![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ মেয়েটির বিয়ে, সেজেছে হয়েছে টুকটুকে, শত-সহস্র রঙের বর্ণিলতায় যেন ঝলমলে তার চারপাশ ও সবকিছু।
এমনিতেই লাজুক প্রকৃতির কথা বলে সেও যেন পুতুলের চাবি দিয়ে বলাতে হয়! চোখ তো এমনিতেই উপরে ওঠেনা তার উপর বিয়ের সাঁজ! আজ যেন লাজে মরিমরি! কোথায় যায়, কোথায় লুকায়, কি করে-না করে তার কোন ঠিক নেই, শরমে মরে যায় আর কি?
নিজের পছন্দের ছেলেকে বিয়ে, বেশ চেনা-জানা, কথা বলা, একসাথে চলা, কখন-সখন হাতেও-হাত রাখা! আর আজকালকার এতো-এতো প্রযুক্তির সুবিধায় যোগাযোগ বা খোঁজ-খবর তো প্রায় সারাক্ষণই। সুতরাং অনেক ভেবে-ভেবে, দেখে-শুনে, বুঝে-বুঝিয়ে, মিল-অমিলয়ের গ্রহণ যোগ্যতায় এক হয়েই এই সিদ্ধান্ত!
চার পাশের কত-শত আত্মীয় ও শুভাকাঙ্ক্ষী, কত প্রশ্ন আর কৌতূহল, এই মেয়ে কিভাবে কাউকে নিজ থেকে পছন্দ করলো! সেসবের উত্তর তো দূরের কথা, তার কান পর্যন্ত পৌছাচ্ছে কিনা সেটাই বোঝা যাচ্ছেনা! কারণ মেয়েটি তো অসাড়-নীরব-নিশ্চুপ হয়ে আছে, শুধু অবয়বে একচিলতে হাসি ধরে রেখে।
অভ্যর্থনা প্রাঙ্গন যেন অতিথি ও আগতদের মিলনমেলা, আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে খুসির ফোয়ারা আর মা-বাবা যেন সুখে আত্মহারা! কারণ, এতো-এতো মিষ্টি-লক্ষ্মী-নম্র-ভদ্র-নরম-কোমল-স্পর্শকাতর-নিশ্চুপ-নীরব-প্রশ্নহীন-বন্ধু বা আড্ডা হীন-তুলতুলে একটি পুতুলসম মেয়ের অনেক অরাধ্য বিয়ে আজ। সেও বাবা-মায়ের কত-শত অপেক্ষা আর অপেক্ষার পরে মেয়ের সম্মতি ও আত্ন-সহযোগিতায় এই মহা আয়োজন!
একে-একে অতিথিরা আসছে, নির্ধারিত জায়গায় তারা তাদের উপহার রাখছে আর নাম-ধাম লিখে নিজেদের আগমন ও উপহারের সরব জানান দিচ্ছে। এবার একটি ছেলে এলো হাতে একটি স্বভাবতই হাতে একটি উপহার বা সেই রকম কিছু নিয়ে, স্বাভাবিক ভাবে সবার উপহারই ছিল চকচকে প্যাকেটে মোড়ানো, ফুলের ফিতে দিয়ে বাঁধা আর ঝলমলে পেপারের আবরনে আবদ্ধ, কিন্তু এই ছেলেটির উপহার টা একেবারেই উন্মুক্ত, নেই কোন আবরন বা বাড়তি কোন সাঁজ! উপস্থিত সবাই এক দৃষ্টিতে সেই উপহারের দিকে বিস্ময় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আর হকবাক হয়ে মুগ্ধ চোখে উপভোগ করছে, সে যে এমনই অনিন্দ সুন্দর আর দুর্লভ এক উপহার!
অনেকে অনেক কিছুই জিজ্ঞাসা করছে, এই জিনিস কোথায় পেল, কিভাবে পেল, কত দাম নিল ইত্যাদি-ইত্যাদি, আর এসব প্রশ্নের চেয়েও বড় প্রশ্ন ছিল সে কে?
