্থলাভিষিক্ত ছিলেন। আল্লাহতায়ালা শেখ ফরিদ উদ্দিনের প্রৌত্র শায়েখ আলাউদ্দিনকে সাক্ষাৎ পূণ্যময় ও এবাদতকারী হিসেবে সৃষ্টি করেছিলেন। এসব বুজর্গ ব্যক্তি ও তাঁদের সন্তান-সন্তস্তি রাতদিন সারাক্ষণ একমাত্র আল্লাহতায়ালার এবাদতে কাটাতেন। এক মুহূর্তও তাঁরা নামাজ ও জিকির আজকার ছাড়া থাকতে পারতেন না । আল্লাহর প্রেম এসব শরীফের পুত্র শরীফের মধ্যে এমনভাবে স্থান করে নেয় যে, তাঁরা কায়মনে সবসময় সেই প্রেমেই মগ্ন থাকতে চাইতেন। তাফসিরে যেমন এসেছে যে, পবিত্র ফেরেশতাদের মধ্যে এমন অনেক ফেরেশতা রয়েছেন, যারা শুধু আল্লাহর এবাদত করার জন্যই সৃষ্ট হয়েছেন এবং জন্মের দিন হতে তাঁরা এই কাজেই মগ্ন হযন। শায়েখ আলাউদ্দিনকে মনে হয় এই উদ্দেশ্যেই সৃষ্ট করা হয়েছিল।

২.০
টিকাটুলি জামে মসজিদে গত জুমায় (১৪ জুন) ইমাম সাহেবের বক্তব্য শুনলাম। তিনি পীরদের নিয়ে একটি গল্প বলেছেন। এক মুরিদ তার পীরের কাছে গিয়ে গত রাতে তার দেখা স্বপ্ন সম্পর্কে বলার অনুমতি চান। পীর সাহেব তাকে নির্ভয়ে বলার অনুমতি দেন। মুরিদ বলেন, হুজুর গত রাতে স্বপ্নে দেখেছি আপনার আঙ্গুল থেকে মধু বের হচ্ছে। হুজুর শুনে খুশী হলেন। বললেন, আল্লাহর ওলীদের হাতের আঙ্গুল থেকে মধুই তো বের হবে। মুরিদ বললেন, এদিকে আরো দেখলাম আমার হাত থেকে মল বের হচ্ছে। পীর সাহেব বললেন, পাপীর আঙ্গুল থেকে মল ছাড়া কিছুই বের হয়না। যা দেখেছো সব সঠিক দেখেছো। এবার মুরিদ স্বপ্নের পরবর্তী অংশ বলার জন্য অভয় চান। পীর তাকে অভয় দেন। মুরিদ বললেন, দেখলাম আমি আপনার আঙ্গুল চুষছিলাম। আর আপনি আমার আঙ্গুল চুষছিলেন।

তার গল্প শুনে অবাক হইনি। বর্তমানে দেশের মসজিদে মসজিদে পীর মুরিদী সম্পর্কে এমন বাজে কাহিনী শুনানো হচ্ছে। পীর মুরিদী সম্পর্কে এ রকম আরো বাজে গল্প বানানো হয়েছে। এদেশে ওহাবী-সালাফী ও জামাতিদের ত্রিমুখি প্রচারণায় ইসলামের মুলধারা পীর মুরিদি, সুফিবাদ, ওরশ, শবে বরাতের মতো ইসলামিক সংস্কৃতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শুধু জুমার নামাজের পূর্বে বক্তব্য নয়; ইন্টারনেট ব্যবহার করে তারা ঈদে মিলাদুন্নবী, ওরশ, আশুরা, শবে বারাতসহ বিভিন্ন তাৎপর্যপূর্ণ দিন উদযাপনের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছে। সাধারণ মুসলমানদের মনে পীরদের সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা দিয়ে দেয়া হয়েছে। মাজারের বিরুদ্ধে শিরিক আওয়াজ তুলেছে। ওদিকে হাক্কানী পীর মাশায়েখরা ইন্টারনেট কমই ব্যবহার করেন। ফলে মানুষ জানতে পারছেনা। এছাড়াও কিছু পীর তরিকার নামে ভন্ডামি করছেন। তাদের অপকর্মের ভিডিওতে অনলাইন সয়লাব করেছে বিরোধীরা। মুলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে উগ্র জঙ্গীবাদে সামিল হচ্ছে প্রজন্ম। গোড়ামিকেই তারা খালেস ইসলাম মনে করছে। পীর মুরিদীর আসল রূপই তারা জানেনা। জানানোও হয়না।

এ অবস্থায় সুফিজম ও পীর মুরিদী বাঁচাতে এ মুহূর্তে আরেকজন নিজাম উদ্দীন আউলিয়া দরকার।

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২১

কামাল১৮ বলেছেন:


ওহাবী-সালাফিরাই হলো কোরানের প্রকৃত ইসলাম।
৯:৫
অতঃপর যখন নিষিদ্ধ মাসগুলো অতিবাহিত হয়ে যাবে, তখন তোমরা মুশরিকদেরকে যেখানেই পাও হত্যা কর এবং তাদেরকে পাকড়াও কর, তাদেরকে অবরোধ কর এবং তাদের জন্য প্রতিটি ঘাঁটিতে বসে থাক। তবে যদি তারা তাওবা করে এবং সালাত কায়েম করে, আর যাকাত দেয়, তাহলে তাদের পথ ছেড়ে দাও। নিশ্চয় আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আল-বায়ান
মডারেট ইসলাম হলো আমেরিকার দেখানো পথ।
এই সুরাটি শেষের দিকে নাজিল করা সুর।এ সম্পর্কে পূর্বে নাজিল কৃত সব আয়াত মনসুখ হয়ে গেছে।

১৬ ই জুন, ২০২৪ রাত ১১:৫১

সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: একটা জিনিস খেয়াল করলাম। নাস্তিক আর জঙ্গী মূদ্রার এপিঠ ও ওপিঠ। এরা উভয় আমার লেখায় অনাহুত।

ইসলাম সম্পর্কে ভালো করে জানুন। এটি যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধ কোন পর্যন্ত করতে হবে তার নির্দেশনা। তার মানে যুদ্ধ শুধু কাফেরদের বিরুদ্ধেই করা যাবে। তারা তওবা করে ফেললে তাকে মারার কোনো হুকুম নাই। এই আয়াতে প্রতীয়মান হয় মুসলমানদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের অস্ত্র ধরার সুযোগ নেই।

