নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্নপূরণই জীবনের একমাত্র লক্ষ্য নয়।তাই বলে স্বপ্নকে ত্যাগ করে নয়,তাকে সঙ্গে নিয়ে চলি।ভালো লাগে ভাবতে, আকাশ দেখে মেঘেদের সাথে গল্প পাততে, বৃষ্টি ছুঁয়ে হৃদয় ভেজাতে, কলমের খোঁচায় মনের অব্যক্ত কথাগুলোকে প্রকাশ করতে...

শাওন আহমাদ

এটা আমার ক্যানভাস। এখানে আমি আমার মনের কোণে উঁকি দেয়া রঙ-বেরঙের কথাগুলোর আঁকিবুঁকি করি।

শাওন আহমাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মা ছেলের বিষণ্ণ-প্রসন্ন ডায়েরি

১৮ ই মে, ২০২৩ দুপুর ২:০৫



ছেলেবেলা থেকেই আমার অন্যান্য ভাইয়ের তুলনায় মায়ের সাথে আমার সম্পর্ক ছিলো অন্যরকম। আমি আমার মায়ের সান্নিধ্য পাগলের মতো উপভোগ করতাম, অন্যদিকে আমার মাও আমার জন্য ব্যাকূল হয়ে থাকতেন। আমার মায়ের ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমার সমস্যা ছিলো, অতিরিক্ত গরম-ঠান্ডায় অসুখের মাত্রা বেড়ে যেতো; এ কারণে তিনি বছরের অনেকটা সময় শয্যাশায়ী থাকতেন। যখন তিনি শয্যাশায়ী থাকতেন তখন তার দিন-দুনিয়ার খবর থাকতো না, দিনমান বালিশে মাথা রেখে, হামাগুড়ি দেয়ার ভঙ্গিতে উপড় হয়ে শুয়ে থাকতেন; ঘনঘন শ্বাস নিতেন আর উচ্চস্বরে কেশে রাত-দিন এক করে ফেলতেন। কখনো কখনো কাশির মাত্রা এতো বেড়ে যেতো যে, কাশির মাঝখানে শ্বাস নিতে পারতেন না; সে এক বীভৎস দৃশ্য! যা চোখে দেখার মতো ছিলো না। আমি মায়ের পাশে বসে থেকে তার হাতে-পায়ে, বুকে রসুনের সহীত গরম করা সরিষার তেল মালিশ করে দিতাম; আর তার এরকম কষ্ট দেখে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতাম। মাঝেমাঝে মাও আমার গলা জড়িয়ে কান্না করতেন। হয়তো তিনি আমাদের কে ছেড়ে চলে যাবার ভয় পেতেন, হয়তো তিনি ভাবতেন, আমাদের রেখে চলে গেলে আমাদের কী হবে? আমাদের দেখভাল করবে কে ? যখন মা বিছনায় পড়ে থাকতেন তখন আমি কোনো-কিছুতেই মন বসাতে পারতাম না, মনের ভিতর শুধু দুশ্চিন্তা ঘুরপাক খেতো। স্কুলে গেলে মন পড়ে থাকতো মায়ের কাছে, স্কুল থেকে এসে বিকেলের খেলা-ধুলা রেখে মায়রে পাশে বসে থাকতাম, রাতেও হোম-ওয়ার্ক শেষ করে মায়ের পাশে বসে ঝিমাতাম। মাও চাইতেন আমি যেনো তার পাশেই বসে থাকি। এভাবেই আমি আমার মন খারাপের আর মা তার অসুখের দিন পাড় করতেন।

মা যখন সুস্থ হয়ে যেতেন তখন আমাদের মনের আকাশ থেকে মেঘ উড়ে গিয়ে, হাস্যোজ্জ্ব ঝলমলে এক সূর্যের আবির্ভাব ঘটতো; দীর্ঘ তিমির রাত শেষে আমরা পেতাম এক রাঙ্গা সকাল। মা সুস্থ হয়েই ঘরদোর সাফাই করার কাজে লেগে যেতেন, তিনি একদম অপরিচ্ছন্নতা দেখতে পারতেন না; অতিশয় অসুস্থ থাকতেন বলেই সেই সময় মন চাইলেও দেহ সায় না দেয়ায় সব চুপচাপ দেখে যেতেন। ঘরদোর সাফাই হয়ে গেলে, হৃদয়ের সবটুকু ভালোবাসা ঢেলে আমাদের জন্য নানান পদ রান্না করায় ব্যস্ত হয়ে যেতেন। আমি মা কে বারংবার না করতাম এতো সব ধকল না নিতে; কিন্তু কে শোনে কার কথা! সে তার নিজের মতো করেই কাজ করে যেতেন। মা সুস্থ হয়ে যাবার পর আমি আর মা বিকেলে নদীর পাড়ে গিয়ে বিকেলের সৌন্দর্য উপভোগ করতাম, সন্ধ্যায় মশলা চায়ের কাপ হাতে অদ্ভুত সব অখাদ্য জোকস বলে হা-হা হি-হি এবং জ্যোৎস্না রাতে দুজন-দুজনার হাত ধরে যানবাহন বিহীন রাস্তায় হেঁটে খালামনির বাসায় চলে যেতাম। এসব ছিলো আমাদের নিত্য দিনের রুটিন। মা ছিলেন আমার পরম বন্ধু, মাকে ছাড়া আমি কিছুই চিন্তা করতে পারতাম না। আমার বন্ধুরা যখন কেনাকাটা আর বাইরে খাবারের সময় বন্ধু কিংবা বান্ধবীদের প্রত্যাশা করতো তখন এসবেও আমি আমার মাকে ছাড়া অন্যকিছু চিন্তা করতে পারতাম না; যদিও মায়ের অসুস্থতার কারণে আমার সকল চিন্তারা সবসময় সফলতার মুখ দেখতে পেতো না তবুও আমার চিন্তা করতে ভালো লাগতো।

