![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইদানিং ছেলের গান আর গানের সাথে সাথে দেবের অনুকরণে নাচের আবদার মেটাতে আমাদের একমাত্র ভরসা পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গীত বাংলা চ্যানেল। দেখতে দেখেতে এক সময় আমাদেরও ভালো লেগে গেল বেশ।
এক সময় লক্ষ্য করলাম, শুধু ভালোলাগা নয়, যেন ভক্তই হয়ে গেলাম বাসার সবাই, ঐ চ্যানেলের। খেতে খেতে বা গল্প করতে করতে কোথাও মনের মত কিছু খুঁজে না পেলে শেষ পর্যন্ত ভরসা ঐ সঙ্গীত বাংলা চ্যানেলই। কারণ ওদের গান গুলোর শব্দ-কথা-সুর-শিল্পী আর সর্বোপরি চিত্রায়ন সবকিছু এতো এতো মনমুগ্ধকর আর হৃদয় ছোঁয়া যে না দেখে আর পারিনা।
এক সময় দেখলাম টিভি খুললেই আগে সঙ্গীত বাংলায় যাই। ভালো বা মনের মত কোন গান হচ্ছে কিনা? যে কারণে সাম্প্রতিক সময়ের অনেক অনেক বাংলা গান মুখ ও ঠোঁটের আগায় থাকে আজকাল। দারুণ দারুণ সব কথামালায় সাজানো আর অনিন্দ সুন্দর সুরের ঢেউ তুলে দেয় মনে প্রানে। বেশ লাগে।
সেদিন অফিস থেকে গিয়ে একটু ফ্রেস হয়েই কফির মগ নিয়ে বসলাম টিভির সামনে। সঙ্গীত বাংলা চ্যানেল চলছে তার মত করে। গান দেখছি আর শুনছিও। হঠাৎ না চাইতেও চোখ আটকে গেল... না গানে নয়, নয় গানের চিত্রায়নে, এমনকি গানের লোকেশনেও নয়, তবে কোথায়? চোখ আটকে গেল নায়িকার দিকে তাকিয়ে! আরে মেয়েটাকে তো খুব চেনা চেনা লাগছে? কিন্তু এই মেয়েকে তো এই চ্যানেলে আগে দেখেছি বলে মনে হলনা, অথচ বেশ পরিচিত মুখ! কে তবে?
তড়িঘড়ি করে ছেলের মাকে ডাকলাম, আরে তাড়াতাড়ি এসো এদিকে! তিনি রান্নার ব্যস্ততার মাঝেও উঠে আসতে বাধ্য হলেন, আমার হাঁকডাক আর অদ্ভুত তাড়াহুড়ো দেখে। এসে বিস্ময় ভরা চোখে জানতে চাইলেন কি এমন হাতি-ঘোড়া হয়েছে যে উঠে আসাতে বাধ্য করলাম? টিভির দিকে তাকাতে বললাম। তিনি টিভির দিকে তাকানোর পরে আমি জিজ্ঞাসা করলাম, একে চেনা চেনা লাগছে, তিনি চিনতে পারছেন কিনা? তিনি চিনতে পেরেছেন এবং দেখে নিজেই অনেকখানি বিস্মিত! আরে এ তো আমাদের মিম!
আমারও খুব চেনা চেনা লাগছিল, কিন্তু এই চ্যানেলে কিভাবে এলো সেটা বুঝতে না পারাতেই তোমাকে ডেকে আনলাম। এবার তিনিও সেই গান শেষ না হওয়া পর্যন্ত বসে বসে দেখলেন এবং মুগ্ধ হলেন! কেন?
