নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বলতে চাই

সামছুল কবির মিলাদ

আমি মুক্ত আমি স্বাধীন

সামছুল কবির মিলাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোরবানির শিক্ষা

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১:০০


পবিত্র ঈদুল আযহা মুসলিম জাতির অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। এর অপর নাম কোরবানি। আরবী ‘কুরবুন’ থেকে ‘কোরবানি’ শব্দের উৎপত্তি। যার অর্থ ত্যাগের মাধ্যমে নৈকট্য লাভ। প্রতিবছর চান্দ্রমাসের ১০ যিলহজ অফুরন্ত আনন্দ সওগাত ও ত্যাগের উজ্জ্বল মহিমা নিয়ে ঈদুল আযহা বিশ্বের মুসলমানদের নিকট উপস্থিত হয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্ পাক ইরশাদ করেন, ‘তোমার প্রতিপালকের জন্য নামায পড় এবং কোরবানি কর।’ (সূরা আল-কাউসার:২)

হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, সাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ্ (সা.)কে জিজ্ঞাসা করেন, ‘এ কোরবানিগুলো কি? তিনি জবাব দিলেন, তোমাদের পিতা ইব্রাহিমের (আ.) সুন্নত।’ (ইবনে মাযাহ)

ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদ পালনের সঙ্গে একটি অনন্য পরীক্ষার ঘটনা বিজড়িত। আজ থেকে প্রায় পাঁচ হাজার বছর পূর্বে মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহিম (আ.) এর মাধ্যমে এ ধর্মীয় অনুষ্ঠান শুরু হয়। হযরত ইব্রাহিম (আ.) এর জান-মাল ছিল আল্লাহ্ তা’আলার সন্তুষ্টি লাভের জন্য নিবেদিত। হযরত ইব্রাহিম (আ.) সর্বাপেক্ষা প্রিয়বস্তু কোরবানির জন্য আল্লাহ্ পাক কর্তৃক আদিষ্ট হন। এটি ছিল হযরত ইব্রাহিম (আ.) এর জীবনের কঠোরতম অগ্নিপরীক্ষা। নতশিরে এ নির্দেশ মেনে নিয়ে প্রিয়তম সন্তান ইসমাঈলকে (আ:) কোরবানি করতে উদ্যত হলেন তিনি। আল্লাহ্ পাক হযরত ইব্রাহিম (আ.) এর কোরবানি কবুল করলেন। তরুণ ইসমাঈল (আ.) যবেহ হলেন না, ইসমাঈলের স্থলে বেহেশত থেকে আনিত দুম্বা যবেহ হয়ে গেল আল্লাহর কুদরতে। আল্লাহ্ তা’আলার এরূপ নির্দেশের মাধ্যমে হযরত ইব্রাহিম (আ.) এর খোদাপ্রেমের নিষ্ঠা যাচাই করতে চেয়েছিলেন। হযরত ইব্রাহিম (আ.), বিবি হাজেরা ও ইসমাঈল (আ.) খোদাপ্রেম ও আত্মত্যাগের এ চরম পরীক্ষায় পূর্ণাঙ্গভাবে সফল হয়েছিলেন।

হযরত ইব্রাহিম (আ.) বলিষ্ঠ কণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘নিশ্চয়ই আমার নামায, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও মৃত্যু সব কিছুই বিশ্বপ্রতিপালক আল্লাহর জন্য নিবেদিত।’

সেই আশ্চর্যপূর্ণ ঘটনা স্মরণ করে প্রতিবছর মুসলমানগণ ঈদুল আযহা উদযাপন করে থাকেন। যিলহজ চাঁদের দশম তারিখে জামাতে ঈদুল আযহার নামায আদায় করেন তারা। এরপর মহান সৃষ্টিকর্তার নৈকট্যলাভের জন্য মুসলমানগণ গরু, ছাগল, ভেড়া, উট বা দুম্বা প্রভৃতি পশু কোরবানি করেন।

পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে মুসলমানগণ শুধু আনন্দ উপভোগ করেন না, দীন দুঃখীদের নির্দিষ্ট পরিমাণ কোরবানির গোশত, রুটি ও চামড়া বিক্রয়লব্ধ অর্থ দান করে প্রচুর পুণ্য অর্জন করেন। সমাজের গরীব-দুঃখী মানুষের মন সেদিন আনন্দে আহ্লাদিত হতে থাকে।

মানুষের জীবনে সকল জিনিসের চেয়ে আল্লাহ্ এবং তাঁর নির্দেশকে সর্বাগ্রে স্থান দেওয়ার শিক্ষা রয়েছে এ কোরবানিতে। আল্লাহ্ রাববুল আলামীনের সন্তুষ্টির জন্য জীবনের প্রিয়তম বস্তুকে হারাতে হলেও তা থেকে পিছিয়ে যাওয়া যাবে না। এ মহান আত্মত্যাগের উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই মুসলিম উম্মাহর মাঝে কোরবানি প্রচলন হয়।

কাম, ক্রোধ, লোভ, লালসা প্রভৃতি খোদাপ্রেম বিরোধী রিপুগুলোকে আল্লাহ্ তা’আলার নির্দেশ অনুযায়ী বশ ও দমন করার শিক্ষা রয়েছে এ কোরবানিতে। প্রতিবছর ঈদুল আযহা মুসলিম জাতির ঈমানী দুর্বলতা, চারিত্রিক কলুষতা দূর করে ত্যাগের উজ্জ্বল মহিমায় তাদের ঈমানী শক্তিকে বলিয়ান, নিখুঁত ও মজবুত করে। মুসলমানগণ এ কোরবানির মাধ্যমে সমাজে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার দীক্ষা নেয়।

ঈদুল আযহার যে কোরবানি তার মাধ্যমে মানুষের মনের পরীক্ষা হয়, ঈদের মধ্যে আছে সাম্যের বাণী, সহানুভূতিশীল হৃদয়ের পরিচয়। পরোপকারের ও ত্যাগের মহান আদর্শে অনুপ্রাণিত হয় মানুষের মন। এই মর্মে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্ পাক ইরশাদ করেন, ‘কোরবানি দেওয়া জীবের রক্ত-মাংস কোনটাই আল্লাহর নিকট পৌঁছে না, বরং পৌঁছে তোমাদের খোদাভীতি ও আন্তরিকতা।’

কোরবানির মাধ্যমে মুসলমানরা সমাজের বুক থেকে অসত্য, অন্যায়, দুর্নীতি ও অশান্তি দূর করার জন্য নিজের সর্বস্ব বিলিয়ে দেওয়ার প্রেরণা লাভ করে।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘কোরবানী’ কবিতার কয়েকটি লাইনেও এর ফজিলত ও শিক্ষা ফুটে উঠেছে-

‘ওরে হত্যা নয় আজ ‘সত্য-গ্রহ’ শক্তির উদ্বোধন!

দুর্ব্বল ! ভীরু ! চুপ রহো, ওহো খাম্খা ক্ষুব্ধ মন!

ধ্বনি ওঠে রণি’ দূর বাণীর,

আজিকার এ খুন কোরবানীর!

ঐ খুনের খুঁটিতে কল্যাণ-কেতু, লক্ষ্য ঐ তোরণ,

আজ আল্লার নামে জান্ কোরবানে ঈদের পূত বোধন!

ওরে হত্যা নয় আজ ‘সত্য-গ্রহ’ শক্তির উদ্বোধন!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ৯:০৬

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ধন্যবাদ :)

ঈদ মুবারক ভ্রাতা !:#P

২| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১১:৪৬

মামুন রশিদ বলেছেন: ঈদ মোবারক ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.