নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রকৃতির বিচারে বিশ্বাসী

নিজের জাতি আর মানুষের কল্যাণেই শান্তি পাই।

বিদ্রোহীসৌরভ

আমার প্রয়োজন একটি সুন্দর পৃথীবী ।বিশেষজ্ঞদের আলোচনার (কপি-পেস্ট )আধিক্য থাকবে ।

বিদ্রোহীসৌরভ › বিস্তারিত পোস্টঃ

জয় মামাকে নিয়ে আমার যতো ভয়! -গোলাম মাওলা রনি।

২৫ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:৪১

সন্ধা ৭ টার সময় আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম সেখানে। সঙ্গে ডিইউজের সাবেক সম্পাদক শাবান মাহমুদ। আমি গিয়েছিলাম সাপ্তাহিক রোটারী ক্লাবের মিটিংয়ে অংশ গ্রহন করার জন্য। আর শাবান গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী তনয় জনাব সজীব ওয়াজেদ জয় এর অনুষ্ঠান কভার করার জন্য। এস এস এফ সদস্যরা জয়ের অনুষ্ঠানে কোন সাংবাদিক কিংবা অআমন্ত্রিত অতিথিদেরকে ঢুকতে দিচ্ছিলোনা। কেবলমাত্র একাত্তর টিভির লোকজন ঢুকতে পারলো অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করার জন্য।



আমি ঘটনার দিন অর্থাৎ ১৮ ই মার্চ মঙ্গলবার হোটেল রুপসী বাংলা হোটেলে গিয়েছিলাম বিকেল ৫টার দিকে। আমাদের ক্লাবের সেদিনকার মিটিংটি হয়েছিলো- নীচতলার ইটালিয়ান হোটেল এন্ড বারে- জায়গাটি হলো সুইমিং পোলের পাশে এবং টেনিস কোর্ট সংলগ্ন এলাকা ঘেঁষে। আমি মিটিংয়ের বিষয় বস্তুর দিকে একবার নজর দিচ্ছিলাম- আবার হাফপ্যান্ট পরা বাঙালী সাহেবদের টেনিস খেলা দেখছিলাম। তারা খেলছিলো এবং কাকে উদ্দেশ্য করে যেনো গালাগালি করছিলো। অন্যদিকে সুইমিং পোলে জলক্রিয়ারত নারী পুরুষদের মধ্যেও একটা তাড়াহুড়ার ভাব ছিলো। এমনতরো অবস্থায় লক্ষ করলাম- শাবান মাহমুদ টেনিস কোর্টের পাশ দিয়ে বিষন্ন মনে পায়চারী করছে। আমার ভারী মায়া হলো- আমি তাকে ফোন করে আমার নিকট আসতে বললাম।



শাবানের মুখেই শুনলাম এবং জানলাম যে জনাব সজীব ওয়াজেদ জয় রুপসী বাংলার বলরুমে ডিজিটাল জাতীয় কিছু একটা নিয়ে কি যেনো বলবেন। কিছু লোককে আমন্ত্রন জানানো হয়েছে আর সাংবাদিকদের মধ্যে কেবল একাত্তর টিভির লোকজন। বাকী কেউ ঢুকতে পারছে না। গোপাল গঞ্জের কপালী পোলা এবং সাংবাদিক নেতা শাবান মাহমুদ অনেক চেষ্টা করেও সেখানে ঢোকার কোন রাস্তা না পেয়ে বিষন্ন মনে হাটাহাটি করছিলো। আমার সামনে আসলে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম- সেটি মলিন এবং বেশ শুকনো হয়ে গেছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম কি খাবা? সে কোন ভনিতা না করেই জবাব দিলো- এক গ¬াস ঠান্ডা এবং ফ্রেস জুস।



