নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিঃসীম নীল আকাশে পাখী যেমন মনের আনন্দে উড়ে বেড়ায়, কল্পনার ডানায় চড়ে আমিও ভেসে চলেছি মনের আনন্দে--রূঢ় পৃথিবীটাকে পিছনে ফেলে।

খেয়ালের বশে কোন পথে চলেছো পথিক...

শামছুল ইসলাম

পাখী ডানায় ভর করে মুক্ত নীল আকাশে মনের আনন্দে উড়ে বেড়ায়, আমিও কল্পনার ডানায় চড়ে মনের গহীন আকাশে .......

শামছুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া

৩০ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ১০:৩৫

তারিখ: ২৬ মার্চ, ২০২২
.
লাল-সবুজের পতাকাটা উড়ছে। রূপনগর আবাসিকের ২৫ নম্বর রোডের শেষ সীমানায় পত পত করে উড়ছে। মুগ্ধ হয়ে দেখি। ক্লিক ক্লিক... । মনের জানালা পেরিয়ে মোবাইলে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশের হৃদয়, লাল-সবুজ পতাকা।
.


iআমার বাসা মিরপুর আরামবাগ আবাসিকে। সেখান থেকে ১৫ মিনিট পশ্চিম দিকে হেঁটে এসে রূপনগর আবাসিকে পৌঁছেছি সকাল ৬:১৫ তে। আরামবাগ খালের মতো রূপনগর খালের দুই পাশেও গড়ে উঠেছে স্থাপনা। সরু খালে স্রোত নেই-মৃত প্রায়। কালো ঘোলা নোংরা জলে ময়লার আস্তরণ। দেখি একটা কুকুর ঘুমিয়ে আছে খালের পাড়ে। দেখে খুব মায়া হলো। ক্লিক ক্লিক...। মনের জানালা গলে মোবাইলে।
.


সামনে সরু একটা পায়ে চলা পথ আরো পশ্চিমে চলে গেছে। যাব কি যাব না ভাবতে ভাবতে পা বাড়ালাম। টিনের কিছু অস্থায়ী ঘর চরম গরিবি হালে বিরাজমান। এখানেও মানুষ থাকে। তার পাশ দিয়ে চলেছি। মনে হয় দখল কায়েম রাখতে গরিব মানুষদের এখানে থাকতে দেয়া হয়েছে। এঁকে-বেঁকে পথের শেষে এসে দেখি এক বাড়ির আঙিনা। এবার কোন দিকে যাবো ভাবছি। দেখি এক যুবক দেওয়াল ঘেরা সীমানা প্রাচীরের মধ্যে একটা গেটের ফাঁক গলে নতুন এলাকায় চলে যাচ্ছে। আমিও তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্রবেশ করলাম ।
.

কালো-ঘোলা জল কোথায় উধাও। দূরে দেখতে পাচ্ছি স্বচ্ছ পানি। চারিদিকে গাছ আর গাছ – সবুজের সমারোহ। মনের মধ্যে উদয় হলো শৈশব, কৈশোর, যৌবনের প্রিয় জায়গা ধানমণ্ডি লেক। মিরপুরে এসেছি ২০১৬ এর সেপ্টেম্বরে। কিসের যেন একটা অভাব অনুভব করেছি সবসময় । আজ মনে হলো, সবুজের মাঝে এক চিলতে স্বচ্ছ পানির প্রবাহ, আর পানির বুকে সবুজের ছায়া – অনেকদিন দেখিনি। ক্লিক ক্লিক...। মনের জানালা গলে মোবাইলে।
.
[



সরু রাস্তা চলে গেছে দূরে – বহু দূরে। দুই পাশে অসংখ্য গাছের সারি। সবুজের হাতছানি আমায় ডাকছে। কিছু দূর এসে সাইন বোর্ড পড়ে বুঝতে পারলাম এটা জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান। আশির দশকে বন্ধুদের সাথে কয়েকবার এসেছিলাম। সেসব স্মৃতি বিস্মৃতির কোলে কোথায় হারিয়ে গেছে।
শাল/গজারী বনের ভিতরে হারিয়ে যেতে যেতে মন পড়ছে গাজীপুরের কথা। একসময় আশি-বিরাশির দিকে পিকনিক করতে গিয়েছি। হারিয়ে যাবার নেই তো মানার সেই সময়টা যেন ফিরে ফিরে আসে। ক্লিক ক্লিক...। হৃদয়ের জানালা গলে মোবাইলে।
.




উদ্যানটাকে বিভিন্ন সেকশনে ভাগ করা হয়েছে। আমি ঢুঁকেছি সেকশন ৯ দিয়ে – শাল/গজারী বনের ভিতর দিয়ে। সেকশন-৯ এর আরো একটা নাম আছে – অশোক ছাতিয়ান পান্থপাদর। সেকশন-৬ এ আছে ঘাসের সবুজ চত্বর। চত্বরের মাঝখানে মৌসুমী ফলের বাগান। সেকশন -৭ ও সবুজ চত্বর, তবে মাঝখানে মৌসুমী ফুল আর পাতাবাহারের সমারোহ। নতুন পাতার আগমনে সবুজ প্রকৃতিতে প্রাণের স্পন্দন। ঝরাপাতায় ভরে গেছে সবুজ প্রান্তের অনেকটাই। এই যে একের বেদনাময় প্রস্থান আর তার পরপর ই অন্যের উচ্ছ্বাসময় আগমন, শুধু প্রকৃতি নয়, আমাদের জীবনেও তারই প্রতিধ্বনি। ক্লিক ক্লিক...। মনের জানালা গলে মোবাইলে।
.




