![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি বাংলাদেশি ....আমি বাঙালী....আমি মুসলিম....আমি বাংলার জন্য জীবন দিতে সর্বদা প্রস্তুত ।
সময় মত ফোঁটা বুনো ফুলের চাহিদা অসময়ে ফোঁটা গোলাপের চেয়ে অনেক বেশি।
সফল হওয়ার পরে আপনাকে বাহবা দিয়ে সবাই আপনার প্রতি তাঁদের স্নেহ বা সম্মান প্রদর্শন করবে। যে সকল আত্মীয় বা বন্ধু এক সময় আপনাকে দেখলে নাক সিটকাত তারাই তখন আপনাকে তাঁদের আত্মীয় বা বন্ধু পরিচয় দিতে উঠে পরে লাগবে।
যে মেয়েটি বাংলিশে কথা বলে নিজেকে স্মার্ট প্রমাণ করতে মরিয়া এবং ক্লাসের সহজ সরল সিথিকরা ছেলেটিকে গেয়ো ভূত বলতে অভ্যস্ত কিংবা শুদ্ধ বাংলিশ বলতে না পারার দরুন অনেক মেয়ের সাথেও কথা বলতে তার ঘেন্না লাগে সেই কাল রোগা টিংটিঙে চেহারার খাঁটি সাতক্ষীরার টানে বাংলা বলা মোস্তাফিযকে ডেকে বলবে "অ্যাই ভাইয়া তোমার সাথে একাটা পিক তোলা যাবে?"। সেই পিক রূপী ছবি খানা প্রোফাইল পিকচারে দিয়ে আবার তার পরিচিত মোস্তাফিয এর মত আউটলুকের কোন ছেলের সাথে ভাবে কথা বলা বন্ধ করে দিবে।
যেই ছেলেটা তার সহপাঠীর গায়ের রঙ নিয়ে হাসিতামসা করতে পছন্দ করে কিংবা তার সহপাঠীর ভাষা গত আঞ্চলিক টান নিয়ে খুব সমস্যাতে ভুগে সেই ছেলেটি ই এই কালো হেংলা উপরুন্তু শুদ্ধ বাংলা বলতে না পারা এই মোস্তাফিযের সাথে সেলফি তোলার সময় ওর যত কাছে যাওয়া যায় সেই চেষ্টাই করবে। আর কাধে হাত রেখে ছবি তুলতে দিলে তো ঐ ছেলে তার জীবন ধন্য মনে করবে।
যেই মহিলা কারো বাসাতে সাওয়ার সেই সাথে ফাইভ স্টার হোটেলের সুবিধা সম্পন্ন টয়লেট না থাকলে তাঁদের বাসাতে ২০-২৫ মিনিটের বেশি সময় অতিবাহিত করতে পারেন নাে এমনকি ঐ আত্মীয় বা বন্ধুর সাথে মনের আন্তরিকতা নিয়ে কথা বলতেও দ্বিধা বোধ করেন সেই মহিলাই এই সাতক্ষীরার ছেলেটির বাড়ির আধাপাকা টয়লেট এর সামনে হইলেও এই মোস্তাফিয এর সাথে একটা সেলফি তোলার লোভ সামলাতে পারবেন না।
হ্যাঁ আজ এই ছেলেটি সফল কিন্তু কোন কারনে সে যদি ভাইদের সাথে মাছের ব্যাবসা করত এবং টাউন হলের মাছ বাজারে মাছ বিক্রয় করত এবং উপরে বর্ণীত তিন চরিত্রের কারো গায়ে ভুলবশত ওর মাছে ভঁরা নোংরা হাতটুকুন ছুঁয়ে যেত তাহলে কিন্তু এই খেত ছেলেটিকে দু চারটা চর থাপ্পর দিতে কেউ পিছপা হইতেন না।
এই যেমন কাল বৃষ্টির সময় ভারতীয় ক্রিকেট বোদ্ধারা খেলা পর্যালোচনা করতে গিয়ে তাঁদের খেলোয়াড় দের কোন সমস্যা খুঁজে পেলেন না বললেন "যেহেতু মোস্তাফিয খুব ভালো বলিং করছে সেহেতু ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা সুবিধা করে উঠতে পারছে না'। তারা একবারও বললেন না কহলি, রাইনা, রাইডু এরা সবাই অহঙ্কারে ভুগতে ভুগতে ধংসের পথে চলে গেছে। ধোনী কি একবারেও ভেবেছিল তাচ্ছিল্যভরে ধাক্কা দেয়া এই রোগা পটকা ছেলেটাই ওদের বাংলাওয়াসের দারপ্রান্তে নিয়ে যাবে? যদিও আজ অবধি ওর আত্মউপলব্ধি হয় নি এবং ও স্বীকারও করেনি যে মোস্তাফিয এর সাথে যা ঘটেছে তার জন্য সে দুঃখিত। অথচ দুই দিন ক্রিকেট খেলে বিশ্ব রেকর্ডের মালিক এই মোস্তাফিয অকপটে সত্য স্বীকার করে নিয়েছে। মহৎ লোক কখনো নিজের দোষ ঢাকতে ভানিতা করে না। প্রভাতের সূর্য যেমন দিনের পূর্বাভাষ দিয়ে দেয় তেমনি আমাদের মোস্তাফিয ও বুঝিয়ে দিল বিশ্বসেরা হইতে হইতে দেড়হাত ছাতির বুক লাগে না মাথা আর সত্য বলার খমতা থাকতে হয়।
এই বিশ্ব রেকর্ড করার পূর্বে ওর সাথে নাম্বার ওয়ান অল রাউন্ডার সাকিবের যেমন খুনসুটি হত এখনো তেমনি হবে। অর্থাৎ সাকিবের সাথে ভালো সম্পর্ক করতে তাকে কিন্তু বিশ্ব রেকর্ডের সার্টিফিকেট নিয়ে যেতে হয় নি। এটাই আম জনতা এবং সাকিবদের মধ্যে পার্থক্য। আম জনতার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হতে বা তাঁদের কাছ থেকে আপনার প্রাপ্য আচরণ পেতে সর্বদা আপনার সাফল্য গুলোকে গলাতে ঝুলিয়ে কিংবা জামা কাপড়ের বহিরাবরনে দিয়ে ঘুরতে হবে আর সাকিব বা মাশরাফি দের মত মহৎ লোকদের আপনাকে চিনে নিতে বা যোগ্য সম্মান দিতে আপনার পারাডো কিংবা মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়ি থেকে নামা লাগবে না।
যে বুনো ফুলকে পায়ে দলে প্রিয়তমাকে ফুলের দোকান থেকে সবচেয়ে সুন্দর এক গুচ্ছ গোলাপ কিনে দিবেন বলে এগিয়ে গেলেন এবং দেখলেন ফুলের দোকানে কোন ফুল ই নেই তখন আপনি এই বুনো ফুলটি পাওয়ার জন্য হাহাকার করবেন কিন্তু ততক্ষণে সেই ফুল মাটিতে মিশে গেছে। তাই চলার পথে সাবধানে চলুন যেন আপনার অহঙ্কারের কিংবা অবজ্ঞার পায়ের নিচে পিষ্ট হয়ে এমন মোস্তাফিয দের মৃত্যু না হয়। আজ আপনি যে বুনো ফুলকে অবজ্ঞা করবেন কাল যে তার মালা গলাতে পড়া আপনার জীবনের একমাত্র উদ্যেশ্য হবে না এর কি নিশ্চায়তা আপনি দিতে পারবেন?
©somewhere in net ltd.