আমাদের সাথে যে শুধু বন্ধুত্বপূর্ণ আর ভালোবাসার সম্পর্ক ছিলো তা কিন্তু নয়, আমাদের মধ্যে মান-অভিমান ও চলতো। চাকরি এবং চাকরি সংক্রান্ত পড়াশোনার জন্য আমাকে ঢাকা থাকতো হতো, মা থাকতেন আমাদের হোম-টাউনে। ঢাকা থাকা অবস্থায় যদি নিয়মিত মায়ের সাথে ফোনকলে কথা না হতো তাহলে তিনি বাচ্চাদের মতো অভিমান করে মুখ ফুলিয়ে রাখতেন, ফোন ধরতেন না, কথা বলতেন না। আবার যখন মান অভিমানের পালা শেষে আমাদের কথা হতো, তখন বলতে না পারা রাজ্যের সকল খবর দিতে থাকতেন; এসব খবর থেকে পোষা লাল এবং কালো রঙের মুরগি কতগুলো ডিম দিয়েছে সেগুলোও বাদ পড়তো না, বাদ পড়তো না সবজির মাচায় কতগুলো চালকুমড়া ধরেছে, টবের কোন গাছে কি রঙের ফুল ফুটেছে সহ আরও কত কি! আমাকে যখন তার খুব দেখতে ইচ্ছে করতো তখন বারবার কল করে কবে বাড়ি যাব জানতে চাইতেন। কখনো তারিখ দিয়ে সেই তারিখে যেতে না পারলে কল করে বলতেন, 'তোকে আর আসতে হবেনা তুই ঢাকায়ই পড়ে থাক'। যেদিন আমি ঢাকা থেকে বাসায় যেতাম, সেদিন মা না খেয়ে আমার জন্য বসে থাকতেন। আমি বাসার যাবার পর দুজনে একসাথে বসে খাবার খেতাম। হোক সেটা দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যে, আমরা সন্ধ্যেতেই দুপুরের খাবার খেতাম। বাড়িতে থাকলেও রাতে সবার খাওয়া শেষে আমরা মধ্যরাতে রাতের খাবার খেতাম। মা আমার জন্যই মধ্যরাতে খাবার খেতেন কারণ; আমার রাতে দেরি করে খাওয়ার অভ্যাস ছিলো। মার সাথে আমার এতো এতো স্মৃতি যে লিখতে গেলে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা শেষ হয়ে যাবে; তবু স্মৃতি শেষ হবেনা।

যেবার শেষবারের মতো মা অসুস্থ হলেন সেবার আর ওষুধ-পত্র, ডাক্তার-কবিরাজ কিছুতেই সুস্থ হচ্ছিলেন না। আমি সেই আগের মতোই দিনরাত মায়ের সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে লেগে রইলাম। দিনদিন যখন তার অবস্থা অবনতির দিকে যাচ্ছিলো; তখন আমরা তাকে স্থানীয় একটা ক্লিনিকে ভর্তি করালাম। সেখানেও আমি; ওষুধ-পত্র কিনে আনা, খাবার খাওয়ানো, ঘুম পাড়ানো, ওয়াশরুমে নিয়ে যাওয়া সহ অন্যান্য সকল কাজ আমি নিজেই করতাম আর রাতে দুজনে হাসপাতালের বেডে শুয়ে নানান গল্প করতাম। আধো ঘুমে টের পেতাম, মা আমার শরীরে কাঁথা টেনে দিচ্ছেন, শরীরের এদিক সেদিক হাত বুলিয়ে দেখছেন মশা কামড়াচ্ছে কিনা। দিন কয়েকের মধ্যে মার স্বাস্থ্যের কিছুটা উন্নতি হলে, রোযার কয়েকদিন আগে তাকে বাড়িতে নিয়ে এলাম। মার আর আমার রুম মুখোমুখি হওয়ায়, আমার রুমের বিছানা থেকে মার রুমের বিছানা দেখা যেতো; আমি রাতে ক্ষণে ক্ষণে উঠে মার শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে কিনা নিশ্চিত হয়ে আবার ঘুমানোর চেষ্টা করতাম; কিন্তু ঘুম কিছুই হতো না। দুশ্চিন্তা আর বাজে স্বপ্নরা আমাকে ঘুমাতে দিতো না। একদিন গভীর রাতে খুব বাজে এক স্বপ্ন দেখে, দৌড়ে মার রুমে গিয়ে তার নাকের কাছে হাত নিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে কিনা বোঝার চেষ্টা করছিলাম; অমনি মা উঠে বসে আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলেন কিন্তু মুখে কিছুই বললেন না। তিনি জেগেই ছিলেন, হয়তো প্রতিনিয়ত আমার এসব কার্যকলাপ আঁচ করতেও পারছিলেন তাই আবেগ ধরে রাখতে না পেরে এভাবে কাঁদছিলেন। মা-ছেলে গভীর রাতে এক সঙ্গে কেঁদে বুকের ব্যথা হালকা করে যে যার মতো ঘুমাতে গেলাম।

