![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি খুবই সাদামাটা একজন মানুষ। শখের বশে লেখালেখি শুরু করেছি। চেষ্টা করি প্রতিনিয়ত কিছু না কিছু লেখার। পছন্দ করি বই পড়তে।
ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবনবিধান। যে জীবনবিধানের মূল সংবিধান হলো কুরআন। একজন মুমিনের প্রকৃত কর্তব্য হলো কুরআনকে জানা। এবং সেই অনুযায়ী রাসূলের সা. আদর্শে ইসলামের আনুগত্য করা। সুতরাং যারা কুরআন জানে না, বুঝে না, কিংবা জানা ও বুঝার চেষ্টাও করে না তারা কখনোই প্রকৃত ঈমানদার তথা মুমিন হতে পারে না। তাই যারা কুরআন বিমুখী হয় তারা প্রকৃত ইসলাম থেকে দূরে সরে যায়। এবং পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত হয়ে মুরতাদ মুনাফিকে পরিনত হয়। তাই আজ আমরা জানার চেষ্টা করব কুরআন বিমুখী হওয়ার কারণে মুসলমানদের কী খারাপ পরিনতি হচ্ছে।
কুরআন সম্পর্কে আমাদের ধারণা
শুরুতেই আমাদের জানা উচিত এই উপমহাদেশে কুরআন সম্পর্কে মুসলমানদের ধারণা কী। কেননা আমাদের মধ্যে কুরআন সম্পর্কে একধরনের ভীতিকর বিভ্রান্তি রয়েছে। অর্থাৎ আমরা কুরআনকে ভয় পাই এমন নয়। বরং আমরা কুরআনকে জানার চেষ্টা করি না এই ভয়ে যে, যদি নিজেরাই নিজে কুরআন জানার চেষ্টা করি তাহলে গোমরাহ হয়ে যাব।
তৎকালীন আলেম উলামাদের থেকে এমন বিভ্রন্তি ছড়ানোর ফলে, সাধারণ মানুষ কুরআন জানার চেষ্টা আর করে না। বরং ওয়াজ মাহফিলে ধর্মীয় কথা শুনতেই অভ্যস্ত। যারফলে মুসলমানদের অধিকাংশই আজ কুরআন বিমুখ। যেকারণে সাধারণ মুসলমানরা সত্যিকার ইসলামে প্রবেশ করতে পারেনি। ফলে উপমহাদেশে যে ইসলাম চালু হয়েছে তা সম্পূর্ণ কুরআন এবং সুন্নাহ বিরোধী। এরই পরিপ্রেক্ষিতে উপমহাদেশের মুসলমানরা নিম্নোক্ত ক্ষতিতে পতিত হয়েছে।
ঈমানহারা
কুরআনের সঠিক শিক্ষা তথা কুরআন না জানার কারণে আমাদের ঈমান সঠিক স্থানে নেই। আমরা মনে করি জন্মগত মুসলমান হলেই বুঝি আমরা ঈমানদার। কিন্তু কুরআনের শিক্ষা হলো ঈমান জন্মগত বিষয় নয় বরং ঈমানজেনেবুঝে আনার বিষয়। শুধু তাইনয় ঈমানের হ্রাস বৃদ্ধিও ঘটে। আল্লাহ বলেন, "মরুবাসীরা বলে: আমরা ঈমান এনেছি। (হে রাসূল) বলুন: তোমরা ঈমান আনোনি ; বরং বল, আমরা বশ্যতা স্বীকার করেছি। এখনও তোমাদের অন্তরে ঈমান জন্মেনি। যদি তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর, তবে তোমাদের কর্ম বিন্দুমাত্রও নিস্ফল করা হবে না। নিশ্চয়, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম মেহেরবান। (সূরা: আল হুজরাত, আয়াত: ১৪)
অর্থাৎ মুখে কালেমা পড়লেই মুসলিম হওয়া যায় না। বরং তা অন্তরে স্বীকার এবং কাজে তথা আমল দ্বারা প্রমাণিত করার নামই হলো প্রকৃত ঈমান। কুরআন না জানার কারণে অধিকাংশ মুসলমান আমল না করে মনে করেন, ঈমান যেহেতু আছে তাহলে অবশ্যই একদিন না একদিন জান্নাতে চলে যাবো। আমল করছি না তো কী হয়েছে! আল্লাহ বলেন, "আর মানুষের মধ্যে কিছু লোক এমন রয়েছে যারা বলে, আমরা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান এনেছি অথচ আদৌ তারা ঈমানদার নয়।" (সূরা: আল বাকারা, আয়াত: ৮)
সুতরাং ঈমান আনার বিষয়টি খুবই ব্যাপক। শুধু মুখে বললেই ঈমান আনা হয় না। বরং তা তাকওয়া দ্বারা সত্যায়িত করার বিষয়। আল্লাহ বলেন, হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিৎ ঠিক তেমনিভাবে ভয় করতে থাক। এবং অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।" (সূরা: আল ইমরান, আয়াত: ১০২)
সুতরাং আল্লাহ ভীতি তথা তাকওয়া হলো ঈমানের মূল। যার প্রতিফলন হয় ব্যক্তির আমলে। অতএব শুধু জন্মগতভাবে মুসলিম হলেই ঈমানদার হওয়া যায় না।
তাওহীদের বিরোধিতা করা
কুরআন এসেছে আল্লাহর তাওহীদ তথা আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয় এবং সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী এই তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করতে। তাওহীদের এই বাণী রয়েছে পবিত্র কুরআনে। অথচ কুরআন না জানার কারণে এখনো অধিকাংশ মানুষ জানেই না "তাওহীদ" বিষয়টা কী। ফলে অধিকাংশ মুসলমানই তাওহীদ বিরোধী কাজ করে চলেছে প্রতিনিয়ত। অথচ আল্লাহ বলেন, "(হে রাসূল) বলুন আল্লাহ এক এবং তিনি অমুখাপেক্ষী।" (সূরা ইখলাস আয়াত ১,২)