আমরা যখন হোটেল থেকে বের হচ্ছিলাম তখন জনাব জয়- যাকে অনেকে জয় মামা বলে- তার সঙ্গী সাথীরা মহা সমারোহে হোটেলে ঢুকলো। আরো ঢুকলো এস.এস.এফ এর অনেক সদস্য। হোটেলটির লবীতে সাধারন অতিথি গিজ গিজ করছে- যারা মূলত নিজেদের ব্যবসা বা অন্যকোন কর্ম করতে এসেছিলো। আরো কিছু লোক এসেছিলো হোটেলটিতে অবস্থানরত টি টুয়েন্টি ক্রিকেট ম্যাচের খেলোয়ারদের সঙ্গে সাক্ষাত করার জন্য। এসব লোকদের সবাই মহা বিরক্ত হয়ে এস.এস.এফ সদস্যদের দিকে তাকালো এবং যাদের মুখ খারাপ তারা চমৎকারভাবে কিছু গালি দিলো। আমি অনেকের নিকট পরিচিত মুখ হবার কারনে তারা আরো জোরে আমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে গালমন্দ করতে থাকলো। আমরা কোনো দিকে না তাকিয়ে দ্রুত হোটেল থেকে বের হয়ে গাড়ীর জন্য অপেক্ষা করতে থাকলাম।



আমি ও শাবান যখন হোটেলের গেইটে দাড়িয়ে গাড়ীর জন্য অপেক্ষা করছি ঠিক তখনই জয় মামার গাড়ীর বহর আমদের সামনে দিয়ে রাজকীয় ভঙ্গীতে অতিক্রম করছিলো। সে হয়তো কালো গ¬াস ওয়ালা মার্সিডিস জিপটিতে ছিলো এবং তার গাড়ীর আগে পিছে ছিলো অনেকগুলো নিরাপত্তার গাড়ী। কোনটা সাইরেন বাজাচ্ছে। আবার কোনটা থেকে নিরাপত্তা রক্ষীরা হাত বাড়িয়ে, গলা বের করে কর্কস স্বরে লোকজনদেরকে সরে যেতে বলছে। একটি পাঁচতারা হোটেলে আগত দেশের অভিজাত লোকেরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে যার যার মতো সরে যেতে থাকলো বেইজ্জতি হবার ভয়ে। মামাজীর গাড়ীর বহর হোটেলের সামনের অংশ অতিক্রম করে টেনিস কোর্টের দিকে গেলো আর ভীরু বাঙালীর দল ফাঁক ফোকর থেকে বের হয়ে এসে সমস্বরে মামার গীবতে লেগে গেলো। ইতিমধ্যে আমার গাড়ী এসে গেলো এবং আমি তাতে চড়ে বসলাম।



গাড়ীতে বসে আমার মনে হলো- জনাব জয়কে এতোসব করার বুদ্ধি কে দিয়েছে! সে কি একবারও চিন্তা করে দেখেছে তাকে নিয়ে জনগন কি ভাবছে? অথবা তার আশে পাশের লোকজন যারা তাকে ইতিমধ্যেই পুজার আসনে বসিয়ে সারাদিন নমস্য নমস্য করছে- তারা কারা! এই নব্য চাটুকারদেরকে সে কতটুকু চিনে বা কতদিন ধরে চিনে। সেকি চাটুকারদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, লেখা পড়া, নির্বাচনী এলাকায় জনপ্রিয়তা, ব্যক্তিগত সততা, ধর্মবোধ, নীতি নৈতিকতা এবং ব্যক্তিগত সততা এবং সাহস সম্পর্কে কোন খোঁজ খবর নিয়েছেন? যদি না নিয়ে থাকেন তবে অবশ্যই তিনি ভুল করছেন। আর যদি খোঁজ খবর নিয়ে থাকেন তাহলে আমি বলবো- তিনি মারাত্মক ভুল করছেন যা একসময় মারাত্মক অপরাধে রুপ নিবে।



বাজারে জোর গুজব-বর্তমান মন্ত্রী পরিষদে বেশ কয়েকজন তরুন মন্ত্রী হয়েছেন জনাব জয়ের লবিং এর কারনে। এসকল তরুন মন্ত্রীদেরকে জনাব জয় যতোদিন ধরে চিনেন- আমি সম্ভবত তার চেয়ে বেশিদিন ধরে চিনি। আমি তাদেরকে চিনি নানা ভাবে নানা উপকরনে এবং নানা অভিধায়। ৯ বম সংসদে অন্তত জনা পঞ্চাশেক নারী-পুরুষ এম.পি ছিলেন যাদের সঙ্গে আমার বন্ধু সুলভ তুই তুমি সম্পর্ক ছিলো। এর বাইরে অন্তত জনা দশেক ছিলেন যারা আমার চেয়ে কম বয়সী এবং আমাকে তারা অত্যন্ত কাছের মানুষ ভাবতেন এবং মনের কথা বলতেন। আমার চেয়ে বয়সে ৮/১০ বছরের বড় এমন ৫০/৬০ জনের সঙ্গে আমার খুবই খাতির এবং খোলামেলা সম্পর্ক ছিলো। সিনিয়র নেতৃবৃন্দের অনেকে আমাকে স্নেহ করতেন এবং তাদের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের সফলতা ও ব্যর্থতার নানাদিক নিয়ে একান্তে আমাকে অনেক কথা বলতেন।