মা যে আমাকে অন্য ভাইদের তুলনায় খুব কাছের মনে করতেন তার উদাহরণ এই ঘটনাঃ রোযার মধ্যে একদিন যোহরের নামাযের সময় আমি ওজু-গোসল করে নামাযে জন্য তৈরি হয়েছি; এমন সময় মা বললেন, তাকে ওয়াশরুমে নিয়ে যেতে, ওজু করে আসার কারণে আমার সেই মুহুর্তে ওয়াশরুমে ঢুকতে ইচ্ছে করছিলো না, তাই আমি আমার ছোট ভাইকে বললাম মাকে ওয়াশরুমে দিয়ে আসতে। ও মাকে ওয়াশরুমে দিয়ে আসলো, আমার নামাযে দেরি হওয়ায়, কিছুক্ষণ পর ও'ই গিয়ে ওয়াশরুম থেকে মাকে নিয়ে আসলো। আমি নামায শেষ করে মার কাছে যেতেই মা আমাকে বললেন, "তুই ওরে দিয়ে কেনো আমাকে ওয়াশরুমে পাঠালি? ও আমাকে ওয়াশরুমে নিয়ে গেলো আবার নিয়ে আসলো ওর সামনে আমার খুব লজ্জা লাগছিলো"। অথচ সেও তার ছেলে, আমিও তার ছেলে। তার চোখে আমি অন্যরকম ছিলাম কারণ; আমি তাকে যেভাবে জড়িয়ে থেকেছি ওরা সেভাবে থাকেনি।

ঈদের দিন দুপুরবেলা আমি আমার রুমে শুয়ে আছি, এমন সময় আমার খালাতো ভাই আমাদের বাড়িতে আসলেন। ভাইয়া মার কাছে গিয়ে কথা বলে আমার কাছে এলেন। এটা সেটা নিয়ে ভাইয়া আমার সাথে কথা বলছিলেন, হঠাৎ আমি ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করলাম, 'আচ্ছা ভাইয়া আল্লাহ তাআলা তো সব পারেন, তিনি তো চাইলেই আমার মা কে সুস্থ করেদিতে পারেন। ভাইয়া কিছু সময় আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বললেন, 'এবার আর মনে হয় খালা ভালো হবেন না! এটা বলেই ভাইয়া আমার রুম থেকে বেড়িয়ে গেলেন। আমার ভেতরে এক শীতল স্রোত বয়ে গেলো। আমি ধীরে ধীরে মার রুমে গিয়ে দেখি তিনি বিছানায় বসে আছেন। আমি তার পাশে গিয়ে, তার পিঠে মাথা এলিয়ে দিয়ে বসলাম। আমার চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি গড়িয়ে পড়ছিলো। মা আমার গালে হাত দিয়ে হু হু করে কেঁদে উঠলেন, আর বলতে লাগলেন, 'আমি তোদের রেখে কোথায় গিয়ে থাকবো? এই একটা শব্দই বারবার তিনি বলে যাচ্ছিলেন। ঈদের দিন সবাই যখন আনন্দে ভেসে যাচ্ছিলো, আমরা তখন অশ্রুতে ভিজে যাচ্ছিলাম।