"আর তোমাদের ইলাহ এক এবং একমাত্র ইলাহ আল্লাহ। তিনি ছাড়া মহা করুণাময় দয়ালু কেউ নেই।" (সূরা: আল বাকারা, আয়াত: ১৬৩)
সুতরাং আল্লাহ ছাড়া আর কোনো মাবুদ, ইলাহ, উপাস্য, পালনকর্তা, সৃষ্টিকর্তা, আইনদাতা ইত্যাদি কেউ নেই। অথচ কুরআন সম্পর্কে জ্ঞান না থাকার কারণে অধিকাংশ মানুষ দুনিয়াবী এবং আখিরাতের প্রয়োজনে ব্যক্তির কাছে নিজেদের মাথা ঠুকে দেয়। একইসাথে স্বার্থের কারণে আল্লাহর বিধি-বিধানকে তোয়াক্কা না করে দুনিয়াবী আইনকানুন প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া হয়ে উঠে। আর এভাবেই মানুষ তাওহীদের বিরোধিতা করে চলেছে নিরন্তর।
শিরক করে মুশরিক হওয়া
আল্লাহর বিধানে সবচেয়ে বড় পাপ হলো শিরক করা। শিরকের অর্থ হলো আল্লাহর সাথে অংশীদার করা। অর্থাৎ আল্লাহর প্রভুত্ব, ইবাদত, গুণাবলী এবং বিধিবিধানের সাথে অন্য কাউকে অংশীদার করা। আল্লাহ বলেন, "আর ইবাদত কর আল্লাহর, শরীক করো না তাঁর সাথে অপর কাউকে"। (সূরা: আন নিসা, আয়াত: ৩৬)
সুতরাং আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে ডাকা সাহায্য কামনা করা বা তাঁর সমকক্ষ মনে করে অংশীদার করা যাবে না। আল্লাহ বলেন, "নি:সন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে লোক তাঁর সাথে শরীক করে।" (সূরা: আন নিসা, আয়াত: ৪৮)
এখানে সুস্পষ্ট যে, শিরকের পাপ আল্লাহ কখনোই ক্ষমা করবেন না দুনিয়ায় তওবা করা ছাড়া। অন্যান্য যেকোনো পাপ আল্লাহ চাইলেই কিয়ামতের মাঠে ক্ষমা করে দিতে পারেন। কুরআনের শিক্ষা না জানার কারণে আমাদের অধিকাংশ মুসলমানই জানে না "শিরক"কী। কী করলে শিরক হয়? কীভাবে শিরক হয়ে যায় ইত্যাদি।
অথচ আল্লাহ যুগে যুগে হাজার হাজার নবি রাসূল পাঠিয়েছেন শুধুমাত্র শিরকের বিনাশ করে তাওহীদ প্রতিষ্ঠার জন্য। শিরকের বিরুদ্ধে আল্লাহর হুশিয়ারি, "(হে রাসূল) আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তীদের পতি প্রত্যাদেশ হয়েছে, যদি আল্লাহর শরীক স্থির করেন, তবে আপনার কর্ম নিষ্ফল হবে এবং আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের একজন হবেন।" (সূরা: আল-যুমার, আয়াত: ৬৫)
সুতরাং শিরকের নিয়ে নবি রাসূলরাও আ. যথেষ্ট সাবধান ছিলেন। সেখানে আমরা অধিকাংশ মুসলমান কুরআন না জানার কারণে বিভিন্নভাবে প্রতিনিয়তই শিরক করে যাচ্ছি। আর নিজেদের ঈমান আমলকে প্রশ্নবিদ্ধ করছি।
বিদআতে লিপ্ত হওয়া
বিদআত এমন একটি পাপ, যে পাপের কারণে রাসূলের সা. সুপারিশ পাওয়া যাবে না। অথচ অধিকাংশ মুসলমান রাসূলের সুপারিশ পাওয়ার জন্যই বিদআত করে।"বিদআত"হচ্ছে এমন ইবাদত যা রাসূল সা. সাহাবী, তাবেয়ী, তবেতাবেয়ী রা: গণ করেননি। এখন আমরা কুরআনের শিক্ষা না পাওয়ার কারণে জানি না যে এইসব নতুন নতুন ইবাদত তথা বিদআত ইসলামে নিষিদ্ধ। আল্লাহ বলেন, "রাসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।" (সূরা: আল হাশর, আয়াত: ৭)
অতএব রাসূল সা. যা শিক্ষা দিয়ে গেছেন তা-ই আমাদের গ্রহণ করতে হবে পালন করতে হবে। যা তিনি নিষেধ করেছেন তা থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে। পবিত্র হাদিসে এসেছে, আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি এমন আমল করল যাতে আমার কোন নির্দেশনা নেই, তা পরিত্যাজ্য’ (মুসলিম হা/১৭১৮)।
জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হামদ ও ছালাতের পর বলেন, ‘নিশ্চয়ই শ্রেষ্ঠ বাণী হ’ল আল্লাহর কিতাব এবং শ্রেষ্ঠ হেদায়াত হ’ল মুহাম্মাদের হেদায়াত। আর নিকৃষ্টতম কাজ হ’ল দ্বীনের মধ্যে নতুন সৃষ্টি এবং প্রত্যেক নতুন সৃষ্টিই হ’ল ভ্রষ্টতা’ (মুসলিম, মিশকাত হা/১৪১)। আর নাসাঈতে রয়েছে, ‘প্রত্যেক ভ্রষ্টতার পরিণতি জাহান্নাম’ (নাসাঈ হা/১৫৭৮)।