ওহাবী, সালাফি ও জামাত থেকে উদ্ভূত আলকায়েদা, আইএস বা হামাস মুসলমানদের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ করছে তা এই আয়াতের মর্মানুযায়ী নাজায়েজ।

২| ১৬ ই জুন, ২০২৪ রাত ৯:৩২

ঢাবিয়ান বলেছেন: আপনার দর্শন জেনে সত্যি খুবই অবাক হলাম। আমাদের শৈশব, কৈশরে মনে আছে মানুষজনের পীর, মাজার , দরগায় যাতায়তের খুব প্রচলন ছিল। তখনই বিষয়টা খুবই বিরক্তিকর মনে হত। এখন যেমন মানুষ যেমন ঘন ঘন হজ্বে যায় তখন দেখতাম মানুষজন আজমীর শরীফে যেত। আর দেশের মাঝে সিলেট বা চট্টগ্রামের মাজার দর্শনতো আছেই। কোনদিনই এসব দর্শনে যাইনি। যাবার ইচ্ছাও হয়নি। যাই হোক পর্বর্তীতে শুনলাম আসলে মাজার, দরগা, উরস পুরো বিষয়টাই শিরক। সালাফি না ওহাবিরা বলেছে তা জানি না, তবে তাব্লীগিরা এটা বেশি প্রচার করেছে। তাব্লীগিরাই কি তবে সালাফি / ওহাবী ?

১৭ ই জুন, ২০২৪ রাত ১২:১৭

সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: প্রথমে বেসিকটা বলি।
তাবলিগসহ কওমী মাদরাসা কেন্দ্রিক যে মতবাদ তা ওহাবী মতবাদ। এদের থেকে উদ্ভূত ফেরকার নাম আল কায়েদা।

আহলে হাদীস কেন্দ্রিক মতবাতের নাম সালাফি মতবাদ। এদের থেকে উদ্ভূত ফেরকার নাম আইএস।

জামাতে ইসলামী বা মুসলিম ব্রাদারহুড কেন্দ্রিক মতবাদ একই। এদের থেকে উদ্ভূত দল ছাত্র শিবির বা হামাস।

ওহাবী আর সালাফি মূলত ইবনে তাইমিয়ার মতবাদ কে কেন্দ্র করে পরিচালিত হয়। তবে সালাফিরা ওহাবিদের চেয়ে কয়েক ডিগ্রি গোড়া। সালাফিদের একটি গ্রুপের ১৯৭৯ সালে মক্কা আক্রমণের মাধ্যমে মুসলিম বিশ্বে আইএস কেন্দ্রীক জঙ্গী আক্রমন শুরু হয়। ওদের জঙ্গী আক্রমণের প্রথম শিকার হয় মক্কা শরীফ। এখন সারা পৃথিবী।

এদেশে হযরত শাহ জালাল রাঃ সহ আল্লাহর ওলীরা যে ইসলাম এনেছিলেন তার মূলে কুঠারাঘাত করেছে তাবলিগ। এর মধ্যে মাজার বিরোধী প্রচারণা একটি। তারা বলে মাজারে শরিয়ত বিরোধী কাজ হয়। তাহলে শরিয়ত সম্মত জেয়ারত তারা করেনা কেন! মূল কথা হলো- তারা আল্লাহর ওলী বিরোধী। তবে তারা এটা বাইরে বলেনা। বাইরে মাজার বিরোধী বক্তব্য দেখা যায়। তবে তারা আল্লাহর নবীর রওজার পক্ষে।

সালাফিরা সরাসরি প্রকাশ্যে মাজার ও আল্লাহর অলীদের বিরোধীতা করে। আর গোপনে নিজেদের মধ্যে আল্লাহর নবীর রওজার বিরোধীতা করে। তাদের গুরুরা রওজা ভেঙ্গে ফেলার কথাও বলেছিলো।

যাই হোক, আমার দর্শনের সাথে এ দেশে আল্লাহর অলীদের দর্শনের মিল রয়েছে। আমি সেই দর্শনই ধারণ করি যা হযরত শাহ জালাল রাঃ যে দর্শন ধারণ করতেন। হযরত নিজামুদ্দিন আওলিয়া (রাঃ), খাঁজা মইনুদ্দিন চিশতী(রাঃ) যে দর্শন ধারণ করতেন। গাউসুল আজম হযরত আব্দুল কাদের জিলানী রাঃ যে দর্শন ধারণ করতেন। ইমাম আবু হানীফা রাঃ যে দর্শন ধারণ করতেন। ইমাম জাফর সাদিক রাঃ যে দর্শন ধারণ করতেন। হযরত হয়নুল আবেদীন রাঃ যে দর্শন ধারণ করতেন। হযরত হুসাইন রাঃ যে দর্শন ধারণ করতেন। হযরত আলী রাঃ যে দর্শন ধারণ করতেন। সর্বোপরি হযরত মুহাম্মদ দঃ যে দর্শন ধারণ করতেন। এই সিলসিলাটাই মূল ইসলাম।

এদেশে যখন আল্লাহর ওলীদের প্রতি ভক্তি ছিল তখন জঙ্গীবাদ ছিলনা। সুন্নীদের যে ধারাটা সুফিবাদি তারা জেহাদ করেছেন তবে কখনোই জঙ্গীবাদে জড়িত হন নি। নারী শিশু বেসামরিক মানুষকে কখনোই আক্রমণ করেন নি।

ধন্যবাদ।

৩| ১৬ ই জুন, ২০২৪ রাত ১০:৩১

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: সাহাবাদের পরে এই আওলিয়ায়ারাই ছিলেন ইসলামী আধ্যাত্মিক জগতের নেতা। ওনাদের সাধাসিধা জীবন আর আন্তরিক দাওয়াতে মুগ্ধ হয়েই ভারতবর্ষে লাখে লাখে মানুষ ইসলামের ছায়াতলে এসেছে। ওনাদের অনেকের আধ্যাত্মিক শক্তি ছিল আল্লাহতায়ালার ইচ্ছায়। এখন এই ধরণের অলি আল্লাহ কম আছেন। ভারতে মাওলানা কালিম সিদ্দিকী নামে একজন আল্লাহর অলি এখনও আছেন। উনি হলেন সাইয়েদ আবুল হাসান নাদভি এবং শাইখুল হাদিস মাওলানা জাকারিয়া কান্দলভির খলিফা। মাওলানা জাকারিয়া ছিলেন তাবলীগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইলিয়াসের ভাতিজা।

