নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে \"আমার কবিতা নামে\" আমি ব্লগিং করি মূলত নিজের ভেতরে জেগে উঠা ব্যর্থতা গুলোকে ঢেকে রাখার জন্য । দুনীতিবাজ, হারামখোর ও ধর্ম ব্যবসায়িদের অপছন্দ করি ।

সাখাওয়াত হোসেন বাবন

আমার পরিচয় একজন ব্লগার, আমি সাহসী, আমি নির্ভীক, আমি আপোষহীন । যা বিশ্বাস করি তাই লিখি তাই বলি ।

সাখাওয়াত হোসেন বাবন › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাসিনার হাতে অস্ত্র ছিলো কিন্তু বুদ্ধি ছিলো না

২২ শে আগস্ট, ২০২৪ সকাল ১১:৫০



কোটা বিরোধী আন্দোলন তখন তুঙ্গে । পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেরা তখনো আন্দোলনে নামে নাই । কেননা তারা এসব কোটা ফোটার ধার ধারে না । তারা প্রায় সকলেই উচ্চ মধ্যবিত্ত ও ধনী পরিবারের সন্তান । পাশ করে বিদেশে পাড়ি দেবে । রেমিটেন্স পাঠাবে । সেই টাকা দিয়ে সাদ্দামের মতো চুতিয়া ছাত্র নেতারা হেডাম দেখায় । লুটে পুটে খাবে দিপুমনির মত মন্ত্রীরা। সরকারী চাকর নামের চোর বাটপারগুলি বিদেশে অর্থ পাচার করে নিজেদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করবে ।

যা বলছিলাম , কোটা বিরোধী আন্দোলন তখন তুঙ্গে । এবং তা শুধু ঢাবি'সহ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছিলো । কেউ খাবে, কেউ খাবে না, তা হবে না তা হবে না । কোটায় ৫৬% নিয়োগের পর বাকি যা থাকে তাও মেধায় যোগ্যতায় না মিলে বিশেষ নির্দেশনায় বিশেষ একটি ধর্মের লোকজন হাতিয়ে নিতো । এটা ছিলো ওপেন সিক্রেট । এ দেশের মাত্র ৫% ছেলে মেয়েরা ভাগ্যে ঝুটে সরকারী চাকরি । তার জন্যে ও দিতে হয় ঘুষ । (বিসিএস টাকার বিনিময়ে কিভাবে নিয়োগ হয় তা তো এখন সবার জানা । ) এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে অতিষ্ট দেশের সাধারণ মানুষ তাই ছাত্রদের কোটা আন্দোলনকে সমর্থন করে আসছিলো । একটি জিনিস খেয়াল করলে দেখতে পাবেন । কোটা আন্দোলনে মৃতের তালিকার সংখ্যা লঘুদের নাম নেই । অথচ গত ১৬ বছরে তারাই বাংলাদেশর সবচেয়ে বেশি নিয়োগ পেয়েছে । অর্থ পাচার, খুন , হত্যা তাদের হাত দিয়েও কম হয়নি । তার পরেও তারা নাকি এ দেশে সুখি না ।

এখন আসছি হাসিনা কি করলে ক্ষমতায় আরো বছর পাঁচেক থাকতে পারতো সেই আলোচনায় ।


যা বলছিলাম , কোটা বিরোধী আন্দোলন তখন তুঙ্গে । এর মধ্যে কাউয়া কাদের উরফ ওবায়দূল কাদের এক বক্তব্যে হুংকার দিলেন তার ছাত্রলীগ আছে; তারা কোটা বিরোধী রাজাকারের বাচ্চাদের মোকাবেলা করবে । তারা না পারলে যুবলীগ আছে, পুলিশ আছে , বিজিবি আছে র‍্যাব আছে । সর্বশেষ হ্যাঁ , মিলিটারি আছে । হেফাজতে কে যখন শাপলা চত্বরে সাইজ করা গেছে তখন এরা কোন বিষয় না । মাদ্রাসার ছাত্রদের বিপদের দিনে পাবলিক বা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা এগিয়ে যায়নি । এবার তারাও আসবে না । উলামলীগ নেতারা তা নিশ্চিত করেছে । কারণ হাসিনা ততদিনে হেফাজতি আম্মা উপাধি নিজের ঝুলিতে নিয়ে নিয়েছে । তাই আন্দোলন দমন কোন ব্যাপার না । একটা রাত পাইলেই সব ঠাণ্ডা করে ফেলা যাইবো ।