ঈদের দিন রাত থেকে আবার মার স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়া শুরু করল। ঈদের ছুটি শেষে আবার আমরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করলাম। প্রাথমিক ডায়াগনোসিস করে ডাক্তার আমাদের নিশ্চিত করলেন, মার প্রেশার ডাউন হয়ে গেছে, দ্রুত স্যালাইন পুশ করতে হবে। মার শরীরে ডোপামিন নামক এক স্যালাইন দেয়া হয়েছে, কচ্ছোপ গতির চেয়েও ধীর গতিতে চলছে সেই স্যালাইন। নার্স কে জিজ্ঞেস করে জানলাম প্রায় ১৮-১৯ ঘন্টা ধরে চলবে এই স্যালাইন। একেক সময় একেক ডাক্তার এসে মাকে দেখছিলেন আর নিজেদের মধ্যে নিচু স্বরে কথা বলছিলেন। বিষয় টা আমার ঠিক ভালো লাগছিলো না। এমন সময় এক ডাক্তার আমাকে ডেকে বললেন, আপনি রোগীর কি হন? আমি উত্তর করলাম, রোগী আমার মা। এরপর ডাক্তার আমাকে বললেন মানোসীক প্রস্ততুতি নিয়ে রেখেন, আপনার মায়ের অবস্থা ভালো না। তার প্রেশার লেভেল ঠিক করার জন্য এই স্যালাইন দেয়া হয়েছে, যদি প্রেশার আপ করে তবে আলহামদুলিল্লাহ আর না হলে.... ডাক্তারের কথা শুনে আমার ভেতরে ঝড় শুরু হয়ে গেলো; কিন্তু আমি বাইরে নিজেকে ঠিক রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম, সেই সাথে এটাও বিশ্বাস করতে চাচ্ছিলাম যে, মার কিচ্ছু হবেনা, অবশ্যই মার প্রেশার আপ হবে।

আমি মার মাথার কাছে বসে আছি, মা মিনিটে মিনিটে পানি খাচ্ছে আর সাথে সাথে বমি করে ফেলে দিচ্ছে। আমি এক হাতে মাকে পানি খাওয়াচ্ছি অন্য হাতে বালতি ধরে বসে আছি, মা বমি করতে গেলেই সেটা তার মুখের কাছে ধরছি। এভাবেই দুপুর গড়িয়ে বিকেল আর বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা। এর ফাঁকে ফাঁকে আমি নার্সদের দিয়ে মার প্রেশার মেপে দেখছিলাম উন্নতি হচ্ছে কিনা। সন্ধ্যার পর থেকে মা একটু একটু কথা বলছিলেন আমার সাথে। রাত প্রায় ১২ টা, মার প্রেশার কিছুটা আপ করেছে। আমি আর খালামনি মার পাশে বসে আছি আর মা আমার হাত ধরে শুয়ে আছেন। হসপিটালের পাশেই আমার ফুপুর বাসা, ফুপাতো ভাই আমাকে নিতে এসেছে যাতে রাতে ওদের বাসায় গিয়ে গোসল করে রেস্ট নিতে পারি। ফুপু জানতেন আমার বেশ ধকল যাচ্ছে, তাই ওকে পাঠিয়েছেন আমাকে নেওয়ার জন্য; কিন্তু মার হাত ছাড়িয়ে আমার যেতে ইচ্ছে করছিলো না। খালামনি আমাকে সাহস দিয়ে বললেন, 'তুই যা আমি আছি, সারাদিন অনেক ধকল গেছে, গিয়ে একটু রেস্ট করে আয়। মা আমার হাত ছেড়ে দিয়ে বললেন, 'যাও সকালে চলে এসো'। কিন্তু আমার মন মানছিলো না। আমি বেশ কয়েকবার সিঁড়ি পর্যন্ত গিয়ে আবার মার কাছে ফিরে আসছিলাম। শেষবার মার কপালে চুমু খেয়ে বেড়িয়ে আসছিলা আর মনে মনে আল্লাহ কে বলছিলাম, আমি না থাকা অবস্থায় যেনো কিছু না হয়, তাহলে আমি সহ্য করতে পারব না।

সকালবেলা খালামনির কলে ঘুম ভাঙ্গলো, কল রিসিভ করতেই খালামনি বললেন, 'তাড়াতাড়ি হাসপাতালে আয়, তোর মা তোকে দেখতে চাচ্ছে। আমি দ্রুত বিছানা থেকে উঠে, রিক্সা নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছালাম। আমাকে দেখে মা বললেন, আমাকে তুলে বসাও। আমি বিছানায় উঠে মা কে তুলে বসালাম; কিন্তু মা বসে থাকতে পারছিলেন না। তাই আবার তাকে শুইয়ে দিলাম। এখন আর মা কথা বলছেন না, তার পুরো শরীর ঘামে ভিজে গেছে। আমি পাগলের মতো দৌড়ে ডাক্তার খুঁজছিলাম; কিছু সময়ের মধ্যে একজন ডাক্তার এসে ইসিজি করিয়ে মার মৃত্যু নিশ্চিত করলেন। আমার খালামনি গগন বিদারী চিৎকার করে কান্না করছেন, আশেপাশে লোক এসে ভীড় করেছে। আমার খুব কাঁদতে ইচ্ছে করছে কিন্তু আমি কাঁদতে পারছিনা; কারণ আমার বিশ্বাস হচ্ছেনা যে মা মারা গেছেন। আমি খুব শান্তভাবে মার হাত থেকে ক্যানুলা খুলছি, আস্তে আস্তে টেনে স্কচটেপ খুলছি যাতে মা ব্যথা না পায়। উৎসুক জনতা আমাকে এটা সেটা জিজ্ঞেস করছে, আমি তাদের সেই সব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি আর মাকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছি।