এম.পিদের মধ্যে দুটো প্রবনতা প্রায়ই লক্ষ্য করা যেতো। এক- কি করে আগামীতে নমিনেশন পাওয়া যায় এবং দুই- কি করে মন্ত্রী হওয়া যায়। এই দুইটি লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য তারা বঙ্গবন্ধু পরিবারের অনেকের নিকটই ধরনা দিতেন। তাদের এই ধরনা দেয়া লোকদের তালিকায় এক নম্বরে ছিলো জনাব জয়। এরপর শেখ রেহানা বা অন্য কেউ। আমি যতটুকু জানি-মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এসব তদ্বিরবাজদেরকে একদম পছন্দ করতেন না। ফলে তদ্বিরকারকরা খুবই গোপনে এবং সতর্কতার সঙ্গে কাজকর্ম করতো। আমি শুনতাম-তরুনদের মধ্যে কয়েকজন মন্ত্রী হবার জন্য সকাল বিকাল জনাব জয়ের নিকট ধর্না দিচ্ছে। কিন্তু গত সরকারে তাদের সেই ইচ্ছা বাস্তবায়িত হয়নি। কিন্তু এবারে এসে দেখা গেলো বেশ কয়েকজন মন্ত্রী হয়ে গিয়েছেন।



তরুন এম.পি মন্ত্রীদের বাইরে রয়েছেন বেশ কয়েকজন সাবংবাদিক, বুদ্ধিজীবি, ব্যবসায়ী এবং পেশাজীবি যারা জনাব জয়কে নিয়ে আলাদা একটি বলয় গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। ইতিমধ্যেই তারা জয়কে মাঠে নামানোর প্রক্রিয়ায় বেশ খানিকটা সফলও হয়েছেন। আওয়ামীলীগের একটি কেন্দ্রীয় প্রচার ও গবেষনা সেল রয়েছে সি আর আই নামে। এই সংগঠনটির ব্যাপারে জনাব জয়কে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হ্েচ্ছ এবং বক্তৃতা ও বিবৃতি প্রদান করানো হচ্ছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে তার প্রতিটি অনুষ্ঠানের ব্যাপারে খোঁজ খবর রাখি এবং অনুষ্ঠান গুলো নিয়ে জনগনের বিরুপ মন্তব্য শুনে যারপর নাই হতাশ হয়ে পড়ি।



বিগত বিএনপি জোট আমলে জনাব তারেক রহমানকে নিয়েও দলের তরুন তুর্কীদের একটি অংশ বড্ড মাতামাতি শুরু করেছিলো। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সমান্তরালে আরো একটি কার্যালয় এর কথা মানুষের মুখে মুখে ফিরতো। বড় বড় ব্যবসায়ী, মন্ত্রী, এম.পি সকলেই একবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যেতেন- আবার হাওয়া ভবনে জনাব তারেক রহমানের কার্যালয়ে যেতেন। এসব নিয়ে বিএনপি সরকারের বদনামীর শেষ ছিলোনা। হাওয়া ভবনের দায় থেকেই ওয়ান ইলেভেনের সৃষ্টি হয়েছিলো। সময়ের বিবর্তনে- হাওয়া ভবন এখন একটি জঘন্য গালি। কাউকে হাওয়া ভবনের কিছু একটা বলে সম্বোধন করা হলে সে কিন্তু ভারী অপমান বোধ করে।