উপরোক্ত হাদিসে খুবই কঠোরভাবে রাসূল সা. দ্বীনের মধ্যে ইবাদতের ক্ষেত্রে নতুন এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন। শুধু তাই নয় যদি এমন কিছু করা হয় তবে তা বাতিল এবং তার পরিনতি জাহান্নাম। সুতরাং শুধুমাত্র কুরআন না বুঝার কারণে অসংখ্য মুসলমান বিদআতে জর্জরিত।
সুন্নাহ বিরোধী কার্যকলাপ
পবিত্র কুরআনে সুস্পষ্ট উল্লেখ আছে যে রাসূলুল্লাহ সা. এর অনুসরণ এবং তাঁর আদর্শে আদর্শিক হয়ে ইসলামে জীবনযাপন করতে হবে। তাহলেই আল্লাহ আমাদের সকল ইবাদত বন্দেগী গ্রহণ এবং পাপের ক্ষমা করবেন।
আমাদের কুরআনের সঠিক জ্ঞান না থাকার কারণে সুন্নাহর অনুসরণ তো দূরের কথা, নিজেদের অজান্তেই রাসূলুল্লাহ সুন্নাহর বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত হচ্ছি।। যে কর্মকাণ্ডের জন্য আমরা কখনোই রাসূলুল্লাহ সুপারিশ পাবো না। আল্লাহ বলেন, "নিশ্চয়ই রাসূলুল্লাহর জীবনের মধ্যে রয়েছে তোমাদের জন্য সর্বোত্তম আদর্শ; যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের আশা রাখে এবং আল্লাহকে বেশি স্মরণ করে।" (সুরা আহযাব : আয়াত ২১)
সুতরাং অনুসরণ হবে রাসূলুল্লাহ সা. কে। অথচ কুরআন না জানার কারণে আমরা রাসূলুল্লাহ সা. এর আদর্শ বাদ দিয়েছি। তাঁর পরিবর্তে বিভিন্ন কথিত পীর আউলিয়া কিংবা দুনিয়াবী বিভিন্ন নেতা নেত্রীর আদর্শে আদর্শিক হয়ে ধর্ম পালন কিংবা দুনিয়া যাপন করছি। যা আমাদেরকে ঈমানহারা করে আল্লাহ থেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে।
রাসূল সম্পর্কে ভ্রান্ত আকিদা
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ রাসূল সা. এর গুরুত্ব এবং মর্যাদা খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন। আল্লাহ বলেন, "(হে রাসূল! আপনি) বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসতে চাও, তবে আমার অনুসরণ কর; তাহলেই আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাশীল দয়ালু"। (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ৩১)
উপরোক্ত আয়াতে বলা হচ্ছে আল্লাহর ভালোবাসা পেতে হলে রাসূল সা. এর অনুসরণ প্রয়োজন। এখন আমরা রাসূলুল্লাহ সা. এর অনুসরণ তো দূরের কথা, তাঁর কথা কাজ আকিদা ইত্যাদি সবকিছুর সুস্পষ্ট বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছি। আল্লাহ রাসূল সা. এর শান শওকত এবং সম্মানের স্বপক্ষে অসংখ্য কুরআনের আয়াত নাযিল করেছেন। অথচ আমরা সেইসব আয়াত সম্পর্কে অবগত নই।
যারফলে রাসূল সা. সম্পর্কে আমাদের মধ্যে বেশ কিছু ভ্রান্ত আকিদার সৃষ্টি হয়েছে। যা সরাসরি ঈমান বিধ্বংসী। কিন্তু যারা এইসব আকিদা আমাদের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছেন, তারা তাদের নিজেদের স্বার্থেই এইসব করেছেন। কিন্তু কুরআন সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে সেইসব ভ্রান্ত আকিদা এখনো পোষণ করছি। যা সম্পূর্ণ তাওহীদ, কুরআন এবং ইসলাম বিরোধী।
আল্লাহ সম্পর্কে অজ্ঞতা
আমাদের উপমহাদেশে সূফিদের দ্বারা ইসলাম প্রচার হওয়ার কারণে, এখানে কুরআন এবং হাদিসের চর্চা নেই বললেই চলে। সাধারণ মানুষ পীর আউলিয়া এবং হুজুরদেরই প্রাধান্য দিয়ে ধর্ম কর্ম পালন করে। তাই আল্লাহ সম্পর্কেও আমাদের সঠিক কোনো ধারণা নেই। যারফলে আমরা মনে করি, আল্লাহ নিরাকার, সর্বত্র বিরাজমান ইত্যাদিসহ নানান ভ্রান্ত আকিদা। অথচ পবিত্র অসংখ্য আয়াতে আল্লাহর নিজস্ব অস্তিত্বের কথা সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, "তিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের অন্তর্বর্তী সবকিছু ছয়দিনে সৃস্টি করেছেন, অত:পর আরশে সমাসীন হয়েছেন।" (সূরা: আল-ফুরকান, আয়াত: ৫৯)
"আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই; তিনি মহা আরশের মালিক।" (সূরা: নমল, আয়াত: ২৬)
"তিনিই উপাস্য নভোমন্ডলে এবং তিনিই উপাস্য ভুমন্ডলে। তিনি প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ।" (সূরা: যুখরুফ, আয়াত: ৮৪)
"তিনি তোমাদের সাথে আছেন তোমরা যেখানেই থাক। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন।" (সূরা: আল হাদীদ, আয়াত: ৪)