অ্যাম্বুলেন্স চলছে, আমি মায়ের খাটিয়ার পাশে মুখ গেড়ে বসে আছি, ফুপু আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এতো বছরের পরিচিত রাস্তা আজ বড্ড অচেনা লাগছে, গাড়ি স্বাভাবিক গতিতেই চলছে কিন্তু রাস্তা যেনো শেষ হচ্ছেনা। অ্যাম্বুলেন্সের ভিতরে যখন আমার দম বন্ধ হয়ে আসছিলো তার কিছু মুহুর্ত পরেই আমরা আমাদের গন্তব্যে পৌছালাম। মাকে অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামিয়ে উঠানে গাছের ছায়ার নিচে রাখা হয়েছে, আমিও মায়ের পাশে বসে আছি; কিন্তু আমার বসে থাকতে ইচ্ছে করছেনা, ইচ্ছে করছে মায়ের পাশে শুয়ে থাকতে কিন্তু কেনো যেনো শুতে পারলাম না। হয়তো চারপাশে অনেক লোকের ভীড় ছিলো তাই।

আমি মার পাশ থেকে উঠে এসে, ধীরে ধীরে তার রুমের দিকে যাচ্ছিলাম, পিছনে পিছনে আমার ফুপু আসছিলেন। আমি রুমের ভিতরে ঢুকে যখন দেখলাম বিছানা পড়ে আছে; কিন্তু সেখনে মা নেই! নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না। এবার আমি বিছানায় গড়াগড়ি দিয়ে চিৎকার করে কাঁদছি, সাথে আমার ফুপুও আমাকে ধরে কাঁদছেন। মা কে কবরস্থ করার জন্য প্রস্তুস করে রাখা হয়েছে। আমরা অপেক্ষা করছি আমাদের বড় ভাইয়ার জন্য, তিনি আসলেই জানাযার নামায হবে। তখন অনেক রাত! আমাদের স্থানীয় স্কুলের মাঠে মার খাটিয়া রাখা। আকাশ ভেঙ্গে জ্যোৎস্না উঠেছে, এরকম অনেক জ্যোৎস্না রাতে আমি আর মা ঘুরে বেড়িয়েছি; কিন্তু আজ মার ঘুরে বেড়াবার শক্তি নেই। তার নিথর দেহ জ্যোৎস্নার আলোয় ভেসে যাচ্ছে। ভাইয়া আসলেন, জানাযা শেষে মাকে কবরস্থ করা হল। আমি নিজে হাতে মাকে কবরে শুইয়ে, মাটি দিয়ে ঢেকে দিলাম চিরকালের জন্য।

মার দেহ মাটির নিচে ঢাকা পড়ে গেলেও তার স্মৃতি ঢাকা পড়ে যায় নি। এমন কোনো রাত বা দিন নেই যে রাতে বা দিনে মাকে স্বরণ হয়ে, আমারর চোখের পাতা ভিজে যায় না। ওদিকে মাও প্রতিনিয়ত আমার সাথে স্বপ্নে দেখা করেন। আমরা স্বপ্নে গল্প করি, ঘুরে বেড়াই। এইতো কিছুদিন আগে মা এসে আমাকে বলছেন,' চল ঘুরে আসি। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কোথায়? মা বললেন, আগে আয় তারপর দেখবি। আমি আর মা হাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে অন্ধকার এক গুহার ভিতরে ঢুকে গেলাম। আমি চোখে কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। মাকে বললাম, তুমি আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো? আমি তো কিছুই দেখতে পাচ্ছিনা। মা আমার হাত ছেড়ে দিয়ে বললেন, আমার পিছনে পিছনে আয়। আমি মার কন্ঠ শুনে শুনে তার পিছনে পিছনে এগিয়ে যেতে থাকলাম। হঠাৎ তীব্র এক সাদা আলো এসে আমার চোখে লাগলো, আলোর তীব্রতায় আমি তাকাতে পারছিলাম না। কিছুক্ষণ চোখ মিটমিট করে তাকিয়ে দেখি, আলোকিত বিস্তীর্ণ এক সবুজ প্রান্তর। যতোদূর চোখ যায় সবুজ আর সবুজ। আমি আর মা সেই সবুজ প্রান্তরে দাঁড়িয়ে আছি, মৃদু-মন্দ বাতাসে আমাদের চুল উড়ছে.....

