নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শাফাত চৌধুরী

মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে একা হয়ে যাই । নিজের মন মত একটা জগত তৈরী করি । সব কিছু ছেড়ে দিয়ে অজানাতে হেঁটে চলি ।

শাফাত চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন বাজারি লেখককে জন্মদিনের শুভেচ্ছা

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫২

বই পড়ার নেশাটা আমার ছোট থেকেই। মূলত চাচা
চৌধুরী, বিল্লু, পিংকি দিয়ে শুরু মাঝে মাঝে কয়েকটা
টিনটিন। এরপরে ছিল রাক্ষস,ভূত প্রেতের গল্প,
ঈশপের গহিল্প ( এই একটা বই আম্মু কিনে
দিয়েছিল, ক্লাস ফোরে পড়ার সময়)। যতদূর মনে
আছে এসবের গন্ডি পেরুতে আমার বেশ সময়
লেগেছে। ক্লাস সিক্স এ থাকার সময় সুমন্ত
আসলামের "ফাইভ.কম" পড়েই বোধ করি প্রথম
শিশুতোষ রহস্য উপন্যাসের স্বাদ পাই। আর ক্লাস
সেভেন এ উঠে "ভিনগ্রহের ক্রিকেটার" বইটা
পড়ে বেশ লেগেছিল (লেখকের নাম মনে
করতে পারছি না) ।
জীবনে অসংখ্য ( ৮০-৯০ %) তিন গোয়েন্দা
পড়েছি, তিন গোয়েন্দা পড়া শুরু করতে আমার সময়
লেগেছে মেবি ক্লাস এইট থেকে শুরু ছিল।
সবচেয়ে বেশি পড়েছি নাইন থেকে টেনে
উঠার সময় টায়। তবে তিন গোয়েন্দা পড়া শুরু করার
আগেই একজন মাথার ভিতরে কিছু পড়াটাকে নেশার
মত ঢুকিয়ে দিয়েছেন। উনি একজন বাজারি লেখক।
সস্তা বস্তাপচা লেখনি ধারা যিনি বেশ মোটা অংকের
টাকা প্রতি বছর ছিনতাই করতেন। আমাদের অতি
জ্ঞানী মানুষজন তার বস্তা পচা লেখনির উত্তম
সমালোচক। গুটি কয়েক সাহিত্যের, "স" ও না বুঝা
পোলাপাইন তাকে মাথায় তুলে নাচে। আমি
সাহিত্যের "স" ও বুঝি না তাই আমি ও মাথায় তুলে নাচি।
ক্লাস এইটে থাকতে "প্রিয়তমেষু" দিয়েই সত্যিকার
ভাবে তার সাথে পরিচয়। ক্লাস এইট হয়ত এজন্যই আপু আমাকে বলেছিল বইটা
ভালো না। ভালো লেগেছিল কিনা তা জানি না কিন্তু
শেষ কয়েকটা লাইন পড়ে মন বিক্ষিপ্ত হয়ে
গেলো। কেমন যেন ভিতরে এক চাপা কষ্ট
এসে গ্রাস করল। সেদিন থেকেই বই পড়াটা
নেশায় রূপ নিলো। এর কিছুদিন পরে "তোমাদের
এই নগরে" পড়ে হিমুর সাথে পরিচয়। যে কদম
ফুলকে বল মনে করতাম, সে কদম ফুলকে
সেদিন থেকে নতুন করে চেনা শুরু।
ক্লাস নাইন - টেনে সাহিত্যের খেলা খাতায় লিখে
পাচে, চার করে অনেকেই পেয়েছি, কিন্তু
সত্যিকার ভাবে তার ভাবার্থ কয়জন বুঝেছি??
হ্যা, উনি সেই বাজারি লেখক যিনি আমাকে প্রমথ
চৌধুরীর বলে যাওয়া কথার মানে শিখিয়েছেন। আমি
খেলতে পারি না তাও আনন্দের জন্য খেলতে
যাই। সাহিত্য বুঝি না তাই বাজারি লেখকের বই পড়েই
আনন্দ পাই। আচ্ছা সাহিত্য বুঝার কোন দরকার কি
আসলেই আছে?? পড়ে আনন্দ পাই এটা কিএ মুখ্য
না???

আমরা সমরেশ, মানিক, সুনীল পড়ি আর বলি মধু মধু।
অবশ্যই আমি নিজেও সমরেশ, মানিক, সুনীলের
লেখার ভক্ত। দেশি- বিদেশি কম লেখকের বই
পড়িনি, তাই বলে যার হাত ধরে এই নেশার শুরু তাকে
কোন সন্মান দিবো না?? আমার মনে হয় হুমায়ূন
স্যার ওপার বাংলার লেখক হলে তাঁকে নিয়েও মধু মধু
করতাম।
গুনীদের কদর করতে আমরা জানি না। স্যার তার এক
লিখায় গান্ধী কে সমকামী প্রমান করে প্রকাশিত
এক বইয়ের প্রেক্ষিতে বলেছিলেন, "আমরা
বোধহয় মানী লোকদের অসন্মান করে আনন্দ
পাই। ব্যাপারটার মনস্তাত্তিক ব্যাখ্যা থাকতে পারে।
আমরা যারা সাধারণ তারা বলতে পারি, এই দেখো, তুমি
আমাদের মতই সাধারণ। " আএমার কাছেও ব্যাপারটা
এমন মনে হয়। হুমায়ূন আহমেদ অশ্বডিম্ব প্রসব
করেন এইটা বলতে পেরে অনেকেই দাঁত
কেলাতে দেখেছি।
আমার আজীবন আফসোস একটাই কাছে থেকে
এই নির্লিপ্ত মানুষটিকে দেখার ভাগ্য হলো না। এত
স্পষ্ট ভাবে সত্য এদেশে কজন মানুষ বলে
গেছেন?? আজ তাঁর জন্মদিনে তাঁর জন্য রইল
শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
শুভ জন্মদিন, কথার জাদুকর।
(একজন বাজারি পাঠকের পক্ষ হতে)

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:১৬

নুর ইসলাম রফিক বলেছেন: শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
শুভ জন্মদিন, কথার জাদুকর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.