এইজাতীয় আরো অসংখ্য আয়াত দ্বারা আল্লাহ তাঁর অস্তিত্বের এবং ক্ষমতার কথা তুলে ধরেছেন কুরআনে। অথচ মানুষ কুরআন না জানার কারণে আল্লাহ সম্পর্কে সম্পূর্ণ অন্ধকারে থেকে যায়। তাদেরকে তাদের পীর মৌলানারা যা বলে তাই তারা বিশ্বাস করে নানানভাবে গোমরাহীতে লিপ্ত হয়ে আছে।
দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞতা
আমরা সাধারণত হুজুরদের মুখে রূপকথার মতো ওয়াজ মাহফিলে ইসলামের নামে গল্পকাহিনী শুনতে অভ্যস্ত। অধিকাংশ ওয়াজ মাহফিলই হয় বিভিন্ন কল্পকাহিনীর উপর ভিত্তি করে। যেখানে ঈমান আকিদা আমলের উপদেশ থাকে না। যারফলে ইসলাম সম্পর্কে সাধারণ মানুষ ব্যাপকভাবে জানতে পারে না। আল্লাহ বলেন, "তবে কি তারা কোরআন নিয়ে গভীর চিন্তা ভাবনা (গবেষণা) করে না? নাকি তাদের অন্তরসমূহে তালা বদ্ধ রয়েছে?” (সূরা মুহাম্মদ-২৪)
অন্য আয়াতে বলেন, "আমি কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি বোঝার জন্যে। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি?" (সূরা: আল ক্বামার, আয়াত: ১৭)
যেখানে আল্লাহ কুরআন নিয়ে গবেষণা করার কথা বলেন, সেখানে আমরা কুরআন ধরেও দেখি না। অথচ আল্লাহ বুঝার জন্য কুরআনকে সহজ করে দিয়েছেন। তারপরও আমরা কুরআন জানার জন্য বুঝার জন্য কোনো চেষ্টাই করি না। ফলে অধিকাংশ মুসলমানই দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞ। যেকারণে আমরা নিজেরাই জানি না যে ঈমান কী আকিদা কী আমল কী ইত্যাদি। অথচ আল্লাহ বলেন, "যে লোক ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম তালাশ করে, কস্মিণকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতেও সে ক্ষতিগ্রস্ত।" (সূরা: আল ইমরান, আয়াত: ৮৫)
যেখানে ইসলাম ছাড়া আল্লাহ কিছুই গ্রহণ করবেন না। সেখানে ইসলাম জানাটা প্রতিটি মুসলিমের জন্য ফরজ। আর তা কুরআন ছাড়া কখনোই পরিপূর্ণভাবে লাভ করা সম্ভব নয়। আল্লাহ বলেন, "এই কোরআন এমন পথ প্রদর্শন করে, যা সর্বাধিক সরল এবং সৎকর্ম পরায়ণ মুমিনদেরকে সুসংবাদ দেয় যে, তাদের জন্যে মহা পুরস্কার রয়েছে।" ( সূরা: বানি-ইস্রাইল, আয়াত: ৯)
পূর্ববর্তী জাতি ধ্বংস সম্পর্কে অজ্ঞতা
আল্লাহ পবিত্র কুরআনে অসংখ্য জাতির বিভিন্ন ইতিহাস বর্ণনা করেছেন। যেখানে তাদেরকে দেওয়া আল্লাহর নিয়ামত এবং আজাবের কথা রয়েছে। এইসব ইতিহাস আল্লাহ এইজন্যই বলেছেন যাতে তাদের কথা শুনে আমরা নিজেদের সংশোধন করি।
অথচ আমরা কুরআন না পড়ার কারণে সেইসব ইতিহাসও জানার সুযোগ হয়না। যারফলে আমরাও অতীতের বিভিন্ন বর্বর জাতির মতো অসংখ্য পাপে লিপ্ত হচ্ছি। যার শাস্তি আল্লাহ আমাদের জন্য অবধারিত করে রেখেছেন। আমাদের ওয়াজ মাহফিলে কুরআনের ইতিহাসে পরিবর্তে নানান পীর অলি আউলিয়ার বিভিন্ন লোককাহিনী শোনানো হয়। যেখান থেকে ঈমান আমল আকিদা শেখার কোনো সুযোগ নেই। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বর্ণনা করেন, "এ ছিল আদ জাতি, যারা তাদের পালনকর্তার আয়াতকে অমান্য করেছে, আর তদীয় রাসূলগণের অবাধ্যতা করেছে এবং প্রত্যেক উদ্ধত বিরোধীদের আদেশ পালন করেছে।" (সূরা: হুদ, আয়াত: ৫৯)
"যেন তাঁরা কোনদিনই সেখানে ছিল না। জেনে রাখ, নিশ্চয় সামুদ জাতি তাদের পালনকর্তার প্রতি অস্বীকার করেছিল। আরো শুনে রাখ, সামুদ জাতির জন্য অভিশাপ রয়েছে। "(সূরা: হুদ, আয়াত: ৬৮)
"এমনিভাবে আমি পূর্বে যা ঘটেছে, তার সংবাদ আপনার কাছে বর্ণনা করি। আমি আমার কাছ থেকে আপনাকে দান করেছি পড়ার গ্রন্থ। " (সূরা: ত্বোয়া-হা, আয়াত: ৯৯)
উপরোক্ত আয়াত দ্বারা আল্লাহ বিভিন্ন জাতি কী কী পাপ করেছিল এবং তাদের শাস্তিও কী ছিলো সে সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন। যাতে তাদের পাপের পরিনতি দেখে আমরা শিক্ষা নিতে পারি।
আল্লাহর বিরুদ্ধাচরণ