আরও অনেক আওলিয়া এসেছিলেন এই ভারতীয় উপমহাদেশে। যেমন নিজামুদ্দিন আওলিয়া (রঃ), খাঁজা মইনুদ্দিন চিশতী(রঃ), কুতুবুদ্দিন বখতিয়ার কাকি (রঃ) (কুতুব মিনার সম্ভবত ওনার নামে হয়েছে), হাজী এমদাদুল্লাহ মুহাজির মক্কী (রঃ), আহমেদ আল ফারুকি সিরহিন্দ (উনি মুজাদ্দিদে আলফেসানী নামে পরিচিত), সৈয়দ মোহাম্মদ ইসমাইল বন্দেগি (রহ.), হজরত শাহ সিকান্দার (রহ.), হজরত আমির খসরু (রহ.)। পরবর্তীতে আসেন সাইয়েদ আহমদ বেরলবী (রঃ), শাহ ওয়ালী উল্লাহ (রঃ), মাওলানা কারামত আলী জৈনপুরী (রঃ), হাজী শরীয়তুল্লাহ (রঃ), মুহাম্মদ কাসেম নানুতুবি (রঃ), রশিদ আহমেদ গাঙ্গোহি (রঃ), খলিল আহমদ সাহারানপুরী (রঃ), আশরাফ আলি থানভি (রঃ), মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্ধলভি (রঃ), মুহাম্মদ জাকারিয়া কান্ধলভি (রঃ), সাইয়েদ আবুল হাসান আলি নদভী (রঃ)।

১৭ ই জুন, ২০২৪ রাত ১২:২৩

সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: তাবলীগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইলিয়াস ভয়ঙ্কর ফেরকার জন্ম দিয়েছেন। এরা ওহাবী। এদের
মুখে রাসুলের গুণগান শুনবেন না। আল্লাহর অলীদের গুণগান শুনবেন না। এরা আল্লাহর অলী হয় কী করে।
নিজামুদ্দিন আওলিয়া (রঃ), খাঁজা মইনুদ্দিন চিশতী(রঃ), কুতুবুদ্দিন বখতিয়ার কাকি (রঃ) (কুতুব মিনার সম্ভবত ওনার নামে হয়েছে), হাজী এমদাদুল্লাহ মুহাজির মক্কী (রঃ), আহমেদ আল ফারুকি সিরহিন্দ (উনি মুজাদ্দিদে আলফেসানী নামে পরিচিত), সৈয়দ মোহাম্মদ ইসমাইল বন্দেগি (রহ.), হজরত শাহ সিকান্দার (রহ.), হজরত আমির খসরু (রহ.) পর্যন্ত আল্লাহর অলী মানতে রাজি আছি।

আপনি হযরত আমীর খসরু রহঃ কে আল্লাহর অলী বললে তার নিচের নামগুলোকে অলী কীভাবে বলেন। তাদের দর্শন তো আলাদা। হযরত আমীর খসরু কাওয়ালী লিখেছেন। গেয়েছেন। তার পরের যাদের নাম লিখেছেন তাদের মধ্যে মাওলানা কারামত আলী জৈনপুরী (রঃ) ঠিক আছেন। বাকীরা সব ওহাবী।

৪| ১৭ ই জুন, ২০২৪ সকাল ৮:২১

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: আফসোস।

১৭ ই জুন, ২০২৪ সকাল ১১:০০

সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: এখানে আপত্তিকর কোন মন্তব্য গ্রহণ করা হয়না।

আরবী শিখেন। অফসোস চলে যাবে।

৫| ১৭ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৭

কথামৃত বলেছেন: কবে থেকে লেখাপড়া শুরু করেছেন, সেটা মনে আছে? অন্তত ১৩-১৪ বছর তো হবেই। একেবারে শৈশব থেকে শুরু করে, যৌবন পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। এতবছর পড়েও আপনি কি "পড়িত" হতে পেরেছেন? না, আপনি "পড়িত" হননি - আপনি "শিক্ষিত" হয়েছেন। আশা করি, "পড়া" আর "শিক্ষা" এই দুইটা জিনিসের পার্থক্য বুঝতে পেরেছেন। আপনি বই "পড়েন"। বই পড়ে আপনার যে জ্ঞান হয়েছে, সেটাই "শিক্ষা"।

হাদিস হলো রাসুল (সা) এর নির্দেশ লেখা বই। এই হাদিস বই পড়ে আপনার যে শিক্ষাটা হয়, সেটা হলো সুন্নাহ।

এসব বলার কারন হলো - যেভাবে আপনি "পড়িত" না হয়ে "শিক্ষিত" হয়েছেন। ঠিক একইভাবে, আপনি হাদীস পড়ে, সুন্নাহ শিখবেন। এরপর, "সুন্নাহ" অনুসরন করবেন। সবাই সুন্নাহ অনুসরন করে। কেউই হাদিস অনুসরন করে না। সবাই হাদীস পড়ে, সুন্নাহ অনুসরন করে।

"আহলে হাদিস" কথাটি ভুল। সঠিক কথাটি হবে - আহলে সুন্নাহ (সুন্নাহ অনুসারী)।

লেখাপড়ার কথা যখন শুরু করেছি, তাহলে আরেকটু বলি। একসময় আপনি SSC পরীক্ষার্থী ছিলেন। শিক্ষা বোর্ডের দেওয়া সিলেবাস অনুসারে, আপনার স্কুলে লেখাপড়া করিয়েছে। স্কুলে লেখাপড়ার পরে, শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষা দিয়ে আপনি SSC পাশ করেছিলেন।

