![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার প্রয়োজন একটি সুন্দর পৃথীবী ।বিশেষজ্ঞদের আলোচনার (কপি-পেস্ট )আধিক্য থাকবে ।
আজ ১২ ভাদ্র মঙ্গলবার বিংশ শতাব্দীর অন্যতম জনপ্রিয় বাঙালি কবি, সঙ্গীতজ্ঞ, সংগীতস্রষ্টা , দার্শনিক ও বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৭তম প্রয়াণবার্ষিকী। ১৩৮৩ বঙ্গাব্দের এই দিনে চির অভিমানী বিদ্রোহী কবির মহাকাব্যিক জীবনের অবসান ঘটে।
গল্প, কবিতা, উপন্যাস কিংবা সঙ্গীত-সাহিত্য ও শিল্পের সব শাখায় তাঁর আগমন ছিল ধূমকেতুর মতো। দ্রোহে ও প্রেমে, কোমলে-কঠোরে বাংলা কাব্য ও সংগীতে এক নতুন মাত্রা সংযোজন করেছিলেন তিনি তাঁর অনন্য প্রতিভায়। তাঁর কল্পনা কখনো ধর্মীয় উদারতা, কখনো সাম্যবাদ, কখনো স্বাধীনতা , কখনো মানবতা আবার কখনো নৈরাজ্যকে স্পর্শ করেছে।
নজরুল তাঁর লেখনীতে যে সাম্যের ইঙ্গিত দিয়েছেন তা স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, মানবতা এবং সুবিচারের এষণায় তীক্ষ্ণ, তীর্য, উজ্জ্বল। শোষিত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির জন্য তাঁর ক্ষুরধার লেখনী ছিল অব্যাহত। মানবতার মুক্তির পাশাপাশি সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা, কুসংস্কার, কূপমণ্ডূকতার বিরুদ্ধেও ছিলেন সোচ্চার।
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে 'বিদ্রোহী কবি' এবং আধুনিক বাংলা গানের 'বুলবুল' নামে খ্যাত কাজী নজরুল ইসলাম বিশ শতকের বিশ ও ত্রিশের দশকে উপ-মহাদেশে অবিভক্ত বাংলার সাংস্কৃতিক সম্প্রচার ও গণমাধ্যম জগতে সবচেয়ে বর্ণাঢ্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন। আপন সৃষ্টির আলোয় নতুন দিনের আগমনী বার্তা দিয়ে এঁকে দিয়েছিলেন নবদিগন্তের উজ্জ্বল রেখা।
সমাজ-বিধানের অসঙ্গতি, স্ববিরোধিতা, জাতি-বৈষম্য, শ্রেণী বৈষম্যের প্রতি তাঁর কণ্ঠ সব সময়ই সোচ্চার ছিল। আর এসকল কিছুর মূল ছিল মানবমুক্তি ও মানবকল্যাণ। সংকট ও সম্ভাবনায় নজরুলের সৃষ্টিকর্ম বাঙালির জীবনে জুগিয়ে চলেছে নিরন্তর প্রেরণা। বাঙালির রুচি ও মননের অধীশ্বর জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ।
নজরুলের গান, কবিতা, গল্প, নাটক, উপন্যাস, প্রবন্ধ, চিঠিপত্র- এককথায় সমগ্র নজরুল সাহিত্যে দুটি ভাবকে আলাদাভাবে শনাক্ত করা যায়। প্রথমটি, সমাজের নানাবিধ বৈষম্যের প্রতি তাঁর তীব্র ক্ষোভ আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের প্রতি তাঁর অপার ভালবাসা। বাংলা কাব্য তিনি ইসলামী সংগীত তথা গজলের জনক হলেও রচনা করেছেন শ্যামাসংগীত ও হিন্দু ভক্তিগীতি। প্রথমটি থেকে তাঁর মধ্যে জন্ম নেয় সাম্যবাদী চেতনা আর দ্বিতীয়টি থেকে জন্ম নেয় বিশ্ব মানবধর্ম।
মৃত্যুর ৩৭ বছর পরও বাঙালি জাতি তাকে বিস্মৃতি তো দুরের কথা আরও বেশি প্রয়োজন অনুভব করে।কী বিদ্রোহে, কী প্রেমে, এখনো বাঙালি শরণাপন্ন হয় তার। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস।আজও তার বিচিত্র সৃষ্টির মাঝ থেকে বিদ্রোহের পংক্তিমালা বাঙালির হূদয়ে অনাচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের দুন্দুভি বাজিয়ে চলে।
ঢাকায় পিজি হাসপাতালে ১৯৭৬ সালের ২৭ আগস্ট (১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ ভাদ্র) চিরনিদ্রায় ঘুমিয়ে পড়েন কবি। কবরে শুয়ে নজরুলের আজানের ধ্বনি শোনার আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়েছে। বাংলার মাটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদ প্রাঙ্গণে কবি চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন। কবির ৩৭তম মৃত্যু দিবসে কবিকে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
©somewhere in net ltd.