![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই শীতের সকালে লেপের নীচে শরীরটা বাকিয়ে শুয়ে থাকতেই বেশি ভালো লাগে, মনে হয়ে একটু নাড়াচাড়া করলেই শীত এসে জাপটে ধরবে । অভিকের এক অন্যরকম সমস্যা আছে , গরমের সময়ে গরম বেশি লাগে আবার শীতের সময়ে শীত টাও । এত ভোরে ফোনের ভাইব্রেট শুনে একটু অবাক সাথে বিরক্ত ও । অনেক দিন এত ভোরে কেউ ওকে আর ফোন দেয় না । মানুষ অভ্যাসের দাশ , তাই এককালের এত পরিচিত ঘটনাকে নিজের কাছেই কেমন অস্বাভাবিক লাগছে । ফোন বালিশের নীচে থেকে বের না করেই ভাবছে কে দিতে পারে ??? আম্মু !! না , এত ভোরে দিবে না জানে ক্লাসে থাকি । তাহলে কি ক্লাস থেকে কোন বন্ধু ফোন করল ?? কিন্তু তাও অভিকের জন্য কিছুটা অসম্ভবই বটে । শেষ পর্যন্ত ভাবতে ভাবতে ফোনটা হাতে নিল । একটা নাম্বার……………………… !!!!!!
কোন অপরিচিত নাম্বার না । খুব বেশি পরিচিত একটা নাম্বার । এখন ও বিশ্বাস করতে পারছে না । এই নাম্বার টার এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে, মাঝের তিনটা শুন্য । এই তিন শূন্যের আগে ৪ টা ডিজিট এরপর ৪ টা ডিজিট । চোখে এখন ও দেখছে ****০০০**** । পুরো নাম্বার টা মিলিয়ে নিল । বহু আগেই ফোনবুক থেকে ডিলেট দিয়েছে নাম্বারটা । চোখের সামনে এই নাম্বার দেখলে মনে হত কেউ যেন খুব নির্দয় ভাবে ভিতরে কাটছে ,তাই ডিলেট করে দিয়েছে । বুকের মধ্যের শূন্যতাকে একটু বশে আনার চেষ্টার জন্য আরও কত কিছুই না করেছে । কিন্তু ফোনবুকের এই নাম্বারের সাথে যে হাজারো স্মৃতি আছে তা কি করে ভুলে ?? একটা সময়ে রাত জেগে চলত কথা বলার পর্ব । সে দিন গত হয়েছে বহুকাল । এখন আর এই নাম্বার থেকে কোন ফোন আসে না , ওকে সময় বেধে দেওয়া হয়েছে প্রতি ১০ দিন পরে একবার ফোন করতে পারবে । তাও যদি তার মুড ভালো থাকে তাহলে কথা হবে । মুড ভালো না থাকলে ধরবে না । তখন হাজার চেষ্টা করলেও লাভ হবে না । এ জিনিসটা অভিকের চেয়ে ভালো হয়তো কেউ জানে না । টানা ১০২ টা কল কেটে দেওয়ার মত বিরল সব রেকর্ডও আছে । মনের মধ্যে ভয় ও উনি দিচ্ছে ওর শরীর খারাপ করল না তো ?? এত ভোরে নাহলে ফোন কেন দিবে ?? এত সব ভাবতে ভাবতে ফোনটা ধরে ফেললো ।
হ্যালো… কিরে তুই ?? আমার একটা খোঁজ খবর ও নিবার কোন ট্রাই করিস না ।
তুই ছাড়া আমার আর কোন বন্ধু আছে ?? বল ??
কি বলবে অভিক বুঝে উঠতে পারে না , খালি বলে ,
আমি তোর বন্ধু না ।
তাহলে কি ?? তুই আমার প্রেমিক ??
না , আমি তোর প্রেমিক ও না ।
তাহলে কি জামাই / বয় ফ্রেন্ড ??
নাহ । তুই হইলি আমার ফ্রেন্ড আর গার্ল ফ্রেন্ড এর মাঝামাঝি কিছু একটা ,যার কোন নাম নাই । তা ভালো কথা তুই আমাকে ফোন দিলি ???
হুম , তুই তো আমাকে কোন দিন ফোন দিস না । তাই আমি দিলাম । আর তোকে ফোন দিতে আমার মজাই লাগে, অন্তত একজন তো আছে
যে আমাকে ভিআইপি ভাবে । বলেই ওর বিখ্যাত হাসিটা দিল ।
দিয়ার এ হাসির মানেটা খুব ভালো করেই জানা অভিকের । এর অর্থ ও আজ অনেক ভালো আছে । এই হাসি টার মহত্ত্ব অভিকের কাছে একটু আলাদা । এ হাসিটা শুনে ওর ভালো লাগা আর খারাপ লাগা দুটোই এক সাথে হয় । ও ভালো আছে এটা ভেবেই ভাল লাগা আর এত জোরে অট্টহাসি দিচ্ছে এর জন্যই খারাপ লাগা । অভিক খুব ভালো করেই জানে , আজ দিয়া বলছে ওকে ফোন করতে কিন্তু কাল ফোন দিলেই আর অভিকের ফোন ধরা হবে না । আবার ওকে অপেক্ষার প্রহর গুনতে হবে । কবে তার একটু ইচ্ছা হবে এর জন্য । অনেক দিন দিয়া কে সামনে থেকে দেখা হয় না । কত দিন হয়ে গেলো পাশাপাশি হাঁটা হয় না , এক বিকেলের মিষ্টি রোদে ফুট খোলা রিকশা করে এলবেলে কথার ফুলঝরি ছুটানো হয় না । কিন্তু তাতে কি ?? থাক না আজ হিসেবের খাতা । এত হিসাব মিলিয়ে কি হবে ?? এই হিসাবের খাতাই যে বাস্তবের থেকে বারবার দূরে ঠেলে দিতে চায় । আজ কোন হিসাব মিলাবো না । শুধু একমনে ওর কথা শুনবো । এই শীতের সকালে এক অন্যরকম উষ্ণতা নিব । এ উষ্ণতার একটা নাম দেয়ার দরকার ??? কি নাম দেয়া যায় ?? “ভালোবাসার উষ্ণতা” । নামটা নিজেরই পছন্দ হল না , না হোক তাতে কি ??? সব যে মন মত হতে হবে এমন তো কোন কথা নেই । থাকুক না কিছু অপূর্ণতা । জীবনে চলতে অপূর্ণতা থাকা অনেক জরুরি । অপূরণটা আছে বলেই আমরা চেষ্টা করি পূর্ণতা পেতে । ঠিক যেন নিস্ক্রিয় মৌলের মত । সবার চেষ্টা থাকে কিভাবে সে পূর্ণ হবে । আচ্ছা যখন একটা মৌল পূর্ণতা পায় তখন তো সেটা আর ঐ মৌল থাকে না আরেকজন কে সাথে নিয়ে নতুন কিছু হয়ে যায় । আমরা পূর্ণ হলে কি আমদের বেলাতেও এমনটাই ঘটবে । তাই কি কখনও আমাদের পূর্ণতা আসে না । হয়তো এটাই কারন , তাই সৃষ্টিকর্তা আমাদের চিরকাল অপূর্ণ রাখেন, না হলে যে আমরা নিস্ক্রিয় মৌল হয়ে যাব ।
©somewhere in net ltd.