পবিত্র কুরআনের বিধি-নিষেধ না জানার কারণে আমরা অনেক কাজ করছি যা সরাসরি আল্লাহ বিরোধী। যেসব কাজ আল্লাহ নিষেধ করেছেন সেইসব কাজ আমরা করছি নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণে অথবা বাপ দাদার অনুসরণে। আর যেসব কাজের আদেশ আল্লাহ দিয়েছেন সেইসব কাজ থেকে আমরা হয়ে পড়ছি গাফেল। এরফলে আমরা প্রতিনিয়তই আল্লাহর বিরুদ্ধাচরণে লিপ্ত হচ্ছি। যেমন আল্লাহ বলেন, "তারা তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দাও, এতদুভয়ের মধ্যে রয়েছে মহাপাপ।" (সূরা: আল বাকারা, আয়াত: ২১৯)
মদ জুয়া ছাড়াও আরও অসংখ্য নিষিদ্ধ পাপের কথা আল্লাহ সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন। অথচ আমরা তা না জানার কারণে প্রতিনিয়তই আল্লাহর বিরুদ্ধাচরণ করছি।
নৈতিকতা বিসর্জন
কুরআন বিমুখীতার কারণে আমাদের মুসলমানদের মধ্যে দিনদিন নীতি নৈতিকতা শুভবুদ্ধির বিপর্যয় হচ্ছে। আল্লাহ বলেন, "তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যানের জন্যেই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে।" (সূরা: আল ইমরান, আয়াত: ১১০)
আমাদের সর্বোত্তম উম্মত হিসাবে মানবতার কল্যাণের জন্য আল্লাহ দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। তাই প্রতিটি মুসলিমেরই দায়িত্ব হচ্ছে সৎ কাজের আদেশ করা অসৎ কাজের নিষেধ করা। অথচ আমরা চরম অমানবিক অনৈতিক অশ্লীল নানান কর্মকাণ্ডে লিপ্ত। এর একমাত্র কারণ হচ্ছে কুরআন সম্পর্কে আমাদের অজ্ঞতা।
বিবিধ পাপে নিমজ্জিত
আল্লাহর বিধান সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে আমরা হাজারো পাপে লিপ্ত। মদ, জুয়া, সুদ, ঘুষ, জেনা, ব্যবিচার, হত্যা, প্রতারণা, ইত্যাদি পাপে আমরা জড়িত। যদিও আমরা জানি এইসব পাপ। তবুও এইসব করছি কারণ এইসব পাপ সম্পর্কে আমরা সবিশেষ অবগত নই।
অর্থাৎ আমরা শুধু শুনি যে এইসব পাপ। কিন্তু পাপ সম্পর্কে বিস্তরিত জানি না। ফলে এইসব পাপ আমাদের অন্তরে দাগ কাটে না। যদি আমরা আল্লাহর কালাম পবিত্র কুরআন পড়তাম। যেখানে প্রতিটি পাপের কথা এবং এর শাস্তির কথা উল্লেখ আছে। তাহলে সেই পবিত্র কালামের বরকতে এবং প্রতিনিয়ত কুরআন পড়ার কারণে অবশ্যই আমরা আল্লাহর হিদায়াত প্রাপ্ত হতে পারতাম। আল্লাহ বলেন, "শয়তান তো চায়, মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মাঝে শুত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত করে দিতে এবং আল্লাহর স্মরণ ও নামায থেকে তোমাদেরকে বিরত রাখতে। অতএব, তোমরা এখন ও কি নিবৃত্ত হবে না? " (সূরা: আল মায়িদাহ, আয়াত: ৯১)
আল্লাহ কুরআনে সকল প্রকার পাপের ব্যাপারে আমাদের সতর্ক করে দিয়েছেন। সুতরাং যদি আমরা কুরআন জানতাম তাহলে কখনোই পাপের সাগরে গা ভাসাতাম না।
পূর্বপুরুষদের অন্ধ অনুসরণ
আল্লাহ পবিত্র কুরআনে প্রতিটি জাতিকেই পূর্বপুরুষদের অন্ধ অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন। অর্থাৎ না জেনে শুনে, যাচাই বাছাই না করে, কোনো প্রকার দলীল প্রমাণাদি ছাড়া সরাসরি পূর্বপুরুষদের অনুসরণ করা ইসলামে নিষিদ্ধ। অথচ কুরআন না জানার কারণে আমরা আমাদের ধর্মীয় সকল বিধি-বিধান পালন করছি পূর্বপুরুষদের অনুসরণে।
কেউ আমাদের ভুল ধরিয়ে দিলেও কুরআন সুন্নাহর জ্ঞান না থাকার কারণে তা আমরা গ্রাহ্য করি না। অথচ আল্লাহ বলেন, "আর যখন তাদেরকে কেউ বলে যে, সে হুকুমেরই আনুগত্য কর যা আল্লাহ তা’আলা নাযিল করেছেন, তখন তারা বলে কখনো না, আমরা তো সে বিষয়েরই অনুসরণ করব। যাতে আমরা আমাদের বাপ-দাদাদেরকে দেখেছি। যদি ও তাদের বাপ দাদারা কিছুই জানতো না, জানতো না সরল পথও। " (সূরা: আল বাকারা, আয়াত: ১৭০)
আল্লাহ পূর্ববর্তী জাতিদের উদ্দেশ্যে বলা নসিহতের মাধ্যমে আমাদের শিক্ষা দিচ্ছেন যে, বাপ দাদার অনুসরণ না করে কুরআন এবং সুন্নাহর অনুসরণ করো। অথচ আমরা যাচাই বাছাই না করে শক্তিশালী দলিল প্রমাণাদি উপেক্ষা করে শুধুমাত্র বাপ দাদারা করেছেন বলেই সেটাকে ধর্মীয় বিধি বিধান বলে মনে করছি। যারা এমন করেন তাদের জন্য আল্লাহ বলেন, "এগুলো কতগুলো নাম বৈ নয়, যা তোমরা এবং তোমাদের পূর্ব-পুরুষদের রেখেছ। এর সমর্থনে আল্লাহ কোন দলীল নাযিল করেননি। তারা অনুমান এবং প্রবৃত্তিরই অনুসরণ করে। অথচ তাদের কাছে তাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে পথ নির্দেশ এসেছে।" (সূরা: আন-নাজম, আয়াত: ২৩)