আপনার স্কুলে অনেক ভালো শিক্ষক ছিলেন। আপনার সবচেয়ে প্রিয় শিক্ষক ছিলেন হানিফ স্যার। আপনি ছিলেন হানিফ স্যারের ছাত্র। আপনার সহপাঠীদের জিজ্ঞাসা করলে, তারা বলতো SSC এর জন্য পড়ছি। আপনি বলতেন হানিফ স্যারের জন্য পড়ছি। অন্যেরা বলতো SSC পরীক্ষা দেব। আপনি বলতেন হানিফ স্যারের পরীক্ষা দিব। পরীক্ষার রেজাল্ট পাবার পরে, অন্যেরা বলেছে SSC পাশ করেছি। আপনি বলেছেন হানিফ স্যারের ক্লাস পাশ করেছি।

না, আপনি বুদ্ধিমান। আপনি আসলে অমন বলেন নি। আপনি সবসময় নিজেকে SSC পরীক্ষার্থী বলেছেন। নিজেকে কখনো হানিফ স্যারের পরীক্ষার্থী বলেন নি।

ইমাম আবু হানিফা একজন খুব ভালো ইসলামিক শিক্ষক ছিলেন। তিনি আপনার, আমার, সকলের পছন্দের শিক্ষক। আমরা সবাই তার ছাত্র। আমরা সবাই ইসলামের পরীক্ষার্থী। আমাদের সিলেবাস হলো ইসলাম, আমাদের মুল বই কোরআন, গাইড বই হাদিস, প্রধান শিক্ষক মুহম্মদ (সা)। আপনি আবু হানিফার ছাত্র, এবং ইসলামের পরীক্ষার্থী। আবু হানিফার দল করেন, আপনি হানাফী, এগুলো সম্পূর্ণ ভুল কথা। সঠিক কথাটি হলো - আপনি একজন মুসলমান, আবু হানিফা আপনার শিক্ষক। এমন ভালো শিক্ষক আরো অনেকেই আছেন। যেমন বুখারী, মুসলিম, সাফেঈ, মালেকী ইত্যাদি।

বোঝা গেলোঃ আহলে হাদিস বলে কিছু নেই, সঠিক কথাটা - আহলে সুন্নাহ। সব মুসলমানই সুন্নাহের অনুসারী। সবাই আহলে সুন্নাহ। এর জন্য আলাদা কোন দল থাকার দরকার নেই। আবু হানিফা একজন ইসলামিক শিক্ষক। আমরা অবশ্যই তার শিক্ষা গ্রহন করব। তার মতন অন্যান্য যোগ্য শিক্ষকের শিক্ষাও গ্রহন করবো। কিন্তু এই শিক্ষকের নামে, একেকটা আলাদা দল বানানোর কোন দরকার নেই।

এক কথায় - আহলে হাদিস ও হানাফী কারা সঠিক পথে আছে, এটা জানার আগে, এই সহজ জিনিসটা বুঝুন - এই দুটি দলের কোনটিই দরকার নেই। এমন দল থাকাটা অপ্রয়োজনীয়।

১৭ ই জুন, ২০২৪ রাত ৯:৫২

সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: প্রথম যুক্তির সাথে একমত। কারণ এটা আমার পক্ষে গেছে। আহলে সুন্নাহ হবে। আহলে হাদীস কথাটা ভুল। আহলে হাদীসের নামে বোমা হামলা টামলা করে এই দলটার ইমেজ যখন ক্রাইসিসে পড়ে তখন এরা অন্য পথ ধরে। এখন আর আহলে হাদীস পরিচয় দেয়না। নিজেদের সালাফি বলে।

দ্বিতীয় যুক্তির সাথে একমত নই। হযরত আবদুল কাদের জিলানী রাঃ ও মাজহাব অনুসরণ করতেন। তিনি হাম্বলি মাজহাব অনুসরণ করতেন। আর সেখানে আপনি আমি কী!
উসুলুস শাশী বইটা পড়বেন। দেখবেন- টেকনিক্যাল কারণে এক মাজহাবের একটা ফতোয়া আরেক মাজহাবের আরেকটা ফতোয়া গ্রহণের সুযোগ নেই। কারণ প্রত্যেকের তরিকাই আলাদা।

৬| ১৭ ই জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৬

কাঁউটাল বলেছেন: ছালাপি এবং বেদাতি - দুইটাই প্রব্লেম, দুইটারই আকিদা গলদ।

১৭ ই জুন, ২০২৪ রাত ৯:৪৫

সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: কাউরে বেদআতি বলার আগে যারা আপনার পূর্ব পুরুষকে মুসলমান বানিয়েছেন সেই আল্লাহর ওলীদের আকীদা জানুন।
কার উসিলায় সিন্নী খাইলেন মুন্সি চিনলেন না।

৭| ১৮ ই জুন, ২০২৪ রাত ১২:৪২

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনি লিখেছেন;
“তাবলীগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইলিয়াস ভয়ঙ্কর ফেরকার জন্ম দিয়েছেন। এরা ওহাবী। এদের মুখে রাসুলের গুণগান শুনবেন না। আল্লাহর অলীদের গুণগান শুনবেন না। এরা আল্লাহর অলী হয় কী করে। “

তাবলীগের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইলিয়াসের আপন ভাতিজা ছিলেন তাবলীগ জামাতের আরেকজন পৃষ্ঠপোষক যার নাম শায়খুল হাদিস মাওলানা মুহাম্মদ জাকারিয়া কান্ধলভি।(রহঃ)। তাবলীগ সহ অন্যান্য আওলিয়াদের নিয়ে উনি বেশ কিছু বই লিখেছেন। ওনার একটা বইয়ের নাম হল ‘শরিয়ত ও তাসাউফ’। আপনি বলেছেন যে তাবলীগ জামাতের অনুসারীদের মুখে রাসুলের (সাঃ) গুণগান শুনবেন না। মাওলানা মুহাম্মদ জাকারিয়া কান্ধলভি তার এই বইয়ে এক জায়গায় লিখেছেন (পৃষ্ঠা – ২৫)
“ সাহাবাদের সমালোচনাকারীদের প্রতি রাসুল (সাঃ) – এর সতর্ক বাণী
হুজুরে আকদাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন-
(আরবিতে আয়াত লেখা প্রথমে। পরে সেটার অর্থ দেয়া আছে)
(আরবি আয়াতের অর্থ )
যে ব্যক্তি আমার কোন বন্ধুর সাথে দ্বিমত পোষণ করে তার সাথে আমার যুদ্ধের ঘোষণা’।
পৃষ্ঠা ৬১ তে লিখেছেন;
“রাসুলুল্লাহ (সাঃ) – এর রূহানী শক্তির প্রভাব –
কুতুবুল ইরশাদ মাওলানা রশিদ আহমদ গাঙ্গুহী (রহঃ) ইরশাদ করেন – রসূলে পাক (সাঃ) –এর রূহানী শক্তির এমন পাওয়ার ছিল যে, বড় বড় কাফেরও ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলার সাথে সাথেই ইহসানের মর্তবা অর্জন করে ফেলত। "