গত পাঁচটি বছর জনাব জয়কে নিয়ে তেমন কোন অপপ্রচার হয়নি। কিন্তু ইদানিং নানা কথা বাতাসে ভাসছে। এগুলো বাতাস থেকে জমিনে নামতে খুব বেশী সময় লাগবে না যদিনা বাতাসের বিষয় বাতাস দিয়েই উড়িয়ে দেয়া না যায়। জনাব জয়ের সাঙ্গ পাঙ্গরা তার পরিচয় দিচ্ছে- আইটি বিশেষজ্ঞ। সমালোচকরা বলছে-কিসের আইটি বিশেষজ্ঞ, কোথাকার আইটি বিশেষজ্ঞ। বর্তমান দুনিয়ায় আইটির ব্যপ্তি বিশাল আকাশের মতো। এতসব সেক্টরের বিশেষজ্ঞ সম্ভব নয়। যারা কম্পিউটার নিয়ে কাজ করেন তারা জানেন এর দুইটি অংশ-যথা হার্ডওয়ার এবং সফ্টওয়্যার। সাধারনত এই বিষয় নিয়ে যারা পড়াশুনা করেন তারা হয় হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার- নয়তো সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। এই দুইটি ক্ষেত্রের কোনটিতে যদি কাউকে বিশেষজ্ঞ বলা হয় তবে ধরে নেয়া হয় তিনি নতুন কিছু একটা আবিষ্কার করেছেন। জনাব জয়ের সমালোচকরা সচরাচর প্রশ্ন করেন- তিনি কি আস্কিার করে বিশেষজ্ঞ হলেন।



জনাব জয়কে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়- তিনি হার্ভাডে পড়াশুনা করেছেন। ভালো কথা! কিন্তু কোন বিষয়ে পড়েছেন এবং কতদিন পড়েছেন! বাংলাদেশে অনেক হার্ভাড, অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ, ইয়েল, কলম্বিয়া, মিশিগান, ওয়াসেদা, বেইজিং প্রভৃতি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়–য়া ছাত্র ছাত্রী এমনকি ঐসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও আছেন। একদিন কথা প্রসঙ্গে একজন বললেন- ৩০ হাজার ডলার দিয়ে হাভার্ড এর ডিগ্রী অর্জন করা সম্ভব। সাবেক গৃহায়ন ও গনপুর্ত মন্ত্রী আব্দুল মান্নান এবং বর্তমান বিদ্যুৎ ও জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদও হাভার্ড থেকে ঐরকম ডিগ্রী নিয়েছেন। নসরুল হামিদের কথা জানিনে তবে মান্নান খানের কথা জানি। তার পিএস ইন্টারনেট থেকে হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফর্ম ডাউনলোড করে দেবার পর মন্ত্রী ৭ দিন বসে তা পূরন করতে পারেননি। পরে পি.এস তা পুরন করে দিয়েছে। জনাব মান্নান এবং জনাব নসরুল হামিদ একসঙ্গে কোর্সটি করেছেন এবং আমি নিজে নসরুল হামিদের নিকট থেকে কোর্স সম্পর্কে নানা কথা শুনেছি। যাহোক-মান্নান খান বাংলাদেশে ফেরত আসার পর দেখা গেলো হাভার্ডের ডিগ্রী লাভের গৌরবে তিনি বিভিন্ন স্থান থেকে সংবর্ধনা গ্রহন করছেন।



আমার মনে হয়- জনাব সজীব ওয়াজেদ জয়কে কোন কিছু বলেই বাঙালী জাতির নিকট পরিচয় করিয়ে দেবার দরকার নেই। তার প্রথম পরিচয় বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র। দ্বিতীয় পরিচয় শেখ হাসিনার পুত্র। এই দুইটি পরিচয়ের বাইরে মানুষ শুধু তার কাছ থেকে চাইবে কর্ম- ভালো ভালো কর্ম এবং ভালো ভালো কথা। এখন যদি জিজ্ঞাসা করা হয়- গত পাঁচটি বছরে তিনি দেশের জন্য কি কর্ম করেছেন কিংবা দেশের মানুষের ভালো লেগেছে এমন কি কথা বলেছেন? তার শুভার্থীরা কোন উত্তর দিতে পারবে না। অথচ দেশবাসীর নিকট তিনি বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য হিসেবে রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি। তার নিরাপত্তার জন্য রাষ্ট্র সবোর্”চ ব্যয় করছে! কাজেই ক্ষেত্র বিশেষে তার চিন্তা চেতনা, বুদ্ধিদীপ্ত অভিব্যক্তি এবং আচরন দলমতের উর্ধ্বে উঠে রাষ্ট্রের কল্যানে নিয়োজিত হবে- এটাই ভালো মানুষদের আকাঙ্খা।