ছবিঃ গুগল

মন্তব্য ৩০ টি রেটিং +১৩/-০

মন্তব্য (৩০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৪:০২

নতুন বলেছেন: জন্মের পরে নাড়ী কাটা হলেও মায়ের সাথে সন্তানের একটা অদৃশ্য নাড়ীর সম্পর্ক থেকেই যায়।

মা মারা গেলেই সম্ভবত আসলে নাড়ী কাটা পরে।

আমার মা ও মারা গেছেন ৫ বছর হলো। আমাকে বিয়ের পরেও বউএর সামনে হাত দিয়ে খাইয়ে দিতেন মাঝে মাঝে।

এখন মনে হয় দুনিয়াতে শুধু মা ই আমাকে ভালোবাসতেন কোন সার্থ ছাড়া। এখন ভালোবাসার আর কেউই নাই। স্ত্রীর সন্তানের ভালোবাসা আছে, কিন্তু মায়ের ভালোবাসায় অন্য কিছু একটা থাকে যেটা অন্য কারুর ভালোবাসায় নাই।

১৮ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৪:০৯

শাওন আহমাদ বলেছেন: মায়ের ভালোবাসায় অন্য কিছু একটা থাকে যেটা অন্য কারুর ভালোবাসায় নাই এটা ১০০% এর চেয়েও বেশি সত্য। আপনার মায়ের আত্মার শান্তি কামনা করছি। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

২| ১৮ ই মে, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:০৪

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: আমারও আমার মায়ের কথা খুব মনে পড়ে।

১৮ ই মে, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:২৩

শাওন আহমাদ বলেছেন: আপনার মায়ের জন্য দুআ রইলো, আল্লাহ তার আত্মাকে শান্তিতে রাখুন।

৩| ১৮ ই মে, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৩৬

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: একটা ছেলের মায়ের খুব বদনাম ছিলো। সেজন্য আমি তার বোনকে বিয়ে করতে পারিনি। সেজন্য তার আমাদের প্রতি খুব ক্ষোভ ছিলো। ছাব্বিশ বছর পর আমি তাকে শান্তনা দিয়ে বললাম, ভালোই হলো নিরুর সাথে আমার বিয়ে হয়নি। কারণ তারফলে তার আমার চেয়ে অনেক ভালো বিয়ে হয়েছে। তখন সে আমার সেই সময়ের অনেক স্মৃতির কথা বলল। ভাবলাম এরা এসব এখনো মনে রেখেছে। তার মায়ের কথা আসতেই ছেলেটা আবেগ তাড়িত হলো। বুঝলাম বদনাম থাকলেও মায়ের প্রতি হয়ত সন্তানের ভক্তি কমে না।

১৮ ই মে, ২০২৩ রাত ৯:২২

শাওন আহমাদ বলেছেন: মা যাই হোক আর যেই হোক, মা তো মা'ই হয়।

৪| ১৮ ই মে, ২০২৩ রাত ৮:৩৫

শেরজা তপন বলেছেন: পড়া শেষে আগেই লাইক দিয়েছিলাম।
চরমতম মর্মস্পর্শী ঘটনা। মা- ছেলের এমন হৃদ্যতা বন্ধুত্ব, সম্পর্কের গভীরতা বিরল-ই বলা যায়।
আমি নিশ্চিত এমন মর্মদায়ক স্মৃতিচারণমূলক লেখাটি সময় আপনি বহুবার আকুন নয়নে কেদেছেন। আমি পড়তে গিয়ে নিজেই চোখের পানি আটকাতে পারিনি।
কেন যেন মনে হয় আপনার মা দারুণ পরিচর্যা পেলেও সঠিক চিকিতসা হয়নি। লেখার মাঝে আপনার বাবার কথা কোথাও আসেনি বলে আমি বিস্মিত হয়েছি। তিনি কি বেঁচে আছেন নাকি অনেক আগেই গত হয়েছেন?
বিষন্নপ্রসন্ন ডায়েরিটা থেকে চেষ্টা করুণ লেখাটাকে উপন্যাসে রূপ দিতে। এক জীবনে এর থেকে আর ভাল কাহিনী পাবেন কোত্থেকে।

১৮ ই মে, ২০২৩ রাত ৯:৩৪

শাওন আহমাদ বলেছেন: ভাইয়া লেখাটা আমি কয়েকদিন সময় নিয়ে লিখেছি, একাধারে লেখা সম্ভব হয়নি। আশেপাশের সবার ধারণা ছিলো মার কিছু হলে আমি পাগল হয়ে যাব কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ সেটা করেন নি। আমার যদি এরকম সুযোগ থাকতো যে আমার জীবনের একটা চাওয়া পূর্ণ হবে সে যাই হোক। আমি এক বাক্যে আমার মাকে ফিরে চাইতাম। আমার আব্বা মায়ের চিকিৎসার কমতি রাখেন নি। মার জন্য তিনি ডাক্তার রিজার্ভ করে রেখেছিলেন। আর হ্যাঁ আব্বা মার অনেক আগে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। আব্বা কে নিয়ে এ মাসেই আমার একটা পোস্ট করা হয়েছে, যা নির্বাচিত পাতায় আছে, চাইলে পড়ে নিতে পারেন। এ লেখাটা শুধুই আমার আর আমার মায়ের তাই অন্য কাউকে এখানে টানতে চাইনি।
ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার মন্তব্যের জন্য।

৫| ১৮ ই মে, ২০২৩ রাত ৯:১২

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:

মনটা খারাপ হয়ে গেলো। মায়ের শরীর খারাপ থাকলে মনের কোণে এক ধরনের অস্বস্তি কাজ করে।