উনি আওলিয়া কেরামদের সম্পর্কে বলতে গিয়ে লিখেছেন (পৃষ্ঠা ৬৩)
"শরিয়তের গুরুত্ব প্রসঙ্গে আওলিয়ায়ে কেরামের পত্রাবলী (হেডিং, তারপরে সাব হেডিং লিখেছেন)
হজরত মুজাদ্দিদে আলফেছানী (রহঃ) – এর পত্র ...। "

উপরে কত মহব্বত নিয়ে আমাদের রাসুল (সা) সম্পর্কে এবং পূর্বের আওলিয়াদের সম্পর্কে লিখেছেন। আর আপনি বলছেন যে 'এদের
মুখে (তাবলীগের লোকেরা) রাসুলের গুণগান শুনবেন না। আল্লাহর অলীদের গুণগান শুনবেন না। এরা আল্লাহর অলী হয় কী করে। '

এছাড়া ওনার জীবনী পড়লে জানতে পারবেন যে ওনার মধ্যে রসূল (সা) প্রেম কত ছিল। দরুদের গুরুত্ব ওনার কাছে কত ছিল। উনি ছিলেন শায়খুল হাদিস। হাদিসের শিক্ষক ছিলেন। আর উনি সহ সব তাবলীগের সমর্থনকারীদেরকে আপনি ওয়াহাবি বানিয়ে দিলেন। আপনার মতের সাথে একমত না।

এছাড়া তিনি তার বিভিন্ন বইয়ে রাসুল (সা) এবং পূর্বের আওলিয়াদের প্রশংসা করে বহু কিছু লিখেছেন। এই জায়গায় এতো কিছু বলা সম্ভব না। অথচ আপনি উনি সহ সকল তাবলীগের সমর্থনকারীদের ওয়াহাবি বলে দিলেন। অথচ প্রকৃত আরবের ওয়াহাবিরা তবলীগকে ভালো চোখে দেখে না। এখন কিছু দৃষ্টিভঙ্গি হয়তো পরিবর্তন হয়েছে।

দেওবন্দের একজন প্রখ্যাত আলেমের নাম হল সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নাদভী (রহঃ)। উনি সহ সকল দেওবন্দি আলেমদেরকে আপনি এক বাক্যে ওয়াহাবি বলে দিলেন। সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নাদভী (রহঃ) এর লেখা একটা বইয়ের কথা বলছি। তাহলেই বুঝবেন ওনারা রসূলকে (সা) এবং পূর্বের অলিদেরকে কতটা সম্মান করতেন। ওনার লেখা একটা বই হল ‘ নবীয়ে রহমত’। এই বইটা হল ওনার লেখা একটা সিরাত গ্রন্থ।

এছাড়া উনি পূর্বের যুগের আওলিয়াদের জীবনী নিয়ে কয়েক খণ্ডে বই লিখেছেন। যেটার নাম হল ‘সংগ্রামী সাধকদের ইতিহাস’ (কম পক্ষে ৫ টা খণ্ড আছে। বেশী থাকতে পারে)। এই বইয়ের বিভিন্ন খণ্ডে উনি খাঁজা মুইনুদ্দিন চিশতী (র), খাঁজা কুতুবুদ্দিন বখতিয়ার কাকী (র), খাঁজা ফরিদুদ্দিন গঞ্জে শকর (র), খাঁজা নিজামুদ্দিন আওলিয়া (র), শায়খ শরফুদ্দীন আহমদ ইয়াহইয়া মুনায়রী (র), হজরত মুজাদ্দেদ আলফে ছানী (রহঃ) সহ আরও অনেক আওলিয়া কেরামের প্রশংসাসহ জীবনী লিখেছেন। পূর্বের আওলিয়াদের নিয়ে এতো বেশী জীবনী আর কোন লেখক লিখেছেন কি না আমার জানা নেই। উনি ছিলেন দেওবন্দের একজন প্রখ্যাত আলেম। এছাড়া পূর্বে উল্লেখিত তবলীগ জামাতের আলেম মাওলানা জাকারিয়ার (রহঃ) সাথে ওনার হৃদ্যতা ছিল। তাবলীগ জামাত সম্পর্কে কোন সমালোচনা উনি কখনও করেনি। বরং তাবলীগের সাথে একটা সুসম্পর্ক ওনার সব সময় ছিল।

আমি মাত্র কয়েকটা উদাহরণ দিলাম। আপনি যাদেরকে ওয়াহাবি বলে ছোট করার চেষ্টা করেছেন ওনাদের প্রত্যেকের সম্পর্কে এই কথা বলা যায় যে ওনারা আল্লাহর রসূলকে (সা) অত্যধিক ভালোবাসতেন এবং পূর্বের আওলিয়াদের প্রতি ওনাদের অগাধ ভালোবাসা ছিল। দেওবন্দকে ওয়াহাবি নাম দিয়েছে ব্রিটিশরা। কারণ ওনাদের সূচনা হয়েছিল ব্রিটিশ আমলে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের মাধ্যমে।

কাওয়ালি অথবা শামা সঙ্গীত জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে লিখেছেন ইমাম গাজ্জালি তার বিভিন্ন বইয়ে। উনি কিছু শর্ত সাপেক্ষে এগুলিকে জায়েজ বলেছেন। ইমাম গাজ্জালি (রহঃ) হলেন সেই ব্যক্তি যিনি শরিয়ত, তাসাউফ, সুফিবাদ এগুলির মধ্যে সমন্বয়ের চেষ্টা করেছেন। একজন অলি আল্লাহর শানে শামা সঙ্গীত গাইলেই তাকে ছোট করাটা ঠিক না। ইমাম গাজ্জালির বইয়ে পাবেন প্রকৃত সুফি কিভাবে চিনতে হবে। উনি সুফিদের অনেকের সমালোচনা করেছেন আবার অনেকের পক্ষে বলেছেন। ঢালাওভাবে যে কোন সুফি সম্পর্কে খারাপ ধারণা উনি পোষণ করতেন না।