এবার জয় সম্পর্কে - আমার ভয়ের কথা গুলো বলি। তাকে সঙ্গ দেয়া লোকজনদের বেশীর ভাগকেই আমি চিনি। ঐসব লোকদের বেশির ভাগই ভালোনা। তারা লোভী, চরিত্রহীন কিন্তু উচ্চাভিলাসী। তারা নীচু মানুষিকতার এবং স্বার্থপর। তারা প্রচন্ড ভীরু, বিদ্যাহীন এবং অজনপ্রিয়। তাদের কারুর পারিবারিক এবং সামাজিক জীবন শান্তিপূর্ন এবং সম্মানজনক নয়। সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ বিনির্মানের জন্য তাদের কোন গবেষনা পত্র নেই। তারা দেশ জাতি এবং বিশ্ব নিয়ে চিন্তা করে না। তারা সবসময় নগদ নারায়নে সন্তুষ্ট থাকতে চায়। তাদের অনেকের স্ত্রীদের সঙ্গে আমার কথাবার্তা হয়েছে। আমি ওদের সম্পর্কে যেসব অভিযোগ শুনেছি তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। কাজেই এইসব লোক যদি কারো সঙ্গে কিছুদিন থাকে তবে সেই ব্যক্তি যদি দেবদূত বা দেবতা ও হন তাহলেও ধ্বংশ থেকে রেহাই পাবেন না।



বঙ্গবন্ধুর ছোট্র একটি কাহিনী বর্ননা করে উপসংহারে চলে যাবো। এক বিখ্যাত ছাত্র নেতাকে বঙ্গবন্ধু এম.পি বানালেন। পরে হুইপ বা চীপ হুইপ বানালেন। কিন্তু নেতাটির বড় শখ তিনি মন্ত্রী হবেন। তো মন্ত্রী হবার জন্য তিনি উঠে পড়ে লাগলেন। বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠজন এবং আত্মীয়-স্বজনদের অনেককেই ধরলেন। অনেকে বঙ্গবন্ধুর নিকট সুপারিশও করলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সবাইকে এড়িয়ে গেলেন। কোন উত্তর করলেন না। হাঁ ও বললেন না আবার না ও বললেন না। নেতাটির জিদ চেপে বসলো। তিনি বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে ঘনিষ্ট এক বন্ধুকে ধরলেন। লোকটি মারা গেছেন- তাই তার নাম উচ্চারন করলাম না। তিনি বঙ্গবন্ধুর নিকট গেয়ে নেতাটিকে মন্ত্রী বানানোর সুপারিশ করলেন। বঙ্গবন্ধু বললেন- যার সম্পর্কে সুপারিশ করতে এসেছো তার সম্পর্কে কি জানো? ঐ ছেলেটিকে যতোটুকু দেয়া দরকার তার সর্ব্বোচ্চটুকুই দেয়া হয়েছে। এর বেশী দিলে ও দেশ জাতি এমনকি ওর নিজের সর্বনাশ করে ফেলবে। ওর বাবা ছিলো দাগী ডাকাত সর্দার। অনেকবার পুলিশের হাতে ধরা পড়ে জেল খেটেছে। একটা ডাকাতের ছেলে মন্ত্রী হতে পারে না।



বঙ্গবন্ধু যেভাবে তার কর্মীদেরকে চিনতেন- বঙ্গবন্ধু দৌহিত্র কি তার সাঙ্গ পাঙ্গদেরকে সেভাবে চিনেন। যদি তিনি সত্যিই চিনেন তবে আমার কিছু বলার নেই। আর যদি না চিনে থাকেন তবে তাঁর উচিত খোঁজ খবর নেয়া। এই মুহুর্তে দেশের প্রধান সমস্যা কি? মামা কি খোঁজ নিয়েছেন দেশের অর্থ ভান্ডারের সঞ্চয়, স্থিতি এবং আগামী ৬ মাসের যোগান সম্পর্কে? কিংবা পররাষ্ট্রনীতির অশনি সংকেত গুলো দুর করে কিভাবে এগুনো যায় তা নিয়ে কি কোন কর্মপন্থা গ্রহন করেছেন? আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে- সরকারের দায়িত্বশীল সবাই মোট দেশজ উৎপাদন এবং বৈদেশিক রেমিটেন্সের প্রবাহ দিয়েই খুশি। কিন্তু এই দুইটি খাতের কোনটি থেকেই যে সরকারের উলে¬খযোগ্য কোন রাজস্ব আসেনা তাকি তারা চিন্তাভাবনা করেন! মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ই ইউর দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করার মত একজন লোকও সরকারে নেই। কিন্তু সংসদ ও সংসদের বাইরে সরকার দলীয় অনেকে আছেন যারা অতি দ্রুত এবং দক্ষতার সঙ্গে কাজ গুলো করতে পারবেন। মামা কিংবা তার সঙ্গীসাথীরা এসব ব্যাপারে যে কিছুই করছেন না তা আমি হলফ করে বলতে পারি।