কাউয়া কাদেরের নির্দেশে, যুবলীগ ,ছাত্রলীগ এক সাথে ঢাবিতে ছাত্র ছাত্রীদের উপর হামলে পড়লে । পরিস্থিতি অন্যদিকে মোড় নেয় । পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা ছত্র ভঙ্গ হয়ে পড়ে । হল ছেড়ে যেতে বাধ্য হয় । সরকারের পলক মিয়া ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে সকলকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে । ফলে আন্দোলন ঠাণ্ডা হয়ে যায় । ঢাবিসহ সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা পিছিয়ে যায় ।

কিন্তু ঢাবিতে ছাত্রছাত্রীদের উপর হামলার প্রতিবাদে এবার রাস্তায় নেমে আসে , পাবলিক বিশ্ববিদ্যায়ের ছাত্রছাত্রীরা । যাদের ফার্মের মুরগী বলা হয় । তারাই হাল ধরে আন্দোলনের । আবারও মোড় ঘুরে যায় আন্দোলনের । তাদের সাথে যোগ দেয় মাদ্রাসা আর স্কুল কলেজের ছেলে মেয়ে ও তাদের অভিভাবকেরা । প্রশ্ন হচ্ছে, স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকেরা কেন এ আন্দোলনে যোগ দিলেন ? এর কারণ হচ্ছে, ৯৫% স্কুলের অভিভাবকেরা সরকারের শিক্ষা নীতি নিয়ে বিরক্ত ছিলেন । তারা মনে প্রাণে বিশ্বাস করতেন হাসিনা সরকার ভারতের ইশারায় এদেশ শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে ।

যা বলছিলাম , প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সাথে মাদ্রাসা, স্কুল , কলেজে পড়ুয়াদের পিতা মাতারা যোগ দেওয়ায় আন্দোলন আবার দাবানলে রূপ নেয় । এখানে বলে রাখা ভালো, বিএনপি কিন্তু ঘরে বসে পরিস্থিতি তখনো পর্যবেক্ষণ করছিলো । যেমন করেছে গত ১৬ বছর । বিএনপির অনেক বড় বড় নেতা হাসিনা সরকারের কাছ থেকে টাকা খেয়ে দলটাকে অনেক আগেই পঙ্গু করে ফেলেছিল । তারা তাই ছাত্র-জনতার এই আন্দোলনে যোগ দেয়নি । তবে বিএনপির তৃণমূল নেতা, কর্মীরা ছাত্র জনতার সাথে মিশে সরাসরি আন্দোলনে যোগ দেয় । বাকি ইতিহাস তো সবার জানা । এসব বলার জন্য আজ ব্লগ লিখছি না । আমার ব্লগ লেখার বিষয় হচ্ছে, "কি করলে হাসিনা ৫ই আগস্টের পরেও ক্ষমতায় থাকতে পারতেন । এবার সরাসরি সেদিকে দৃষ্টিপাত করবো ।"

হাসিনার যতো ভুল -

এক . হাসিনার প্রথম ভুল ছিল পলক মিয়া যখন ইন্টারনেট বন্ধ করলো পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত আবার ইন্টারনেট চালু করা । এ জন্য প্রয়োজনে এক বছর যদি ইন্টারনেট বন্ধ রাখতে হতো তাই রাখা তার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য দরকার ছিল । দেশের ক্ষয় ক্ষতি নিয়ে ভাবার সময় স্বৈরাচারের দরকার কি , তাকে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হবে এটাই বড় কথা ।

