![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি বাংলাদেশি ....আমি বাঙালী....আমি মুসলিম....আমি বাংলার জন্য জীবন দিতে সর্বদা প্রস্তুত ।
২০১০ এর দিকে মোহাম্মদপুরে থাকি বাসার অদুরে টাউন হল। একদিকে ময়লার ভাগার অন্যদিকে জান্নাত রেস্টুরেন্ট এর মৌ মৌ গন্ধের ইফতারির পশরা। আমার উদ্দেশ্য এক বাটি হালিম কিনব। ইফতারি সাধারণত কাছের রেস্তরা হতেই কিনি। রাস্তার উল্টো পাশ হতে জান্নাতের পাশে যাওয়ার সময় ময়লার ডিপোতে কেন যেন চোখ গেলো। দেখলাম দুটি বাচ্চা কি যেন খুজছে ওখানে। কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করতেই ভয় পেয়ে বলল "স্যার আমরা ময়লা ফালাইতেছি না পরলেও উডাইয়া রাইখা জাইমু"। ভোলার আঞ্চলিক ভাষা শুনে জিজ্ঞেস করলাম বাড়ি কোথায় বলল স্যার "ভোলা আছিল নদী ভাইঙ্গা লাইছে এহন বেরিবাধের বস্তিত থাহি"। আরও কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম কি করছ এখানে।
উত্তর যা এলো তা মোটামুটি এমন- ওদের মা বাসাতে কাজ করে বাবা নেই। গত দুই দিন যাবত মা কাজে যেতে পারছেন না অসুস্থতার জন্য। ঘরে যা ছিল তা এই দুই দিনে খাওয়া শেষ। ওরা দুই ভাই বোন টোকাই এর কাজ করে কিন্তু আজ তেমন ভালো কিছু পেলো না তাই এখানে কালকের না উচ্ছিষ্ট ইফতারি আছে কিনা তাই খুঁজছে। সেন্ট জোসেফে চাকুরির সুবাদে এবং সেই ২০০৩ সাল হতে মোহাম্মদপুর আশা যাওয়াতে ওখানে কি পরিমাণ ইফতারির অপচয় হয় তার সাম্যক ধারনা ছিল। নিজের অবস্থানের জন্য আল্লাহ্কে অনেক ধন্যবাদ জানিয়ে ওদের বললাম আমার সাথে এসো, নিয়ে ওদের কিছু ইফতারি এবং বিরয়ানী কিনে দিলাম। বিশ্বাস করবেন না ওদের মুখ দেখে মনে হচ্ছিল ওরা হয়ত চাঁদ টাকে হাতে পেয়েছিল।
দেশ নাকি মধ্যম আয়ের দেশ হয়েছে। শুনতে ভালই লাগে। এর প্রমান সরুপ ইফতার পার্টি নামক অপচয়ের (গুটিকতক বাদে) সাথে সেহেরি পার্টিও নাকি যোগ হয়েছে। একটি দেশের মানুষ কত অপচয় করে তা হতেই বুঝা যায় সেই দেশ ধনী না গরীব এটা মধ্যপ্রাচ্যের বিত্তশালী মানুষগুলোর (কিছু ব্যাতিক্রম বাদে) ধ্যান ধারনা। বাঙ্গালী আমেরিকা কিংবা ভারত পন্থী হলেও অপচয়ে কিন্তু মধ্যপ্রাচ্য পন্থী তা না হলে নিজের বাসা রেখে এই ভোর রাত্রে এমন পার্টিতে যাওয়ার কোন কারন আমি খুজে পাই না যদিও প্রথম আলো মনে হয় এই প্রথম কোন মধ্যপ্রাচ্য ঢঙের আনুষ্ঠানিকতাকে সমর্থন দিল। এক বোনের পোষ্টে দেখলাম এই পার্টিতে ডিজে এবং মদ ছাড়া সব হয়। রমজান পবিত্রতার মাস সেই মাসে এই ভোররাতের পার্টি কেমন যেন আমাদের বক ধার্মিকতাকেই মনে করিয়ে দেয়। মধ্যম আয়ের দেশেও ছবির দুই বোন খাবারে ডিপো ডাস্টবিনে হানা দিয়েছে। একটু ভালো থাকার জন্য এই মধ্যম আয়ের দেশের মানুষ সর্বশ বিক্রয় করে সুখপাখি হাতে পেতে ট্রলারে সাগর পারি দেয়।
আপনার স্টারের খাবার খানা ঘরে তৈরি করে খেলে যত টাকা বাচবে তা দিয়ে সাড়া রমজানে ১০ জনকে ইফতার করানো যাবে। কারন সরবরের হিসাবে ওরা ১৫০ টাকা দিয়ে একজন রোজাদারকে সাড়া মাস ইফতার কিভাবে করানো যায় তার হিসাব দিয়েছিল। আসুন এই সকল প্রাচ্য পশ্চিমের আগ্রাসন মুক্ত সত্যিকারের বাংলা গড়ি। কাল তো একজন বললেন "বললেন যতদিন উনাদের মনে ভাষা, বঙ্গবন্ধু এবং রবীন্দ্রনাথ থাকবেন ততদিন তালেবানেরা এই বাংলা দখল করতে পারবে না"। উনার পূর্বের বক্তব্যের আলোকে এই তালেবান মানে আফগান তালেবান নয় এই তালেবান মানে সত্যিকারের মুসলিম গন এটা বুঝতে বিজ্ঞ হবার দরকার নাই। আফসোস বঙ্গবন্ধুর অনুসারীগণ ওনার প্রতি এমন মিথ্যাচারের কোনই জবাব দিল না। আর শহীদ ভাষা সৈনিক সবাই ছিলেন মুসলমান অর্থাৎ যতদিন এই রবীন্দ্রনাথ আছেন তত দিন বাংলা তালেবান না হলেও এই পশ্চিমা বা মধ্যপ্রাচ্য হবেই। নজরুল জাতীয় কবি হলেও তাঁকে মনে রাখা যাবে না কারন তিনি এই ভোগ বাদের বিরোধী এবং বাংলার সবচেয়ে শক্তিশালী ধর্ম নিরপেক্ষ কবি ছিলেন যার প্রমান তাঁর সাহিত্য। তাই আসুন নিজেদের ঐতিহ্য ধারন করি বাঙ্গালী হই পশ্চিমা কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের ঢঙে নয় বাঙ্গালীর ঢঙে। যে বাঙ্গালীরা সকল ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে পাশাপাশি শান্তির সাথে বসবাস করতেন। যে বাংলাতে এদের মত মুক্তমনাদের অপপ্রচার থাকবে না, যে অপপ্রচার শুধু ধর্মীয় সম্প্রতি নষ্ট করেছে দিতে পারে নি কিছুই।
পরিশেষে বলব অপচয় না করলেও জীবন কে উপভোগ করা যায়। অপচয় মানেই জীবনকে উপভোগ এটা অন্ধ মধ্যপ্রাচ্য বাসীদের ধারনা। এই ধারনা হতে বের হয়ে আসুন এবং এমন ডাস্টবিনে খাবার খোঁজা মানুষদের একটু খুশি করুন।
০৬ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:৫৭
শেখ এম উদ্দীন বলেছেন: ধন্যবাদ
যদি কেহ মানে তাহলে আরও সুন্দর হইত।
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ৭:৫২
কাঠ পাতা বলেছেন: সুন্দর এবং সময় উপযোগী পোস্ট