![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শেষ দুপুর আর বিকেল শুরুর সময়টায় যদি ঘুম না আসে, কেমন একটা অস্থির লাগে। মেসের এই সময়টায় বড় একা আর অসহায় লাগে। সবাই যে যার মত ঘুমিয়ে পরেছে, হালকা শীতের আমেজে শরীরে কাঁথা চাপিয়ে দিয়ে। পেপারতো সেই সকালেই পড়ে প্রায় মুখস্ত করে ফেলেছে গল্প। টিভি রুমে যেতেও ইচ্ছে করছেনা এখন, খেলা ছাড়া গল্প টিভিতে দেখার মত আর কিছু আজকাল খুঁজে পায়না। দুই একজন বন্ধু যারা আছে, তারা এখন সবাই ব্যাস্ত পশ্চিম পাড়ায় যাবার তোড়জোড়ে!
হ্যাঁ পশ্চিমপাড়া। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া ছেলেদের কাছে এক অমোঘ আকর্ষণের নাম! কেন? কেন আবার লাল-নীল-হলুদ-সবুজ-বেগুনী-কমলা সব রঙের শত রকমের প্রজাপতিদেরতো ওখানেই বাস বা আবাস! মানে এই রাবির ছাত্রীদের হল গুলো ওখানেই অবস্থিত! শেষ বিকেল থেকে ভর সন্ধা পর্যন্ত ওখানে মেলা বসে। হ্যাঁ মেলাই তো বসে সেথায় প্রেম-বিরহের, দেখা-না দেখার, হাসি-কান্নার, পাওয়া-না পাওয়ার, ভালোবাসা বা ঘৃণার, মিলন ও বিচ্ছেদের!
আর এই সব জীবন কাব্যের নিয়মিত আর অনিয়মিত চরিত্র এই ক্যাম্পাসের অবস্থানরত ছাত্র-ছাত্রীরা। প্রতিদিন বিকেলে কত কিছু ঘটে এখানে, যার বর্ণনা দিয়ে শেষ করা কারো সাধ্যে আছে কিনা, বলা বা বোঝা মুশকিল। যদিও গল্পের এতে কিছুই যায় বা আসেনা। সে একা, তার কেউ নেই তেমন করে, যার টানে বা যার পানে ছুটে যাবে সে, অজানা আর অসীম আনন্দের আকর্ষণে। যা আছে সে ওই দুই-চার জন ক্লাসের বন্ধু-বান্ধবী আর তাদের সাথে অন্য বিভাগের আর দুই বা চারজন, এই।
গল্প সদ্য কলেজ পাশ করে রাবির আইন বিভাগে ভর্তি হয়েছে। চেনা জানা সামান্যই। মেসে উঠেছে কিছুদিন হল। হলের ব্যাবস্থা না হওয়াতে। অবশ্য প্রথম বর্ষে হলে থাকতে পারাটা সাধারন ছাত্রদের কাছে আমাবশ্যার চাঁদের মত ব্যাপার! তা সেই চাঁদের দেখাও গল্প পায়নি আর হলেও ওঠা হয়ে ওঠেনি। শেষমেশ নিয়মিত ছাত্রদের, সাধারন ও স্বাভাবিক উপায় হিসেবে মেছকেই বেছে নিতে হল।
সে যাই হোক, এই শেষ দুপুরে গল্পের এই অদ্ভুত মানসিক অস্থিরতা কাটাতে শেষ পর্যন্ত পশ্চিম পাড়াকেই বেছে নিল সে! ধীরে ধীরে নিজেকে কোন রকমে ভদ্রস্থ করে, এলোমেলো চুলেই সে বেরিয়ে পরলো। হঠাৎ এক বন্ধুর কথা মনে পরে গেল তার। পশ্চিম পাড়াতে যাবার আগে নাকি একটু পারফিউম দিতে হয়, তাতে করে কেউ যদি নাও তাকায়, অন্তত পারফিউমের গন্ধ পেয়ে, যদি কিছুটা মাতাল হয়ে অদ্ভুত এক রহস্যের মত করে কেউ কোনদিন খুঁজে নেয়!
