নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্বপ্নতে বেঁচে থাকার নিশ্বাস খুঁজি
আমি যদি আপনাকে প্রশ্ন করি, আপনি কি উদ্দেশ্য নিয়ে পৃথিবীতে এসেছেন ? উত্তরটা সবারই একই, আমি সুখী হতে চাই ।
এটা খুবই ভালো কথা, আপনি সুখী হতে চান । প্রথমে আমি একটি উদাহারণ দেবো, আমার মা প্রতিটা সময় আমাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করতো, আমি এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার পর বাড়ি থেকে শহরে পাড়ি জমাই । তারপর আমি যখন সেমিস্টার পরীক্ষায় ফেল করি, তখন কলেজ থেকে আমার বাবাকে ফোন দেয়া হয় ,তারপর পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার ঘটনা আমার মা শুনে । দেখেন, আমার বাবা বিষয়টিকে খুব একটা গুরুত্বের চোখে দেখেনি, তাই সে আমাকে কিছুই বলেনি ।
কিন্তু আমার মা, আমাকে ভীষণভাবে বকুনি দিয়েছিলো ফোনে, রাতে দুশ্চিন্তায় ঘুমোতে পারছিলেন না তিনি, আর হয়তো ভাবছিলেন, এত টাকা দিয়ে ছেলেকে পড়াচ্ছি, হয়তো কোন লাভ হবে না । এইভাবে আমার মায়ের দুশ্চিন্তার মাত্রাটা বাড়তেই লাগলো, এক পর্যায়ে আমার মা অসুস্থ হয়ে পড়লো ।
এই রোগটা কোথা থেকে আসলো, দুশ্চিন্তা থেকে । এই দুনিয়ার বেশিরভাগ মানুষ এই দুশ্চিন্তার কারণে অসুখী । শুধু আমার মা না, আমার পরিচিত অনেকেই আছেন, শুধু শুধু দুশ্চিন্তা করে এবং হতাশার কারণে নিজের শরীরের বারোটা বাজিয়ে ছাড়ছেন । এখন বলি, দুশ্চিন্তার কারণে কেন রোগ-ব্যাধি হয় । মানব মস্তিষ্ক সম্পর্কে নিশ্চয়ই আপনারা অবগত । আমাদের আসল পরিচয়ই হচ্ছে আমাদের মস্তিষ্ক । আমি যদি আপনাকে প্রশ্ন করি আপনি কে, আপনি উত্তর দেবেন আপনার নাম দিয়ে । কিন্তু এটা তো আপনি না, এটা আপনার নামই মাত্র । আপনার মস্তিষ্কের কার্যক্রমই হচ্ছেন আপনি । আপনি এই মস্তিষ্ক দিয়ে যা চিন্তা করেন, সেটিই হচ্ছেন আপনি । এখন বুঝতেই পারছেন, মানব শরীরের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ জায়গাটি হচ্ছে, আপনার মস্তিষ্ক ।
আপনার দেহের বেশিরভাগ অসুস্থতার কারণ এই মস্তিষ্ক । মনে করেন, শরীরের কোন জায়গার সমস্যার কারণে আপনি অসুস্থ হলেন, তারপর যদি আপনি ভাবেন, অল্প কয়েকদিনে আমি সুস্থ হয়ে যাবো, তাহলে সুস্থ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ৬০ ভাগের ও বেশি । আর যদি ভাবেন, আমি তাড়াতাড়ি সুস্থ হবো না, তাহলে আপনার সুস্থ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম । কারণ মানব মস্তিষ্কের কাজগুলো হলো শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, হৃদস্পন্দন এর হার এবং শ্বাসকার্য । কতকিছু এই মস্তিষ্কের উপর নির্ভর করতেছে বুঝছেন ।
