নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সব কিছুর উর্ব্ধে উঠা যায় না, তবু মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয়...
# স্বমী-স্ত্রী
- প্রথমেই তোমাকে বলেছিলাম, অন্তত দুই বস্তা চাল কিনে রাখতে, তখন আমার কথা তো শুনলে না । এ রকম অবস্থা কতদিন থাকবে, কে জানে ।
- এক বস্তা তো কিনেছি, পরদিন আরেক বস্তা কেনার জন্য গিয়েছিলাম, কিন্তু প্রতি বস্তায় পাঁচ'শ টাকা বেশি দাম দেখে পকেটে কুলোয়নি । জানো তো, মাসের শেষ ছিল ।
- তাই বলে মাছ, মাংসও একটু বেশি করে কিনে রাখবে না ?
- বললাম তো, পকেট ফাকা ছিল ।
- আটার দাম কম ছিল, সেটাও পাঁচ কেজির বেশি কিনলে না । আলু, তেল, পিঁয়াজ, রসুন, লবণ, হলুদ, আদা, মরিচের কথাও বেমালুম ভুলে গেলে ?
- এগুলো সবই তো বাসার কাছে দোকানেই পাওয়া যায় ।
- এগুলো এখন যে কিনবে, তোমার পকেটে কি এর মধ্যে টাকার মেশিন বসেছে ?
- কি সব জাতা কথা বলো ।
- আমি ঠিকই বলেছি, শোন, আগামিকাল যদি বাজার না করো তবে শুধু আলুভর্তা দিয়ে ভাত খেতে হবে । এই আমি বলে রাখলাম ।
হাজার হলেও বাড়ির কর্তা সে, নিজের কথা না হয় বাদই দিলাম; বউ, ছেলে-মেয়েকে কিছুতেই শুধু আলুভর্তা দিয়ে ভাত খাওয়াতে পারেনা সে । কোন ক্রমেই না ।
রাতে এরকম আকাশ-পাতাল ভাবতে ভাবতে মইনুল হোসেন এক সময় ঘুমিয়ে পড়ল । ঘুমের ভেতর স্বপ্ন দেখল, হাতে বড় একটা বাজারের ব্যাগ নিয়ে সে রাস্তা ধরে হেঁটে চলেছে, তার পকেট ভর্তি টাকা, ফাকা রাস্তায় বলতে গেলে তেমন কোন লোকই নেই, তার কিঞ্চিৎ চিন্তা হচ্ছে, অতগুলো বাজার নিয়ে আসার সময় যদি রিক্সা না পাই, তাহলে খুব সমস্যা হবে তার । কিন্তু বাজারগুলো আজ তাকে করতেই হবে ।
ভোর ৪.৫০ এ তার ঘুম ভেঙ্গে গেল এবং বাকী সময়টা সে এপাশ-ওপাশ করেই কাটাল । সকাল বেলায় যথারীতি নাস্তা করার পর রাতের স্বপ্নটা তার মনে পড়ল । সত্যিই কি সে এতটা নিঃস্ব হয়ে গেছে যে, বাজার করার টাকাটাও তার হাতে নেই ? তাহলে এই লকডাউন যদি আরো দীর্ঘ দিন ধরে চলতে থাকে, তাহলে তারা কি খেয়ে বাঁচবে ? তবে কি তাদের গ্রামে চলে যাওয়ায়'ই ভাল ছিল ? অনেকেই যেমনটা চলে গেছে । না, সে আর ভাবতে পারছে না । অবশেষে মনে হলো, এখন শুধু বেঁচে থাকাটাই আসল কথা, সে এবং সবাই প্রবলভাবে বেঁচে থাকতে চাই ।
অনেকটা বিরক্তি নিয়েই তাকালো পাশে, দ্যাখে স্ত্রী রাহেলা বাজারের একটা বড় ব্যাগ এবং হাতে একটা লম্বা ফর্দ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে । বলল, এই নাও, এখানে যা যা লেখা আছে তার সবটাই কিনে আনা চায়, কোন কিছু বাদ দেওয়া যাবেনা ।
মইনুল হোসেন কিছুটা অসহায়ের মত তাকাল স্ত্রীর দিকে, মুখে কোন কথা বলল না ।
রাহেলা এক হাজার টাকার পাঁচটা নোট হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল, মেয়েদের অনেক কিছুই মাথায় রাখতে হয়, ছোট বেলায় মাকে দেখেছি প্রতিদিন ভাত রান্না করার সময় এক মুষ্ঠি করে চাল আলাদা করে রাখতে, আমি শুধু কিছু কিছু করে টাকা জমিয়ে রেখেছিলাম ।
মইনুল হোসেন এবারও কোন কথা বলতে পারল না, কারণ রাতের স্বপ্নটা তার আবার মনে পড়তে শুরু করেছে...।
০৬ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:৫১
সাইন বোর্ড বলেছেন: না, কুষ্টিয়া । পড়া ও মন্তব্যের জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ ।
২| ০৬ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:৫১
বোবাকান্না বলেছেন: বাস্তবতা
০৬ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:৫৮
সাইন বোর্ড বলেছেন: এটা নিছকই আমার উপলব্ধি, বর্তমান বাস্তবতার নিরিখে । অসংখ্য ধন্যবাদ, ভাল থাকুন ।
৩| ০৬ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:৫৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ভাই আমারও একই দশা।
প্রয়োজন অনেক কিন্তু টাকা নাই।
আপনার স্ত্রী বুদ্ধমতি, আমার ধরে গবেট
তাই আপনার সমস্যার সমাধান হেলো
আমার স্বপ্ন যেই তিমিরে ছিল সেই
তিমিরেই আছে এখনো।
০৬ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:০২
সাইন বোর্ড বলেছেন: মনে হয় কিঞ্চিৎ ভুল হলো নূরু ভাই, এটা বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মধ্যবিত্ত পরিবারের একটা গল্প বলার চেষ্টা, এটা আমার ব্যক্তিগত কথা না । অসংখ্য ধন্যবাদ, ভাল থাকুন ।
৪| ০৬ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:০২
নেওয়াজ আলি বলেছেন: তাই মাথা গরম করা ঠিখ হবে না। আমার গ্রাম হতে মা মাছ চাল পাঠিয়েছে একবার
০৬ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:০৫
সাইন বোর্ড বলেছেন: খুব ভাল, এখন নিশ্চিন্তে ঘরে বসে লকডাউন পালন করুন । আল্লাহ যেন আমাদের এ বিপদ থেকে সহসা উদ্ধার করে । অসংখ্য ধন্যবাদ, ভাল থাকুন ।
৫| ০৬ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:১৩
রাজীব নুর বলেছেন: আমার অবস্থা খুব খারাপ।
আমার ঘরের খাবার সব শেষ। এমনকি আজ দুপুরে কি রান্না হবে আমি জানি না।
০৭ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:২০
সাইন বোর্ড বলেছেন: সংসারী মানুষকে বাইরে যেতেই হবে, কিছু করার নেই । ভাল থাকুন এবং সাবধানে থাকুন ।
৬| ০৬ ই এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:৫৮
ক্ষুদ্র খাদেম বলেছেন: এটা কঠিন সময় আর এই সময়ে সাবধানতা অবলম্বনই শ্রেয়। ভালো থাকবেন, সাবধানে থাকবেন
০৭ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:২১
সাইন বোর্ড বলেছেন: আপনিও ভাল থাকবেন, শুভ কামনা রইল ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:৪৫
বিভ্রান্ত পাঠক বলেছেন: সুন্দর লেখনী।। আপনার বাসা কি চট্টগ্রাম?