নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এটা আমার ক্যানভাস। এখানে আমি আমার মনের কোণে উঁকি দেয়া রঙ-বেরঙের কথাগুলোর আঁকিবুঁকি করি।
পৃথিবীতে তে এমন কিছু সম্পর্ক বা বন্ধন থাকে, যাকে ধরাবাঁধা কিছু শব্দের মাধ্যমে কিংবা কখনো কখনো কোনো শব্দের মাধ্যমেই তাকে প্রকাশ করা যায় না। শব্দের এতো ক্ষমতাও থাকেনা সেই বন্ধন গুলোকে বিশেষণ দেওয়ার, এই বন্ধন গুলোকে কেবল চিত্তের গহীন গভীর দিয়ে অনুভব করা যায়, প্রাপ্তির আনন্দ নিয়ে চোখ থেকে সুখ অশ্রু ফেলা যায়ক।
আমার মামীকে কে নিয়ে এর আগেও আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম। আমাদের সকলের কাছে তিনি পৃথিবীর সকল ভালো মামীদের মধ্যে অন্যতম। তাকে নিয়ে প্রশংসা করার যোগ্যতাও আমরা রাখিনা। মানুষ টা অন্য সকল প্রাণীকে ভালোবাসার অদ্ভুত ক্ষমতা নিয়ে জন্মেছে। মায়ার এক বিশাল সমুদ্র তার বুকে ধারণ করে আছেন। আমরা যে কেউ যখন তখন সেই সমুদ্রের পাড়ে দাঁড়িয়ে বুক ভরে শ্বাস নিতে পারি, সমুদ্রে নেমে মমতার জলে গা ভেজাতে পারি। আমাদের সকলের একমাত্র নির্ভযোগ্য আশ্রয়স্থল আমাদের মামীর আঁচলের ছায়া।
মামার বাসা থেকে আমার কর্মক্ষেত্র কাছাকাছি হওয়ায় গত দুই বছর ধরে আমি আমার মামার বাসা থেকেই অফিস করছিলাম। এর আগেও আমি আমার অন্যান্য কাজিনরা মাসের পর মাস এখনেই পড়ে থকতাম। আমর অন্য কাজিনরা মামার বাসায় থেকেই তাদের পড়ালেখার জীবন শেষ করেছেন। তো যা বলছিলাম, এই দুই বছর একটি বারের জন্যেও মনে হয়নি আমি আমার মামার বাসায় থাকছি; বরং মনে হয়েছে, আমি আমার পরিবারের সাথেই আছি। যেখানে আমার ভাই-ভাবীরা আছে, আছে তাদের সন্তান রাও। যাদের কখনোই আমার কাজিন বা কাজিনের বাচ্চা বলে মনে হয়নি। মনে হয়েছে তারাই আমার আপন ভাই-ভাবী, আর তাদের বাচ্চা গুলো আমাই বাচ্চার মতো। বাচ্চা গুলোও আমাকে চোখে হারায়। মামী আমার মায়ের মতো সদা আমাকে নিয়ে ঊদ্বিগ্ন থাকতেন। আমি কি খাব-না খাব, আমার জন্য আলাদা রান্না করতেন, সাথে আমার ভাবীও যুক্ত হতেন। বাড়ি ফিরতে একটু লেইট হলেই ফোন করে অস্থির হয়ে যেতেন আমি কোথায় আছি? এখনো ফিরছিনা কেনো? স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বাড়ি ফিরিতে একটু বেশি লেইট হলে, তারা না খেয়ে আমার জন্য বসে থাকতেন। আমি বাসায় যাবার পর, সবাই মিলে একসাথে বসে খেতাম আর রাজ্যের আলাপ জুড়ে দিতাম।
হঠাৎ করে অফিস সিফট করায়, বাসা থেকে অনেক ঝক্কি হয়ে যাচ্ছিলো যাতায়াত করায়। তাই বাসা নিলাম অফিসের কাছাকাছি। গত মাসেই উঠার কথা ছিলো; কিন্তু আচানক জ্বর চলে আসায় আর উঠা হয়নি। লাস্ট বৃহস্পতিবার আমি আমার সকল কাপড় আয়রন করতে নিয়ে যাচ্ছিলাম, মামী দেখে বললেন এতো কাপড় কোই নিয়ে যায়? আমি বললাম, আয়রন করতে। মামী আবার বললেন, তুই তো কাপড় বাসাতেই আয়রণ করিস। উত্তরে আমি বললাম ,চলে যাব তাই সব গুলো একসাথে আয়রন করিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমার কথা শেষ হবার সাথে সাথেই আমার মামীর চোখে আষাঢ়-শ্রবণ, অশ্রুসিক্ত নয়নে কাঁপা গলায় বললেন, যা তোরা সবাই চলে যা,সবাই আমাকে রেখে চলে যা, আমি যাব কার কাছে? আমি কিছু সময়ের জন্য ফ্রিজ হয়ে গেলাম কিছুই বলতে পারছিলাম না। আজ সকালে যখন চলে আসছিলাম, মামী আমার মুখের দিকে তাকাচ্ছিলেন না, হয়তো তার অশ্রুযুগল চোখ আমাকে দেখাতে চাচ্ছিলেন না। আমি জানি মামী সময়ে-অসময়ে নানা বাহানায় আমাকে কল করে বাসায় যেতে বলবেন; আর আমিও মায়ার লোভে ঠিক তার আঁচলের নিচে গিয়ে আশ্রয় নিব।
পৃথিবীতে এক জীবনে মানুষ সবকিছু পায় না; কিন্তু এই না পাওয়ার মাঝেও কিছু কিছু জিনিস পায় যা সকল না পাওয়াকে ছাপিয়ে যায়, যা না পাওয়ার সকল অতৃপ্তিকে প্রাপ্তির তৃপ্তিতে ভরিয়ে দেয়।আমিও জীবনে অনেক কিছুই পাইনি এবং অনেক ছোট বয়সেই অনেক কিছু হারিয়েছি, এর পরিবর্তে আমি আমার মামীকে পেয়েছি যে পরম মমতায় আমাদের জড়িয়ে রাখার ক্ষমতা রাখেন।
ছবিঃ গুগল
০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:১৭
শাওন আহমাদ বলেছেন: যদি মামীরা সেটা মনে করেন তবেই।
২| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:২৪
রাজীব নুর বলেছেন: আমার পোড়া কপাল। আমার কোনো মামা নেই।
শুধু একটা খালা আছে। সেই খালা আবার মন্দ লোক। তার ছেলেমেয়ে গুলো আরো বেশি বদ।
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:৪৩
শাওন আহমাদ বলেছেন: সবারসব থাকেনা, হয়তো আপনার যা আছে আমার তা নেই!
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৫৬
শাম্মী আক্তার বলেছেন: ভাগ্নিরা বৃষ্টির দিনে রোদের মতো