১৮ ই মে, ২০২৩ রাত ৯:৩৫

শাওন আহমাদ বলেছেন: মা ছাড়া পৃথিবী অন্ধকার!
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

৬| ১৮ ই মে, ২০২৩ রাত ৯:২৭

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: পড়তে পড়তে এক জায়গায় এসে আমিও খুব ইমোশনাল হয়ে পড়লাম।

আপনি আপনার অসুস্থ মায়ের যেরকম সেবাযত্ন, শুশ্রূষা করেছেন, তা এ যুগে বিরল। আমার মা মারা গেছে ১৯৮০ সালে, বাবা মারা গেছে ২০২০ সালে। মানুষ অসুস্থ হলে তার পাশে আসলে কাউকে পাওয়া যায় না, কেউ থাকে না - আমার নিজ জীবনে এমন অনেক নিষ্ঠুর অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে আমাকে আসতে হয়েছে। আর মায়ের জন্য আপনার অবদান ছিল অবিস্মরণীয়, একজন আদর্শ ছেলের মতোই।

আল্লাহ আপনার মাকে জান্নাতবাসী করুন, এই দোয়া করি।

খুব ভালো লিখেছেন।

১৮ ই মে, ২০২৩ রাত ৯:৪৬

শাওন আহমাদ বলেছেন: আমি চাইনি আমার মায়ের সেবা করতে এসে কেউ তার উপর বিরক্ত হোক, এ জন্যই আমি কাউকে তার সেবা করতে দিতাম না। আমার আমার দুনিয়া ছিলো আর আমি সেই দুনিয়া জুড়ে বাস করতাম।
আপনার মা বাবার জন্যে দুআ রইলো।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।

৭| ১৯ শে মে, ২০২৩ রাত ১২:৪৮

স্মৃতিভুক বলেছেন: @ শাওন, আপনার লেখাটা দুই বার পড়েছি। কিছু লিখতে গেলে যে যে কষ্টের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে, তা না পাওয়ার জন্য প্রথমে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম মন্তব্য করবো না। পরে ভাবলাম, নাহ, একটু হালকা হওয়া যাক।

আপনি শেষ সময়ে মা'য়ের কাছে থাকতে পেরেছিলেন। আমি তাও পারিনি। দেশ ছাড়ার আগে মা'কে কথা দিয়েছিলাম, পড়াশুনা শেষ হলেই ফিরে যাবো। খুবই সাধারণ মানুষ আমি, এখানের এত প্রাচুর্য্য, সুখ-সমৃদ্ধি ছেড়ে দেশে ফিরে যাওয়ার সাহস করতে পারিনি।

এখন ভাবছি দেশে ফিরে যাওয়া দূরে থাকে, বেড়াতেও কখনো ওই দেশে যাবো না। ওই দেশে যাওয়া মানেই, প্রকারন্তরে স্বীকার করে নেয়া, আমার মা আর নেই। ওটা সহ্য করা আমার ক্ষমতার বাইরে।

মা'কে দেয়া কথা আমি রাখতে পারিনি। তাই আমার মায়ের আঁচলের গন্ধ নিয়ে সারাজীবনের জন্য নিজেকে নির্বাসিত করলাম।

ও হ্যাঁ, আপনার মতো সন্তান যেন প্রতিটা মায়ের হয়। অনেক অনেক ভালোবাসা আর শুভকামনা রইলো।

১৯ শে মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৫৫

শাওন আহমাদ বলেছেন: আপনার মায়ের জন্য আমার দুআ রইলো। অসংখ্য ধন্যবাদ এতো গুছানো মন্তব্যের জন্য। আপনার জন্যও শুভকামনা আর দুআ রইলো।

৮| ১৯ শে মে, ২০২৩ রাত ৩:৩৩

হাসান জামাল গোলাপ বলেছেন: চোখে পানি ধরে রাখা যাই না পড়ে, ভালো থাকবেন।

১৯ শে মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৫৮

শাওন আহমাদ বলেছেন: কিছু কিছু সময় চোখের পানি আমাদের কথা শুনেনা। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

৯| ১৯ শে মে, ২০২৩ সকাল ৮:৫৩

সোহানী বলেছেন: আপনার লিখার প্রতিটি শব্দ পড়েছি। ঠিক একইভাবে আমিও ফিল করি আমার মা'কে।

ভালো থাকুক সব মায়েরা ওপারে।

১৯ শে মে, ২০২৩ বিকাল ৪:০৪

শাওন আহমাদ বলেছেন: আপনার মায়ের জন্য দুআ রইলো। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

১০| ১৯ শে মে, ২০২৩ সকাল ৯:৫১

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: বড় লেখা ভেবে এড়িয়ে যাচ্ছিলাম। কয়েক লাইন পড়ে মনে হলো এটা শেষ করতেই হবে। এখন মনে হচ্ছে না পড়লেই ভালো হতো। আমি তো কাঁদতে কাঁদতে শেষ।