সেই আসায় তার সেই অল্প পরিচিত বন্ধু প্রতিদিন পশ্চিম পাড়াতে যাবার আগে বেশ খানিকটা পারফিউম লাগিয়ে বের হয়, মনে অনেক আশা আর রঙ-বেরঙের স্বপ্নের জাল বুনতে বুনতে! গল্প এই কথা ভেবে একটুখানি হাসে। আর পারফিউমের প্রতি তার আরও বেশী অনীহা জন্মায়! গল্প একা একা হাটে আর মনে মনে ভাবে কেউ যদি তাকে কখনো পছন্দ করে, তবে যেন পারফিউমের গন্ধে নয়, তার ঘামের গন্ধকে ভালো লাগলেই যেন কাছে আসে! সেটাই হবে সঠিক আর সত্যি করে কারো কাছে আসা। দেবেনা সে পারফিউম, কিছুতেইনা আর কখনোই না। গল্প তার হাটার বেগ সামান্য বাড়ালো। এই সময় কাজলা মোড়ের পিচঢালা রাস্তায় সূর্যের উদার উত্তাপ বিলানোতে বেশ একটা গরম গরম অসহ্যতা ঠেকে তার।
এক কাপ চা খেলে মন্দ হতোনা এখন। বেশ চায়ের তেষ্টা পেয়েছে তার। ঘুমটাও হলনা আজ। ক্যামন একটা ম্যাজ ম্যাজে অনুভূতি। কিছুতেই সস্থি পাচ্ছেনা সে। নাহ, এই সময়, সূর্যের তাপের নিচে বসে চা আর উপভোগ করা যাবেনা, তার চেয়ে সেই পশ্চিম পাড়াতে গিয়ে মামার চায়ের সাথে রোকেয়া আর তাপসী রাবেয়া হলের মাঝের বট তলার ছায়া বসে চা টা বেশ ভালো লাগবে! সাথে নিশ্চয়ই জুটে যাবে দুই-চারজন পরিচিত বন্ধু-বান্ধব, গল্পে-কথায় আর আড্ডায় কেটে যাবে অজানা আর অস্থির সময় টুকু। এই ভাবনাতেই সারা দুপুর ঘিরে ধরা অসস্থিটা যেন দূর হল কিছুটা। মনটাও বেশ ফুরফুরে লাগছে এখন!
বেশ খানিকটা লজ্জা পেল সে! নিজেই নিজের কাছে। তবে কি এই প্রজাপতির মেলায় আসলেই আনন্দ আছে? আসলেই অস্থিরতা কেটে গিয়ে ফিরে আসে কোন অজানা আনন্দ! ধীরে ধীরে উড়ে বেড়ানো রঙ বেরঙের প্রজাপতিদের দেখে আর দেখে? আবারো লজ্জা পেল সে, একা একাই, তার অস্বাভাবিক আর অজানা হাসির অকারণ কারণে! সেও কি দেখা পাবে কোন রঙিন প্রজাপতির? যে উড়ে যাবে, ছুঁয়ে দেবে, রঙ ছড়াবে আর মন রাঙাবে! স্বপ্ন দেখাবে, কল্পনায় সাজাবে আর ভাবনায় ভাসিয়ে দেবে তাকে?
কি জানি? কে জানে? এবার নিজের মাথায় নিজেই একটা মৃদু আঘাত করে পেরিয়ে চলেছে সবুজের চাদর বেছানো জুবেরি ভবনের মাঠের মাঝখানে মাথার সিঁথির মত মেঠো পথ ধরে। প্যাসির রোডের অভিনন্দন গ্রহণ করে, কলা ভবনের লাল রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে, আর ইবলিশ চত্তরে বাঁদরদের বাঁদরামি উপেক্ষা করে, রঙ-বেরঙের প্রজাপতির মেলা প্রাঙ্গণে!
০৭ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:২৯
সজল জাহিদ বলেছেন: হা হা হা, আপনাকে ধন্যবাদ, আপনার মন্ত্যব্যটা ভালো লাগলো। এটিকে উপন্যাস বানাবো আমি ইনশাল্লাহ।
২| ০৭ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:৫১
রানা আমান বলেছেন: লেখাটা ভালো হয়েছে ।
০৭ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:১৮
সজল জাহিদ বলেছেন: ধন্যবাদ, এটি চলবে......
৩| ০৭ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:১৬
সায়ান তানভি বলেছেন: ভাল লাগলো
০৭ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:৩১
সজল জাহিদ বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:১৭
বিজন রয় বলেছেন: অাপনার ভিতরে সাহিত্য বাস করে। আরো বের করে আনুন।
++++