একরাশ মুগ্ধতা নিয়ে পথ চলছি। মুগ্ধ হবার আরো কিছু বাকি ছিল। বাঁধানো পুকুরের ঠিক মাঝখানে ছোট্ট দ্বীপটা দেখে মনটা কানায় কানায় ভরে গেল। ঠিক এমনি একটা দ্বীপ ধানমণ্ডি লেকেও আছে। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষেরা ভীড় করেছে। কেউ দৌঁড়াচ্ছে, কেউ হালকা ব্যায়াম করছে। পছন্দ মতো জায়গা বেছে নিয়ে শুরু করে দিলাম ক্লিক ক্লিক...। হৃদয়ের জানালা গলে মোবাইলে।
.



বেশ কিছুদিন হালকা দৌঁড়ানো হয়নি। কারণ আরামবাগ মসজিদ সম্প্রসারণের কাজ চলছে। যেখানে ইটের ছোট টুকরা নিয়ে আমি আপন মনে খেলতাম, সেখানে এখন ইট বিছানো। তাই উদ্যানের খেলা জায়গায় কিছুক্ষণ দৌঁড়াই। দ্বীপের মাঝখানে যাবার গেটটা দেখলাম বন্ধদ্বীপের মাঝখানে যাবার গেটটা দেখলাম বন্ধ। দ্বীপ ও তার চারপাশের মনোরম প্রকৃতিকে ধারণ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। ক্লিক ক্লিক...। মনের জানালা গলে মোবাইলে।
.



i
আজ স্বাধীনতা দিবসের ছুটি এবং শনিবার। মনে মনে ঠিক করি, প্রতি শুক্র- শনিবারে ছুটির ফাঁদে ফেলবো এই উদ্যানকে। যখন কোথাও একটা দরজা বন্ধ হয়ে যায়, অন্য কোথাও আর একটা দরজা খুলে যায়। সেই খোলা দরজাটা একটু কষ্ট করে খুঁজে নিতে হয়। খোলা দরজাটার সন্ধান আমি পেয়ে গেছি।
.
আরো অনেক কিছু লেখার ছিল। কিন্তু ঘুম টানছে আমাকে। সুতরাং...
[

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ১২:৫৭

শাহ আজিজ বলেছেন: ওদিকটায় আমার যাওয়া হয়নি । আরামবাগের এদিকে হাঁটাহাঁটি করি । চিড়িয়াখানার দিকে যেতে একটা মোড় আছে । মোড়ের সেই বাড়িতে একটা অদ্ভুত ডাল ছড়ানো আম গাছ । তাতে হাজার হাজার ছোট পাখীর কলতানে অদ্ভুত চোখে তাকিয়ে থাকতে হয় । গাছটা কেটে ফেললে বাস্তুহীন হবে পাখিরা । টেনশন শুরু হয়ে গেল ।

৩০ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ২:২৩

শামছুল ইসলাম বলেছেন: আজিজ ভাই, আমিও আরামবাগেই হাঁটাহাঁটি করি। সেদিন ছুটির দিন থাকায় ভাবলাম, যাই, যেদিকে দু'চোখ যায়। মোড়টা পেরিয়েই গিয়েছি, তবে গাছ ও পাখিদের খেয়াল করা হয়নি। আপনার টেনশন দেখে ভালো লাগছে - কিছু মানুষ এখনো মানবিক আছে।

২| ৩০ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ২:৫৭

রাজীব নুর বলেছেন: আমার মনে হয় ঢাকা শহরের এমন কোনো এলাকা বাদ নেই যেখানে আমার পা পড়েনি।

৩০ শে মার্চ, ২০২২ বিকাল ৩:০৭

শামছুল ইসলাম বলেছেন: রাজীব ভাই দেখছি ঢাকা শহরের ইবনে বতুতা।

৩| ৩০ শে মার্চ, ২০২২ বিকাল ৩:২৩

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আপনার কাব্যিক বর্ণনা আমাকে নষ্টালজিক করে দিল। আপনার বর্ণনার কোন কোন এলাকা নিয়ে আমারও কিছু অম্ল-মধুর স্মৃতি আছে। সেগুলো হাতড়াতে হবে কোন এক ছুটির দিনে।

আমাদের এখানে অফিসিয়ালী বসন্তকাল শুরু হয়েছে। যেসব গাছপালা মরার মত শুধু ডালপালা ছড়িয়ে দাড়িয়েছিল এতদিন, তাতে নতুন প্রানের ছোয়া লেগেছে। একটা স্যাম্পল দিলাম। এ'ভাবেই নতুন করে জীবন শুরু করতে হয়........গাছদের কাছ থেকে এটা আমাদের শেখা উচিত!

৩০ শে মার্চ, ২০২২ বিকাল ৩:৩৩

শামছুল ইসলাম বলেছেন: কি দারুণ লাগছে।

ঠিক বলেছেন, গাছদের থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।

আমি আপন মনে পথ চলতে চলতে সবুজ নতুন গজানো পাতায় হাত বুলাই। কি যে ভালো লাগে।
এতো সবুজ, সতেজ - কি বিশাল প্রাণপ্রাচুর্যে ভরপুর।

৪| ৩১ শে মার্চ, ২০২২ রাত ১:৪০

ধূসর সন্ধ্যা বলেছেন: ছবি আর বর্ণনা চমৎকার ।

৩১ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ৯:০৯

শামছুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ ধূসর ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.