![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রবিবার দেখতে দেখতে চলে এসেছে, অফিসের গাড়ি থেকে নেমে গেট দিয়ে অন্য সব কলিগদের সাথে একে একে আইডি কার্ড পাঞ্চ করে ঢুকতে ঢুকতে ওলির সাথে আবারো দেখা হবে বিভিন্ন কাজের জন্য কথা বলতে হবে এই ব্যাপারটাই মেনে নিতে পারছে না অহনা মনে মনে।
যদি সম্ভব হতো! যদি আজকেই চাকরিটা ছেড়ে দিতে পারতো। ক্যারিয়ার ক্যারিয়ার করে জীবনে কি পেল ও। অশিক্ষিত আত্মীয়-স্বজনের সমালোচনা আর কর্পোরেট অফিসে চরিত্রহীন পুরুষ কলিগের নোংরা ব্যবহার; মহিলা কলিগদের কুটনামি ছাড়া। এখন এই শীত যাই যাই করা সকালে অহনার মাইন্ড ডিপ থিংকিং করে যে আসলে জীবনের মানেটা কি! একটা মানুষ জীবনে কি চায়? একটু ভালোভাবে থাকতেই তো চায় নাকি! সেজন্য লেখাপড়া ক্যারিয়ার সমাজ সংসার এগুলো আসলে কিছুই লাগেনা, লাগে কাড়ি কাড়ি টাকা!।
ও ডিপার্টমেন্টের ফিফটিন ফ্লোরে ঢোকার সাথে সাথেই রুনু আপার সাথে দেখা। চেহারার মধ্যেই কুটকুট করা কুটনামি ভাব ফুটে আছে তার, বাচ্চাদের ঠাকুরমার ঝুলির কার্টুনের শাকচুন্নির ভয়েসের মতন খনখনে গলায় বললো
-অহনা লেট হল কেন? তোমার তো দেখি প্রতিদিন লেট হয়। শোনো তোমার ব্যাপারটা আমি আমাদের এডমিন হেড স্যার কে বলেছি তুমি যেয়ে স্যারের কাছে পুরা ব্যাপার খুলে বলো, ভালো করে সাজিয়ে গুছিয়ে বলো কোন কিছু যেন বাদ না যায় ওকে?
-সাজিয়ে গুছিয়ে বলা মানে? কোন কিছু কি বাদ যাবে আপু? কি বলেন এইগুলো আর এডমিন স্যার কত সিনিয়র মানুষ তার সাথে তো আমার কথা বলতেই লজ্জা লাগছে এ ব্যাপারে।
-লজ্জার কি আছে? ওলি ভাই এত খারাপ কাজ করলো তুমি সেটা বলবে না। চলো চলো এখনই চলো।
একই ডেজিগনেশনে জব করে ওরা তারপরও রুনু এমন ভাবে অহনাকে ডমিনেটিং করে যেন ও অহনার বসের ও বস,
রুনুর একপ্রকার জোড়াজুড়িতেই এডমিন স্যারের রুমের সামনে এসে দাঁড়ায় ওরা। ভেতরে ঈশান আগে থেকেই ফিলোসফিক মুডে স্যারের সামনে চেয়ারে বসে আছে, ভীষণ লজ্জিত ব্যথিত কনফিউজড অহনা বলে-
-আপু ভিতরে তো ঈশান ভাই আছে, আমার ভীষণ লজ্জা লাগছে উনার সামনে তো আমি কিছুই বলতে পারব না, তার থেকে ঈশান ভাই যাক তারপর আসি অথবা থাক স্যারকে কিছু বলা লাগবে না
-না চলো আমি তো সাথে আছি নাকি আমি স্যারকে অলরেডি বলে রাখছি কি ঘটনা ঘটেছে।
-অলরেডি বলে ফেলেছেন! ও আল্লাহহ! কি বলছেন আপু?