এরপর পরই ভাবলাম আরে এই মেয়ের নাচ-গান আর পোশাক তো অনেক দেখেছি মডেলিং, টিভি নাটক ও পেপার পত্রিকায়। কিন্তু এতটা ভিন্ন আর আকর্ষিণীয়তো কখনো লাগেনি বা মনে হয়নি! নাকি ভারতীয় চ্যানেলের মুগ্ধতার প্রতি কিছুটা দুর্বলতার কারণে ভালো না হলেও ভালো লাগছে? নিজেকেই নিজে প্রশ্ন করলাম। তবে তো যাচাই করতে হয় ব্যাপারটা। ভারতীয় বা সঙ্গীত বাংলা চ্যানেলের প্রতি আমার দুর্বলতা নাকি নিজ দেশের চ্যানেল, চলচিত্র, চিত্রায়ন আর নিজের চেতনার সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা!
ঠিক আছে দেখাজাক, এবার সময় করে চোখ রাখলাম ইউটিউবে। প্রথমে মিমের সেই ব্ল্যাক সিনেমার দুটি গান দেখলাম বেশ কয়েকবার এবং ভালোভাবে, মনদিয়ে আর খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে। সাথে দেখলাম দেশে চিত্রায়িত আর গানের কথার সাথে লোকেশনের কি ভীষণ অসামজস্যতার উপস্থাপন! সেও সেই মিমেরই কোন না কোন সিনেমার গানের চিত্রায়ন। অথচ পার্থক্য আকাশ আর পাতাল। এরপর ভাবলাম শুধু মিমের গানের সাথে তুলনা না করে আরও দুই একজনেরটা নাহয় দেখি, তাহলে নিজের কাছে অন্তত দায়বদ্ধতা থাকবেনা।
তাই এবার সঙ্গীত বাংলায় বর্তমান সময়ে বেশ জনপ্রিয় কয়েকটি গান দেখলাম, যার নায়ক-নায়িকা মিমি-শ্রাবন্তি-কোয়েল আর দেব-জিত এবং সোহম। এবার বাংলাদেশের কয়েকটি গানে চোখ রাখলাম, যার নায়ক নায়িকা... পরিমনি-আঁচল-মাহি আর অন্যদিকে বাপ্পি-রিয়াজ আর জায়েদ খান(!!!) আর যা দেখলাম তা এরকম......
ওদের গানের চিত্রায়নের আগে পরিচালক বেশ ভালোভাবে গান শুনে-বুঝে আর হৃদয়ে ধারন করে শুটিং লোকেশন ঠিক করেছেন। আর এও বেশ ভালোভাবে অনুভব করেছেন যে সেই গানের সাথে নায়ক-নায়িকার চিত্রায়ন কেমন হলে সেটা শিল্পিত হবে সৌন্দর্য অবলোকনে, মুগ্ধতায় আর দর্শককে গানের শেষ পর্যন্ত ধরে রাখায়! শুধু তাই-ই নয়, সেই গান আর তার লোকেশন ও চিত্রায়ন দেখতে যেন বারবার ফিরে আসে বা আসতে বাধ্যহয় সেটাও তারা বেশ ভালো ভাবে।
এমনকি অনেক অনেক গানের পোশাক এতো ছোট ছোট কিন্তু চিত্রায়ন বা ক্যামেরার ধারন কৌশল এমন যে সেটাকে আদৌ দৃষ্টি কটু-রগরগে বা সুড়সুড়ি তুলে দেয়ার মত নয় আদৌ। অথচ ওদের নায়িকারা বড় বা ঢিলেঢালা পোশাক পরেইনা বলতে গেলে, তারপরও সবাইকে নিয়েই দেখা যায় আরাম করে আর করা যায় উপভোগ মন ভরে।
আর এদিকে এবার আমাদের দেশের চিত্রায়ন আর পরিচালক ও ক্যামেরাম্যানের চিত্র ধারন কৌশলের দিকে যদি তাকাই... তাতে করে আমার ক্ষীণ মস্তিষ্কের আর অপরিপক্ক ভাবনার মিশেলে যা পেলাম তাই এই রকম...