আপনি ঢালাওভাবে সকল দেওবন্দ এবং তাবলীগের ওলামাদের ওয়াহাবি, সালাফি ইত্যাদি বলেছেন। এটা মানতে পারলাম না। কেন মানতে পারলাম না সেটার পক্ষে কিছু প্রমাণ আমি উপরে দেখিয়েছে ওনাদের লেখা বই থেকে।

১৮ ই জুন, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪

সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: শুনুন ভাইজান, তাবলিগ জামাত যে ভ্রান্ত ফেরকা তা প্রমাণে এখন সময় ব্যয় করার দরকার নেই। কারণ সাদ যা বলেছেন তাকে ফেতনা বলছেন তাবলীগের ভেতরেই বিরোধীরা। সাদ বলছেন, তিনি নূতন কী বলছেন তিনি যা বলছেন তা তো ইলিয়াসের কথাই বলছেন! এ নিয়ে তো কত খুনাখুনি হয়ে গেলো। সামনে কী হবে আল্লাহ মালুম!

অবস্থা বেগতিক দেখে দেওবন্দ কর্তৃপক্ষ তাবলীগের ফেতনা থেকে মুক্ত থাকার ঘোষণা দিয়েছে। তাদের আকীদার থলের বিড়াল বের হওয়ায় সৌদীর আলেমরা তাবলীগ অনৈসলামিক বলেছেন। এরা নিজেরা নিজেরা আগে ফয়সালা করুক। আমাকে এখন আর সময় ব্যয় করার দরকার নেই। তবে সত্যি হলো, তাবলিগের কারো মুখে কোনো দিন আমি নাতে রাসুল দঃ শুনিনি।

আমি তখন ঢাকা আলীয়া মাদরাসার হোস্টেলে। দড়জার কড়া নাড়লো। বললাম, আপনারা কারা? তাদের জবাব তাবলীগ জামাত থেকে এসেছে। বললাম কী কারণে এসেছেন? বললেন, তাবলীগী কার্যক্রমে। কে কী করেন জানলাম। আশপাশের বুয়েট মেডিকেলের ছাত্ররা এসেছেন ঢাকা আলীয়া মাদরাসায় তাবলীগ করতে। ভাবলাম, এদের শিক্ষা দিতে হবে। বললাম তাবলীগ মানে ইসলামের প্রচার। অমুসলিমের কাছে ইসলামের দাওয়াত দেয়া। আপনারা ঢাকা আলীয়া মাদরাসায় এসেছেন ইসলামের দাওয়াত দিতে! এদের কী অমুসলমান মনে হয়! মুসলিম দেশে এর নাম বড়জোর তালিমি জামাত হতে পারে। পরে তাদের বসিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষাগুরুর সামনে হাটু গেড়ে ইসলাম সম্পর্কে পরিপূর্ণভাবে জ্ঞান অর্জন না করে কোনো কিছু প্রচার করলে কেয়ামতের দিন যে জিহ্বা কাটা হবে-সেই ফতোয়া তাদের সামনে কোরআন হাদীস ফতোয়ার কিতাব খুলে ধরিয়ে দিয়েছিলাম। ওই বেউকুফগুলো আরবী এবারতও পড়তে পারছিলনা। তারা গেছে ঢাকা আলীয়া মাদরাসায় তাবলিগ করতে। এই বেউকুফগুলো সম্পর্কে শব্দব্যয় করা সময়ের অপচয় ছাড়া কিছুই না।

৮| ১৮ ই জুন, ২০২৪ দুপুর ১২:০৯

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: সাদ সাহেব ভুল পথে আছে এটা অধিকাংশ তাবলীগের আলেমরাই বলে। সাদ সাহেব নিজের গা বাঁচানোর জন্য বলেছেন যে তিনি ইলিয়াসের (রহঃ) কথাই বলছেন। কিন্তু ইলিয়াস সাহেব সাদ সাহেব যা বলে যাচ্ছেন সেগুলি বলেননি কখনও। এই কারণেই দেওবন্দ কর্তৃপক্ষ এটা থেকে দূরে থেকেছে। তবে তারা সাদ সাহেবের বিপক্ষেই কথা বলেছে প্রথমে। যখন তারা দেখলো যে সংঘাত কমার নয় তখন তারা দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শুধু সাদ সাহেবের কারণে পুরো তবলীগের দোষ খোঁজা ঠিক না। সাদ সাহেব অবশ্যই ভুল পথে আছেন এবং তিনি সেটা লিখিতভাবে স্বীকারও করেছেন। কিন্তু ইগোর কারণে একই ধরণের ভুল কথা বলে যাচ্ছেন। আর এই সংগঠনে কোটি কোটি মুসলমান শরিক হয়। তাই তৃণমূল পর্যায়ের কম শিক্ষিত অনুসারীদের কথায় গুরুত্ব দেয়ার দরকার দেখি না। এদের ভুলের কারণে পুরো সংগঠনকে সমালোচনা করা ঠিক না। মূল নেতা চলে গেলে সংগঠনে এক সময় ভাঙ্গন ধরে। তাবলীগের ক্ষেত্রেও সেটা হচ্ছে এখন। তবে তাবলীগ জামাতের উদ্দেশ্য অবশ্যই ভালো। মাসালা মাসায়েল শেখানো, ফতোয়া দেয়া এদের মূল উদ্দেশ্য না। মূল উদ্দেশ্য অতি সাধারণ মানুষকে দ্বীনের দিকে টানা এবং আধ্যাত্মিকতার পথে আহবান জানানো। বেসিক নামাজ, রোজা ঠিক হয়ে গেলে মানুষ নিজের উদ্যোগেই বাকি নিয়ম শিখে নেয়। তবলীগের একটা নীতি হল এই সংগঠন তাবলীগে যোগ দেয়ার পরে কখনও বিভিন্ন মাজহাব বা দলের অনুসারীদেরকে নিজ নিজ মাজহাব বা পথ অনুসরণ করতে বাধা দেয় না। দলাদলির মধ্যে এরা নেই। মানুষকে সরল মনে দ্বীনের দিকে ডাকাই মূল উদ্দেশ্য।