ছেলেটি সব প্রশ্নের উত্তরই দেবে, উপহারটি যার জন্য এনেছে তাকে পৌঁছে দিয়ে তারপর! কিন্তু ওখানে তো যাওয়া যাবেনা, এখানেই দিতে হবে এবং নাম-ধাম লিখে রাখতে হবে? কিন্তু ছেলেটির একই উত্তর যে সে উপহারটি মেয়েটির কাছেই দেবে আর কারো কাছে নয় কিছুতেই, প্রয়োজনে চলে যাবে, পরে এক সময় দেখা হলে বা করে যার জন্য উপহারটি আনা তাকে দিয়ে দেবে! ছেলেটির অনুরোধ, একবার শুধু মেয়েটিকে জিজ্ঞাসা করা হোক যে সে তার উপহারটি তার কাছেই দিতে পারে কিনা? যদি সম্মতি দেয় তো যাবে, নইলে চলে যাবে।
এবার মেয়েটির ভাই, মেয়েটির কাছ থেকে গিয়ে অনুমোদন নিয়ে এলো, ছেলেটি এজন্য বেশ খুশী আর কৃতজ্ঞ! সোজা চলে গেল মেয়েটির কাছে, সেই মেয়েদের মেলার মাঝে, যেখানে ছেলেদের প্রবেশাধিকার নেই বললেই চলে। তো ছেলেটি তার দুই হাতে ধরা উপহারটি নিয়ে ঢোকা মাত্রই সবার চোখ ছানাবড়া! একি? এমন দুর্লভ-দামি-অদ্ভুত আর অসম্ভব উপহার সে পেলো কোথায়? এমন দুর্দান্ত আর মাদকতাপূর্ণ উপহার কেউ পাওয়া তো দূরের কথা চোখেও দেখেনি কোনোদিন! এমন কি কেউ কখনো স্বপ্নেও ভাবেনি!
যাই হোক টুকটুকে সাঁজে সেজে থাকা মেয়েটির চেয়ে এখন সবার আগ্রহর কেন্দ্র বিন্দু ছেলেটির হাতের উপহার আর ছেলেটি তো অবশ্যই! কিন্তু ছেলেটি সব কিছু বুঝেও সেসব উপেক্ষা করে সরসরি মেয়েটির কাছে তার উপহারটি রেখে আর শত কোটি শুভকামনা জানিয়ে সেই জায়গা থেকে চলে গেল। মেয়েটি কিন্তু একটি কথাও বলেনি! না কোন ধন্যবাদ! সে যে তার স্বভাবেই নেই, সে পারেনা, এই ছেলেটিকে তো আরও পারেনা! কি জানি, কি তার ব্যাখ্যা, কেউ জানেনা!
এরপরের ঘটনা, শুধু ঘটনা বা কোন গল্প নয়, যা ঘটেছিল সে হার মানাবে যে কোন উপন্যাসকেও! চলুন দেখি কি হয়েছিল এরপর............?
মেয়েটি এক দৃষ্টিতে চেয়েছিল তার দেখা ও পাওয়া সবচেয়ে দুর্লভ উপহারটির দিকে, যেন চোখ সরেনা আর চোখ সরে তো মন সরেনা! কিভাবে সম্ভব একটি ছেলের দশ বছর ধরে লালিত-পালিত, কত-শত আদর-মমতা-সোহাগ আর পরম যত্নে গড়ে এই দুর্লভ ভালোবাসা আর মায়ামাখা বন্ধুটিকে এক নিমিষেই অন্যকে উপহার হিসেবে দিয়ে দেয়া!
তাও যদি হত, মেয়েটির সাথে ছেলেটির কোন বিশেষ সম্পর্ক বা বিশেষ বন্ধুত্ত বা খুব কাছের কেউ অথবা নিকট আত্মীয়, তবুও কথা ছিল, কিন্তু তাতো নয়, ক্ষীণ চেনা-জানা, দু-একটি কথার আদান-প্রদান, সামান্য একটু-আধটু সাহায্য বা সহযোগিতা, কারো কোন কোথায় এক-আধবার আড় চোখের দৃষ্টি বিনিময়, কখনো-সখনো কোন উপলখ্যে মৃদু হাসির আভা ছড়িয়ে পরা... এই...! এর বেশী কিছু নয় কখনো, কোনোদিনও। সে যে সম্ভব নয়, দুজনের কারো পক্ষেই, না ভাবা, না ভাবানো! কারণ দুজনই দুজনের চেয়ে যোজন-যোজন এগিয়ে-পিছিয়ে সব দিক থেকেই আর সামাজিক দায়বদ্ধতা? সেও অসীম, অলঙ্ঘনীয়, অকাট্য! তবু কেন.........?
মেয়েটির বিয়ের সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ, সবাই যে যার মত করে চলে গেল, চলে গেল ছেলেটিও, মেয়েটিও শ্বশুর বাড়ি যাবার জন্য প্রস্তুত সবাই গাড়ির কাছে দাড়িয়ে মেয়েটি এখনো আসছেনা, কারণ? সে ছেলেটির দেয়া সেই দুর্লভ উপহারটি সাথে নিয়ে যেতে চায়! ওটা রেখে যেতে চায়না, কেউই ওটার সঠিক যত্ন করতে পারবেনা তাই! ওটা নষ্ট বা অবহেলায় বিবর্ণ হয়ে ওর মাধুর্যতা হারাবে সে মেয়েটি চায়না, কিছুতেই হতে দেবেনা! ওটাকে সে পরম যত্নে আগলে রাখতে চায় তার সবটুকু আদর আর মমতা জড়ানো নিখাদ ভালোবাসা দিয়ে! এতে তো কোন ক্ষতি নেই, নেই কোন বারন বা বাঁধা সুতরাং সে ওটা সাথে নিয়ে যেতে চায়।
তো কেউই কোন কথা না বাড়িয়ে তার সেই দুর্লভ উপহার তুলে দিল গাড়িতে, মেয়ের বর বা তার শ্বশুর বাড়ির লোকজনও অনেক খুশি এই উপহারটি তাদের কাছে পেয়ে, যা তাদের বাড়ির শুধু শোভা নয় আভিজাত্যও বাড়াবে! সুতরাং নিয়েই চল...... মেয়েটি এবার অনেক খুশী!
