নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সংক্রান্তির সলতে। লেখক সম্পাদক ওয়েব প্রকাশক

শ্রীশুভ্র

ফ্রীল্যান্স লেখক

শ্রীশুভ্র › বিস্তারিত পোস্টঃ

এ কাদের হাতে বাংলাদেশ?

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৩৪



আগস্টের পাঁচ তারিখ ২০২৪। বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পথ ধরে সেদেশের সরকার বিরোধী গণ অভ্যুত্থানে পতন হলো শেখ হাসিনার সরকারের। প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগত নিরাপত্তার স্বার্থে বাধ্য হলেন দেশত্যাগে। গণ বিক্ষোভের মুখে প্রায় খড়কুটোর মতো উড়ে গেল আওয়ামী লীগ সরকার। একথা সত্য, আওয়ামী লীগের দুর্নীতি এবং অপশাসনের বিরুদ্ধে প্রায় গোটা দেশ ফুঁসছিল। অপেক্ষা ছিল শুধুমাত্র একটা অগ্নিস্ফূলিঙ্গের। কোটা সংস্কারের দাবি নিয়ে গড়ে ওঠা ছাত্র আন্দোলন। এবং সেই আন্দোলন দমানোর জন্য শেখ হাসিনার সরকারের নেওয়া দমনমূলক ব্যবস্থাই সেই অগ্নিস্ফূলিঙ্গের কাজটি করে। একথাও সত্য, ছাত্র আন্দোলনের সুযোগে সেদেশের বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষগুলিও সরকার ফেলে দেওয়ার জন্য আড়াল থেকে কলকাঠি নাড়তে শুরু করে দেয়। এটাও ঘটনা, তার ফলেই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদেরকে ঢাল করে লাগাতার ধ্বংসলীলা চালানো হয় সরকারি সম্পত্তির উপরে। সব মিলিয়ে একটি অপদার্থ এবং দাম্ভিক সরকারের সার্বিক ব্যার্থতায় বলি হয় শত শত প্রাণ। ফলে সরকার বিরোধী জন বিক্ষোভ প্রায় সর্বাত্মক হয়ে গোটা দেশেই ছড়িয়ে পড়ে। যার সার্বিক প্রভাবে সোমবারের এই সরকার পতন।

শেখ হাসিনার প্রায় স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে দেশবাসীর বৃহৎ অংশই এই আন্দোলনের সমর্থনে দাঁড়িয়ে। তাঁর সরকারের পিছনে ন্যূনতম জনসমর্থনও যে ছিল না। সেটা ঘটনাক্রম থেকে পরিস্কার। কোটা সংস্কারের দাবি নিয়ে গড়ে ওঠা ছাত্র আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়েও কোন বিতর্ক নেই। দীর্ঘদিনের আওয়ামী লীগ সরকারের অপশাসনের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা ন্যায্য জন বিক্ষোভের যৌক্তিকতা নিয়েও কোন বিতর্ক নাই। শেষমেশ ‘দাবি এক দফা’ স্লোগানের, হাতে গরম সাফল্যে বাংলাদেশের জনশক্তির আনন্দ উল্লাস উন্মাদনার বিষয়েও কারুর কোন প্রশ্ন থাকার কথাও নয়। দেশবাসী যে সরকারকে ছুঁড়ে ফেলে দিতে চেয়েছে। পতন হয়েছে সেই সরকারের। জনগণের বিজয়োল্লাসের সময় এখন। খুব ভালো কথা।