গানের কথা ভালো, সুরও মন্দ নয়, গানের শিল্পী আর তাদের কণ্ঠও দারুণ! কিন্তু সেই সব ভালো, মান সম্মত আর উপভোগ্য কিছুকেই কিভাবে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে গান শোনার-দেখার আর বসে থাকার অযোগ্য করে তোলা যায়, সেটা আমাদের পরিচালক আর ক্যামেরা ম্যানদের কাছ থেকে শেখা যেতে পারে! উপভোগ আর আবার ফিরে আসা তো সুদুর পরাহত...!
আবার আমাদের একজন তথাকথিত নায়ককে দেখলাম যিনি কিনা একটি গানেই, নিজেকে শাহরুখ, কখনো সালমান, আবার কখনো রিকতিক রোশন হিসেবে উপস্থাপনের গা ঘিনঘিনে অপচেষ্টায় উন্মাদ প্রায়! তাতে না হল ওদের কারো মত না থাকলো তার কোন নিজস্বতা! আসলে নিজস্বতা কি জিনিষ সেই বোধ-বুদ্ধিই তো এদের নেই! যাক, সেসব বলে আর কি হবে? যা বলছিলাম। গানের চিত্রায়ন......
যে গানের চিত্রায়ন হতে পারতো গ্রামের কোন সবুজ প্রান্তরে, গাছের ছায়ায় বা পাহাড়ি কোন নির্জনতায়, সেই গানের জন্য তারা বেঁছে নিয়েছেন বৃষ্টি ভেজা কোন উপলক্ষ আর নায়িকার জন্য শিফন শাড়ি! এবার বুঝুন, ঝমঝমে বৃষ্টি আর নায়িকার পরনে শিফন শাড়ির মিশেলে কি চিত্র হতে পারে? আবার বড় পোশাক পরেও কিভাবে নায়িকার শরীরকে উপস্থাপন করা যায় কুরুচি আর রগরগে ভাবে।
যে গানের চিত্রায়ন হতে পারতো কোন কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে বা বন্ধু মহলের গল্প আড্ডার মাঝে, সেই গানের চিত্রায়নের জন্য বেঁচে নিয়েছে কোন বার বা রাতের উম্মত্ততার কোন আয়োজনকে! যেখানে আছে মদ, প্রায় নগ্ন নারীদের অশ্লীলসব অঙ্গভঙ্গি! আরও যে কত কি যা প্রকাশের মত নয়।
যে গানের কথায়, নায়িকার হাতে নায়ক হাত রাখলে নায়িকা একটু লজ্জা পাবে বা সামান্য শিহরণে চোখ নামাবে, সেই গানে নায়িকাকে নায়ক স্পর্শ করার আগেই নায়িকা যেন গলে গলে পড়ছে টুপটাপ করে! যে কথায় নায়িকা কোথায় একটুখানি হাসবে, সেই কথায় নায়িকা ঠোঁট-টোট কামড়ে অস্থির করে তুলেছে!! যে সুরে নায়িকা একটু ফিরে তাকাবে বা মায়ার চাহুনি দেবে, সেই সুরে নায়িকা...... বলার ভাষা নাই আর! তাই থাক, পারলে বুঝে নিয়েন।
কি হাস্যকর আর উদ্ভট উপস্থাপন। এরা না গান শোনে, না গানের কথা-সুর আর সেসবের উপলব্ধি করে, না বোঝে গানের কোন মর্ম! না চিত্রায়নের আগে কিছু ভাবে!! এরা সব কিছু করে সাময়িক আর তাৎক্ষণিক দুই পয়সা উশুল করার জন্য। এদের না আছে কোন ইমেজ না ভবিষ্যৎ কোন দূরদর্শী চিন্তা-ভাবনা বা সত্যিকারের চলচিত্র বা এই জগতের উন্নয়নের কোন পরিকল্পনা।
আর ওরা? একটি গান আর তার ভাবনাকে কিভাবে আর কতটা সুন্দর ও শৈল্পিক ভাবে মুগ্ধতাভরে চিত্রায়ন করতে পারলে মানুষ শুধু নেবেনা মনে রাখবে এবং আবারো অপেক্ষা করবে কবে এই পরিচালক বা প্রযোজকের গান বা সিনেমা আবার আসবে সেই ভাবনা ভেবে। নিজেদের ইমেজকে কিভাবে আরো উঁচুতে তুলে সেটাকে ইনভেস্টমেন্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা যায় সেই বোধ ও দর্শন থেকে।
হাঁয়, আর কি বা বলার আছে? শুধু এই দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া......
