নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অ্যালিন

শাহ্ মোঃ অ্যালিন

আমি রাজনীতি পছন্দ করি।

শাহ্ মোঃ অ্যালিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

যারা আওয়ামী লীগবিরোধী, তারাই মুলত দেশবিরোধী।

২৯ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৩:২৫

বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল। এর নেতা-কর্মীরা মনে করেন, এটি দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল। প্রশাসনের জোরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে নয়—এ কথা বিএনপি নেতারা তারস্বরে বলে আসছেন কয়েক বছর ধরে। তাঁদের দাবি, গাণিতিক সূত্রের ধাঁচে ফেললে যা দাঁড়ায় তা হচ্ছে, বিএনপি ইজ গ্রেটার দ্যান আওয়ামী লীগ মাইনাস স্টেট পাওয়ার। আসলে কি তাই? এখানে জনগণের ভূমিকা কী? এই প্রশ্নগুলো ঘুরেফিরে আসে।

আওয়ামী লীগ টানা ১৪ বছর ক্ষমতায়। তাদের ডিসকোর্স অনুযায়ী আওয়ামী লীগ হলো মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি এবং বিএনপি হলো মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি। ‘মুক্তিযোদ্ধাদের দল’ শব্দটি ব্যবহৃত হচ্ছে না। কোন দলে কতজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন বা আছেন, তার জরিপ নেই। তবে বিএনপির যে যথেষ্ট জনভিত্তি আছে, তাতে সন্দেহ নেই। শেষবার যখন ভোটারের অংশগ্রহণে ‘সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক’ নির্বাচন হলো, ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে, তখন বিএনপির প্রার্থীরা দলের জন্মের পর ওইবারই সবচেয়ে কম ভোট পেয়েছিলেন। তাঁদের ভোট পাওয়ার হার ছিল ৩৩ শতাংশ। তার মানে, যেবার তাঁদের ফলাফল সবচেয়ে খারাপ হলো, সেবারও বিএনপি দেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষের পছন্দের দল ছিল। ওইবার আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা পেয়েছিলেন ৪৮ শতাংশ ভোট। এর মানে কি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ (৫২ শতাংশ) ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির’ বিপক্ষে এবং তাদের বড় একটা অংশ ‘মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি’ বিএনপির সমর্থক? এটি তো খুবই দুর্ভাবনার বিষয়।

প্রশ্নগুলো উঠছে অনেক দিন ধরেই। সব প্রশ্নই কি অমূলক? প্রপাগান্ডা? দেশের হালহকিকত কেমন, আমরা কোন দিকে যাচ্ছি—এসব নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন। চটজলদি এসবের নিষ্পত্তি হবে না।

একটা সময় ছিল যখন দেশের একচেটিয়া কর্তৃত্ব ছিল আওয়ামী লীগের হাতে। ১৯৭৫ সালের মাঝামাঝি এসে তা তছনছ হয়ে যায়। ১৯৯১ সালের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশে চালু হয় দ্বিদলীয় রাজনীতি। বাঙালির স্বভাবজাত দলাদলি, সংকীর্ণতা, বাগাড়ম্বর, দখলদারির মনোবৃত্তি, হিংসা-প্রতিহিংসা, মারামারি-কাটাকাটি—এসবের মধ্য দিয়েও দুই দলের প্রতিযোগিতামূলক বাজারটি বহাল ছিল। এটিও তছনছ হয়ে যায় ২০০৬ সালের শেষ দিকে। দৃশ্যপট পাল্টে যায়। ফিরে আসে আওয়ামী লীগের একচেটিয়া কর্তৃত্ব, পলিটিক্যাল মনোপলি।

বিএনপি এখন বৈরী সময় পার করছে। তারা বলছে, তাদের দলকে নির্মূল করার ষড়যন্ত্র চলছে। ১৯৭৫ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগও ষড়যন্ত্রের কথা বলে আসছে। ষড়যন্ত্রতত্ত্বের মোদ্দাকথা হলো: সবকিছু ঠিকঠাক চলছে, পরিস্থিতি চমৎকার, দেশ শনৈঃ শনৈঃ উন্নতির মই বেয়ে উঠছে। হঠাৎ একদল শয়তান গোপনে মতলব এঁটে সবকিছু উল্টেপাল্টে মিসমার করে দিল! সোভিয়েত ইউনিয়নও নাকি এভাবেই ভেঙে গিয়েছিল, সিআইএর ষড়যন্ত্রে!