কিন্তু সেই আনন্দ উল্লাস উন্মাদনায় কি রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করার অধিকার জন্মায়? দেশের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে অবাধে লুঠপাঠের অধিকার জন্মিয়ে যায়? দেশের সংসদ ভবনে ভাঙচুর চালানোর নৈতিক অধিকার হাতে চলে আসে? এবং যে বাংলাদেশের ত্রিশ লক্ষ শহীদের জীবনের বিনিময়ে পাওয়া অর্জিত স্বাধীনতা, সেই স্বাধীনতার অন্যতম স্থপতি বঙ্গবন্ধুর মূর্ত্তি ভাঙার অধিকার হাতে তুলে নেওয়া যায়? তাঁর প্রতিকৃতিতে কালি দিয়ে সেই প্রতিকৃতি ধ্বংস করার অধিকার পাওয়া যায়? না, শুধু বঙ্গবন্ধুর মূর্ত্তি বা প্রতিকৃতিই নয়। তাঁর নামাঙ্কিত মুক্তিযুদ্ধের জাদুঘর অগ্নিসংযোগে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং ইসিহাস মুছে দেওয়ার অপচেষ্টারই আয়োজন। এইভাবে যে জাতি তার জাতির পিতার শ্রাদ্ধানুষ্ঠান সম্পন্ন করে। সেই জাতির ভবিষ্যৎ কি আদৌ মর্যাদাপূর্ণ হতে পারে? স্মরণে রাখা দরকার, শেখ মুজিবর রহমানের অনেক সীমাবদ্ধতার ভিতরেও, এই সেই মানুষ। যাঁর একটা ডাকে একটা গোটা দেশের মানুষের ভিতরে স্বাধীনতার চেতনা জেগে উঠেছিল। লক্ষ লক্ষ দেশবাসী হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে দেশের স্বাধীনতার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সেদিন। তাঁরা কার আহ্বানে জীবন বাজি রেখে দেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। নিয়েছিল এই বঙ্গবন্ধুর কথার উপরে ভরসা করেই। আজকে সেই ‘জাতির পিতা’ই এই প্রজন্মের বাঙালির শত্রু হয়ে দেখা দিল কোন জাদুবলে? না, শুধু জাতির পিতাই নন। সোমবার জাতির আরও অনেক শ্রেষ্ঠ সন্তানদের মূর্ত্তি ভাঙার চেষ্টা করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ শিল্পী জয়নুল আবেদিনের মূর্ত্তিও। বিভিন্ন স্থানে হামলা চালানো হয়েছে বিখ্যাত সব ভাস্কর্যের উপরেও। ঘোষণা দেওয়া হয়েছে ভাস্কর্য মুক্ত বাংলাদেশেরও।

আর তখনই সন্দেহ হয়। তবে কি কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঢাল করে সেই শক্তিই আজকের বাংলাদেশের দখল নিতে চলেছে। যে শক্তি ১৯৭১ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা বনচাল করে দিতে সর্বতোভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল? সেদিন যে শক্তি পাকিস্তানের পাশে দাঁড়াতে, পাঠিয়ে দিয়েছিল সপ্তম নৌবহর। তৎকালীন সোভিত ইউনিয়নের সাবমেরিন বহরের অগ্রীম উপস্থিতিতে যে সপ্তম নৌবহর আর পৌঁছাতেই পারেনি বাংলাদেশের উপকূলে। স্বাধীন হয়ে যায় বাংলাদেশ। আর মুখ কালো করে ফিরিয়ে নিতে হয় সেই সপ্তম নৌবহরকে। আজ কি তবে সেদিনের সেই পরাজয়ের বদলা নিতেই সেই শক্তির তাঁবেদার দালাল গোষ্ঠীর হাতে চলে যেতে বসেছে বাংলাদেশ! এরই সাথে স্মরণে রাখা দরকার। সেই গালভরা আরব বসন্তের ঢক্কা নিনাদ! বিবিসি থেকে সিএনএন। ফক্স নিউজ থেকে সিএনবিসি। কত ঢাক কত ঢোল। দেশে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে একের পর এক সরকার উৎখাতের সাম্প্রতিক সেই ঘটনাক্রম। আর দেশে দেশে, ঠিক এইভাবেই জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের মূ্র্ত্তি ধ্বংসের সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সিগনেচার। তারও আগে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির হাত ধরে, পূর্ব ইউরোপ ও ককেশাস অঞ্চলের দেশে দেশে লেলিন থেকে স্ট্যালিন সহ সেই সকল দেশের বীর সন্তানদের মূর্ত্তি উপড়িয়ে ফেলার ঘটনাগুলি। একটাই ট্রেণ্ড! ইতিহাস মুছে দিতে হবে। না হলে ছোট ছোট দেশগুলির জনশক্তিকে সাম্রাজ্যবাদী অর্থনীতির যাঁতাকলে দশকের পর দশক বেঁধে রাখা মুশকিল। বাংলাদেশের আজকের এই পরিস্থিতি যদি সত্যিই সেই নীলনকশারই ফলাফল হয়। তবে সবচেয়ে বেশি দিগভ্রষ্ট হবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অভিমুখই। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশের জনগণই।

