![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাবা বিছানায়, পিঠের নিচে বালিশ দিয়ে খাটে হেলান দিয়ে, পত্রিকা মুখের উপরে ধরে অফিস শেষের সন্ধার বিশ্রামে। পাশে ধোঁয়া ওঠা কফি, কানে নজরুল সঙ্গীতের আবেগে ভেসে যাওয়া। “চুপি চুপি শিয়রে বসে চুমিলে নয়ন, মোর বিকোশিল আবেশে তনু” অনেক বেশী-ই প্রিয় একটা গানে তখন নিমগ্ন!
মা অফিস শেষে, বাসায় ফিরে, চা শেষ করে, ছেলেকে আর স্কুলের পড়া নিয়ে বসেছে। বাংলা-ইংরেজি-আঁকাআঁকি শেষ করে, রান্না ঘরের দিকে যেতে যেতে...... ছেলের বাবার উদ্দেশ্যে......
শুধু অফিস, বাজার আর বাসাভাড়া দিয়ে দায়িত্ব শেষ করলেই চলবে, সংসারের দিকেও একটু মনোযোগী হতে হয় যে? ছেলে বড় হচ্ছে, স্কুলে যাচ্ছে, পড়ালেখার পরিধি বাড়ছে, সব কিছু কি আর আমি একা পারি?
বাবা- এতো কথা না বলে, কি করতে হবে সেটা বললেই তো হয়? আগে দেখো করি কি না করি! তারপর নাহয় কথা শোনাও!
মা- আচ্ছা ঠিক আছে ছেলের অংকটা একটু দেখো তো! এই বয়সে স্কুলে আবার অংকও আছে!
মাঝখান থেকে ছেলে বলে উঠলো এখন সে টিভি দেখতে যাবে, সে আজ আর পড়বেনা, তার পড়া শেষ।
মা ভীষণ অবাক হয়ে, ছেলেকে কিছুটা তিরস্কার করে বলল, “কেনো ম্যাথ তো দেখিনি এখনো, ওটা করতে হবেনা? আগে বাবার কাছে ম্যাথটা দেখে নাও, ম্যাথটাই আসল, ওটা ভালো করে করে নাও, তারপর তোমার ছুটি!’
ছেলে- না মা, ম্যাথ লাগবেনা! ম্যাথ আমি আমি আগেই করে রেখেছি! ম্যাথতো খুবই সোজা! আমি সব পারি!!
এবার মা আর বাবা দুজনেই হতবাক, স্তব্ধ, বাকরুদ্ধ হয়ে দুজন দুজনের দিকে তাকালো, যেন পৃথিবীর ৮ম আশ্চর্য দেখছে বা তার কথা শুনছে। বেশ কয়েক মুহূর্ত মা-বাবা দুজনেই নির্বাক হয়ে রইলো ছেলের কথা শুনে!
কেন এই কথা শুনে এতো এতো হতবাক হবার কি আছে? ম্যাথ ছেলের কাছে কোন ব্যাপার নয়, তাতে এতো আশ্চর্যের কি আছে?
কি আছে এতো আশ্চর্যের...... দু-তিনটি উদাহারন না দিলেই সেটা বোঝা যাবেনা! তবে কি সেগুলো? শুনি...
মা-বাবা দুজনেই গনিতে টিটিএমপি!!! (টেনে-টুনে ম্যাট্রিক পাশ!) মায়ের কথা না হয় বাদই দেয়া যাক, শুধু বাবার উদাহারনই শোনা যাক।
একঃ বাবা নবম শ্রেণীতে প্রথম সাময়িক পরীক্ষায় ৩ পাওয়াতে পরের তিনমাস আর স্কুলে যায়নি! কারণ স্কুলে গেলে আর গনিত শিক্ষকের সামনে পরলে ৯৭ টি বেতের বারি খেতে হবে দুই হাতেই! কারণ সেই স্কুলের গনিত শিক্ষকের নিজস্ব নিয়ম ছিল ১০০ এর চেয়ে যত কম পাবে, ততগুলো বেতের বারি খেতে হবে! সুতরাং ৯৭ টা বেতের বারির চেয়ে স্কুলে যা যাওটাকেই শ্রেয় মনে করেছে!!
আর পুরো ৯ম আর ১০ম শ্রেণীর সবগুলো গণিত পরীক্ষা মিলিয়ে পেয়েছিল ০৯!! (নয়) হ্যাঁ, ঠিক-ই পড়েছেন ৯-ই পেয়েছিল!!! বাকিটা তো ইতিহাস! কোন মতে টিটিএমপি করে আর কোনদিন গনিতের গণ্ডির আশেপাশেও যায়নি!
দুইঃ কোন মতে দুইটা ডিগ্রী নিয়ে চাকুরীতে প্রবেশ করতেই, গনিত না হোক, অন্তত অফিসে যোগ বিয়োগ তো করতেই হবে। সেখানেই তার নার্ভাসনেস এমন পর্যায়ের যে, এক্সেল সিটে যোগ করে ৮+৪=১২ হয়ে যাবার পরেও, ম্যানুয়ালি ১২ এর জায়গায় ১৩ বসায়! এরপর আর যায় কোথায়? বসের প্রিয় অধস্তন কর্মীও সেদিন থেকে বসের সবচেয়ে চক্ষুশূল হয়ে যায়!! খুব স্বাভাবিক ভাবেই।
তো এই হল ছেলের বাবার গনিতের পারদর্শিতা, সেখানে সেই বাবার ছেলে যদি বলে যে ম্যাথ কোন ব্যাপারই না! ওটাতো খুবই ইজি! আমি সব পারি, সব করে ফেলেছি!! সে যত ছোট ম্যাথ আর যত কম অংকেরই হোকনা কেন, এরচেয়ে আনন্দের আর উচ্ছ্বসিত হবার আর কোন কারণ সেই মুহূর্তে অন্তত আর নেই! হতেই পারেনা।
যে কারণে সেই মা-বাবা ছেলের গনিতে ভীতিহীনতার কথা শুনে হয়েগিয়েছিল হতবাক-স্তব্ধ আর বাকরুদ্ধ!
তাই সেই মা-বাবার কাছে ছেলের গণিতের প্রতি সহজ বোধ্যতা বা বন্ধুতা.........
এক অন্য আনন্দের গল্প.........।
০২ রা মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:০২
সজল জাহিদ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ।
২| ০২ রা মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:০৩
মাসুদ মাহামুদ বলেছেন: সুন্দর
গল্প।
০২ রা মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:০৬
সজল জাহিদ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
৩| ০২ রা মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:৩৬
আব্দুল্লাহ তুহিন বলেছেন: ভালো লাগা রেখে গেলাম,,,
অসাধারণ অনুভূতি।
০২ রা মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:৪৫
সজল জাহিদ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ।
৪| ০২ রা মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:৫৮
শাহাদাত হোসেন বলেছেন: ভালো লাগলো
০২ রা মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:০১
সজল জাহিদ বলেছেন: ধন্যবাদ।
৫| ০২ রা মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:৩৩
রানা আমান বলেছেন: অসাধারণ অনুভূতি ।
০২ রা মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৮
সজল জাহিদ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:০১
বিজন রয় বলেছেন: সুন্দর অনুভূতির গল্প।
++++