কথাবার্তার এই পর্যায়ে ভিতর থেকে এডমিন স্যার ডাক দিলেন
-অহনা ভেতরে আসুন। ডাক শুনে ভয়ে আঁতংকে চোখ মুখ শুকনো করে ভেতরে ঢোকে ও
-স্যার আসসালামু আলাইকুম,
-ওয়ালাইকুম আসসালাম রুনু ম্যাডামের কাছে শুনলাম, কিংকর্তব্যবিমূঢ় আর অস্বস্তিকার পরিস্থিতিতে পড়েছিলেন বৃহস্পতিবার, কি হয়েছে খুলে বলুন তো? কি করেছে ওলি? আমি তো আরো ভালোর জন্য ওকে পাঠালাম, পাঠিয়ে তো আরও বিপদে ফেললাম আপনাকে মনে হচ্ছে।
-আজকে তো নারী দিবস, এইজন্য আমাদের অফিসের মহিলা এমপ্লয়ীদের জন্য গিফট দেয়ার ব্যবস্থা করেছে অফিস, ওগুলো কার্টুনে ছিল বেসমেন্টে, ঈশান ভাই বলল বেসমেন্ট থেকে কার্টুনটা বের করে এনে রাখতে, যেন পিয়নরা সবার টেবিলে আজ দিয়ে রাখতে পারে গিফট গুলো, সবাই টেবিলে উপহার গুলো পেয়ে সারপ্রাইজ হবে এজন্য।।
- আমি বলেছিলাম কার্টুন বের করে রাখতে, কার্টুন আপনি নিজে বের করে রাখুন সেটা তো বলিনাই! আপনি সাথে করে পিয়ন নিয়ে যান নাই কেনো? একা কার্টুন টেনে বের করেছেনই বা কিভাবে? ঈশান রাগে গর্জে ওঠে।
- আচ্ছা অহনাকে বলতে দেন, থামায় এডমিন স্যার,
-এরপরে বেসমেন্টের দরজা লক হয়ে যাবার পর আপনাকে ফোন করেছিলাম স্যার, আপনি ওলি ভাইকে পাঠিয়ে দিলেন, সে এসে বললো কার্টুনটা যেন পিয়ন আনোয়ারকে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য ওয়েট করি, এরপরই সে উল্টাপাল্টা কথা বলতে বলতে -- অহনার কথা শেষ হওয়ার আগেই ঈশান তড়াক করে উঠে রুম থেকে বের হয়ে যায়।
এডমিন স্যার বলে
-আপনি তখনই বের হয়ে আসেন নাই কেন?
-ওলি ভাই বলল পিয়নকে আমাকে হ্যান্ডওভার করতে হবে কার্টুনটা, এর মধ্যেই
-ছি ছি ছি! ওলি এত চরিত্রহীন!! অফিসের মধ্যে এত বড় অন্যায় করতে ও সাহস পেল কি করে। আপনি জানেন আমাদের এই অফিসে আর যাই হোক এইসব ক্যারেক্টারলেসের কোন জায়গা নাই। যাইহোক আপনি চিন্তা করবেন না আমি দেখছি কি করা যায়, ম্যানেজমেন্টের সাথে কথা বলব এই ব্যাপারটা নিয়ে। আর এখন থেকে ছুটির পরে অন্য কোন কাজের জন্য অপেক্ষা করার দরকার নেই, সোজা অফিস থেকে বের হয়ে যাবেন, আমাদের অফিসের সব মহিলা কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে আমি মেইল করে দিচ্ছি যেনো অফিসে পাঁচটার পরে কোন মহিলা না থাকে অফিসে। রুনা আপা বলে উঠলো,
-স্যার আজকে তো ওমেন্স ডে'র অনুষ্ঠান হবে আজকে তো থাকতেই হবে সব মেয়েদের।
-অনুষ্ঠান হলে তো থাকতেই হবে; আমি তো সেটা বলি নাই, যান কাজে যান পরে কথা হবে এসব নিয়ে।
অহনা নিজের টেবিলে এসে বসলো, রফিককে চা দিতে বলে হেলান দিয়ে চুপ করে রইলো, একটা কাগজ টেবিলের উপরে অহনার ডেস্কে
সাজানো প্ল্যান্টের নিচে চাপা দিয়ে রাখা, হাতে নিয়ে দেখল তাতে লেখা বিপদ থেকে মুক্তির দোয়া "লা হাওলা ওয়া লা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহি ওয়ালা মালজাআ ওয়ালা মানজাআ মিনাল্লাহি ইল্লাহ ইলাইহি" প্রতিদিন একবার করে পাঠ করিবেন অবশ্যই আপনার সমস্ত রকম বিপদ কেটে যাবে।
কে আবার এই ওয়েল উইশার, কাগজটা লুকিয়ে রাখে ও, রুনু আপা দেখলে এটা আবার পুরা অফিস জানবে, অহনা আর রুনুর পাশাপাশি ডেস্ক, ডেস্কে সাজানো ওমেন'ডের গিফটগুলো। অফিসের সব নারী কলিগরা সেই গিফট গুলো নিয়ে উৎফুল্ল হলেও, মনটা ভীষণ বিষন্ন হয়ে আছে অহনার। যতবার সেগুলোর দিকে তাকাচ্ছে। (চলবে)
প্রথম পর্বের লিঙ্ক
২য় পর্বের লিঙ্ক
৩য় পর্বের লিঙ্ক
২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১১:০৭
সামিয়া বলেছেন: অবশ্যই
২| ০১ লা মার্চ, ২০২৫ সকাল ১১:০৩
রাজীব নুর বলেছেন: ঈশান ভাইকে লজ্জা পাওয়ার কি আছে?
০১ লা মার্চ, ২০২৫ সকাল ১১:৩২
সামিয়া বলেছেন: ওর কাছে সিচুয়েশনটা এমন যে কারো সামনেই বলতে চাইছিল না
৩| ০১ লা মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭
শায়মা বলেছেন: যে সত্যিকারে দেখতে পাচ্ছি লেখাগুলো
০১ লা মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৪:৩৩
সামিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ ডিয়ার আপু
৪| ০৩ রা মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: আমার মন্তব্যের উত্তর দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১১:০১
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: শেষ করে উধাও হইবেন।