আপনি যখন কোন কিছু চিন্তা করেন, তখন সেটি আপনার মস্তিষ্কে ফাইল আকারে সেভ হয় । আর সেই ফাইলটি ফ্রিকুয়েন্সির মাধ্যমে শরীরে প্রবাহিত হয় ,তারপর আপনি অসুস্থ হন । দেখেন দুশ্চিন্তা করলে জীবনে ও কোন ধরণের আউটপুট পাবেন না, বরং নিজের শরীরেরই ক্ষতি করবেন । ফ্রিকুয়েন্সির ব্যাপারটা পরিষ্কারভাবে বলি, আপনি যখন ভয় পান, বিকট শব্দ, অথবা কোন মুভির সিন দেখে, তখন সেটা আপনি কান দিয়ে শুনেন অথবা চোখ দিয়ে দেখেন, তাৎক্ষণিক ভাবে সেটা ব্রেনে চলে যায়, ব্রেন থেকে কয়েক মিলি সেকেন্ডের মধ্য শরীরে প্রবাহিত হয় ,তারপর আপনার শরীর কেঁপে উঠে । আশা করি ব্যাপারটি বুঝছেন ।
তাহলে আজ থেকে আপনার মস্তিষ্কের মধ্যে যতগুলা দুশ্চিন্তার ফাইল আছে সবগুলা কেটে দেন। নিজের ভবিষ্যতের জন্য দুশ্চিন্তা, হতাশা ছেড়ে দিয়ে সুষ্টু পরিকল্পনা করেন, কিভাবে এগোবেন , তাহলেই আপনি রোগ-ব্যাধি থেকে বেঁচে থাকবেন । নিঃসন্দেহে, রোগব্যাধি থেকে নিরাময়ই হচ্ছে, আল্লাহতায়ালার সবচেয়ে বড় নেয়ামত । সুখে থাকার মূলমন্ত্রই হলো সুস্থ জীবন অতিবাহিত করা । উচ্চ রক্তচাপ, প্রেশার, ডায়াবেটিস এইসব রোগের জন্য অধিক দুশ্চিন্তাই দায়ী ।
দুশ্চিন্তার সবচাইতে বড় রোগ হলো, ব্রেন স্টক । ব্রেন স্টক করলে কি হয়, সেটা সম্পর্কে আপনারা অবগত আছেন । তাহলে আজকে থেকে আপনারা পুরোপুরিভাবে দুশ্চিন্তা ছেড়ে দিন, নিজেদের ভাগ্যে বদলানোর জন্য পরিকল্পনা করে, পরিশ্রম করুন, তাহলেই জীবনে সফলতা আসবে, সফলতা আসলে সুখ ও আসবে ।
আমি একজন ইংরেজি সাহিত্যর ছাত্র, নিজের ভবিষ্যত সুনিশ্চিত কিনা তা আমি জানি না, তবে আমি এখন আর ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তা করি না । দেহ মন আত্মার শান্তির জন্য, নিয়মিত মেডিটেশন করুন, মুসলিম হলে অবশ্যই নামাজ পড়ুন, বেশি বেশি করে বই পড়ুন, ভ্রমন করুণ, মাইন্ড কে ডাইবার্ট করুন, চিন্তার জগতকে পালটিয়ে ফেলুন, তাহলেই জীবনে সুখ আসবে ।
অধিক টাকা সুখের সমাধান না, বরং আত্মতুষ্টিই হলো সুখ । আপনার কি নেই, সেটা ভাববেন না, আপনার কি কি আছে সেটা ভাবুন, আপনার কিছু না থাকলে ও অনেক কিছু আছে, কারণ সৃষ্টিকর্তা আপনাকে অনেক কিছু দিয়েছেন , চোখ, কান, হাত পা ফুসফুস, হৃৎপিণ্ড আরো অনেক কিছু । এইগুলার মূল্য এই পুরো পৃথিবীর চাইতে ও দামি ।
আপনাকে যদি বলি, আমি আপনাকে ফোর্ড, রকফেলার, মর্গানদের সব অর্থসম্পত্তি দিয়ে দিবো, আপনি আপনার চোখ দুটো আমাকে দিয়ে দিবেন, কখনো না । তাহলে বুঝতেছেন, আপনি কত ধনী । নিয়তিকে মেনে নিলে, কোন দুশ্চিন্তা থাকে না ।