দুই . হাসিনা মাত্রা রিক্ত ভবে আমলাদের উপর নির্ভরশীল হয়ে উঠেছিলো । তিনি ভেবেছিলেন , বারবার রাতের নির্বাচনের মতো এসপি ডিসিরা , সরকারী চোর বাটপার বেজন্মা কর্মকর্তারা তাকে রক্ষা করবে । এখানে বলে রাখা ভালো , হাসিনা কিন্তু কখনোই সেনা বাহিনীকে বিশ্বাস করতেন না । এ জন্য শেখ রেহানার ভাসুরকে দিয়েছিলেন সেনা বাহিনীর দায়িত্ব । তিনি নির্ধারণ করতেন সেনা কর্মকর্তাদের ভাগ্য । ( কিন্তু এটা সেনা বাহিনী কতদিন মানবে । শেখ হাসিনার বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ফলে এমনিতেই সেনা বাহিনীর ভাবমূর্তি যথেষ্ট খারাপ হয়েছে । বিডিআর হত্যাকাণ্ডে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের বিচার এখনো হয়নি । ভারত ও হাসিনা যে এর সাথে জড়িত এটা তো সকলের মুখে মুখে ছিলো ।

তিন. কারফিউ দিয়ে সেটা তুলে নেওয়া ছিল সেখ হাসিনার আর একটা ভুল সিদ্ধান্ত ।

চার . হাসিনার সর্বশেষ ভুলটি ছিল - দলের হেভিওয়ের চোর বাটপারগুলিকে দূরে সরিয়ে তিনি গন ভবনে একা অবস্থান করছিলেন । এক পুলিশ ছাড়া অন্য সবাই ইউ টার্ন নিয়ে ছিলো । সেনা প্রধান তো সেনা কর্মকর্তাদের সাথে এক মিটিং বলেই দিয়েছেন , পুলিশ কেন এতো বাড়াবাড়ি করে এতো এতো মানুষ হত্যা করলো ? সব দায় পুলিশের । সেনা অফিসারেরা ছাত্র জনতার বিরুদ্ধে গুলি চালাতে অস্বীকার করে সেনা প্রধানের উপর চাপ প্রয়োগ করলে , শেখ হাসিনার লতায় পাতায় আত্মীয় হলেও তিনি পরিস্থিতি সহজেই অনুমান করে ফেলেন । আইয়ুব বাচ্চুর গান ধরেন আর বেশি জ্বালালে উড়াল দেবো আকাশে ।

পাঁচ : ডিভি হারুন কে ডিভি থেকে সরানো ও ছাত্রদের ছেড়ে দেওয়া । এতে একদিকে যেমন পুলিশের মনোবল ভেঙ্গে যায় অন্যদিকে তেমন আন্দোলন চাঙ্গা হয়ে উঠে ।

ছয় : সেনা প্রধানকে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করতে ব্যর্থ হওয়া । যেহেতু সেনা প্রধান বলেই দিয়েছিলেন ,এই পরিস্থির জন্য পুলিশ দায়ী । হাসিনা তৎক্ষনাত সেনা প্রধানকে প্রধান করে কমিটি গঠন করে নিজেকে বাচাতে পারতেন ।

সাত : . হাসিনার উচিত ছিল সকল মন্ত্রী আমলাদের নিয়ে গণভবনে বসে বিশেষ সেল গঠন করে আন্দোলন মোকাবেলা করা । এক পুলিশ,বিজিপি ছাড়া অন্যকোন বাহিনীই হাসিনার পক্ষে অস্ত্র হাতে নেয়নি । কিন্তু হাসিনা যদি পুলিশের সহায়তায় নিজের এমপি, মন্ত্রীদের নিয়ে গন ভবনে বসে পুরো আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ করতে তাহলে তাকে দেশে ছেড়ে পালাতে হতো না । কিন্তু অতি অহংকারী এই পিশাচ রমণী মনে করেছিলো তার কাউকে লাগে না । হাসিনা পালায় না । কিন্তু কিন্তু শেষ মেশ পালিয়েই গেলেন । শুধু কি তাই ধ্বংস করে দিয়ে গেলেন দেশ ও চেতনাখোরদের বংশধরদের ।

পরিশেষে বলাই যায় ,হাসিনার হাতে অস্ত্র ছিলো কিন্তু বুদ্ধি ছিলো না ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.