অধিকাংশের ভ্রান্ত অনুসরণ
পবিত্র কুরআনে সুস্পষ্ট দলিলের বিপরীতে অধিকাংশ মানুষের মতামতকে অগ্রাহ্য করার জন্য বলা হয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহ যা দিয়েছেন সেটাই গ্রহণ করতে বলা হয়েছে যদিও তা হয় অধিকাংশ মানুষের মতামতের বিপরীত। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ অধিকাংশ মানুষকে অজ্ঞ, গোমরাহ, নাফরমান, মূর্খ, অকৃতজ্ঞ, জানে না বোঝে না, প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী, গাফেল ইত্যাদি বলে নিন্দা করেছেন। শুধু তাইনয় আল্লাহ বলেন, "অধিকাংশ মানুষ আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, কিন্তু সাথে সাথে শিরকও করে।" (সূরা: ইউসূফ, আয়াত: ১০৬)
আল্লাহ আরও বলেন, "বস্তুত তারা অধিকাংশই অনুমানের উপর চলে।" (১০:৩৬)
"আমি তোমাদের কাছে সত্যধর্ম পৌঁছিয়েছি; কিন্তু তোমাদের অধিকাংশই সত্যধর্মে নিস্পৃহ! (৪৩/সূরা যুখরুফ, ৭৮) "
অতএব কুরআন না জানার কারণে আমরা আল্লাহর বিধি বিধানের বিপরীতে অধিকাংশ মানুষের অনুসরণ অনুমানকে নিজেদের দ্বীন বলে সাব্যস্ত করছি। যা কখনোই সঠিক নয়।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পারলাম কুরআন জানা এবং বুঝা কত জরুরি। কুরআন সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে প্রতিটি মুসলমান আজ পথভ্রষ্ট। আমরা কুরআন থেকে শিক্ষা না নেওয়ার কারণে পূর্বপুরুষদের অন্ধ অনুসরণে সুফিবাদী ইসলামে দীক্ষিত।
যা কখনোই আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। আসুন কুরআন জানার চেষ্টা করি এবং সেইমতো ইসলাম পালনে উদ্বুদ্ধ হই।
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী
১৩ অক্টোবর, ২০২১ ইংরেজী
পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম।
১২ ই ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৩৯
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী. বলেছেন: আপনার সাথে সহমত।
এভাবে কেউ চিন্তা করে না বলেই আজ ইসলাম পালনের এই অবস্থা
জাযাকাল্লাহ খাইরান।
২| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:৩০
এভো বলেছেন:
ভাই আপনি কলেমা প্রসংগ এনেছেন --- আপনি কি কলেমা শাহাদাতের ব্যাখা করতে পারবেন ---
আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকালাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান 'আবদুহু ওয়া রাসূলুহু।
অনুবাদ: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো উপাস্য নেই। তিনি একা ও তার কোনো শরীক নেই। এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ (সা তার বান্দা ও রাসূল।
এখানে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি শব্দটা আছে । ভাই আমি সাক্ষ্য কি ভাবে দিচ্ছি ? আমি বিষয়টাকে বিশ্বাষ করতে পারি , এখানে আমি সাক্ষ্য কি করে দিচ্ছি ? আমি তো স্বচক্ষে এগুলো দেখিনি , তাহোলে আমি কি ভাবে সাক্ষ্য দিচ্ছি । আমি বিশ্বাষ করতে পারি কিন্তু কিভাবে আমি সাক্ষী দিবো? আমি যদি সাক্ষ্য দি , তাহোলে সেটা কি মিথ্যা সাক্ষী হবে না ?
শিরক করার করা নাকি মহাপাপ --- এটা আপনি কোথা থেকে পেলেন ভাই ? প্রত্যেক মুসলমান ই শিরককারি । শিরক হোল আল্লাহর কোন গুণা বলি বা বৈশিষ্ঠকে কোন রুপ ভাবে শিরক করা যাবে না । আল্লাহ মহাবিদ্যাবান--- এই গুণটা প্রতিকি করে হিন্দুরা সরস্বতির পুজা করে । এই ভাবে কোন কিছুকে আল্লাহর যে কোন গুণাবলিকে শিরক করা হারাম ।
মানুষের গুণা মাপ করার ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কারো নেই , যদি ক্ষমাকারি রুপে কোন বস্তু বা দেব দেবিকে শিরক করা হয় তাহোলে সেটা হারাম এবং কবিরা গুণা । তাহোলে ভাই কাবা শরিফের ভিতরে ঐ কালো পাথরখানি কি করে মানুষের পাপকে মোচন করে । ঐ কালো পাথরটাকে কি আল্লাহর ক্ষমার গুণের সাথে শিরক করা হোল না ?
