![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার প্রয়োজন একটি সুন্দর পৃথীবী ।বিশেষজ্ঞদের আলোচনার (কপি-পেস্ট )আধিক্য থাকবে ।
পদ-পদবি পেতে সব সময় মুখিয়ে থাকেন ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা। চেষ্টা-তদবিরের পাশাপাশি পদ পাওয়া নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনাও কম নয়। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২টি ছাত্র হলের কমিটি করতে গিয়ে নেতা খুঁজে পাচ্ছে না ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ক্ষমতার পালাবদল হলে বিপদে পড়তে পারেন—এই আশঙ্কায় সরকারের শেষ সময়ে কর্মীদের অনেকেই ছাত্রলীগের পদে যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না বলে সংগঠনের একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
এর মধ্যে মাত্র একটি হল শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের জন্য ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় কমিটিতে জমা দেওয়া হয়েছে। এতে বিএনপির ছাত্রসংগঠন ছাত্রদলের অন্তত চারজন কর্মীর নাম রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির একাধিক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্ররাজনীতি আদর্শিক জায়গা থেকে সরে আসায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। গত সাড়ে চার বছর ছাত্রলীগের মিছিল-সমাবেশ ও কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিলেন এমন অনেকেই এখন কোনো পদ নিতে রাজি হচ্ছেন না। ক্ষমতার পালাবদল হতে পারে, এমন আশঙ্কায় তাঁরা নিজেদের আর ছাত্রলীগ হিসেবে ‘চিহ্নিত’ করতে রাজি নন। শুধু তা-ই নয়, অনেকে ছাত্রলীগের কর্মসূচির পাশাপাশি এখন ছাত্রদলের কর্মসূচিতেও গা দেখাচ্ছেন, যাতে ভবিষ্যতে বিএনপি ক্ষমতায় এলেও হলে থাকার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যায় পড়তে না হয়।
অবশ্য এ সংকটের কথা কোনো নেতা আনুষ্ঠানিকভাবে বলতে রাজি হননি।
গত ২৪ আগস্ট টিএসসি মিলনায়তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় বেশ কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে আলাদাভাবে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। তাঁরা বলেন, হলে আসন ধরে রাখার জন্য বাধ্য হয়েই তাঁরা কর্মসূচিতে এসেছেন; কিন্তু ছাত্রলীগের কমিটিতে যেতে আগ্রহী নন। কারণ হিসেবে তাঁরা বলেন, সামনে ক্ষমতার পরিবর্তন হলে অন্য সংগঠন ক্যাম্পাসের দখল নেবে। ছাত্রলীগের পদে থাকলে তখন তাঁরা আর ক্যাম্পাসেই ঢুকতে পারবেন না। এমনকি আক্রমণের শিকারও হতে পারেন।
ছাত্রলীগের হল শাখার একাধিক নেতা জানান, কোনো কর্মীর ওপরই তাঁরা এখন আর আস্থা রাখতে পারছেন না। কর্মীদের অনেকে ছাত্রলীগের পাশাপাশি ছাত্রদলের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন।
অবশ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান মোল্লা এ সংকটের কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন হলের নেতাদের সঙ্গে কমিটি নিয়ে কথা হয়েছে, তাঁরা কেউ এ ধরনের সংকটের কথা বলেননি।
২০১১ সালের ১০ জুলাই ছাত্রলীগের ২৭তম কেন্দ্রীয় সম্মেলনে মেহেদী হাসান মোল্লাকে সভাপতি ও ওমর শরীফকে সাধারণ সম্পাদক করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আংশিক কমিটি গঠিত হয়। পরের বছর ১ মে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির দুই বছরের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ১২টি ছাত্র হল শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করতে পারেনি। গত ১ এপ্রিল ১২টি হলের আংশিক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এখনো সে অবস্থায় রয়েছে।
কারণ জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক ওমর শরীফ দাবি করেন, কর্মীদের জীবনবৃত্তান্ত যাচাই-বাছাই করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দেওয়ার জন্য হল শাখার নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন। সেই কাজ এখনো চলছে।
এরই মধ্যে গত ৩১ জুলাই অমর একুশে হলের ৫১ সদস্যবিশিষ্ট যে কমিটি জমা দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে বিতর্ক উঠেছে। এ কমিটির পরিবেশবিষয়ক সম্পাদকসহ অন্তত চারটি পদ পূরণ করা হয়েছে ছাত্রদলের কর্মী-সমর্থকদের দিয়ে। এর মধ্যে পরিবেশবিষয়ক সম্পাদকের পদে নাম রয়েছে মাহুয়ান কবিরের (রাশেদ)। তিনি নিজে প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রদল করি। এখন দেখি আমাকে ছাত্রলীগের কমিটিতে রাখা হয়েছে। এ কারণে ছাত্রদলে আমি ভূল বোঝাবুঝির শিকার হচ্ছি।’ মাহুয়ান কবির জানান, তাঁর মতো ছাত্রদলের আরও তিনজন কর্মীকে ছাত্রলীগের এই কমিটিতে সদস্য পদ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে একুশে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, অনুমোদনের জন্য পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দেওয়া হয়েছে। এতে এক-দুজন নিজেদের ছাত্রদলের কর্মী বলে দাবি করতে পারেন, কিন্তু বাকিদের দেখেশুনেই পদ দেওয়া হয়েছে।
কোনো কোনো ছাত্রনেতা এ-ও স্বীকার করেছেন, অধিকাংশ ছাত্র মূলত হলে থাকার জন্য আসন বরাদ্দ পেতে ও ধরে রাখতে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে থাকেন বা অংশ নিতে বাধ্য হন। আর এসব সাধারণ শিক্ষার্থীকে কর্মী হিসেবে দেখিয়ে নিজেদের দাপট প্রতিষ্ঠা করেন নেতারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মারুফ বিল্লাহ বলেন, ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনগুলো মূলত হলের আসনকে পুঁজি করেই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে যায়। কর্মসূচিতে না গেলে শারীরিক নির্যাতন করে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ছাত্ররাজনীতির আদর্শিক ধারা বজায় রাখতে এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
সুত্র : আহমেদ জায়িফ ,বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার , প্রথম আলো | আপডেট: ০২:১৫, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৩
©somewhere in net ltd.