নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার পরিচয় একজন ব্লগার, আমি সাহসী, আমি নির্ভীক, আমি আপোষহীন । যা বিশ্বাস করি তাই লিখি তাই বলি ।
সিলেটের শহরতলি কুমারগাঁও এলাকায় চোর সন্দেহে সামিউল আলম রাজনকে (১৩) পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর কয়েক দিন ধরে দেশের সর্বত্র এই নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। নানা জায়গায় চলছে নানান কর্মসূচি । প্রশাসন নড়েচড়ে বসেছে । একে একে গ্রেফতার হচ্ছে খুনিরা । একটা কঠিন বিচার যে হবে তাতে কোন সন্দেহ নাই । ফেসবুক টুইটারে চলছে পোষ্টের পর পোষ্ট প্রতিবাদ মুখর মানুষ নানা ভাবে রাগ ঝাড়ছে । কষ্টের প্রকাশ বহি:প্রকাশ করছে । সামিউল আলম রাজনের হত্যাকাণ্ডের ভিডিওটি যারা দেখেছেন - তাদেরকে সাহসী বলতেই হবে । কেননা এই ভিডিওটি দেখে সহ্য করার মতো সাহস অনেকেরই নেই । অন্তর আমার নেই । একবার সাউন্ড বন্ধ করে দেখার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু তা ও সহ্য করতে পারিনি এই পৈশাচিক নিষ্ঠুরতা সহ্য করতে । অনেকটা অপ্রকৃতিগ্রস্থ হয়ে গেছি । চোখের সামনে বারবার ভেসে উঠছে সামিউলের মিনতি ভরা আকুতি মাখা মুখের ছবি ।
সামিউল আলম রাজনের বাবার ভাষ্য অনুযায়ী ১২ লাখ টাকায় আসামীদের সঙ্গে রফাও করে ফেলেছিলেন একজন এসআই । কিন্তু সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় শুরু হয়ে যাওয়ার সেই টাকা আর হজম করার সুযোগ পায়নি সেই এসআই ।
যতবার সামিউলের প্রসঙ্গ উঠে ততবার কিছু প্রশ্ন মনের মধ্যে নাড়াচাড়া দিয়ে উঠে । কোন উত্তর পাই না । সামিউলের উপর যখন নির্যাতন করা হচ্ছিল তখন সেখানে অনেকে উপস্থিত ছিল , অনেক প্রত্যক্ষদর্শী ছিল তারা কেন প্রতিবাদ করেনি । ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে একটি বড় রাস্তার পাশে একটি বন্ধ দোকানের সামনে প্রকাশ্যে সামিউলের উপর উল্লাস করতে করতে নির্যাতন চালাচ্ছে পাষণ্ডরা । তাদের সংখ্যা বড় জোর পাঁচ থেকে ছয় জন । উপস্থিত মানুষ তাহলে কেন কোন প্রতিবাদ না করে কোন মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন ? সামিউলের আকুতি কেন তাদের মন গলাতে পারেনি ? তারা কেন তাকিয়ে তাকিয়ে একটি হত্যাকাণ্ড দেখেছে ? এ দায় সেই সময় সেখানে উপস্থিত দর্শকেরা/প্রত্যক্ষদর্শীরা এড়িয়ে যেতে পারে না । তাদের ও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা উচিত ।
ভিডিওটি ইউটিউবে প্রকাশ পাবার পর সারা দেশের মানুষ সোচ্চার হবার অনেক পরে টিভি চ্যানেলগুলো সেখানে পৌছাবার চরে কুমারগাঁওয়ের মানুষ প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠেছে । ফেসবুকে একজনের পোষ্টে দেখলাম আশে পাশের দশ গ্রামের মানুষ নাকি এক হয়ে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে । বলি এখন কেন আল্টিমেটাম ? তারা কেন আগে প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠেনি ? আল্টিমেটাম দিয়নি ? কিসের ভয়ে ? এ দায় তারা এড়াতে পারে না ।