তাহোলে নামাজ পড়লে কি শিরক করা হয় না ? আপনি বোলছেন শিরক করা নাকি মহাপাপ তাহোলে মুসলমানরা কেন ঐ কালো পাথরকে ক্ষমা কারি বিশ্বাষ করে এবং শিরক করে । তারমানি শিরক করা কোন পাপ ই নহে, যদি পাপ হোত তাহোলে ঐ পাথরকে এত মর্যাদা দেওয়া হোত না ।
ভাই এই সব বিষয় চিন্তা করে তালগোল হারিয়ে ফেলেছি , যদি উদ্ধার করতে পারেন , তাহোলে খুব উপকার হয় ।
১২ ই ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৫৯
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী. বলেছেন: মাশা আল্লাহ আপনি অনেক প্রশ্নের অবতারণা করেছেন। আর আমার দৃঢ় বিশ্বাস আপনি চাইতেও অনেক বেশী জানেন। তাই আপনার সাথে বেশী কিছু বলবো না।
কালেমার ব্যাখ্যা নিয়ে আপনার কথার উত্তর দিতে পারবো না। কেননা আপনি স্ববিরোধী কথা বলছেন। আপনি বলেছেন যা দেখেন না তা বিশ্বাস করেন না। অথচ আপনি বাতাস, কিংবা জীবের জীবন কিছুই কিন্তু দেখা যায় না। তাহলে কি এগুলো আপনি বিশ্বাস করেন না! হ্যাঁ এগুলো দেখা যায় না। তবে এসব অনুভব করা যায়। ঠিক তেমনি আল্লাহকে আপনি দেখবেন না। কিন্তু অনুভব করতে পারেন। যাইহোক এটা অনেক বড় বিষয়। চেষ্টা করলে আপনিও জানতে পারবেন। আর কালেমার ব্যাখ্যা সবাই সঠিক জানার চেষ্টা করে না। এর ব্যাখ্যা নিয়ে আমার নিজস্ব মতামত রয়েছে।
লিঙ্ক দেখুন
শিরক মহা পাপ এটা সূরা লোকমানে ভালো করে দেখুন। তাছাড়া ইসলাম সম্পর্কে জানা ও বুঝার জন্য কুরআন আগে জানতে হবে। আর মক্কার কালো পাথরের কোনো ক্ষমতা নেই পাপ সাফ করার। এটা শুধুমাত্র রাসূলুল্লাহর সা. সুন্নাহ। তিনি চুমু দিয়েছেন বলেই আমরা চুমু দিচ্ছি। তারমানে সম্মান দিচ্ছি। ওখানে চুমু দিলেই পাপ সাফ হবে এমন কোনো প্রমাণ আছে বলে আমার জানা নেই।
আপনি দয়াকরে এইসব একটু পড়ুন
শির্ক কী?
https://shakawatarticle.blogspot.com/2022/01/blog-post_6.html
রাষ্ট্রীয় শির্ক?
https://shakawatarticle.blogspot.com/2022/01/blog-post_66.html?m=1
আল্লাহ্ সিফাতের সাথে শির্ক
https://shakawatarticle.blogspot.com/2022/01/blog-post_48.html?m=1
ইবাদতের শির্ক
https://shakawatarticle.blogspot.com/2020/04/blog-post_63.html?m=1
রাষ্ট্রীয় শির্ক
https://shakawatarticle.blogspot.com/2020/04/blog-post_20.html?m=1
লা ইলাহা ইল্লাল্লার ব্যাখ্যা
https://shakawatarticle.blogspot.com/2020/04/blog-post_16.html?m=1
৩| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: পৃথিবীর চার ভাগের তিন ভাগ মানুষ কোরআন জানে না। পড়েও নি। কোথাও কোনো সমস্যা হচ্ছে নাতো।
৪| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ৯:১৯
নেওয়াজ আলি বলেছেন: মুসলিম হিসাবে পবিত্র কোরান পড়া অবশ্যই দরকার। এবং অর্থ জানলে আরো ভালো লাগবে পড়তে।
১২ ই ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:০২
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী. বলেছেন: আপনি ঠিক বলেছেন। জাযাকাল্লাহ খাইরান।
৫| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৩৬
এভো বলেছেন: কেননা আপনি স্ববিরোধী কথা বলছেন। আপনি বলেছেন যা দেখেন না তা বিশ্বাস করেন না
আমি কোথায় এমন কথা বলেছি ? আমি বলেছি কলেমা শাহদাতের কথা --- আমি সাক্ষী দিচ্ছি ---- এটা নহে হওয়া উচিৎ ছিল আমি বিশ্বাষ করি । কারন সাক্ষি হতে হোলে চোখের সামনে ঘটনাটা ঘটা দেখতে হয় । সেই ক্ষেত্রে কলেমা শাহদাত এমন হওয়া উচিৎ ছিল না --- আমি বিশ্বাষ করি যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো উপাস্য নেই। তিনি একা ও তার কোনো শরীক নেই। এবং আমি আরো বিশ্বাষ যে, মুহাম্মদ (সা: ) তার বান্দা ও রাসূল।------- এখানে সাক্ষ্য শব্দটা কি ভুল নহে ?
সাহাবি ওমর (রা.) হাজরে আসওয়াদের কাছে এসে তা চুম্বন করে বললেন, আমি অবশ্যই জানি যে তুমি একখানা পাথর মাত্র, তুমি কারো কল্যাণ বা অকল্যাণ করতে পারো না। নবী (সা.)-কে তোমায় চুম্বন করতে না দেখলে কখনো আমি তোমাকে চুম্বন করতাম না। (বুখারি, হাদিস : ১৫৯৭)
তাহোলে আপনি নবীর হাদিস না মেনে একজন বিখ্যাত সাহাবির হাদিস মানেন ? তাহোলে তো আপনি মুরতাদ কাফের হয়ে গেলে । তওবা করে কলেমা পড়ে পুনরায় মুসলমান হতে হবে ।
এবার দেখি নবী রসুলের হাদিস কি হাজরে আসওয়াদের ব্যাপারে--
যেভাবে কালো হলো : ‘হাজরে আসওয়াদ’ জান্নাতের মর্যাদাপূর্ণ একটি পাথর। বিশুদ্ধ সূত্রে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, হাজরে আসওয়াদ জান্নাতের পাথর। প্রথমে এটি দুধের চেয়েও অধিক সাদা ছিল। পরে মানুষের গুনাহ তাকে কালো করে দিয়েছে। (তিরমিজি, হাদিস : ৮৭৮)
মানুষের পাপ ধারণ : হাজরে আসওয়াদ মানুষের পাপ ধারণ করে। হাদিসে এসেছে, মানুষের গুনাহ যদি হাজরে আসওয়াদ ও মাকামে ইবরাহিমের পাথরকে স্পর্শ না করত তাহলে যেকোনো অসুস্থ ব্যক্তি তা স্পর্শ করলে (আল্লাহর পক্ষ হতে) তাকে সুস্থতা দান করা হতো। (সুনানে কুবরা, বাইহাকি ৫/৭৫)