আর ভারতে এবং বাংলাদেশে তাবলীগ জামাত অমুসলিমদের মধ্যে কাজ না করলেও অন্যান্য দেশে তাবলীগ জামাত অমুসলিমদের নিয়মিত দাওয়াত দিয়ে যাচ্ছে। ভারতেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে তবলীগের লোকেরা অমুসলিমদের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। বর্তমানের ভারতীয় মওলানা কালিম সিদ্দিকির হাতে হাজারে হাজারে বিধর্মী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে। এই কারণে গত দুই বছর উনি জেল খেটেছেন অকারণে। ওনার সারা জীবন কেটেছে তাবলীগ করে। উনি তাবলীগের মুরুব্বী শাইখুল হাদিস মাওলানা জাকারিয়া কান্দলভির খলিফা। উনি একই সাথে দেওবন্দের মাওলানা সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নাদভিরও খলিফা। শাহ ওলিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী রাহ.-এর খান্দানের সন্তান তিনি। উনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিধর্মীদের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। ওনার একটা মাসিক পত্রিকা আছে উর্দুতে (বাংলাতেও অনুবাদ আছে) যেটার নাম 'মাসিক আরমুগান'। এই পত্রিকা পড়লে বুঝতে পারবেন তবলীগ কিভাবে নওমুসলিমের সংখ্যা বাড়াচ্ছে দেশে দেশে।

ভারত এবং বাংলাদেশের বাইরে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে তাবলীগ জামাত আছে এবং তারা বিধর্মীদেরও দাওয়াত দিয়ে থাকে। আফ্রিকা ও আমেরিকা মহাদেশসহ অনেক দেশের অমুসলিম তাবলীগের নিসবতে মুসলমান হয়েছে। শুধু আমাদের দেশে বিধর্মীদের দাওয়াত দেয়া হয় না। ভারতে কম দেয়া হয় কারণ সেখানে সাম্প্রদায়িকতা বেশী।

১৮ ই জুন, ২০২৪ দুপুর ২:১৮

সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: তাবলীগ জামাত নিয়ে এই ব্লগে ২০১৩ সালের দিকে পক্ষে বিপক্ষে বহু লেখালেখি হয়েছিল। আমি লিখলে আবার চর্বন করা হবে। এই বিষয় চর্বন করতে চাইনা। তাছাড়া সৌদী আরব, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তানসব বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাবলিগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ওই ফতোয়াগুলোর সাথে আমিও একমত। ওই ফতোয়াগুলো দেখে নিতে পারেন। মুসলিম বিশ্বে তাদের গন্ডি ছোট হয়ে আসছে।
যে কথা বলতে চাই, তাবলিগ কখনোই আজমীর শরীফ বা আউলিয়ার দরবারে যান না। দুটো দুই মেরুর মতবাদ।

ওয়ামা আলাইনা ইল্লাল বালাগ।

৯| ১৮ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৬

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ভালো মুসলমান হতে হলে আজমির শরীফ বা আউলিয়ার দরবারে কেন যেতে হবে? আমিও তো আজমির যেতে চাই না। কিংবা কোন আউলিয়ার দরবারে যেতে চাই না। আজমির জেয়ারত করা আর একজন সাধারণ মানুষের কবর জেয়ারত করার কোন পার্থক্য নাই। আজমিরে গিয়ে কবরে যিনি শুয়ে আছেন তার জন্য দোয়া করা দরকার। আর আওলিয়ার দরবারে যাওয়া জরুরী কিছু না। আপনি যে সৌদি আরবের কথা বলছেন তারা কি আজমিরে যাবে কিংবা আওলিয়ার কাছে যাবে। এই ব্যাপারে সৌদি আরব তো ঠিক আছে। মাজার জেয়ারতকে আপনি এতো গুরুত্ব কেন দিচ্ছেন সেটা বুঝতে পাড়ছি না। মাজার জেয়ারতের নামে শিরক বেশী হয়। তবলীগ যদি মাজার জেয়ারত না করে সমস্যা দেখি না। আওলিয়ার দরবারে যাওয়াও কোন জরুরী কিছু না। আপনার দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে যারা মাজার জেয়ারত না করে কিংবা আওলিয়ার দরবারে না যায় তাদের মধ্যে ঘাটতি আছে। কিন্তু প্রকৃত ব্যাপার হল মাজারে বা পীরের কাছে গিয়ে শিরক করার চেয়ে না যাওয়া ভালো। রসূলের (সা) সাহাবীরা কি মাজার জেয়ারত করতেন কিংবা কোন পীরের দরবারে যেতেন। মোটেই না। ইসলামের মূল ধারায় এগুলি নেই। তবে মাজার জেয়ারত বা আওলিয়ার দরবারে গেলে কোন সমস্যা নেই যদি শিরক না করা হয়। কেউ মাজারে না গেলেই তাকে নিয়ে সমালোচনা করার কিছু নেই।

১৮ ই জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৯

সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: আমি অনেক কারণে আল্লাহর ওলীদের মাজারে যাই। তাদের কারণে আমি আমার পূর্বপুরুষ মুসলমান হয়েছে- এই কৃতজ্ঞতাবোধ থেকে। তাদের ফয়েজ নেকদৃষ্টি কামনার জন্য। সুরা ফাতরহায় বলি, এমন পথ দেখাও যারা তোমার নেয়ামতপ্রাপ্ত হয়েছেন। আমি মনে করি আল্লাহর ওলীরা আল্লাহর নেয়ামতপ্রাপ্ত বান্দা। মাজারে যাই তাদের আমল আখলাক প্রদর্শিত পথ স্মরণ করে তা অনুসরণ করার জন্য। নেক বান্দাকে উসিলা করে আল্লাহর কাছে কিছু চাওয়ার জন্য।
আপনি যাবেন না। সেটি আপনার বিষয়। সমালোচনার কিছু নেই। আপনাকে আমি বুঝাতে পারি নি। হযরত আবদুল কাদের জিলানী রাঃ এর তরিকা আর ইবনে তাইমিয়ার তরিকা আলাদা। এদেশে আল্লাহর ওলীরা হযরত মাইন উদ্দীন চিশতি রাঃ থেকে শুরু করে হযরত শাহ জালাল রাঃ একই মতাদর্শের। আর ইবনে তাইমিয়ার দর্শন ভিন্ন। ওহাবী বা তাবলিগের ওরা ইবনে তাইমিয়ার অনুসারী। ইবনে তাইমিয়ার অনুসারীদের আমি আল্লাহর ওলী বলতে ইচ্ছুক নই।