বুঝে না বুঝে অনেকেই ফেসবুকে , ব্লগে পোষ্ট দিচ্ছেন, বাবা সমিউল আমায় ক্ষমা কর, আবার কেউ বলছে তুই ক্ষমা করিস না, কেউ লিখছে আমরা মানুষ না । আবার কেউ লিখেছে - এ হত্যাকান্ডের দায় আমাদের । সমাজের ভেতর লুকিয়ে থাকা সমাজ বিজ্ঞানী নামের কুতুবেরাও কঠিন কঠিন ভাষায় বিবৃতি দিচ্ছেন এই বলে যে, সমাজ পোঁচে গেছে, গলে গেছে, ধ্বংস হয়ে গেছে ইত্যাদি ইত্যাদি সবাই নিজেদের পাণ্ডিত্য জাহির করছে । অবস্থা এমন যতো কঠিন ভাষার প্রয়োগ ততো বেশি পাণ্ডিত্য । ততো সমাজিক পচা দুর্গন্ধ । আমি বলি অন্য কথা মানুষ হিসাবে আমাদের সমাজ ব্যবস্থা অনেক উন্নতি লাভ করেছে । যার ফলাফল হচ্ছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ মুখর মানব সমাজ । আর আপনারা কি না বলছেন সামাজিক অবক্ষয় হয়েছে ? দয়া করে নিজেদেরও উন্নয় ঘটান । মানুষ হিসাবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করুণ ।
আমার প্রশ্ন এই সকল পোষ্ট দাতাদের কাছে, আমরা কেন ক্ষমা চাইবো সামিউলের কাছে ? কেন অন্যের সস্তা সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করবো ? অন্যের হতাকান্ডের দায় আমরা কেন কাধে নেবো ? কেন নিজের ভাল মানুষী ফলাবার চেষ্টা করবো ? আমরা তো আমাদের সাধ্য মতো যথেষ্ট করছি । প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠেছি । পোষ্টের পোষ্ট লিখেছি স্ট্যাটাস দিচ্ছি । সরকার, মিডিয়া, প্রশাসনকে জাগ্রত করতে সক্ষম হয়েছি । আমরা আমাদের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করেছি এবং আমরা সফল হয়েছি । আমাদের প্রতিবাদের কল্যাণেই সামিউলের ঘটনাটি দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশের মানুষকেও প্রতিবাদী করে তুলেছে । আসামিরা গ্রেফতার হচ্ছে । ফাঁসিতেও চড়বে । তা হলে আমরা কেন ছয় সাত জন জানোয়ারের অপরাধের দায় কাঁধে নিয়ে ক্ষমা চাইবো ? আমরা প্রমাণ করেছি আমরা মানুষ এবং মানুষের মতোই আচরণ করেছি । ভবিষ্যতেও করবো । অনেকে হয়তো বলবেন, নিজেদের অসহায়ত্ব প্রকাশের জন্যই মানুষ এমন লিখছে বা বলছে । আমি বলবো, কে বলেছে আমরা অসহায় ? আমরা যদি সত্যিই অসহায় হতাম তা হলে প্রশাসন নড়েচড়ে বসতো না । আসামিরা গ্রেফতার হতো না । গুটি কয়েক অপরাধির জন্য আমরা নিজেদের দোষি ভাবতে পারি না । আমরা পারি প্রতিবাদ করতে,তাদের আইনের হাতে তুলে দিতে । এটাই আমাদের কর্তব্য ।
সমাজ বিজ্ঞানীদের কাছে আমার প্রশ্ন, আপনার কি ভাবে এতোটা নিশ্চিত হলেন, এদেশের সমাজ পোঁচে গেছে, গলে গেছে অবক্ষয়ের চূড়ান্ত পর্যায় পৌঁছে গেছে ? সমাজ যদি পোঁচে গিয়ে থাকতো তা হলে এতোটা প্রতিবাদ কি হতো ? মিডিয়া বা সংবাদ পত্রের কর্মীরা আপনাদের কাছে পৌঁছাবার আগে আপনারা কি কোন প্রতিবাদ করেছিলেন ? না কোন বিবৃতি দিয়েছিলেন ? কিছুই করেননি । কিন্তু মিডিয়া আপনাদের কাছে পৌঁছাবার পর যা ইচ্ছে তাই মন্তব্য করে দিলেন । সমাজ যদি পোঁচে গলে গিয়ে থাকতো তা হলে সামিউল হত্যাকাণ্ডটি নিয়ে আমরা প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠতাম না । যদি কেউ পোঁচে গলে গিয়ে থাকে সেটা আপনারা সরকারী সুযোগ সুবিধা ছাড়া কোন কিছুই ভাবতে পারেন না । একেক জন সমাজ বিজ্ঞানীর তকমা শরীরে লাগিয়ে থাকলেও সমাজের উপকার হয় এমন কিছুই করতে পারেননি ।
আমি ধন্যবাদ জানাবো সকল সোস্যালমিডিয়ার সঞ্চালক, ব্যবহারকারী ভাই, বন্ধু বোনদের যারা অন্তত একটি লাইক দিয়ে হলেও সামিউল হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করেছেন, করছেন এবং ভবিষ্যতেও করবেন । আমাদের এগিয়ে যেতেই হবে । সামিউল হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কোন ক্লান্তি নেই । আমাদের প্রতিবাদ চলছে চলবে যতোক্ষন পর্যন্ত না আসামিদের ফাসি হয় ।