ছোট্ট একটা উদাহারণ দিয়ে শেষ করি, আপনার জীবিত অবস্থায়, আপনি হয়তো আপনার প্রিয়জন কাউকে হারাতে পারেন, তবে সেই সময়ে হতাশ না হয়ে, নিয়তিকে মেনে নিবেন । অপ্রত্যাশিত অনেক কিছু জীবনে ঘটে, সেটার উপর কারো হাত থাকে না, তাই সেই সময়ে নিয়তিকে মেনে নিতেই হয়, তাহলেই নিজেকে সুস্থ রাখতে পারবেন ।
দুশ্চিন্তা ও হতাশা দূরীকরণে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট মহামানব, ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, তার প্রতি অধিকহারে দরুদ শরীফ পাঠ করো ।
এই লিখাটি পড়ার পর, ইনশাল্লাহ, আপনাদের সকল প্রকার দুঃখ ও হতাশার জীবনের পরিসমাপ্তি হবে ।
বিঃদ্রঃ আমার কথাগুলো একবার পড়েই শেষ না, নিজের জীবনে কথাগুলো প্রয়োগ করুন, তখনই সুখে থাকতে পারবেন, আর আমার লিখাটাও তখন স্বার্থক হবে । আর এই অধমটার জন্য দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন তাকে যেকোন প্রকার রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্তি দেয়
২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৯
সাফাত আহমদ চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ, প্রশংসা করার জন্য । যারা হতাশায় ডুবে আছেন, তাদের সাথে কথাগুলো শেয়ার করেন, সবাই সুখে থাকুক, এটাই কামনা ।
২| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:১২
রাজীব নুর বলেছেন: লেখায় কেন ধর্মকে টেনে আনলেন??
আর এইভাবে একতা না লিখে প্যারা প্যারা করে লিখেবন। দেখতে ভালো লাগে, পড়তেও ভালো লাগে।
২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:১৮
সাফাত আহমদ চৌধুরী বলেছেন: আমি নতুন তো ভাইয়া, লিখালিখির অভ্যাস কম । ফেবুতে ছোট ছোট পোস্ট করতাম, এখন ব্লগে লিখি । আস্তে আস্তে শিখবো । আর ধর্ম টেনে আনছি শুধুমাত্র লিখাটার পূর্ণাঙ্গতার জন্য । নামাজ না পড়লে, আমি শান্তি পাই না, তাই লিখলাম । অন্যের ব্যাপ্যারটা জানি না, আমার রাতে পর্যন্ত ঘুম হয়না, যতক্ষণ নামাজ পড়ি না ।
৩| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:২৭
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন। বেশীর ভাগ মানুষ অতিরিক্ত দুঃশ্চিন্তা থেকেই তাড়াতাড়ি রোগে পড়ে...
২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:৫০
সাফাত আহমদ চৌধুরী বলেছেন: আপনার নামটা দারুণ, ধন্যবাদ আপনাকে ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৪
আকিব হাসান জাভেদ বলেছেন: সবার আগে আপনি ভালো থাকেন দোয়া রহিল। আমরা মানুষ তাই চিন্তা, দুশ্চিন্তা দুনোটাই ভর করে আছে। তবে সু চিন্তা আমাদের নেই তাই আমরা আজ অসুস্থ। সবার সু বুদ্ধি আর সুচিন্তা উদয় হউক সেই প্রার্থনা করি সব সময় । তাহলেই দেখবেন সর্বকালের সব মানুষ সুখি আছে। নামাজ অবশ্যই সকল শান্তির মূল। সুন্দর লিখেছেন । কাজে লাগবে নিশ্চয় ।