![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ আর ঘরে উঠবিনা! যেখানে ছিলি, সেখানেই থাকগে যেয়ে!
এরপরেও, বেশ খানিকক্ষণ দাড়িয়ে ছিলাম, কিন্তু, তখনও যখন দরজা খুললনা? তখন ভাবলাম, ঠিক আছে, আমিও আজ আর আসবনা, দেখি কেমন লাগে?
আম্মার নিয়ম ছিল, যেখানেই যাও, সন্ধার আযানের আগেই ঘরে ফিরতে হবে, ২০-২৩ বছর আগে কমবেশি, সবার বাসাতেই মনে হয়, এটাই, রেওয়াজ ছিল?
তো সেদিন... খেলে, বাইরে টিভি দেখে (উল্লেখ্য, সে সময় গ্রামে, এক-আধটাই টিভি থাকতো, যা সবাই মিলেই দেখত) বেশ রাতে ফিরলাম ঘরে, এই, রাত ৭:৩০ বা ৮:০০ টা!? হ্যাঁ, গ্রামে, শীতের সময় এটাই অনেক রাত! তখনকার সময় আরও বেশী!
তো, অন্ধকারে বেশ কিছুক্ষণ এদিক-সেদিক ঘুরে, তেমন কোন জায়গা পেলাম না, যেখানে রাতেও থাকা যাবে, আবার আমাকে খুজেও পাবেনা? এবার একটু, ভয়, ভয়ও লাগতে শুরু করলো। আবার ঘরের দিকে ফিরছি, এমন সময়, আমার এক চাচার উঠানে চোখ পড়লো, দেখি, ধান মাড়াইয়ের পরে, ধানের গাছগুলো স্তূপ করে রাখা হয়েছে, উঠানের ঠিক মাঝখানে, ভাবলাম, আরে এখানেই তো থাকা যায়! কেউ খুজেও পাবেনা আর শীতও লাগবেনা! বেশ হবেতো?
যে ভাবা, সেই কাজ! ঢুঁকে পড়লাম সেই স্তূপের ভিতরে! ভিতরে তো বেশ আরাম! কোন ঠাণ্ডা নেই! আবার আশেপাশে সবার কোথাও শোনা যাচ্ছে! বাহ! তাহলে তো ভয়েরও কিছু নেই! কিন্তু, সোয়ার জায়গা বানাতে গিয়ে, দেখাগেল, উপরের স্তূপ নিচে নেমে আসছে! ঠিক মুখের উপর! ভীষণ বিরক্তিকর! গায়ে লেগে থাকলে কোন সমস্যা নেই, কিন্তু মুখের উপরে চলে এলেতো ঘুমোনো যাবেনা! এবার কি করা যায়?
আবার বাইরে গেলাম, এবং দুটো লাঠি নিয়ে আবার ভিতরে গেলাম, এবার মুখের ঠিক উপরে, লাঠি দুটো ক্রস করে রেখে দিলাম! ব্যাস, সমস্যা সমাধান! এবার ঘুমিয়ে পড়!
কখন যেন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম? চারপাশের চিৎকার, চ্যাঁচামেচিতে ঘুম ভাঙল, কান খাড়া করলাম, ঘটনা কি বোঝার জন্য? শুনে বেশ হাসি ও মজা পেলাম! কি? আরে, এতো আমাকে নিয়েই আলোচনা? আমাকে নাকি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা?! আম্মা কাঁদছে, কিন্তু আমার খুবই আনন্দ হচ্ছে! সত্যিই তাই! বুঝুক মজা! কেমন লাগে?
আমি এবার আরও আরামে এবং নিশ্চিন্তে শুয়ে থাকলাম! এক সময় সবাই চলে গেল, যে যার ঘরে, এবার আমি একা, আর ঘুম আসেনা! রাতও অনেক হয়েছে, সব নিরব, চারপাশ ভীষণ চুপচাপ! নিস্তব্ধ, থমথমে, গুমোট একটা অবস্থা তৈরি হল! মাঝে, মাঝে ঝিঝি পোকার ডাক, দূরে কোন ডাহুকের কান্না, নিশি রাতের পাখিদের আনাগোনা আর আমার ভয়ের শুরু! সাথে ভীষণ ক্ষুধা!
একসময়ে শুনতে পাচ্ছি, আমার চারপাশে, শানাই বাজে, বীণ বাজে, বাঁশি বাজে, কুকুর ডাকে, বিড়াল কাঁদে, মনে হল... কবরস্থান থেকে বোধয় লাশেরাও উঠে এলো! আমার আবার সবচেয়ে বেশী ভয়, ওই কবরস্থান এবং লাশের! এই দুই এর থেকে কয়েকশো হাত দূরে থাকি সবসময়! এখনো! হাঁয়! এই সময়ই মনে পড়লো, আমি যেখানে শুয়ে আছি, তার আসেপাশেই আছে একাধিক কবরস্থান! এবার? মনেহল, কয়েকটি লাশও বোধয় আছে আমার চারপাশে, হাঁটাহাঁটি করছে, দেখা করছে একে অন্যদের সাথে! আর খুঁজেছে তার কোন জীবিত স্বজনকে! দেখা করবে! কথা বলবে! সবার খবর নেবে! চারিদিকের বাদ্যযন্ত্রের আওয়াজ যেন, আরও বেড়ে গেল! এবার আমি না পারছি চিৎকার করতে, না পারছি, এই পরিবেশ সহ্য করতে, না পারছি বধীর হতে! এভাবে ভয়ে কুঁকড়ে-কুঁকড়ে এক সময় ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম!
হঠাৎ, মারিসনা, মারিসনা বলে চিৎকারে ঘুম ভাঙল! “আগে উঠুক, তারপরে মারব” আমার এক চাচার আদেশ, অন্য সবার প্রতি। এবার শুনতে পেলাম, আমার চার পাশে অনেক মানুষ! সবাই বলাবলি করছে “ওই দ্যাখ চোর? রাতে চুরি করে, এখানেই ঘুমিয়ে গেছে! মার, মার...” কারণ? রাতে ঘুমের ভিতর নড়াচড়ায় আমার পা দুটো বাইরে বেড়িয়ে পড়েছে! সবাই চোর ভেবে লাঠি নিয়ে চারপাশ ঘিরে রেখেছে? ওঠার সাথে, সাথে সেইরকম মাইর হবে! আম্মাও আছে ওখানে! আম্মার আশঙ্কা, ওটা আমি? আমারই পা? সেজন্যই, কেউ আর মারেনি, আমার ওঠার অপেখ্যায়!
একসময়, আমি উঠলাম...... এবং.........এর পরের অভ্যারথনা! অভাবনীয়!
আর আমার এডভেঞ্চারের নেশা শুরু সেইরাতের পর থেকে............
আজও আমি এডভেঞ্চারের নেশায় নেশাতুর!
সময়, সুযোগ আর অর্থ হলেই পালিয়ে যাই...............
০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১০:৫২
সজল জাহিদ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, এই ধারাবাহিকের ৬ টি গল্প লিখেছি, ধীরে-ধীরে পোস্ট করবো।
২| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৯:১৩
শরাফত বলেছেন: “আগে উঠুক, তারপরে মারব”
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১০:৪৩
সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: শুভকামনা রইল । সুন্দর লিখেছেন । ভাল লাগল পড়ে ।