সব ঠিকঠাক চললে ষড়যন্ত্র হয় কী করে? অভ্যন্তরীণ শর্ত তৈরি না হলে বাইরের শক্তি কীভাবে নাক গলায়? গ্রামে হোক, দেশে হোক, কিংবা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে—কে না জানে ক্ষমতার লড়াইয়ে শত্রু কিংবা প্রতিপক্ষ সব সময় ছিদ্র খুঁজে বেড়ায়? সজ্ঞানে বা অজ্ঞানে নিজেরা ওই ছিদ্র তৈরি না করলে, বাইরে থেকে শত্রু ঢোকে কীভাবে? সূক্ষ্ম একটা ছিদ্র পেয়েই তো বেহুলা-লক্ষিন্দরের লোহার বাসরঘরে কেউটে ঢুকেছিল। ষড়যন্ত্রতত্ত্বটি তাই অক্ষমের আহাজারি কিংবা পরাজিতে কৈফিয়ৎ মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

বিএনপির এখন যে হাল, তার শর্তগুলো তাঁরা নিজেরাই তৈরি করেছিলেন। প্রতিপক্ষ তার সুযোগ নিয়েছে। সুযোগসন্ধানীরা ছিল বেশি কুশলী। বিএনপি আজীবন ক্ষমতায় থাকার জন্য মঞ্চ সাজিয়েছিল। ‘ওয়ান ইলাভেনের কুশীলবরা’ ওই মঞ্চ ভেঙে দিয়েছে।

বিএনপি কি কখনো ভেবেছিল, তারা কোনো দিন এমন অবস্থায় পড়তে পারে?

১৯৭৮ সালের পহেলা সেপ্টেম্বরে ঢাকার রমনা রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান দলটির জন্ম দিয়েছিলেন। তখন তিনি একাধারে রাষ্ট্রপতি, প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক এবং সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ।

জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো, অনেক স্বাধীনতাবিরোধীকে দলে ও সরকারে জায়গা দিয়ে তিনি ‘পাকিস্তানপন্থী’ রাজনীতি শুরু করেছিলেন। বাস্তবে তা–ই হয়েছিল। কিন্তু এই পথকে তিনি কেন কার্যকর মনে করেছিলেন, সেটা এক জরুরি প্রশ্ন। একই সঙ্গে এ প্রশ্নও উঠে আসে, মুক্তিযুদ্ধের ফলে কি ১৯৭১-পূর্ববর্তী বাস্তবতা পাল্টে গিয়েছিল, নাকি কিছু সময়ের জন্য চাপা পড়েছিল।

বিএনপির উত্থান হয়েছিল একটি রাজনৈতিক শূন্যতার মধ্যে। সাময়িকভাবে দুর্বল হয়ে পড়লেও রাজনীতির মাঠে আওয়ামী লীগই ছিল সবচেয়ে সংগঠিত শক্তি। সুতরাং নিজের জন্য মজবুত ভিত তৈরি করতে জিয়া আওয়ামী লীগ বিরোধী একটি বলয় তৈরির চেষ্টা করেন। যুক্ত করেন ডান, বাম—সবাইকে। জুটে যান একঝাঁক আমলা এবং পেশাজীবী। তাঁদের মধ্যে বন্ধনসূত্র একটিই— আওয়ামী লীগ বিরোধিতা। এই জমিটি এখনো উর্বর।

টিকে থাকার জন্য একটি দলকে ক্রমাগত কৌশল পাল্টাতে হয়। পঞ্চাশ কিংবা সত্তর দশকের আওয়ামী লীগকে এখন খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু বিএনপি কি পাল্টাচ্ছে?

ক্ষমতার বৃত্ত থেকে ছিটকে পড়লেও বিএনপি এখনো আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এবং প্রবল প্রতিপক্ষ এমনটাই বিএনপির নেতা - কর্মীরা মনে করেন। আসলে তাদের নিজের শক্তি কতটুকু?কিভাবে উন্নতির দুয়ারে আঘাত হেনে তাকে থমকে দেয়া যায় এটাই তাদের পরিকল্পনা। আসলে যারা আওয়ামী লীগবিরোধী, তারাই মুলত দেশবিরোধী।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১০:৩৫

বিবেকহীন জ্ঞানি বলেছেন: ভালোই বিশ্লেষণ করলেন।

২| ২৯ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:০৪

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: প্রধান বিচারপতি সাহাব উদ্দিনের মতো ইলেকশন হলে বিএনপি আবারো ক্ষমতায় ফিরবে। তখন বর্তমানের আওয়ামী লীগ দানবকেও ছেড়ে যাবে বিএনপি দানবরা কারণ বর্তমান দানব কিভাবে তান্ডব চালাতে হয় সেটা শিখিয়ে যাচ্ছে নিত্যদিন।

৩| ০৫ ই মে, ২০২১ রাত ১:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: কি লিখেন? আমি তো কিছুই বুঝি না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.