শেষ রাতের একটু আগে শ্বশুর বাড়ি পৌঁছে আরও সামাজিকতা ও কিছু অনুচিত আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে জীবন সাথীর সাথে বাসর ঘরে...... সাথে-সাথে সেই উপহারটাও! একদম মাথার কাছে সাইড টেবিলে রেখেছে! পরম আন্তরিকতায় আর নরম হাতের আলতো ছোঁয়ায়, মিশিয়ে নিখাদ ভালোবাসা আর আদর!
এরপর এই কথা, সেই কথা... দু একটি মৃদু খুনসুটি আরও কত কি? হঠাৎ মেয়েটির বরের কৌতূহলী জিজ্ঞাসা... “আচ্ছা তোমার এই উপহারটি আমার দেখা সবচেয়ে দুর্লভ উপহার, এটাতো কিনতে পাওয়া যাবেনা, আর গেলেও বহু-বহু মূল্য, তার চেয়েও বড় কথা দাম পেলেও এসব সাধারণত কেউ বিক্রি করেনা, নিজের কাছেই রেখে দেয়, কিন্তু “তোমাকে কেন দিল?”
“তবে কি তুমি তার বিশেষ কেউ!” “নাকি সে তোমার......?”
মেয়েটি কোন কথা বললো না, কথা হয়নি আর একটিও দুজনের কারো সাথেই! নিভে গেল জ্বলে থাকা নিয়ন আলো, ঘরময় কাঁচা বেলি ফুলের মাদকতা, ঝলমলে নীল চাদরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা কাঁচা গোলাপের পাপড়ি, ঘরের এক কোনে মৃদু ঝঙ্কার, ক্ষীণ স্বরে বেজে চলা...
“আমারও পরানো যাহা চায়...”
“তুমি তাই...... তাই গো......”
হঠাৎ মেয়েটির হাতে জ্বলে উঠলো তার মোবাইলের আলো...... মেসেজ অপশনে গিয়ে মেসেজ লিখছে...
তারপর মেয়েটিকে তার সেরা উপহার টি যে দিয়েছে তাকে পাঠিয়ে দিল......... যেখানে লেখা ছিল......
সেই শেষ রাতে ছেলেটির মোবাইলে মেসেজের শব্দে শরীরের ভিতরে যেন বিদ্যুৎ খেলে গেল! ছেলেটি মেসেজ টি খুলছেনা, নিজের আত্ন-সুখ বিলীন হতে দিতে চায়না, তাই।
কিন্তু ছেলেটি ঠিক-ঠিক বুঝতে পারছে মেসেজটি কে পাঠিয়েছে, কি পাঠিয়েছে সেটা ঠিক ভাবেনি, কিন্তু মেসেজটি যে ওই মেয়েটিরই পাঠানো সেটা ঠিক বুঝতে পারছে!
এবার ধীরে-ধীরে মোবাইলটা হাতে নিল, মেসেজ এর ইনবক্স এ গেল, দেখতে পেল হ্যাঁ সেই কাঙ্ক্ষিত আর অরাধ্য নাম্বার থেকেই মেসেজ এসেছে!
এবার সে মেসেজটা ওপেন করলো... আর চোখের সামনে ভেসে উঠলো এই কথাটা লেখা.........!
“দ্বিতীয় জন্মে, তোমাকে চাই......!!!”
অসম্পূর্ণ......!
০৩ রা আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৯:৫৭
সজল জাহিদ বলেছেন: বলেছেন: ঠিক আছে, দেখা যাক...... আর হ্যাঁ আপনাকে ধন্যবাদ।
২| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:০৬
হামিদ আহসান বলেছেন: পড়লাম অসম্পূর্ণ গল্পটি ......
০৩ রা আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:১২
সজল জাহিদ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ...।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৯:৫০
সুফিয়া বলেছেন: মিষ্টি-লক্ষ্মী-নম্র-ভদ্র-নরম-কোমল-স্পর্শকাতর-নিশ্চুপ-নীরব-প্রশ্নহীন-বন্ধু বা আড্ডা হীন-তুলতুলে ---গুণের কোনটাই বাদ পড়েনি গল্পের নায়িকার।
অসম্পূর্ণ গল্প তো, তাই আর কিছু লিখলাম না। দেখা যাক।