৬ই আগস্ট ২০২৪

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৪৪

জ্যাকেল বলেছেন: আফসোস লীগ! =p~

২| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০৭

নতুন বলেছেন: সমাজে কিছু মানুষ থাকে এমন কাজ করে। শেখ হাসিনা পুলিশের ইমেজের যেই ধর্ষন করেছে তাতে পুলিশ জনগনের সামনে মুখ দেখাতে পারছেনা। এবং জনগনের চোখে সন্মান আনতে হয়তো ২-৫ বছর লাগবে।

আইন সৃংখলা বাহিনি না থাকলে অনেক ভদ্রবেশি মানুষও যা ইচ্ছা তাই করে। সেই রকমের মানুষ সকল সমাজেই আছে।

কিছু ব্রেনওয়াস্ড ওয়াজাভক্তরা এই কাজ করেছে।

এটা সাময়িক । এই গুলি ঠিক করা যাবে কিন্তু সমাজে এই বিষ ছড়ানো মোল্যাতন্ত্রের যে ভন্ডামী তা জনগনের কাছে তুলে ধরতে হবে।

আধুনিক সমাজের ছবি মানুষকে দিতে হবে তবে তারা ১৪০০ বছর আগের খেলাফত চাইবেনা।

৩| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:১৯

এক্সম্যান বলেছেন: আপনারা এত সময় পান কেমনে? আরে দাদা যে টুকু সময় পান নিজের দেশের কাজে লাগান। আমাদের নিয়ে আপনাদের এত চিন্তা করতে কে বলেছে?

৪| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৪৬

কামাল১৮ বলেছেন: দানবের হাতে বাংলাদেশ।

৫| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:১০

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: দেশ ৭১'রের বিপক্ষ শক্তির হাতে গেলে এর দায় আওয়ামীলীগের। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকে লাগামহীন দুর্নীতি, দমন-পীড়ন অনাচার করে বিরোধীদের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।

৬| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৩

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: ৯৯.৯৯৯৯৯% সম্ভাবনা আফসোস লীগই এই কাজ করেছে!

৭| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:১৪

হাবিব ইমরান বলেছেন:

দেশের জন্য ভাবেন। এইসব প্রাণহীন জড় পদার্থ জিডিপিতে কত পার্সেন্ট সহায়তা করে?
নাকি আপনিও কানাডাতে থাকেন?