১০| ১৮ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৫:০০

ঢাবিয়ান বলেছেন: তাবলীগের বিষয়ে আপনার সাথে একমত। তাব্লীগিদের সমাজ ও পারিবারিক জীবনে বিশৃংখলা সৃষ্টি ছাড়া , ইতিবাচক কোন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে দেখিনি।

অতীতে এই উপমহাদেশে ইসলাম প্রচারে পীর আউলিয়ায়াদের ভুমিকা রয়েছে বুঝলাম , কিন্ত পীর আউলিয়াদের মৃত্যর পর তাদের কবর পাকা করা, কবরের উপর গম্বুজ নির্মাণ, তাতে বাতি জ্বালানো, কবর ও মাযার যিয়ারত ,মাজারে কপাল ঠুকে সেজদা করা, ফুল দেয়া এবং মাজারকে কেন্দ্র করে ব্যবসা সম্পর্কে আপনার অবস্থান কি ? আপনি কি এ জাতীয় কর্মকান্ডকে শিরক বলে মনে করেন না ?

১৮ ই জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৩

সায়েমুজজ্জামান বলেছেন: কিন্ত পীর আউলিয়াদের মৃত্যর পর তাদের কবর পাকা করা, কবরের উপর গম্বুজ নির্মাণ, তাতে বাতি জ্বালানো, কবর ও মাযার যিয়ারত, ফুল দেয়া ইসলামে বৈধ।

উপরে সাড়ে চুয়াত্তরের কমেন্ট দেখতে পারেন। সেখানে ইমাম গাজ্জালী রাঃ বলে গেছেন কার কবর পাকা করা যাবে; কার কবরে গিলাফ লাগানো যাবে। বাতি জ্বালানো যাবে। রাসুল দঃ আমাদের আদর্শ। তার রওজা থাকতে পারলে নায়েবে রাসুলদেরও মাজার থাকবে।

প্রশ্ন হলো মাজারে কপাল ঠুকে সেজদা করার বিষয়ে। আমি মাজারে কপাল ঠুকে সেজদা করিনা। সমর্থনও করিনা। তবে যারা করে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেছি, তারা আল্লাহ মনে করে সেজদা করে কী না! তারা বলেছেন, তওবা তওবা। আল্লাহ এক। আমরা মুসলমান। এক আল্লাহতে বিশ্বাস করি। তার কোনো শরীক কল্পনাও করিনা। তাহলে সেজদা দেন কেন! বলেন, সম্মান করতে সেজদা দেই। সেজদার সাথে শিরকের কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ আল্লাহ আদম আঃ কে তৈরি করে ফেরেশতাদের সেজদা করতে বলেছেন। কোরআনে আছে। হযরত ইউসুফ আঃ তার বাবা মাকে নিজের সিংহাসনে বসিয়ে সেজদা করেছেন। তার মানে সেজদা করলেই শিরক হয়না। মাথা নোয়ালেই শিরক হয়না। খাবার খাওয়া ছাড়াও বিভিন্ন কারণে আমরা মাখা নোয়াই। এর সাথে শিরকের সম্পর্ক নেই।

তাদের বক্তব্য বিশ্লেষণ করে যা পেলাম, তারা আল্লাহ মনে করে সেজদা দেন না। তো শিরক হবে কীভাবে! সেজদায়ে তাজিমির পক্ষপাতি আমি নই। তবে মাজারে সেজদা তাজিমি সঠিক না হলে শিরক হবেনা। সর্বোচ্চ পাপ হতে পারে। ভাই মুসলমানদের উপর যে কোন কারণে শিরকের ফতোয়া লাগানো বেকুবি ও মুর্খতা। কারণ ঈমান তো অন্তরের বিষয়। কেউ দেব দেবীর সামনে গিয়ে তাকে সম্মান করলেও তাতে শিরক কেন হবে। সে তো দেব দেবী বিশ্বাসই করেনা। সর্বোচ্চ পাপ হতে পারে।

এবার আসি মাজারে ব্যবসা নিয়ে। আপনি সম্ভবত মাজারে টাকা পয়সা মানত করার বিষয়টির দিকে ইংগিত করেছেন। দেখুন কোরআনে আছে হযরত ইব্রাহিম আঃ কাবাঘর নির্মাণ করে বলেছিলেন, আমার বংশধরদের ওপর মানুষের অন্তর নরম করে দাও। যাতে তারা এই মরুর বুকে জীবন ধারণ করতে পারে। তার মানে হযরত ইব্রাহিম আঃ এর দোয়ায় নিজের বংশধর কীভাবে চলবে সেজন্য তিনি দোয়া করেছেন। আল্লাহর ওলীরাও তার বংশধরদের জন্য সমান উদগ্রীব। সেকারণে তাদের টাকা পয়সা দিলে খারাপের কিছু দেখিনা। বরং আল্লাহর ওলীর ফয়েজ পাওয়ার কারণ হতে পারে।

যাই হোক। এই লেখাটা যাকে নিয়ে তিনি হযরত নিজাম উদ্দীন আউলিয়া রাঃ। তিনি বাবা শেখ ফরিদ রাঃ এর খলিফা ছিলেন। নিজাম উদ্দীন আউলিয়া বছরে একবার পাঞ্জাবের অযোধনে বাবা শেখ ফরিদের কাছে যেতেন। শেখ ফরিদের ইন্তেকালের পর ওরশে যেতেন। অযোধন এখন পাকপত্তান নামে পরিচিত। এটি পাকিস্তানে পড়েছে।

আপনি আল্লাহর অলীদের জীবনী পড়ুন। দেখবেন তারা কী করতেন। তাহলেই অনেক প্রশ্নের জবাব পেয়ে যাবেন। আমি তাদেরই অনুসরণ করি মাত্র।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.