চুমু দেওয়ার ফজিলত : শরিয়তে মর্যাদাপূর্ণ এই পাথরে সরাসরি বা ইশারার মাধ্যমে চুমু দেওয়ার বিধান আছে। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, এই দুটি রোকন (হাজরে আসওয়াদ ও রোকনে ইয়ামানি) স্পর্শ করা গুনাহগুলোকে মুছে দেয়। (তিরমিজি, হাদিস : ৯৫৯)
কিয়ামতে সাক্ষ্যদান : কিয়ামতের দিন হাজরে আসওয়াদের সাক্ষ্যদানের ক্ষমতাও থাকবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কিয়ামতের দিন এই পাথরকে উপস্থিত করা হবে। তার দুটি চোখ থাকবে, তা দিয়ে সে দেখবে; জবান থাকবে, তা দিয়ে সে কথা বলবে এবং সে এমন লোকের অনুকূলে সাক্ষ্য দেবে যে তাকে আদবের সঙ্গে চুমু দিয়েছে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৯৪৪)
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------
এই সব হাদিস গুলো কি প্রমাণ করে না , এই কালো পাথরের গুণা মাপ করার ক্ষমতা আছে বা গুণা মাপ পাওয়ার মাধ্যম ? গুণা মাপকারি একমাত্র আল্লাহ তালা , তাহোল কি ভাবে ঐ কালো পাথর মানুষের গুণা মাপ করে বা গুণা মাপের মাধ্যম হয়, কিন্তু হাদিসে দেখা যাচ্ছে ওটার গুণা মাপ করার ক্ষমতা আছে । এটা কি শিরক নহে ।
সুতরাং শিরক করা ইসলাম ধর্মের অংশ ।
১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:৩৭
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী. বলেছেন: মাশা আল্লাহ্ আপনি আমার চেয়ে বেশী জানেন। সুতরাং আমার এখানে কথা বলাটা বেয়াপি হবে। ধন্যবাদ।
৬| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:৪৭
রানার ব্লগ বলেছেন: লেখক বলেছেন: মাশা আল্লাহ্ আপনি আমার চেয়ে বেশী জানেন। সুতরাং আমার এখানে কথা বলাটা বেয়াপি হবে। ধন্যবাদ।
ভাই আপনার মন্তব্যখানি কেমন হয়ে গেলো না ? কেউ বেশি জানতেই পারে তাই বলে তার প্রশ্নের উত্তর দেয়টা কি সমুচীন নয় । আপনি এটা বলতে পারেন আমি আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে অপরাগ !!!
আপনি কিন্তু প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে এভো ভাইয়ের সমস্ত অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে নিলেন ।
এর আগে আমি আপনার পোস্টে একটা কমেন্ট করেছিলাম আপনি উত্তরে আমাকে নাস্তিক বানিয়ে ছেড়েছেন । আপনার মতের সাথে একমত না হলেই কি আপনি সকল কে নাস্তিক বলে সম্মধন করেন ?
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৩৭
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী. বলেছেন: হ্যাঁ আপনি ঠিকই ধরেছেন। আমার জ্ঞান যতটুকু নয় ততটুকু প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যাওয়াটাই আমি সমীচীন মনে করি। ব্লগিং করলেই যে আমার সবধরনের জ্ঞান থাকবে এমন নয়। আমি চাইনা কারো সাথে সংঘাতে জড়াতে।
আর হ্যাঁ আমার মতামতের সাথে একমত না হলেই যে নাস্তিক হবে এমন কখনোই নয়। বরং কুরআন হাদিসের আলোকে আপনার জ্ঞান চিন্তা চেতনা ইত্যাদি ইসলামের বাইরে গেলে তবেই আপনি এই জাতীয় কিছুতে দোষী সাব্যস্ত হতে পারেন। ব্যক্তিগতভাবে আমি কারো সাথেই তর্ক বিতর্কে যাই না বা যেতে ইচ্ছুক নই। কেননা তর্ক করার মতো জ্ঞান আমার নেই।
৭| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:২৫
রানার ব্লগ বলেছেন: যদি তাই হয় তাহলে জানুন বুঝুন পড়ুন । আপনি অনেক কিছু জেনে যাবেন ।
২০ শে ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:২৭
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী. বলেছেন: আল্লাহ আমাদের সবাইকে হিদায়াত দান করুন আমিন
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:৫৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: অনেক বিদআত এবং ছোট, বড় শিরকি কাজ আমাদের এই অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। রসুলকে (সা) সম্মান করতে গিয়ে আমরা অনেক সময় বাড়াবাড়ি করে ফেলছি যার কারণে শিরক পর্যন্ত হয়ে যাচ্ছে।
ইসলামে গণতন্ত্রের মত অধিকাংশের মতকে মানা জরুরী না। বরং কম লোক সমর্থন করলেও কোরআন, সুন্নাহর আলোকে যেটা সঠিক সেটাই মানতে হবে। ইসলামে সমাজের গ্রহণযোগ্য, ধার্মিক, প্রকৃত জ্ঞানী এবং প্রভাবশালী মানুষদের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সুফি মানেই বিপথগামী না। আধ্যাত্মিকভাবে উন্নত বহু ওলি আওলিয়া এসেছেন এই উপমহাদেশে অনেকে এই মাটিতেই জন্ম গ্রহণ করেছেন যাদের পরহেজগারি ছিল প্রশ্নাতীত। পরবর্তীতে কিছু বিপথগামী লোক অনেক শিরক ও বেদআত চালু করেছে। ঢালাওভাবে আল্লাহর ওলিদের নিয়ে সমালোচনা করা যাবে না। প্রকৃত ওলিদের সম্মান করতে হবে। ইমাম গাজ্জালি তার বই সমুহে
প্রকৃত ওলিদের ব্যাপারে লিখেছেন। শরিয়া বিরোধী কোন কাজ এই ওলিরা কখনও করেননি।
পূর্বপুরুষরা ভুল করেছে তাই আমিও ভুল করে যাব। এগুলি ভুল ধারণা।