আমাদেরও পরিচালক আর ওদেরও পরিচালক...!!!
০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৫৭
সজল জাহিদ বলেছেন: ভাই আপনি একটু খানি ভুল বুঝেছেন। আমি রিয়াজকে এতটুকু খাটো করে দেখিনি, ওনাকে নিয়ে কিছুই বলিনি, অন্য আর একজনকে বলেছি। আমি পরিচালক আর ক্যামেরাম্যানের কথাই মুলত বলতে চেয়েছি বা বলেছি। ধন্যবাদ।
২| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:১৪
ভার্চুয়াল বাউন্ডুলে বলেছেন: সমস্যা হল আমাদেরদেশে সুস্থ মস্তিস্কে ভাল মুভি বানানো পরিচালকের অভাব , ভাল মুভি করতে ভাল বাজেট দরকার এমন টা না, প্রেজেন্টেশন টা ভাল হতে হবে । যেমন, কিছুদিন আগে ছুয়ে দিলে মন দেখলাম অসাধারন একটা মুভি , এবং শুটিং করা হয়েছে আমাদের দেশে ,বাইরের দেশে যায় নি, গানের শুটীং ও আমাদের দেশে , কিন্তু গল্প ,লোকেশন আর প্রত্যেকের অভিনয় অসাধারন ছিল.।।
০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩০
সজল জাহিদ বলেছেন: জি ঠিক এটাই আমি বলতে চেয়েছি। অনেক অনেক ধন্যবাদ।
৩| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৭
অবিবাহিত ছেলে বলেছেন: আজাইরা জিনিস নিয়া বাজাইরা গীত । এই নাচা গানা জাতীয় অর্থনীতীতে ব্যাপক অবদান রাখবে ।
৪| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:১৪
নাবিক সিনবাদ বলেছেন: ভাই আপনেই মাঠে নাইমা পরেন
০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৩২
সজল জাহিদ বলেছেন: সামরথ থাকলে নেমে পড়তাম ভাই। ধন্যবাদ।
৫| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৯
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: পশ্চিম বঙ্গের সিনেমা দেখা যায়, অডিও শোনা যায় কিন্তু সত্যি বলছি, কর্মাশিয়াল ছবিগুলোর ভিডিও অখাদ্য| আর আঁতলামো টাইপ ছবি দেখি না, গানও শুনি না
০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৩৪
সজল জাহিদ বলেছেন: সে আছে কি বৈকি? তবে গানগুলো আসলেই অসাধারণ লাগে আমার কাছে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৫২
ভার্চুয়াল বাউন্ডুলে বলেছেন: বাপ্পি-রিয়াজ আর জায়েদ খান , আপনি এই তিন জনের কথা উল্লেক্ষ করেছেন , সবি ঠিক ছিল কিন্তু রিয়াজের কথা টা না বললেই পারতেন , কারন রিয়াজ ছিল বলেই আপনি অথবা আমরা কিছু ভাল মুভি পেয়েছি , সেটা আর্ট হোক অথবা কম্মার্শিয়াল ।।
ভাই, আমার কথায় কিছু মনে করবেন না, আগে রিয়াজের মুভী গুলা দেখুন তাহলে বুঝবেন।।