এই ছবির বিরুদ্ধে কিছু বলে যান দয়া করে।

৮| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৪২

দেখা হবে রাজপথে বলেছেন: আপনি আছেন বঙ্গবন্ধুর মূর্তি নিয়ে!! দেশ স্বাধীনের চার বছরের মাথায় জ্যান্ত মানুষটাকেই হাপিস করে দিল।
সারাদেশ জুড়ে এত শত শত মূর্তি তৈরি করতে কত হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে তার হিসাব কি রাখেন এ টাকাগুলো এসেছে কোথা থেকে? দেশের এক শ্রেণীর ধার্মিক ( মৌলবাদী জঙ্গি যাই বলুন না কেন) লোকজন কোনভাবেই মেনে নিতে পারছে না যে এসব মূর্তি থাকুক কিন্তু এ মূর্তিগুলোকে ভাস্কর্য নাম দিয়ে জায়েজ করার চেষ্টা করা হয়েছে বারবার- তাদেরকে জোর করে মানতে বাধ্য করা হয়েছে যে এগুলো হালাল মূর্তি! তাদের মনে ক্ষোভ ছিল- প্রথম চান্সেই তারা সেগুলো ভাঙবে এটাই স্বাভাবিক।
এগুলো আমাদের কষ্টের ট্যাক্সের টাকায় করা। ওরা আমাদের কাছ থেকে অনুমতি না নিয়ে ওদের সুখের ইমারদ গড়েছে মূর্তি করেছে সেগুলো জনগণ ভেঙে ফেলেছে তাদের টাকার জিনিস তারা ভেঙেছে। গণভবন জনগণের হয়নি শুধু একজনের রাজমহল হয়েছিল সংসদ ভবন আম জনতার হয়নি কখনো।ভোট না নিয়েই নিজেরা নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে সেজে কিছু বেজন্মা অসভ্য দুর্নীতিবাজ লোকজন শুধু নিজের আখের গোছানোই ব্যস্ত থাকতো সাধারণ জনগণের কথা ভাবেনি কখনো। একদিন না হয় ওখানে জনগণ তাদের মত করে ফুর্তি করেছে করেছে হরিলুট তাতে কিবা হলো কতটুকু ক্ষতি হলো? এদের ক্ষতির সাথে ওদের ১৬ বছরের ক্ষতি তুলনা করে দেখেন কত ফারাক!
আমি বছরে গুনে গুনে ১০ লক্ষ টাকা ট্যাক্স দিই পুরো টাকাটাই আমার অনেক কষ্টের হালাল রুজির! অথচ আমি আমার পরিবারের পেছনে বছরে দশ লক্ষ টাকা খরচ করতে পারি না এর থেকে আফসোস আর কি হতে পারে বলুন। আমার এই টাকার একটা অংশ দিয়েই তারা মচ্ছব করে,তারা বাপের মূর্তি বানায়, তারা গণভবনে বোন পুত্র কন্যা নিয়ে আয়েশ করে, বিদেশে টাকা পাঠায়, অন্য দেশে ফুর্তি করে তাইতো -নাকি?

৯| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১:২৩

ঊণকৌটী বলেছেন: আমি বছরে গুনে গুনে ১০ লক্ষ টাকা ট্যাক্স দিই পুরো টাকাটাই আমার অনেক কষ্টের হালাল রুজি আপনার কষ্ট টা এইবার বুঝতে পারছি, কারণ আমিও একজন আপনার মত ব্যবসায়ী পুরো সৎ পথে tax দিয়ে ব্যবসা করি, যাইহোক দেশকে ভালোবাসেন তাই অনেক পরিশ্রম করেন, পায়ের তলায় মাটি শক্ত করেন, সবাই কে নিয়া, সৎ পরিশ্রমর কোন বিকল্প নাই

১০| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৫৩

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:


দেশে এখন কারেন্ট থাকে না কেন?
এত লোডশেডিং কেন?
কে দিবে জবাব??

১১| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ২:২৯

প্রহররাজা বলেছেন: দেশকে ইউনুস চুরা আর জংলী দের হাতে, হাসিনা বাইড়াইয়া অনেক বছর এই জংলী গুলারে সাইজে রাখসিলো।

১২| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:৪৬

ইএম সেলিম আহমেদ বলেছেন: নতুন পাগলের আমদানি :#)

১৩| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০৪

ইলি বলেছেন: স্বঘোষিত রাজাকার দের হাতে বাংলাদেশ। ধন্যবাদ

১৪| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:০৪

গেছো দাদা বলেছেন: B:-)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.