জীবনভাবনা

১৬ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১:২৭

পৃথিবীতে সুখী থাকার জন্য খুব বেশি কিছুর প্রয়োজন নেই। নিজেকে নিয়ে ভাবুন, নিজেকে ভালোবাসুন, নিজেকে ভালো রাখুন। বিশ্বাস করুন, নিজের প্রতি এই ভালোবাসাটাই আপনার সুখী হওয়ার জন্য যথেষ্ট।

পাছে লোকে অনেক কথাই বলবে। কারো কথায় কান দিবেন তো সুখ নামক অনুভূতিটাকে নিজের জীবন থেকে চিরতরে হারাবেন। বিশ্বাস করুন, যারা আপনার আপন মানুষ তারা সবসময়ই আপনার ভালোটা চাইবে। আর যারা আপনার ভালোটা সহ্য করতে পারবে না সত্যিই তারা কখনো আপনার আপন হতে পারে না। আর যারা আপনার আপন নয়, যারা আপনার ভালোটা সহ্য করতে পারবে না তাদের কথায় কর্ণপাত করার কোনো কারন থাকতে পারে না। বিশ্বাস করুন, সুখী থাকার মানসিকতাটা আপনার মধ্যে উপস্থিত থাকলে এসবে কর্ণপাত করার কোনো সময় আপনার নেই।

একটিবারের জন্য চোখদুটো বন্ধ করুন আর ভাবুন আপনি কে,? আপনি কী,? আপনার চাওয়াটা কী,? আপনার সুখটা আসলে কোথায়,?
এবার ভাবুন, আপনার আশেপাশের মানুষগুলো আপনাকে নিয়ে কী ভাবে,? তারা আপনার সুখের ব্যাপারে, আপনার ভাবনাগুলোর ব্যাপারে আপনাকে কতটুকু সমর্থন করে.?
অতঃপর দুটো বিষয়কে মেলানোর চেষ্টা করুন। আপনার ভাবনার সাথে তাদের ভাবনার কতটুকু মিল,?

বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, এটা ধ্রুব সত্য যে, যাদের ভাবনার সাথে আপনার এই ভাবনাগুলো মিলে যাবে বা আপনার ভাবনাটুকুকে অন্তত বুঝার চেষ্টা করবে এবং আপনার মঙ্গল কামনার স্বার্থে আপনাকে সমর্থন করে আপনার ছোট ছোট ভুল ধরিয়ে দিবে তারাই আপনার আপনজন। হ্যা, তারাই সত্যিকার অর্থে আপনার আপন মানুষ। আর যার আপনাকে সম্পূর্ণ বিরোধিতা করবে তারা আপনার আপন নয়, কোনোদিনই আপন নয়।

জীবনটাকে একটা যুদ্ধক্ষেত্র ভাবুন। এ সমরটাতে অবশ্যই আপনার শত্রু থাকবে, আপনার মিত্র থাকবে। আপনার শত্রু এবং মিত্রগুলো যাচাইয়ের দায়িত্বটাও কিন্তু আপনার। কেউ এসে আপনার হয়ে যুদ্ধ করবে না। বড়জোর আপনাকে সমর্থন করবে। আর অই মানুষগুলাই আপনার বন্ধু। তাদের সমর্থনটুকুই আপনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহায়তা করবে। কিন্তু বিশ্বাস করুন, কেউ আপনার যুদ্ধের সাথী হবে না, আপনার হয়ে যুদ্ধ করবে না। জীবনযুদ্ধে আপনি একাই যোদ্ধা। যুদ্ধটা একান্তই আপনার। পিঠ চাপড়ে ভরসা দেওয়া কিছু মানুষের উৎসাহ-অনুপ্রেরণা নিয়েই আপনার যুদ্ধ করে যেতে হবে। দেখবেন, সত্যিই একটা সময় আপনি যুদ্ধজয়ী হবেন, সকল বাধা-বিপত্তি তখন আপনার সাহসিকতার কাছে পরাজিত হবে।