১৪ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১:৪০
সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: আপনার সঙ্গে সহমত প্রকাশ করছি । সামিউল হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কোন ক্লান্তি নেই । আমাদের প্রতিবাদ চলছে, চলবে যতোক্ষন পর্যন্ত না আসামিদের ফাসি হয় ।
২| ১৪ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:৩১
মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: আজকে যদি খুনিরা নিজেদের ভিডিও টিউবে আপলোড না করতো তবে এত আষ্ফালনের কোন সুযোগ থাকতো না। পেপারের এক কোনায় হয়তো ছোট্ট আকারের একটি নিউজ হত এবং তাতে সে চোর হিসাবেই চিহ্নিত হতো...এটাই কি পচনশীল সমাজের পরিচয় নয়? যাত্রাপালার বিবেকের মত সকল পোস্ট, স্ট্যাটাস এ সবই দিতে পারছেন ওই খুনিদের ভিডিওর কারনে @ লেখক
আজকে যদি উপস্থিত জনতার কেউ ভিডিও করে খুনিদের ধরিয়ে দিত তবে আমি লেখকের সাথে কিছুটা একমত পোষণ করতে পারতাম। ধন্যবাদ।
১৬ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:৩০
সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: তোলপাড় চলছে সর্বত্র। ঘটনা তদন্তে ঢাকা থেকে ছুটে এসেছেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারা। শিশুসদনের (উত্তর) কম্পাউন্ডার দুলাল মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতেই বরখাস্ত আদেশ কার্যকর করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ ১১টি দপ্তরে অনুলিপি পাঠনো হয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অন্যদিকে নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ধারণ করার অভিযোগে এনে শিশুসদনের এক এমএলএসএসকে একদিনের মধ্যে কোয়ার্টার ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এখানে দেখুন - যে কিনা ভিডিও ধারণ করে সবাইকে বিষয়টি জানালো তার বিরুদ্ধে ও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে । তার অপরাধ ব্যাটা তুই সবাইকে জানালি কেন ? বলুন জনগন জাগবে কোন সাহসে ?
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৩
নৈশ শিকারী বলেছেন: এমন ভাবে অথবা এরচেয়ে কঠিন ভাবে বহু রাজনের মৃত্যু এই দেশে পূর্বে হয়েছে; কিন্তু সঠিক ভাবে বিচার হয়নাই কারন, এযুগের বিচার ব্যাবস্থা সমাজের বিত্তশালীদের হাতে।আজ হয়তো খুনিরা পুলিশ কাস্টরিতে আছে কিন্তু কাল তারা ঠিকই জামিন নিয়ে বুক ফুলিয়ে এই সমাজেই চলবে ফিরবে কিন্তু আমাদের কিছুই করার থাকবেনা, যারা ১২লাখ টাকা দিয়ে এ.এস.আই কে কিনতে পারে তারা হয়তো আদালতের বিচারককেও কিনে নিয়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমান করে খালাস পেয়ে যাবে। আমাদের প্রতিবাদের তীব্রতাটাও প্রথম মাসখানেক থাকে কিন্তু তারপর আমরাও হয়তো এই রাজনের কথা ভুলে যাব, আর এটাই বাস্তবতা, এখন একটাই দাবী আমরা জানাতে পারি তা হলো, রাজনের হত্যাকারীদের ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত কোনও ভাবেই আমাদের প্রচারণা বন্ধ করা যাবেনা আর এই ব্যাপারে প্রত্যেকটা পাবলিক টিভি চ্যানেলের অগ্রগামী ভূমিকা পালন করতে হবে, প্রত্যেকটা জানোয়ার ফাঁসিতে না ঝুলা পর্যন্ত।