জয় মামাকে নিয়ে আমার ভয়ের মূল কারন হলো- তার সঙ্গী সাথীদের কারো ব্যক্তিগত জীবনে বর্নাঢ্য সফলতার ইতিহাস নেই। নেই রুচিশীলতা, মেধা ও মননশীলতা এবং চৌকস ব্যক্তিত্বের ছাপ। তারা রাস্তায় পুলিশ ছাড়া বের হতে পারে না। তারা কোথাও গেলে লোকজন স্বপ্রনোদিত হয়ে এবং আগ্রহ ভরে তাদের নিকট আসে না। তাদের অনেকের দূর্নীতি, অনিয়ম এবং অরাজকতার কথাবার্তা লোকজনের মুখে মুখে ফেরে। ফলে এইসব লোক দ্বারা যদি তিনি বেষ্টিত হয়ে পড়েন তবে নিশ্চিতই বলা যায় তিনি ভুল করবেন এবং জনগনের নিকট ইমেজ হারাতে থাকবেন। তার লোকজন তাকে কিভাবে উপস্থাপন করতে চায় তা সাম্প্রতিক কালে ফেইসবুকে পোস্ট হওয়া একটি ছবি দেখলেই বুঝা যাবে। দেশের উত্তরাঞ্চলের কোন একটি অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত। বসে আছেন সোফায়। পরনে পাজামা পাঞ্জাবী এবং মুজিব কোট। দেখা গেলো-পাঞ্জাবী উঠে আছে- পাজামার ফিতেসহ বিশেষ অংশ বের হয়ে আছে।



বছর তিনেক আগে আওয়ামীলীগের সিনিয়র এক নেতা আর টিভির আওয়ার ডেমোক্রেসী নামক একটি লাইব অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। তিনি এমন ভাবে বসে ছিলেন যাতে করে তার পাজামার বিশেষ অংশ যা কিনা বেশ গোল হয়ে দর্শকদের নিকট দৃশ্যমান হচ্ছিলো। তিনি আবার মাঝে মধ্যে দু’পা ফাঁক করে দর্শকদেরকে তার বিশেষ কেরামতি দেখানোর সুযোগ করে দিচ্ছিলেন। অনুষ্ঠানের লোকজন তাড়াতাড়ি বিরতিতে গেলো এবং বললো- দাদা পি¬জ পাঞ্জাবীটা টেনে বসেন। দাদা টিভির লোকদের প্রতি মহা বিরক্ত হয়ে বললেন- অসুবিধা কি? লোকজন তো আমারটা দেখছে- তোমাদেরটা না। তা ছাড়া দর্শকরা যদি আমার মুখের দিকে না তাকিয়ে আমার মোচার দিকে তাকায় তাহলে সেই দায়িত্ব তো আমার নয়- দায়িত্ব দর্শকদের চোখের। তাদের চোখ যদি মোচা দেখতে পছন্দ করে তাহলে দেখতে দাও।



দাদার সেদিনকার মহান উক্তির বিষয়ে আর এগুতে পারলামনা। কিন্তু সেটির সূত্র ধরে অন্য কিছু বলতেও চাই না। কিন্তু একটি কথা অনাদীকাল থেকে প্রচলিত হয়ে আসছে আর তা হলো- সঙ্গী সাথীদের দেখেই মানুষকে মূল্যায়ন করে সবাই। উত্তম সঙ্গী সাথী, পাত্র মিত্র এবং বন্ধু বান্ধবদের কল্যানে একজন সাধারন মানুষ যেমন অসাধারন হয়ে উঠতে পারেন তেমনি একজন অসাধারন মানুষও নিকৃষ্টজন বলে ঘৃনিত হতে পারেন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.