এ জগতে কেউ বীর হয়ে জন্মায় না, কেউ কাউকে বীর বানাতে পারে না। আমাদের নিজেদেরই নিজেদেরকে বীর হিসেবে তৈরি করতে হয়। জয়ী হওয়ার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করুন, চ্যালেঞ্জটাকে সাফল্য উপহার দেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে এগিয়ে চলুন। এটাই, জাস্ট এটাই আপনাকে বীরত্ব এনে দেবে।

আপনি মানুন আর নাই মানুন, আপনার ভাগ্যের নির্মাতা আপনিই। তাই সবকিছু ভাগ্যের উপর ছেড়ে দেওয়ার মানসিকতা পরিহার করুন। জীবনের জন্য একটা লক্ষ্য তৈরি করুন। জীবনকে নিয়ে একটা সুন্দর স্বপ্ন দেখুন এবং সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এগিয়ে চলুন, দৃঢ় প্রত্যয়ে এগিয়ে চলুন। তবেই আপনি পারবেন নিজের ভাগ্যটাকে আপনার মনের মতো করে তৈরি করতে। আপনি পারবেন, হ্যা আপনি তখনই পারবেন আপনার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছুতে।

বিশ্বাস করুন, আমি, সে বা তারা কেউই আপনার মধ্যে কোনো ধরনের ভাবনা তৈরি করে দিতে পারবে না, পারে না। আপনার ভাবনা একান্তই আপনার। আপনি যা ভাববেন, আপনি তা-ই। আপনিই পারবেন আপনার জন্য, আপনার জীবনের জন্য কিছু উপহার এনে দিতে। আমি, সে বা তারা কেউই এটা পারবে না, কোনোদিনই পারবে না।

আপনি আপনার জীবনকে কী কী উপহার দিতে চান, তার একটা তালিকা তৈরি করুন, আজই করুন। আপনার এই চাওয়াগুলো পূর্ণ করার জন্য কী কী করণীয় তারও একটি তালিকা তৈরি করুন। আশেপাশের মানুষগুলোকে বুঝার চেষ্টা করুন। উৎসাহ দেওয়ার মানুষগুলো ব্যতীত বাকিদের স্বীয়মনের ইগনোর লিস্টে রাখুন। এবার আপনার চাওয়াগুলো পূর্ণ করার শপথ নিয়ে জীবনযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ুন। যতদিন না আপনি কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছুচ্ছেন ততদিন পর্যন্ত লড়তেই থাকুন, লড়েই যান। তবেই এ লড়াইয়ে আপনার জয় নিশ্চিত।

প্রতিদিন কী কী করবেন তার জন্য একটা রুটিন তৈরি করুন। এবং দিনশেষে নিজের প্রতিটি ভালো কাজের জন্য নিজেকে উপহার দিন। হতে পারে সেটা কোনো চকলেট, আইসক্রিম বা আপনার প্রিয় কোনো বস্তু। কাউকে খুশি করার জন্য না হোক, নিজেকে খুশি করার জন্য অন্তত এগিয়ে চলুন।

পরিশেষে বলতে চাই, আপনার জন্য যেমন আপনাকে ভেবেই এগিয়ে চলতে হবে। ঠিক তেমনি অন্যকেও তাই। সুতরাং যার যার জীবন নিয়ে তাকেই ভাবতে দিন। তার ভাবনাটুকু বুঝে তার মতো করে চলতে দিন। আপনার ভাবনাটুকু তার জীবনে জড়িয়ে দিবেন না। আর আপনি যদি তাকে আপন ভেবে থাকেন তাহলে পোস্টটি পুনরায় পড়ুন, তবেই বুঝতে পারবেন তার জন্য আপনার কী করণীয়।

নিজে ভালো থাকুন,
আপনজনদেরও ভালো রাখুন।

লিখা : সাইফ আরেফিন বিপুল।

০ টি +০/-০