মায়ের সন্তানের প্রতি এত দরদ থাকবে; এটা স্বাভাবিক কিন্তু সন্তান যে এমন মা-অন্তপ্রাণ এটা অভাবিত। ঘটনাগুলো বায়েজিদ-বিদ্যাসাগরের কথা মনে করিয়ে দিল। আমাদের মায়েরাও যে স্নেহ-ভালোবাসা পেতে উদগ্রীব থাকেন, তারাও যে সঙ্গ চান আমরা ক'জন বুঝি? বছরের পর বছর একই গ্রাম, শহর বা একই ঘরে দিন পার করে দেন, দুনিয়াকে ঘুরে দেখার সুযোগ পান না, কমন কিছু খাবারের বাইরে কিছু খাওয়ার সুযোগ পান না, পছন্দমতো কাপড় পরারও সুযোগ পান না- এসব আমরা ক'জন ভাবি? আপনি আপনার মায়ের জন্য যা করেছেন; এসব অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। ভালোবাসা আপনার জন্য। আপনিও নিশ্চয়ই নিজের সন্তানদের কাছ থেকে এমন ভালোবাসা পাবেন।

১৯ শে মে, ২০২৩ বিকাল ৪:১০

শাওন আহমাদ বলেছেন: শুধু আমিই আমার মায়ের জন্য পাগল ছিলাম না, আমার মা'ও আমাকে চোখে হারাতেন। আল্লাহ পৃথিবীর সকল মা বাবাদের ভালো রাখুন। পৃথিবীর সকল সন্তান আর মা বাবা'রা এক অন্যের পরিপূরক হয়ে বেঁচে থাকুন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ বছর।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম গভীর মন্তব্যের জন্য। আপনার জন্য শুভ কামনা।

১১| ১৯ শে মে, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৯

রাজীব নুর বলেছেন: মনে হলো- যেন আপনি আমার ঘটনাই লিখেছেন।

১৯ শে মে, ২০২৩ বিকাল ৪:১২

শাওন আহমাদ বলেছেন: ভাইয়া, ঘুরেফিরে আমাদের গল্পগুলো প্রায় একই রকম। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

১২| ২১ শে মে, ২০২৩ সকাল ১০:৫৫

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
মা ছেলের মায়াময় কিছু মহুর্ত চোখের সামনে ভেসে উঠল।++++

২১ শে মে, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৬

শাওন আহমাদ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার মন্তব্যের জন্য।

১৩| ২১ শে মে, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩২

করুণাধারা বলেছেন: আল্লাহ আপনার মাকে জান্নাত বাসী করুন, দোয়া করি।‌

লেখাটা মর্মস্পর্শী। আবেগ সংযত রেখে খুব প্রান্জল ভাষায় মায়ের সাথে আপনার গভীর ভালোবাসাময় সম্পর্ক বর্ণনা করেছেন, বুঝিনি শেষে এসে এমন কিছু পড়তে হবে। আপনার মায়ের শারীরিক কষ্টটা আমি সহজেই বুঝতে পারছিলাম, কারণ আমারও ব্রংকিয়াল এ্যাজমা আছে। তবে বুঝতে পারিনি কী কারণে তাঁর প্রেসার ফল করল! সম্ভবত সন্তানদের নিয়ে অতিরিক্ত ভাবনা তাঁকে নিজের দিকে তাকাতে দেয়নি...

আল্লাহর কাছে দোয়া করি, আল্লাহ উনাকে জান্নাতে দাখিল করুন, আপনার সময়ের শেষে আপনিও যেন তার সাথে মিলিত হতে পারেন।

"এবং যাহারা ঈমান আনে আর তাহাদের সন্তান-সন্ততি ঈমানে তাহাদের অনুগামী হয়, তাহাদের সঙ্গে মিলিত করিব তাহাদের সন্তান-সন্ততিকে এবং তাহাদের কর্মফল আমি কিছু মাত্র হ্রাস করিব না; প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কৃতকর্মের জন্য দায়ী।"

সূরা নম্বরঃ ৫২, আয়াত নম্বরঃ ২১

২১ শে মে, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩৯

শাওন আহমাদ বলেছেন: আমিও সেই অপেক্ষায় আছি, আমার দিন শেষে আমি আমার মায়ের দেখা পাব। আপনাকে আনেক অসংখ্য ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য।

১৪| ২২ শে মে, ২০২৩ দুপুর ১:২৫

জটিল ভাই বলেছেন:
আল্লাহ্ আপনার মায়ের প্রতি দয়া করুন। আমিন।

২২ শে মে, ২০২৩ দুপুর ২:২৫

শাওন আহমাদ বলেছেন: আমীন, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

১৫| ০৪ ঠা জুন, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৪৮

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: বেচে আছি বটে, মন সেই পড়ে থাকে মায়ের কাছেই।

০৫ ই জুন, ২০২৩ বিকাল ৪:৩৪

শাওন আহমাদ বলেছেন: এটা এমন এক বন্ধন ভাইয়া যা ছিন্ন হবার কোনো সুযোগ নেই!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.